কবিতা আবৃত্তি// কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "হঠাৎ দেখা" কবিতাটির আবৃত্তি।steemCreated with Sketch.

in hive-129948 •  2 years ago 

১০% পে-আউট 'লাজুক-খ্যাক' এর জন্য

স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,

"আসসালামুয়ালাইকুম" আশা করি আপনারা সবাই ভাল আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় ভাল আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "হঠাৎ দেখা" কবিতাটি আবৃতি আকারে শোনানোর চেষ্টা করব।

1_20220919_020351_0000.jpg

আমি সর্বপ্রথম ছোট দাদাকে ধন্যবাদ জানাই এই কারণেই যে ব্ল্যাক দাদার পরপর দুইবার কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার উছিলায় আমি কবিতা আবৃত্তি উপরে বেশ উৎসাহ ফিরে পেয়েছি। কারণ আমার আগে খুব একটা কবিতা আবৃত্তি উপর আগ্রহ ছিল না। এছাড়াও বড় দাদা ও বৌদির বেশ কিছু অসাধারণ অসাধারণ কবিতা যা আমাকে খুবই মুগ্ধ করেছে এবং সেই সাথে অনেক বেশি উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে। সত্যি বলতে আগে কবিতা আবৃত্তি তেমন একটা আগ্রহ নিয়ে করতাম না, কিন্তু এখন খুবই উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে আবৃত্তি করি এবং আবৃত্তি শুনতেও খুব ভাল লাগে।

সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে আমার বাংলা ব্লগের সকলের এতটা উৎসাহ ও অনুপ্রেরনার কারনে আমিও কবিতা আবৃত্তির মাঝে নিজেকে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। আসলে কবিতা আবৃত্তি যারা সব সময় করে, কবিতা আবৃত্তির মাহাত্ম্যটা শুধু তারাই বুঝতে পারে। এখানে আমি আমার সাধ্যমত আবৃত্তি করে আপনাদেরকে বিনোদন দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আশা করি আমার আজকের এই কবিতা আবৃত্তিটি আপনাদের ভালো লাগবে।


আমি প্রায় সময় কবিতা আবৃত্তি শুনে থাকি ইউটিউব থেকে, কেন যেন হঠাৎ এই কবিতাটিও আমার এতটা ভালো লেগেছে বলে বোঝাতে পারবো না। তাই আমি আপনাদের মাঝে আমার ভালোলাগা থেকে কবিতা আবৃত্তি করে শোনানোর চেষ্টা করলাম। আর তাছাড়া কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কবিতা গুলো এতটা অর্থবহ ও এতটা আনন্দদায়ক যা পড়ে মুগ্ধ হই, বলে বোঝানো সম্ভব নয়। তাহলে চলুন আমার মুখে আবৃতি আকারে কবিতাটি শুনে নেবেন। আশা করি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।

কবিতার লিরিক

🌹 হঠাৎ দেখা🌹

________কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর❤

রেলগাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা,
ভাবি নি সম্ভব হবে কোনোদিন।

আগে ওকে বারবার দেখেছি
লালরঙের শাড়িতে
ডালিম ফুলের মতো রাঙা;
আজ পরেছে কালো রেশমের কাপড়,
আঁচল তুলেছে মাথায়
দোলনচাঁপার মতো চিকনগৌর মুখখানি ঘিরে।
মনে হল, কালো রঙে একটা গভীর দূরত্ব
ঘনিয়ে নিয়েছে নিজের চার দিকে,
যে দূরত্ব সর্ষেখেতের শেষ সীমানায়
শালবনের নীলাঞ্জনে।
থমকে গেল আমার সমস্ত মনটা;
চেনা লোককে দেখলেম অচেনার গাম্ভীর্যে।

হঠাৎ খবরের কাগজ ফেলে দিয়ে
আমাকে করলে নমস্কার।
সমাজবিধির পথ গেল খুলে,
আলাপ করলেম শুরু —
কেমন আছ, কেমন চলছে সংসার
ইত্যাদি।

সে রইল জানলার বাইরের দিকে চেয়ে
যেন কাছের দিনের ছোঁয়াচ-পার-হওয়া চাহনিতে।
দিলে অত্যন্ত ছোটো দুটো-একটা জবাব,
কোনোটা বা দিলেই না।
বুঝিয়ে দিলে হাতের অস্থিরতায় —
কেন এ-সব কথা,
এর চেয়ে অনেক ভালো চুপ করে থাকা।

আমি ছিলেম অন্য বেঞ্চিতে
ওর সাথিদের সঙ্গে।
এক সময়ে আঙুল নেড়ে জানালে কাছে আসতে।
মনে হল কম সাহস নয়;
বসলুম ওর এক-বেঞ্চিতে।
গাড়ির আওয়াজের আড়ালে
বললে মৃদুস্বরে,
“কিছু মনে কোরো না,
সময় কোথা সময় নষ্ট করবার।
আমাকে নামতে হবে পরের স্টেশনেই;
দূরে যাবে তুমি,
দেখা হবে না আর কোনোদিনই।
তাই যে প্রশ্নটার জবাব এতকাল থেমে আছে,
শুনব তোমার মুখে।
সত্য করে বলবে তো?

আমি বললেম, “বলব।”
বাইরের আকাশের দিকে তাকিয়েই শুধোল,
“আমাদের গেছে যে দিন
একেবারেই কি গেছে,
কিছুই কি নেই বাকি।”

একটুকু রইলেম চুপ করে;
তারপর বললেম,
“রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।”

খটকা লাগল, কী জানি বানিয়ে বললেম না কি।
ও বললে, “থাক্‌, এখন যাও ও দিকে।”
সবাই নেমে গেল পরের স্টেশনে;
আমি চললেম একা।
উৎস

কবিতার পটভূমিঃ

এই কবিতায় কবি এখানে একজন চেনা মানুষকে অনেকদিন পর রেল লাইনের কামরায় দেখা হওয়ার তার যে অনুভূতি সেটাই প্রকাশ করেছেন। লোকটি কখনোই ভাবতে পারেনি যে এভাবে তার সাথে দেখা হয়ে যাবে কোন একদিন। যদিও আগের সে থাকে লাল রংয়ের শাড়িতে ডালিম ফুলের মত সৌন্দর্যে প্রায় দেখতো কিন্তু আজ তাকে কালো রেশনের কাপড়ে দেখতে পেয়ে এবং তার চেহারার অবস্থা দেখে তিনি বুঝতে পারলেন যে সে এখন আগের মত নেই এবং তিনি এটাও বুঝে নিয়েছেন যে কাল গভীর রং কে সে গভীরভাবে আঁকড়ে ধরেছে। তাই তিনি খুবই হতাশ হয়ে এটাই বলছেন যে চেনা লোককে অচেনা লোকের মতই লাগছে দেখতে।

সেও তাকে দেখে পত্রিকাটা হাত থেকে ফেলে তাকে নমস্কার জানানোর পর তিনি সমাজের বিধি নিষেধ ভুলে গিয়ে আলাপচারিতায় বসে গেল এবং তার খোঁজখবর নেওয়া শুরু করল। যদিও সে গভীর চিন্তায় জানালার দিকে বাইরে তাকিয়ে দু একটা প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে তারপরও সে বলতেছে এসব কথা কেন হচ্ছে, এর চাইতে কি চুপ থাকা অনেক ভালো নয়। এরপরেও সে তাকে পাশে ডেকে বসিয়ে মৃদুস্বরে বলল, সময় কোথায় সময় নষ্ট করার। তারপর তিনি তাকে বললেন আমি পরের স্টেশনে নেমে যাব হবে না তোমার সাথে আর কোনদিন দেখা তুমি যাবে অনেক দূরে তাই এতদিনের না বলা কথা গুলোর উত্তর দেবে। তখন সে তাকে বলে অবশ্যই বলব। আগের দিন কি সব গেছে চলে আর কিছু নেই বাকি। তারপর তিনি কিছুটা চুপ হয়ে গিয়ে বললেন আকাশের সব তারাই থাকে দিনের গভীর আলোর ভিতরে। এত চমৎকারভাবে উত্তর দিয়ে তিনি নিজেই খটকা লেগে গেল এরপর সেখান থেকে তাদের বিদায় হয়ে গেল। পরিশেষে বলবো এভাবে হঠাৎ দেখা আগের চেনা মানুষগুলোকে কবি এই কবিতার মাঝে ভীষণভাবে তাদের অনুভূতিগুলো ফুটিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন।

জানিনা কতটুকু তুলে ধরতে পেরেছি কবিতাটি আবৃত্তির মাধ্যমে। সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার কবিতা আবৃত্তিটি শোনার জন্য। ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। অবশ্যই মন্তব্য করে জানাবেন কেমন হয়েছে।

শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
তারিখঃ ১৯-০৯-২০২২ ইং

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Hello friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

এই কবিতাটি আমি সর্বপ্রথম শুনেছিলাম প্রাক্তন মুভিতে সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এর মুখে দারুণ লেগেছিল। আজ আপনার মুখে শুনলাম। কবিতা টা আমার অনেক পছন্দের। দারুণ আবৃত্তি করেছেন ভাই। বেশ ভালো 💕💕।।

ভাইয়া আপনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের খুব সুন্দর একটি কবিতা আবৃত্তি করেছেন। কবিতাটি আমি আগে কখনো শুনিনি। আপনার কন্ঠে আবৃত্তি শুনে খুবই ভালো লাগলো। যেমন সুন্দর এই কবিতাটি তেমন আপনার আবৃত্তি। অসাধারন ভাইয়া।

প্রথমে ধন্যবাদ জানাই এই কবিতাটা আবৃত্তির জন্য নির্বাচন করায়। আমার অসম্ভব প্রিয় একটা কবিতা এটা। আপনার গলায় বেশ ভালো লাগলো। তবে মিথ্যা বলব না বারবার সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায় এর সেই আবৃত্তিটা মনে পড়ছিল খুব। মাঝে মাঝে যে এভাবে আবৃত্তি করেন এটা সত্যিই অনেক ভালো লাগে আমার কাছে। সামনে আবার কোন সুন্দর কবিতা আবৃত্তির অপেক্ষায় রইলাম।

আপনার আবৃত্তি করা কবিতাটি শুনে অনেক ভালো লাগলো। খুব চমৎকার ছিল আপনার আবৃত্তির ভাবটা। আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ ভাইয়া।