ছোট গল্প হিমেলের শেষে দেখা # তৃতীয় পর্ব /১০% প্রিয় 💞 @shy-fox

in hive-129948 •  2 years ago 

বিসমিল্লাহি রহমানের রাহিম

আসসালামু আলাইকুম

শ্রদ্ধেয় প্রিয় ভাই ও বোনেরা,
আপনারা সবাই কেমন আছেন ? সৃষ্টিকর্তার কৃপায় আশা করি ভালো আছেন । আমিও সৃষ্টিকর্তার রহমতে ভালো আছি ।

প্রিয় , আমার বাংলা ব্লগ কমিটির সদস্যরা
আপনাদের মাঝে আবার এসে হাজির হলাম।

আজ আমি আপনাদের ছোট গল্প হিমেলের শেষে দেখা# শেষ পর্ব তুলে ধরতে চাই। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। আপনারা আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে পুরো পোস্টটি দেখবেন আশা করি।

আসুন শুরু করি

অপূর্ণতার যেহেতু মোবাইল ছিল না তাই তার সাথে কোনোভাবে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। কয়েকদিন যাওয়ার পর আমার বন্ধুর মাধ্যমে সংসদ ভবন এলাকায় তাদের বাসার সন্ধান পেয়েছে। পরে বাসার দারোয়ানের মাধ্যমে আমাদের দুজনের নাম্বার তার কাছে পৌঁছে দিলো। নাম্বার পাবার একদিন পর অপূর্ণতা আমার কাছে ফোন করলো। অপূর্ণতা ফোন করে একেবারে কান্না কন্ঠে বাসা কাটানো কষ্টের সময়ের কথা বলছে। সে বললো যেভাবে হোক আমি বা, হিমেল তাকে বাসা থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসি। সে এখানে আর এক মুহূর্তের জন্যও বাসা থাকতে পারবে না। সে আরো বললো কলকাতা যাওয়ার জন্য তার কাগজ পত্র সব ঠিক হয়ে গেছে। আর ছয় দিন পর কলকাতায় যাওয়ার জন্য বিমানের টিকিট ক্রয় করেছে তার মামা। আসলে এ কথা শোনার পর আমি খুব অস্থির হয়ে গেলাম। আমি তাকে আশ্বাস দিলাম আমরা যে কোন মুহূর্তে ঢাকা আসবো । তুমি সব কিছু ঠিকঠাক করে রেখো । মামাদের পরিবারের সবার সাথে স্বাভাবিক আচরণ করো। তোমাকে সুযোগ বুঝে আমরা বাসার বাইরে নিয়ে আসবো।

IMG_20220607_100226.jpg

আর আমাকে বারবার ফোন দিও না। আর একেবারে গুরুত্বপূর্ণ প্রয়োজন হলে ফোন দিও। এই বলে আমি ফোন রেখে দিলাম। তারপর আমি হিমেলের সাথে যোগাযোগ করি। আমার কথা শোনার পর হিমেল ও খুব অস্থির হয়ে পড়লো। সে আমাকে বারবার বলছে ভাইয়া যেভাবেই হোক একটা কিছু করতে হবে আমাদেরকে । যে কোনভাবে অপূর্ণতাকে তাদের তার মামার বাসায় থেকে বের করতে হবে। হিমেল বললো ভাইয়া কালকে আপনি আমার সাথে ঢাকা যাবে। আমি হিমেলকে তাৎক্ষণিক ভাবে কোন কিছু বলি নি ঢাকা যাওয়ার ব্যাপারে। কারণ আমার হাতে অনেক কাজ আছে। আসলে কাজগুলা সমাধান করতে করতে তিন থেকে চার দিন সময় লাগবে। এখন আমি কি করব ভেবে পাচ্ছি না। পরের দিন সকালে আমাকে আবার ফোন দিল। সে বললো ঢাকা যাওয়ার জন্য কিছু টাকা জোগাড় করেছে আমাকে যেভাবে হোক তার সাথে যেতে হবে। এদিকে আমি কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য আটকে গেছি। আমি তাকে বললাম কালকে সকালে যাবো আজকে কাজ আছে । কিন্তু সে কোন ভাবে মানতে নারাজ। সে বলছে আজকে যেতে হবে, আমি তাকে বিকেলে যাওয়ার জন্য বুঝি বলি। আমার হাতে অনেক গুলো কাজ আছে শেষ করে বিকেলে রওনা দিবো।

IMG_20220607_093824.jpg

আমিও কিছু টাকা পকেটে নিয়ে হিমেল আর আমি ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। ঢাকা গিয়ে আমার বন্ধুর বাসায় উঠেছি। আসলে আমার বন্ধু ব্যাচেলার বাসায় থাকে। এখন আমরা দুজন যাওয়াতে তার খুবই অসুবিধে হচ্ছে। তবুও বন্ধুত্বের কারণে আমাদের রাখতে সেই বাধ্য হচ্ছে। হিমেল ঢাকা যাওয়ার পর থেকে একেবারে অস্থির হয়ে পড়লো কখন অপূর্ণতাকে বাসা থেকে আনতে পারবে তার সাথে কথা বলবে। প্রথমে অপূর্ণতাদের বাসায় আমার বন্ধুকে পাঠিয়েছি সে গিয়ে দেখে দারোয়ান ছুটিতে গেছে একদিনের জন্য‌। আরেকজন নতুন দারোয়ান এসেছে। তাই আমার বন্ধু আবার বাসায় ফিরে এলো অপূর্ণতাকে কোন ভাবে আমাদের ঢাকা যাওয়ার তথ্য দেওয়া হলো না। এইদিকে অপূর্ণতা আমাদের কাছে আর ফোন করছে না। আমরা খুবই চিন্তার মধ্যে আছি আমাদের হাতে সময় আছে আর মাত্র দুই দিন। পরের দিন সকালে আবার আমরা তিনজন গেলাম অপূর্ণতাদের বাসার সামনে। আমার বন্ধু পুরাতন দারোয়ানকে দেখতে পেলো সে আমাদের বিষয় অপূর্ণতাকে বলতে বললো। অনেক চেষ্টা করার পরও দারোয়ান অপূর্ণতার সাথে কোনভাবে কথা বলতে পারছে না। সকালে সময় গিয়ে দুপুর হয়ে গেল। অপূর্ণতাদের বাসার পাশে আমরা একটি রেস্টুরেন্টে দুপুরের খাবার খেয়েছি কিন্তু হিমেল দুপুরে খাবার খাইনি সে চিন্তায় ভীষণ অস্থির হয়ে পড়েছে। বিকেলে পুরো সময় আমরা তিনজন অপূর্ণতাদের বাসার সামনে অপেক্ষা করছি কোনভাবে অপূর্ণতা সাথে যোগাযোগ করতে পারছি না। যেই মোবাইলে অপূর্ণতা আমাকে ফোন দিয়েছে এখন আমি যদি ওই মোবাইল নাম্বারে ফোন দিই তাহলে অপূর্ণতার মামার পরিবারের কেউ ফোন রিসিভ করলে অনেক বড় ঝামেলা হয়ে যাবে এই কারণে ফোন দিতে পারছি না।

সন্ধ্যা পূবে মুহুর্তে আমরা অপূর্ণতাকে তার মামা-মামী সাথে একটি প্রাইভেট কারে করে বের হতে দেখেছি। আমরা সাথে সাথে একটি সিএনজি করে প্রাইভেট কারের পেছু নিলাম। তবে দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো প্রাইভেট কার অতি দ্রুত গতিতে কোন দিকে চলে গেল তা আমরা দেখতে পেলাম না। আবার আমরা অপূর্ণতাদের বাসার সামনে ফিরে এলাম। পরে দারোয়ানের মাধ্যমে জানতে পারলাম তারা শপিং করতে মার্কেটে গিয়েছে। অপূর্ণতার সাথে দেখা করতে আমরা অপেক্ষা করতে লাগলাম। অপূর্ণতা শপিং করে বাসায় ফিরেছে। গেটে দারোয়ান অপূর্ণতাকে আমাদের বিষয়ে বলেছে। যাইহোক এখন আমরা একটু স্বস্তি পেলাম অপূর্ণতা আমাদের কথা জানতে পেরেছে। সে বাসায় গিয়ে
প্রায় ৪০ মিনিট পর আমাকে ফোন করেছে। আমি বলছি তার জন্য সকাল হতে আমরা বাইরে অপেক্ষা করতেছি। সুযোগ বুঝে যে কোনভাবে বাসার বাহিরে বেরিয়ে আসতে। আমার কথা শোনার পরে ফোন রেখে দিয়েছে। আসলে সকাল হতে আমরা বাসার সামনে বিভিন্নভাবে তার জন্য অপেক্ষা করতেছি যতো সময় যাচ্ছে ততো আমাদের কষ্ট হচ্ছে। প্রতি মিনিট আমাদের কাছে মনে হচ্ছে অনেক সময়। আমরা সবাই অপেক্ষার প্রহর গুনছি।

আজ এই পর্যন্ত ই আগামী পর্বে আপনাদের মাঝে পুরো গল্পটি উপস্থাপন করার চেষ্টা করব।

পোস্টটির কোথায় ভুল ত্রুটি হলে সুন্দর ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।

  • অন্য সময়ে আবার অন্য কোন বিষয় নিয়ে কথা হবে।সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন। সুস্থ থাকবেন, নিজের স্বাস্থ্যের প্রতি যত্ন নিবেন ।এই আশাবাদ ব্যক্ত করে আপনাদের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছি।

সবাইকে শুভ রাত্রি
আপনারা সবাই ভালো থাকবেন।
আপনাদের সকলকে আমার পক্ষ থেকে ভালোবাসা 💜💙 এবং অভিনন্দন রইলো ।

আমার পরিচিতি

G0mIPwfurEJVlbirXIKFAUZVIuK.jpg

আমি আওলাদ হোসেন আজিম ।আর আমার ইউজার নাম @ah-agim আমি একজন বাংলাদেশী। মাতৃভাষা বাংলায় বলে - আমি খুব গর্বিত। আমার মনে ভাষা বাংলা এর প্রকাশ করতে খুব ভালো লাগে। আমি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিকে ভালোবাসি। আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সন্মানীত এডমিন মডারেটর সহ সকল সদস্যদের প্রতি আমার অফুরন্ত ভালোবাসা বিরাজমান। আমি বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমণ করতে ভালোবাসি। সৃষ্টিকর্তার দেওয়া প্রাকৃতিক সৌন্দর্য দেখতে আমার কাছে খুব বেশি ভালো লাগে। তাছাড়া আমি বিভিন্ন ধরনের কাগজের ( কারুকাজ ) এবং বিভিন্ন রকমের রান্না ( রেসিপি ) করতে পছন্দ করি। আমি ফটোগ্রাফি করে থাকি। ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে অনেক অনেক বেশি ভালো লাগে।বিশেষ করে সৃষ্টিকর্তার দেওয়ায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের দৃশ্য সমূহ ফটোগ্রাফি করতে আমার কাছে ভালো লাগে।

♥️ আমার ব্লগটি ভিজিট করার জন্য আপনার প্রতি কৃতজ্ঞ 🖤

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

হিমেলের শেষ দেখা গল্পটি দারুন লিখেছেন। পড়ে খুবই ভালো লাগলো, আসলে ভালোবাসায় এমনই হয়। প্রতিটা সেকেন্ড মনে হয় যেন হাজারটা বছরের মত। দারুণ লিখেছেন, আগামী পর্বের জন্য অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।

এত চমৎকার ভাবে আপনার মনের অনুভূতি শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই।