বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম
আসসালামু আলাইকুম
শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন। আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি।
প্রিয়, আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম। আজ আমি আপনাদের, ভালোবাসা অসহায় গল্পটি সম্পর্কে বলতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।
আসুন শুরু করি
গত পর্ব ছিলো- আমি তাকে অনেক বুঝিয়ে বললাম কিন্তু সে কোন ভাবে আমার কথা বিশ্বাস করছে না। সে আমাকে বলতেছে আমি নাকি তার থেকে কিছু লুকাচ্ছি । কারণ অনেক ছেলে নিজে আমাকে ভালোবাসতে চায়।
তার মামাতো বোন বললো সত্যিই সকল ছেলেরা এক রকম নয়। তখন নীলিমা বললো, আমি শ্রাবণ কে ভালোবাসি তবে সে আমাকে ভালোবাসে কিনা এখনো জানি না। তার কথাবার্তা আমার কাছে খুবই ভালো লাগে। শ্রাবণকে নিয়ে কথা বলতে বলতে তারা স্টেশনে চলে এলো। নীলিম স্টেশনে থেকে তাদের বাড়িতে চলে গেলো। রাত্রি বেলায় খাওয়া-দাওয়া করে নীলিমে বারান্দায় আসলো। বারান্দ বসে বসে শ্রাবণের কথা ভাবছে আর দক্ষিণে ঝিরঝির হাওয়াতে বকুল ফুলের ঘ্রাণ তার নাকে লাগছে। নীলিমা যখন শ্রাবণের কথা ভাবে তখনই তার মাঝে হারিয়ে যায়। নীলিমা তার ভালোবাসা রাজ্যে শুধু শ্রাবণ কে ভালোবাসে।
শ্রাবণের কথা ভাবতে ভাবতে এভাবে নীলিমার রাত্রি গুলো কেটে যায়। নীলিমা শ্রাবণের সাথে দেখা হওয়ার একমাত্র জায়গা হলো ট্রেন। ট্রেনে করে যাতায়াতের সময় তাদের দেখা হয়। এছাড়া অন্য কোথাও তাদের দেখা হয় না। নীলিমা যেহেতু অফিসে চাকরি করে তার সুবাদে প্রতি দিন ট্রেনে করে যাতায়াত হয়। ট্রেনে যাতায়াতের সময় নীলিমা প্রতি দিন শ্রাবণ কে খুঁজে। কখনো শ্রাবণের সাথে দেখা হয় আবার কখনো দেখা হয় না। এভাবে বেশ কয়েক মাস কেটে গেলো । এদিকে ধীরে ধীরে শ্রাবণ নীলিমা কে ভালোবাসা আরম্ভ করলো। তাদের দুজনের মাঝে ভালোবাসা গভীর সম্পর্ক তৈরি হয়।
শ্রাবণদের পরিবারে পাঁচ সদস্য। তার মা বাবা তার দুই বোন এবং এক ভাই। তার বাবা একটা বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি করতো। কিন্তু কর্মরত অবস্থায় একটা দুর্ঘটনার কারণে সেই বেশ অসুস্থ হয়ে পড়লো। তারপর সেই আর চাকরি করতে পারে নি। এগ দিকে শ্রাবণ অনার্স দ্বিতীয় বর্ষে পড়ে। তার লেখাপড়ার খরচ চালানো প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছে। যতো দিন যাচ্ছে ততোই শ্রাবণদের পরিবারে আর্থিক সমস্যা প্রকোড় ভাবে দেখা দিচ্ছে। শ্রাবণ আর নীলিমার ভালোবাসার সম্পর্ক তিন বছর হতে চলেছে। সময়ের সাথে সাথে তাদের জীবনের অনেক কিছুই পরিবর্তন হলো। কিন্তু ভালোবাসা সেই আগের মতো রয়ে গেলো।
শ্রাবণ যখন অনার্স তৃতীয় বর্ষে পড়ে তখন তাদের পরিবার অবস্থা একেবারে খারাপ হয়ে পড়ে। শ্রাবণের পরিবার থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া হলো তাকে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়া হবে। যেহেতু তাদের আর্থিক অবস্থা ভালো নয়। দেশে কোন চাকরি না হওয়াতে বিদেশ গেলে কিছুটা পরিবারের সচ্ছলতা নিয়ে আসবে শ্রাবণ। পরিবার থেকে যখন শ্রাবণকে বিদেশ পাঠিয়ে দেওয়ার কথা বলছে তখন সে বেশ অস্থির হয়ে পড়লো। এদিকে তার লেখাপড়া, অন্যদিকে পরিবারের সমস্যা আবার তার ভালোবাসার সব মিলিয়ে সেই অস্থির সময় কাটাচ্ছে। চারপাশের পরিস্থিতি অস্বাভাবিক হওয়ার কারণে কি করবে সেই বুঝতে পারতেছে না।
সে বিদেশ যেতে চাইছিলো না। কিন্তু তাকে বিদেশ যেতেই হবে পরিবারের সচ্ছলতা ফিরিয়ে আনার জন্য। নীলিমা যখন শুনলো শ্রাবণ বিদেশ চলে যাচ্ছে সে একেবারে ভেঙ্গে পড়লো। নীলিমা অনেক ভাবে চেয়েছে সেই যেন দেশে থাকে। কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস দেশে তার কোন চাকরি হলো না তাই তাকে বিদেশ যেতে হলো। শ্রাবণ সবাইকে রেখে বিদেশ চলে গেল। শ্রাবণ বিদেশ গেলো প্রায় আট মাস হয়ে গেলো। এ দিকে নীলিমার বয়স প্রায় ২৮ বছর হয়ে গেলো। তার পরিবার তাকে বিয়ে দেওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে। নীলিমা তাদের ভালোবাসার কথা তার পরিবারকে জানিয়েছে।
কিন্তু পরিবার কিছুতে তার কথা মানছে না। নীলিমা যখন অনেক বুঝিয়ে বললো, তার পরিবারকে তখন তার পরিবার থেকে জানিয়ে দেওয়া হলো শ্রাবণ যদি এখন দেশে আসতে পারে তাহলে তার সাথে নীলিমাকে বিয়ে দিবে। আর না হয় তাদের পছন্দের পাত্রের সাথে বিয়ে দিবে। শ্রাবণ গেছে মাত্র ৮ মাস হলো এই সময় সে দেশে আসা সম্ভব নয়। শ্রাবণ নীলিমার বিয়ের কথা শুনে অনেক চেষ্টা করেছে দেশে আসার জন্য। কিন্তু শ্রাবণ দেশে আসার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা এবং ভিসা প্রক্রিয়ার সমস্যার কারণে দেশে আসতে পারে নি। এদিকে কিছুদিন অপেক্ষা করার পর নীলিমার বিয়ে হয়ে গেছে। পরিবেশ এবং পরিস্থিতির কাছে তাদের দুজনের ভালোবাসা ভালোবাসা অসহায় হলো। তাদের ভালবাসার পূর্ণতা পেলো না।
পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
এতক্ষণ আপনাদের মূল্যবান সময় দিয়ে আমার পোস্টটি শেষ পর্যন্ত দেখার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের উৎসাহ এবং অনুপ্রেরণা পেলে আমি অন্য কোন বিষয় উপস্থাপন করবো, ইনশাআল্লাহ।
অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন । এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।
সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো।
আমার পরিচিতি
আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে পেরে আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলায় প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানিত ফাউন্ডার, এডমিন, মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করে থাকি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে। বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।
VOTE @bangla.witness as witness
OR
SET @rme as your proxy
https://x.com/MdAgim17/status/1856036419749458200?t=wZVnOAUgirC5U2ZN_f65nA&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইয়া আপনি খুব সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করেছেন। আপনার এই গল্পের শেষ পর্ব পড়ে খুব ভালো লাগলো। যদিও আগের পর্ব পড়া হয়নি তবে শেষ পর্ব পড়ে শ্রাবণ আর নীলিমার জন্য খুব খারাপ লাগলো। কিছু কিছু সময় পরিস্থিতি সুন্দর দু'টো জীবনকে উলটপালট করে দেয়। কিন্তু সেখানে দোষ কারোর থাকে না। প্রতিটা মানুষ যেনো পরিস্থিতির শিকার হয়ে পড়ে। সত্যিকারের ভালোবাসা পূর্ণতা না পেলে খুব খারাপ লাগে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি গল্প শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
গল্পটি পড়ে এতো সুন্দর অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit