প্রতিবাদী হোন, বৈষম্য দূর করুন

in hive-129948 •  4 months ago 

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

 আস্সালামু আলাইকুম,

আমার বাংলা ব্লগের প্রাণ প্রিয় বন্ধুরা, সম্মানিত এ্যাডমিন ও মডারেটরবৃন্দ, কেমন আছেন আপনারা? আশাকরি সবাই আল্লাহর রহমতে ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি। আজকের পোস্টে আমি প্রতিবাদী হোন, বৈষম্য দূর করুন নিয়ে আলোচনা করব। আশা করি আপনারা সবাই এটি উপভোগ করবেন এবং কিছু নতুন তথ্য জানতে পারবেন। ভুলত্রুটি হলে দয়া করে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। ধন্যবাদ!

বৈষম্য একটি বিষাক্ত সমস্যা যা আমাদের সমাজকে প্রতিনিতই কুরে কুরে খাচ্ছে। এটি আমাদের জীবনযাত্রার প্রতিটি স্তরে বিরাজমান চাকরির ক্ষেত্রে, শিক্ষার ক্ষেত্রে, এমনকি সরকারি কাজের ক্ষেত্রেও বৈষম্যের ছাপ স্পষ্টভাবে দেখা যায়। এই বৈষম্যের শিকার হয়ে মানুষ আজ ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে এবং তাদের প্রাপ্য অধিকার হারাচ্ছে। বৈষম্য দূর করতে হলে আমাদের সবাইকে সজাগ হতে হবে এবং প্রতিরোধের পথ বেছে নিতে হবে শুধু নিজের জন্য নয় সমাজের সকলের জন্য আমাদের প্রতিবাদী হতে হবে। তাহলে একদিন আমাদের সমাজ তথা দেশ থেকে বৈষম্য দূর করা সম্ভব হবে।

play-figures-4541727_1920.jpg

Image Source

চাকরির ক্ষেত্রে বৈষম্য সেই ছোট বলে থেকেই দেখে আসতেছি। যার টাকা আছে তার চাকরি আছে যার টাকা নেই তার চাকরি নেই। এ জন্য কখনও কখনও যোগ্য প্রার্থীরা তাদের প্রাপ্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় ফলে অযোগ্যরা ব্যক্তিগত সংযোগ বা প্রভাবের মাধ্যমে বড় বড় পদে নিয়োগ পায় আর যারা সত্যিই যোগ্য আজ তারা পিছিয়ে পড়েছে। এর ফলে শুধুমাত্র একজন ব্যক্তিই ক্ষতিগ্রস্থ হয় না বরং দেশের সামগ্রিক কর্মসংস্থান ব্যবস্থার গুণগত মানও কমে যায়। একজন প্রতিবাদী হতে হলে এ ধরনের অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। আমরা যদি নিজেদের মধ্যে এই সচেতনতা তৈরি করতে পারি এবং যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজের পরিবেশ গড়ে তুলতে পারি তাহলে বৈষম্যকে দূর করতে পারব।

dream-job-2860022_1920.jpg

Image Source

শিক্ষার ক্ষেত্রেও বৈষম্যের অনেক নজির রয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছলরা ভালো মানের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পড়ার সুযোগ পায় আর গরিবরা নিম্নমানের প্রতিষ্ঠানে পড়তে বাধ্য হয়। এ ছাড়াও সরকারী ভাল স্কুলে যারা একটু প্রভাবশালী আছে তাদের ছেলে মেয়েরা পড়াশোনার সুযোগ পাই গরীব মেধাবী হলেও তাদের কোন সুযোগ থাকে না। এই বৈষম্যের কারণে একজন শিক্ষার্থী তার মেধার সঠিক বিকাশ ঘটাতে পারে না। শিক্ষার ক্ষেত্রে যদি বৈষম্য দূর না হয় তবে সমাজে সত্যিকার উন্নয়ন সম্ভব নয়। আমাদের এই বৈষম্যগুলোকে চ্যালেঞ্জ করতে হবে এবং শিক্ষাকে সবার জন্য সমানভাবে উন্মুক্ত করতে হবে।

সরকারি কাজের ক্ষেত্রেও বৈষম্যের প্রবল আকার ধারন করেছে। বিশেষভাবে ভূমি অফিস, ডি.সি অফিস, কোর্ট ইত্যাদি সকল প্রতিষ্ঠানে প্রবল বৈষম্য দেখা যায়। এই সকল প্রতিষ্ঠানে টাকা ছাড়া কোন কাজ যেন হয়ই না। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে সব চেয়ে বেশি বৈষম্য আমরা দেখতে পায়। সরকারী চাকুরী মানে সোনার হরিন একথাটি অনেক বেশি প্রচলিত আছে। ফলে আমাদের এই পরিস্থীতি থেকে বের হয়ে আসতে হলে নিজেদের সচেতন এবং প্রতিবাদী হয়ে উঠতে হবে।

home-588389_1920.jpg

Image Source

এই সব বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে আওয়াজ তুলতে হবে। নীরব প্রতিবাদ যতই প্রভাব ফেলতে পারে সরাসরি প্রতিবাদ তারচেয়ে আরও বেশি কার্যকরী। তাই আমরা যদি নিজেরাই বৈষম্যকে মেনে নিয়ে নীরব থাকি তবে এটি কখনোই দূর হবে না। আমাদের উচিত সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া। নিজ নিজ জায়গা থেকে প্রতিবাদী হওয়া মানে কেবল কথার মাধ্যমে নয় কাজের মাধ্যমেও বৈষম্যের বিরুদ্ধে দাড়াতে হবে। প্রতিটি ব্যক্তি যদি তার অবস্থান থেকে বৈষম্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে তাহলে একদিন সমাজ থেকে বৈষম্য পুরোপুরি নির্মূল হবে। সমাজ তখন একটি ভারসাম্যপূর্ণ পরিবেশে পরিচালিত হবে যেখানে প্রত্যেকেই তার প্রাপ্য অধিকার ভোগ করবে এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।

বৈষম্য দূর করা কোনো সহজ কাজ নয় তবে এটি অসম্ভবও নয়। শুধুমাত্র আমাদের সচেতনতা, সদিচ্ছা এবং সাহসিকতা প্রয়োজন। যদি আমরা নিজেরা প্রতিবাদী হয়ে উঠি এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই তাহলে একদিন আমরা বৈষম্যহীন সমাজ গড়তে সক্ষম হব। সেই দিনটি খুব দূরে নয় যখন সমাজে সত্যিকার অর্থে সাম্য ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে।

আশা করি আজকের পোস্টটি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করতে ভুলবেন না। আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সামনে আরো নতুন ও আকর্ষণীয় পোস্ট নিয়ে হাজির হবো। ততদিন পর্যন্ত সাথেই থাকুন।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

আজ সমাজের দিকে তাকাতে গেলে রাষ্ট্রের দিকে তাকাতে গেলে আমরা সর্ব ক্ষেত্রেই বৈষম্য লক্ষ্য করে থাকি। আর এই বৈষম্যর মনোভাবটা কার্যকলাপ গুলো মানুষকে তিলে তিলে ক্ষতির দিকে নিয়ে যায় একটা জাতিকে ধ্বংস করে ফেলার অন্যরকম প্রয়াস। তাই যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষা ক্ষেত্র থেকে শুরু করে সর্ব স্থানের বৈষম্য দূর করার চেষ্টা করতে হবে সচেতন জ্ঞান দ্বারা। কারণ সচেতন চিন্তা ধারার মানুষ ছাড়া একটা সুন্দর সমাজ গড়া সম্ভব নয়।

প্রিয় সুমন ভাই কেমন আছেন? আশাকরি ভালই আছেন। সুমন ভাই এখনই সময় প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিবাদ করার। আগে প্রতিবাদ করার তেমন কোন পরিবেশ ছিল না। আর এখন আমরা কিছু না করতে পারলেও প্রতিবাদ করার অনেক সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তাই যদি আমরা সবাই প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে পারি তাহলে অবশ্যয় সমাজ, রাষ্ট্র থেকে বৈষম্য দূর হতে বাধ্য। সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই।