আসসালামু আলাইকুম।
আমি আলামিন ইসলাম আছি আপনাদের সাথে। আমার ইউজার নেমঃ@alamin-islam। আমি বাঙালি, বাংলাদেশের একজন নাগরিক।আশা করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি এর সকল সদস্যবৃন্দ আল্লাহর অশেষ রহমতে ভাল আছেন। আমি ও আলহামদুলিল্লাহ ভালো আছি।
প্রত্যেকটি মানুষের জীবনের সবচেয়ে স্মৃতিময় এবং সোণালী মুহূর্ত হলো শৈশব এবং কৈশোর। প্রতিটি মানুষেরই তার শৈশব এবং কৈশোর কে ঘিরে থাকে নানা রকম মুহূর্ত। ঠিক যেমন আমার শৈশব এবং কৈশোর মিলে রয়েছেন নানা মজার মজার স্মৃতিময় ঘটনা। তাঁর মধ্যে আমার শৈশবের একটি মজার ঘটনা আপনাদের সাথে শেয়ার করব।
আমার বয়স তখন আট বছর। আমি তখন তৃতীয় শ্রেণীতে পড়তাম। স্কুলে আমাদের ক্লাসে আমাদের ছেলেবন্ধুদের ছয়জনের একটি গ্রুপ ছিল। আমাদের ছয় বন্ধুর মধ্যে খুবই মিল ছিল। আমরা ক্লাসে সবসময় একসাথে বসার চেষ্টা করতাম এবং একসাথে ঘুরাফেরা করতাম। আমরা যেমন পড়াশোনা তে সেরা ছিলাম ঠিক তেমনই দুষ্টুমিতেও সবার বস ছিলাম। আমাদের দুষ্টুমির কোন সীমা ছিল না। স্কুলের গাছপালা থেকে ফলমূল চুরি করা থেকে স্যার-ম্যাডামদের নানাভাবে বিরক্ত করা এবং বারবার হেড ম্যাডামের কাছে বকা খাওয়া এইগুলোই ছিল আমাদের প্রতিদিনের স্কুলের মুখ্য কাজ। তবে সব দুষ্টুমি করে বারবার পার পেয়ে যেতাম কারণ আমরা যথেষ্ট ভালো স্টুডেন ছিলাম। তাহলে চলে আসি মূল ঘটনায়।
আমাদের স্কুলের পেছনদিকে বিশাল বড় একটি মাঠ ছিল। স্কুলের টিফিন টাইমে আমরা সবাই সেই মাঠে যেয়ে খেলা করতাম।তো আমাদের স্কুল মাঠে মাঝেমধ্যে কুকুর ঢুকে পড়তো। তার মধ্যে কিছু কুকুর একটু ক্ষ্যাপাটে টাইপের ছিল আবার কিছু কুকুর বেশ শান্ত ছিল। এই কুকুর গুলো স্কুল মাঠে ঢুকে পড়তো তখন আমরা স্কুলের দোতলা থেকে কুকুরগুলোকে ঢিল ছুঁড়তাম। এটা আমাদের কাছে একটা খেলা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কুকুরের গায়ে ঢিল লাগলেই আমরা সে গুলোকে পয়েন্ট হিসাবে গণনা করতাম। যে সব থেকে বেশি পয়েন্ট করতে পারত সে জিতে যেত। এটাই ছিল আমাদের মূল খেলা। এরপর আমরা যখন কুকুরের গায়ে ঢিল ছুঁড়তাম তখন কুকুর গুলো আমাদের দিকে তাকিয়ে ঘেউ ঘেউ করতো। আমরা যেহেতু দোতালায় থাকতাম তো কুকুর গুলো আমাদের দিকে তেড়ে আসতে পারতো না, শুধু নিচ থেকে আমাদের দেখে ঘেউ ঘেউ করে উঠত। তখন আমরা খুবই মজা পেতাম।
এভাবে আমরা তিন চারদিন মতো কুকুরদের সাথে এভাবে খেলতে লাগলাম। এরপর হঠাৎ একদিন আমরা যখন ক্লাস করছিলাম তখন আমাদের ক্লাস টিচার আমাদের নাম প্রেজেন্ট করছিল। তখন ক্লাস টিচার আমাদের বললেন, তোমাদের এক বন্ধু বেশ অনেকদিন হল স্কুলে আসে না তার কি হয়েছে তোমরা কি জানো? তখন আমরা সবাই বললাম না স্যার, আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না। তখন স্যার বলল, তোমরা কি তার বাড়ি চেনো কেউ। তখন আমি বললাম স্যার আমি তাদের বাড়ি চিনি। তখন স্যার আমাকে জিজ্ঞাসা করলেন কত দূরে। তখন আমি স্যারকে বললাম ১০ মিনিট মত লাগবে হেঁটে যেতে। তখন স্যার আমাকে বলল তোমরা যেকোনো তিনজন মিলে ওই স্টুডেন্ট এর বাড়িতে যাও এবং যেয়ে দেখো তার কি অবস্থা তারপর এসে আমাকে জানাও। তারপর আমরা নিচ থেকে হেড ম্যাডাম এর পারমিশন নিয়ে চলে গেলাম সেই বন্ধুর বাড়ির উদ্দেশ্যে। সেই বন্ধুর বাড়িতে স্কুলের সামনের রাস্তা পার হয়ে একটি গলি দিয়ে যেতে হয়। সেই গলিতে প্রবেশ করে কিছুটা যেতেই আমরা দেখতে পেলাম আমরা স্কুল মাঠের যেই কুকুরগুলোকে ঢিল ছুঁড়তাম তাদের মধ্যে দুইটি কুকুর রাস্তার উপর শুয়ে আছে। এই কুকুর গুলা বেশ খ্যাপাটে টাইপের কুকুর ছিল। কুকুর দুটি আমাদেরকে দেখেই হয়তো চিনে ফেলেছিল। তাই আমাদেরকে দেখামাত্রই কুকুর গুলো জোরে জোরে ঘেউ ঘেউ করে আমাদের দিকে এগিয়ে আসছিল।
তখন আর কি অতশত না ভেবে আমরা তিনজন গলির তিনমাথায় দিলাম চম্পর। তিনজন এখন তিন দিকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত দুইটি কুকুর ই আমার পিছু নিয়েছিল। আমিও দৌড়াচ্ছি, কুকুরও আমার পিছে পিছে দৌড়াচ্ছে। কি একটা অবস্থা। কুকুরের সাথে দৌঁড়ে না পেরে আমি তাড়াতাড়ি করে একটি বাড়ির মধ্যে ঢুকে দরজা আটকে দিলাম। বাড়িটি ছিল একটি অচেনা লোকের বাড়ি। এই অচেনা লোকের বাড়ির মেইন গেটের সামনে দরজা আটকে আমি প্রায় তিন ঘন্টা বসে ছিলাম তবুও কুকুরগুলো এক মুহূর্তের জন্যেও গেটের সামনে থেকে সরেনি। কুকুর গুলো হয়তো ভেবে রেখেছিলাম আমি বেরোলেই ওরা আমাকে কামড়াবে। এভাবে যখন অনেকটা সময় পার হয়ে গেল তখন আমি গেটের সামনে বসেই জোরে জোরে কান্না করতে লাগলাম। তখন বাড়ির ভেতর থেকে লোকজন বেরিয়ে আসলো এবং আমি তাদেরকে সমস্ত ঘটনা খুলে বললাম। তখন তারা কুকুরগুলোকে তাড়িয়ে আমাকে সাথে করে নিয়ে স্কুলে পৌঁছে দিয়েছিল। এরপর স্কুলে গিয়ে জানতে পারলাম আমার সেই বন্ধু গুলো স্কুলে গিয়ে সবাইকে সবকিছু জানিয়েছে এবং আমাকে নাকি প্রচুর খোঁজাখুঁজি চলেছে এই তিন ঘণ্টা ধরে এমন কি খবরটা আমার বাড়িতেও পৌঁছে গিয়েছিল তাই আমার আব্বু আম্মু তখন স্কুলে ছিল কারণ স্কুল থেকে ফোন করা হয়েছিল। এরপর আমাকে দেখে সবাই যেন স্বস্তির একটা নিঃশ্বাস নিল। এরপর থেকে আমি আর কখনো কোনো নিরীহ প্রাণীকে কখনো কোন কষ্ট দিইনি। সময়ের সাথে সাথে আমি একজন পশুপ্রেমী হয়ে উঠেছি। আর এই ছিল আমার শৈশবে কুকুরের তাড়া খাওয়ার গল্প।
আমি@Al-Amin ইসলাম , আমি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার, আমার ইচ্ছা আমি দেশ ও দশের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করতে চাই, আমার গর্ব হয় নিজেকে বাঙালি বলে পরিচয় দিতে। আমি গর্বিত বাংলাদেশে জন্মগ্রহণ করে। বাংলাদেশ ছয় ঋতুর দেশ, বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ, বাংলাদেশের মানুষ মাছে ভাতে বাঙালি, প্রকৃতির রূপ, রস ,গন্ধ সবকিছুই আমার অহংকার।
https://twitter.com/Alamini15050207/status/1511628308026650624?t=iD5ZdCWQOi98KbXO6zLgVg&s=19
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হাহাহা হাসাইলেন ভাই ছোটবেলা কুকুরের তারা অনেকবার খেয়েছি খুব ভয় পেতাম ।আপনার তারা খাওয়ার গল্প পড়ে অনেক ভালো লাগলো ।শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই আমি আপনার সাথে সম্পূর্ণ সহমত পোষণ করছি, ছোটবেলায় আমার মনে হয় সবাই কুকুরের তারা খেয়েছে, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবে তো কুকুরের তাড়া খেয়েছি অবশ্যই কি আর বলবো আমি মাঝে মধ্যে এখনো খাই। কুকুর দেখলে আমার ভয় লাগে মনে হয় পাশ দিয়ে হেঁটে গেলেই আমাকে কামড়ে দিবে এমন ভয় লাগে আমার। তাই যখনই কুকুর দেখি তখনই আমি দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আপনার কুকুরের তাড়া খাওয়া গল্প পরে আমার আগের দিনের কথা মনে পড়ে গেল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বী আপু আপনি ঠিকই বলেছেন কুকুরের তারা প্রায় সকল মানুষই খেয়েছে বলে মনে করি, আমিও ব্যক্তিগতভাবে কুকুরকে খুবই ভয় পাই, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবের এমন স্মৃতি আমার জীবনে অনেক রয়েছে। আপনার এই ঘটনাটি পড়ে আমি ও আমার ছোট কালের সেই স্মৃতিগুলো স্মরণ করতে পেরে খুবই আনন্দবোধ করতেছি। আপনার এই অভিজ্ঞতা টি শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমার লেখনীর মাঝে আপনি আপনার শৈশবের স্মৃতি উপলব্ধি করতে পেরেছেন জেনে আমি সত্যি অনেক খুশি হলাম, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
পায় শৈশবে আমি একবার এমন অভিজ্ঞতার সম্মুখীন হয়েছিলাম। কুকুরের ঘেউ ঘেউ শব্দ শুনে দৌড় দেওয়ায় কুকুরের পিছে পিছে তাড়া করেছিল। অনেক দূরে দূরে যাওয়ার পর রাস্তার মধ্যে পড়ে গিয়েছিলাম। পরে অবশ্য কুকুর কামড় না দিয়ে পাশ কাটিয়ে চলে যায়। ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জ্বি ভাই আপনি ঠিকই বলেছেন দৌড়ালে কুকুর বেশি তাড়া করে, আপনার সুন্দর মূল্যায়নের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমিও ছোট বেলায় একবার কুকুরের তাড়া খেয়েছিলাম। কি যে ভয় পেয়েছিলাম ভাই কি আর বলব আপনাকে। নিজের জান যেন নিজের কাছে ছিলনা । অল্পের জন্য বেঁচে গেছি / বাসায় এসে গেট লাগিয়ে দিয়েছিলাম । আপনার গল্পটি অনেক মজার ছিল । শেয়ার করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই কুকুরের তারা খেলে মনে হয় নিয়ে ভিতরে জান আর থাকেনা, আপনার সুন্দর মূল্যায়নের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনি খুবই চমৎকার একটা গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করেছেন। গল্পটা পড়ে খুবই মজা পেলাম। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের গল্প আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সুন্দর ও গঠনমূলক মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যাক শেষ পর্যন্ত বুঝলেন যে নিরীহ প্রানিকে কষ্ট দেয়া মোটেও ঠিক নয়।জোর বাচা বেচে গেছেন। আমি কখনও কুকুরের ধাওয়া খানি নি কারন হয়তো আমি ওদের খুবি ভালবাসি। তবে একবার একটা কুকুর কে পিটিয়েছিলাম যদিও বিনা কারনে নয় । ভাল ছিল গল্পটি । ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সুন্দরতম মন্তব্য আমাকে সহমত পোষণ করেছে তাই খুশি হলাম, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
শৈশবে কুকুরের তাড়া খাওয়ার গল্প পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো ☺️
সত্যি বলতে আমি নিজেও এধরনের পরিস্থিতিতে পড়েছিলাম একবার।
দারুন লিখেছেন।
শুভ কামনা রইল আপনার জন্য 💌
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাই আপনি ঐ ধরণের পরিস্থিতিতে পড়েছেন জেনে বিষয়টি ভালভাবে উপলব্ধি করতে পারলেন, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ভাইরে ভাই, আপনার গল্প পড়ে আমার নিজের গল্প মনে পড়ে গেলো। কুকুরের তাড়া খেয়ে গাছে উঠে প্রায় ৩০ মিনিট বসে ছিলাম। ভয়ে আমার হাত পা কাপছিলো। আসলে ছোট থেকেই কুকুর ভয় পাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
জি ভাই আমার গল্প পড়ে আপনার ছোটবেলার গল্প আর কথা মনে পড়ে গেল জেনে আমি খুশি হলাম, কুকুরকে ব্যক্তিগতভাবে আমিও ভয় পাই কিন্তু সামলে নেয়ার টেকনিক আছে ভাই, সত্যি বলতে সকল মানুষই কুকুরকে ভয় পাই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল ভাই আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit