বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।
প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।
আজ আমি আপনাদের ছোট গল্প হিমেলের শেষে দেখা (শেষ পর্ব) সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
আমরা বাহিরে তার জন্য অপেক্ষা করছি। আসলে প্রতিটি মিনিট আমাদের কাছে মনে হচ্ছে যেন এক দিনে সমান। প্রতিটি ক্ষণ খুবই কষ্টে বিষন্নতার সাথে কাটছে। সন্ধ্যা পার হয়ে প্রায় রাতের ১১ টা বেজে গেলো। তবুও অপূর্ণতা বাসা থেকে বের হওয়ার কোন লক্ষণ নেই। আমি আর আমার বন্ধু হিমেলকে বলছি আমরা বাসায় চলে যাচ্ছি তুমি থাকো। কিন্তু কোন ভাবে হিমেল আমাদেরকে ছাড়তে নারাজ।
এই মুহূর্তে আমাদের হাতে একটাই পথ রয়েছে। অপূর্ণতার জন্য অপেক্ষা করা যত রাতেই হোক। কারণ সকাল হলে অপূর্ণতার মামা-মামী তাকে এয়ার পোর্টে নিয়ে যাবে কলকাতায় উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য। আসলে রাতের যত সময় পার হচ্ছে ততোই হিমেল খুবই মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়ছে। আমরা দুজন তাকে অনেক ভাবে বুঝানোর চেষ্টা করছি। কিন্তু কোনভাবে তার মানসিকতা ঠিক হচ্ছে না। সময় যত পার হচ্ছে তার চোখে মুখে ভীষণ হতাশা বিরাজ করছে। আসলে দুশ্চিন্তার জন্য আমাদের সকলের গা থেকে ঘাম বের হচ্ছে। সেই সকাল থেকে এখন পর্যন্ত কয়টা ঠান্ডা পানির বোতল শেষ করেছি তার কোন হিসেব নেই। রাত প্রায় সাড়ে ১২টা বেজে গেলো আমরা সবাই অপেক্ষার প্রহর গুনছি ।
অপূর্ণতাদের বাসার আশেপাশে সব দোকান বন্ধ হয়ে গেলো এখন আমরা তিনজন রাস্তার পাশে বসে রয়েছি। কখনো বা হতাশার মধ্যে সময় কাটছে, কখনো বা মনে সাহস নিয়ে অপেক্ষা করছি কখন অপূর্ণতা আসবে তার জন্য। পরিশেষে রাত ২ টার পর অপূর্ণতা বাসার গেট দিয়ে বের হচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে আসলে আমাদের অনেক ভালো লাগলো তা বলে প্রকাশ করার মতো নয়। মনে হচ্ছে যেন আকাশে চাঁদ পেয়েছি। হিমেল দেখে অপূর্ণতার কাছে ছুটে যেতে লাগলো আমি তার হাত ধরে রাখলাম। কারণ অপূর্ণতা যে জায়গায় দিয়ে আসছে ঐ জায়গায় তাদের বাসার সিসি ক্যামেরা সেট আপ করা রয়েছে। অপূর্ণতা নির্দিষ্ট এরিয়া পার হবার পর হিমেলের হাত ছেড়ে দিলাম। সেই অতি দ্রুত অপূর্ণতার কাছে গিয়ে পৌঁছল। তারা একে অপরকে জড়িয়ে ধরল। তাদের চোখ দিয়ে অশ্রু প্রবাহিত হতে লাগলো। ঐ সময় আমার বন্ধু বলে উঠলো এখন কান্না কাটি করার সময় নেই। আমরা দ্রুত এই জায়গা থেকে চলে যেতে হবে চলো। আমি অপূর্ণতা মুখের দিকে তাকিয়ে দেখলাম সত্যি আনন্দে তার মুখ খুবই অন্যরকম লাগছে। সে বাসা থেকে কোন কিছুই আনতে পারেনি শুধু গায়ের জামা ছাড়া। তাদের বাসায় থেকে কিছু দূর যাওয়ার পরে আমার বন্ধু বললো এখন আর আমরা বাসায় যাব না আশেপাশে কোন হোটেলে রাত কাটাতে হবে। আমরা একটি হোটেলে গেলাম গিয়ে কোনরকম রাতের খাবার শেষ করেছি। আমরা তিনজনই খেয়েছি কিন্তু অপূর্ণতা খাইনি।
আমি হিমেল কে বললাম অপূর্ণতা যেহেতু কোন জামা কাপড় আনতে পারেনি তাই তার জন্য একটা জামার ব্যবস্থা করতে হবে। আমরা অপূর্ণতাকে হোটেলে রেখে বাইরে গেলাম কাপড় দোকানের সন্ধানে অনেকক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার পর একটি দোকানে সন্ধান পেলাম। সেখান থেকে একটি জামা ক্রয় করলাম । আমারা আবার হোটেলে ফিরে আসলাম হোটেলে এসেই আমরা দুটি রুম বুক করলাম । একটি অপূর্ণতার জন্য আরেকটি আমাদের তিনজনের জন্য। বালিশের সাথে মাথা লাগার সাথে সাথে ঘুম চলে আসলো। পরের দিন আমরা সকালে দশটা বাজে ঘুম থেকে উঠি উঠে ফ্রেশ হয়ে হোটেলে খাওয়া দাওয়া করে কাজী অফিসের উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। অপূর্ণতা তাদের ধর্ম ত্যাগ করে ভালবাসার কারনে হিমেলের সাথে জীবনসঙ্গী হতে যাচ্ছে। আমরা মুসলমান ধর্মের রীতিনীতি অনুযায়ী বিয়ের সকল নিয়মকানুন সম্পন্ন করলাম। তাদের মাঝে মালা বিনিময় হলো। আসলে কি বলবো সত্যি তাদের হাসিমুখের দৃশ্যগুলো আমাদের হৃদয় ছুঁয়ে গেল। অনেক বাধা বিপত্তি আর সময়ের সাথে যুদ্ধ করে নতুন জীবনে সন্ধান পেলো তারা ।
আমার বন্ধু মিষ্টি নিয়ে এলো শুভ কাজে সবাইকে মিষ্টি খাওয়ালো। হিমেল আর অপূর্ণতা আজ অনেক খুশি। হিমেল আমাকে আর আমার বন্ধুকে জড়িয়ে ধরে কান্না ভেঙে পড়লো। আসলে এই কান্না দুখের নয় খুশির। হিমেল বলতে লাগলো আপনার যদি আমার পাশে না থাকতেন হয়তো আজ এই সুন্দর মুহূর্ত কখনো দেখতে পেতাম না। আমি বললাম শুধু আজ নয় জীবনের যেকোনো মুহূর্তে প্রয়োজন হলে আমাদের পাশে দেখবে তুমি। অপূর্ণতাও আমাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতে ভুলেনি । তারপর কাজি অফিস থেকে বের হয়ে হিমের খুবই চিন্তা পড়লো এখন অপূর্ণতাকে নিয়ে কোথায় যাবে। সে তার এক আত্মীয়র সাথে কথা বলে চট্টগ্রাম যাওয়ার সিদ্ধান্ত করলো। আমি তাদের দুজনকে কমলাপুর রেল স্টেশনে নিয়ে দিয়ে আসলাম। তারা চট্টগ্রাম চলে গেলো। আমিও বাড়িতে চলে আসলাম। বাড়িতে এসে জানতে পারলাম পূর্ণতার বাড়ির লোকজন অপূর্ণতাকে অনেক ভাবে খোঁজাখুঁজি করছে। আমি সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি অপূর্ণতার যেন কোনভাবে তারা সন্ধান না পায়। কারণ সন্ধান পেলে হিমেলের খুব বড় সমস্যা হয়ে যাবে। আসলে তাদের ভালবাসা পূর্ণতা দেখতে পেয়ে আমার খুব ভালো লাগলো। তাদের জন্য কয়দিন যাবত কষ্ট হলেও তাদের সত্তিকারের ভালোবাসা সার্থক হওয়াতে আমার খুব ভালো লাগলো। আর মনে মনে বলছি তাদের দাম্পত্য জীবন অনেক অনেক সুখী হোক এই আশাবাদী ব্যক্ত করেছি।
আসলে আপনাদের মাঝে আজকে কয়দিন যাবত এই গল্পটি আমি উপস্থাপন করেছি আপনাদের কাছে কেমন লাগলো জানি না তবে গল্পটি আমার জীবনে বাস্তব। গল্পটি আপনাদের মাঝে উপস্থাপন করতে পেরে খুব ভালো লাগলো। আসলে ভালোবাসা যেই কোন ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোত্র শিক্ষিত, অশিক্ষিত, ধনী গরিব এই বিশেষ সমূহের উপর ভিত্তি করে হয় না এই গল্পে তার জ্বলন্ত প্রমাণ। আসলে ভালোবাসা স্বর্গ থেকে আসে ।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
- অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
ভাই আপনার গল্পটি পড়ে খুবই ভালো লাগলো । চমৎকার একটি গল্প লিখেছেন আপনি ।অবশেষে অনেক বাধা-বিপত্তি পেরিয়ে অপূর্ণতা আর হিমেল বিয়ে করেছে সেটি বেশ ভালো লাগলো । অপূর্ণতা ভালোবাসার জন্য নিজের ধর্ম ত্যাগ করে মুসলিম ধর্ম গ্রহন করেছে বেশ ভালো লাগলো বিষয়টি । প্রথম পর্বটি আমি পড়েছিলাম, মাঝের পর্বগুলো মিস হয়েছে তবুও ভালো যে শেষ পর্বটি পড়তে পারলাম । অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে আমারও খুব ভালো লাগলো। গল্পটি পড়ে চমৎকার ভাবে আপনার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
কিছু সুখের সময় চোখ দিয়ে এমনিতেই কান্না বের হয়ে আসে। ঠিক তেমনি সুখের সময় আপনারা কিছুটা কান্না করেছেন ভাইয়া। তবে আপনার গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লেগেছে আমাকে।
আপনাদের সকলের জন্য শুভকামনা রইল
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইলো এত চমৎকার অনুভূতি শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit