১০% পে-আউট 'লাজুক-খ্যাক' এর জন্য
স্টিমিটের সহযোদ্ধারা,
আসসালামু আলাইকুম, সবাইকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানাই। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভালই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আমিও আপনাদের দোয়ায় বেশ ভাল আছি।
মানুষ যে যেভাবে তার চলাফেরা খাওয়া-দাওয়া বলতে গেলে তার সবকিছুই সে যেভাবে পরিচালনা করে এবং সেভাবেই সেটা অভ্যাসে পরিণত হয়। যদিও মানুষ চাইলে সে অভ্যাসটাকে পরিবর্তন করতে পারে তবে সেটা সাথে সাথে করতে গেলে মানুষের একটু কষ্ট হয়। তবে একটা সময় সে অভ্যাসটাকে পরিবর্তন করে ফেলতে পারে। এই জন্যই আমাদের সমাজে একটা প্রথা চালু রয়েছে আমরা কথায় কথায় বলে থাকি মানুষ অভ্যাসের দাস। আজকে আমি আপনাদের সামনে আমার সাথে ঘটে যাওয়া এরকম একটি বাস্তব ঘটনা শেয়ার করতে যাচ্ছি তবে সেটি অবশ্য মানুষের এই অভ্যাস এর সাথে সম্পর্কিত। বর্তমানে দেশে যেভাবে মশা বেড়েই চলেছে মশার অসহ্য যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ হয়ে আমার এই অতীতের একটি ঘটনা মনে পড়ে গেল। সেটাই আপনাদের মাঝে শেয়ার করছি।
ঘটনাটি ২০০০ সালের, আমি তখন মাত্র এসএসসি পরীক্ষা শেষ করে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছি মামার কম্পিউটার দোকানে কম্পিউটার শিখবো বলে। যেহেতু এসএসসি পরীক্ষার পর ২/৩ মাস একটা বড় গ্যাপ থাকে সেটাকে কাজে লাগানোর জন্যই মূলত আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় মামার কাছে এসেছিলাম। মামার কম্পিউটার, ফটোকপি ফোন ফেক্সের দোকান ছিল ঢাকা কাকরাইলে। আমি চট্টগ্রাম থেকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেই রাত ১১:০০ টার গাড়িতে করে। ঢাকা পৌছাতে পৌছাতে রাত তখন ৩:৩০ বাজে। যেহেতু মামার বাসা কাকরাইলের ছিল আর আমি মামার বাসা চিনতাম না, তাই আমি শনিআখরা নেমে পড়ি সেখানে আমার একটা নানার বাসা ছিল। আমি সেখানে এর আগেও এসেছিলাম তাই নানার বাসাটা চিনতাম। তো সেই কারণেই নানার বাসায় উঠার জন্যই মামা বলেছিল সেখান থেকে আমাকে মামা' নিয়ে যাবেন, এভাবেই আমাদের কথা হয়েছিল। তাই আমি সেই নানার বাসায় রাত সাড়ে তিনটের সময় গিয়ে পৌঁছায়। যদিও মামা সেই নানাকে আগে থেকে বলে রেখেছিলেন।
তারপর আমি বাসায় গেলাম হাত-মুখ ধুয়ার পর নানু আমাকে খেতে দিয়েছিল। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে নানু আমাকে বললেন উনার বড় ছেলের সাথে আমাকে গিয়ে শুয়ে থাকার জন্য। আমিও গেলাম শোয়ার জন্য, পরে মামা কিছুটা জেগেছিল আমাকে খোঁজ খবর জিজ্ঞাসা করল, বাসার সবাই কেমন আছে জিজ্ঞাসা করল। আমিও বললাম জি মামা আলহামদুলিল্লাহ সব ঠিকঠাক আছে। এরপর মামা আমাকে বলল যে ঠিক আছে, তুই আমার পাশে শুয়ে যা। আমিও মশারিটা তুলে খাটে উঠে শুয়ে গেলাম। যেহেতু জার্নি করে এসেছিলাম প্রচুর ক্লান্ত লাগছিল এবং ঘুমের অনেক প্রেসার ছিল। আমি শোয়ার ১ মিনিটের মধ্যে সেই যে কি মশা। এত মশা মশারির ভিতর আমিতো দেখে অবাক হয়ে গেলাম, বাইরে যে রকম মশা ঠিক মশারির ভিতরেও একি রকম মশা। অথচ দেখেন মামা এই মশারির ভিতরে শুয়ে শুয়ে নাক ঢেকে ঘুমচ্ছে। এই অবস্থা দেখে তো আমার একেবারেই ঘুম আসছিল না। একবার মশারি থেকে বের হয়ে গিয়ে সোফায় বসি সোফায় এক মিনিট বসলে মনে হচ্ছে যেন মশা আমাকে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আবার তাড়াতাড়ি করে মশারির ভিতরে ঢুকে বসে কি করবো বুঝতে পারছিলাম না। মামাকে ডাক দিব তাও বুঝতে পারছি না। এভাবে বেশ কিছুক্ষন কেটে গেল, আমার আর ঘুমই আসছে না।
তারপর হঠাৎ মামা কিছুটা জেগে গিয়ে আমাকে জিজ্ঞাসা করল কিরে ঘুমাস না কি সমস্যা তোর?
আমি তখন মামাকে বললাম মামা আপনি কিভাবে ঘুমাচ্ছেন এত মশার মধ্যে? আপনি দেখেন বাইরে যে রকম মশা, মশারির ভিতরেও সেই রকম মশা। মামা তখন বলল আরে বোকা আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে, তাছাড়া এই মশাগুলো আমাদের রক্ত খায় না আমাদেরও তেমন সমস্যা হয় না। আমরা অভ্যাসে পরিনত হয়েছি তাই কোনো সমস্যাই নেই। এই কথা বলে মামা আবার ঘুমিয়ে গেলেন, কিন্তু আমি আর সারাটা রাত ঘুমাতে পারলাম না যেহেতু রাতের অর্ধেকটা সময় গাড়িতে কেটেছিল তাই অল্প কিছু সময় বাকি ছিল সেজন্য এ যাত্রায় মশার হাত থেকে আমি বেঁচে গেলাম।
এই বিষয়টির উপরে আমি আপনাদেরকে বুঝাতে চেয়েছি যে মানুষ অভ্যাস করলে রক্ত খেকো মশার কামড়ও মানুষ অভ্যাসে পরিণত করতে পারে। কিন্তু আমার অভ্যাস ছিল না তাই আমি একটা মশার কামড় ও সহ্য করতে পারলাম না।
তো বন্ধুরা আজ তাহলে এ পর্যন্তই আশা করি আমার এই গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে। তো সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন নিজের দিকে খেয়াল রাখবেন আর আমার জন্য দোয়া করবেন।
আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদেরকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছান্তে,@alauddinpabel
আমি আলাউদ্দিন পাবেল।
গাজীপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে।
তারিখঃ ০৪-০৪-২০২২ ইং
আসলেই ঠিক বলেছেন মানুষ অভ্যাসের দাস। কোন একটা কিছু অভ্যাস হয়ে গেলে নিজের সাথে সহ্য হয়ে গেলে সেটি কি আর তেমন কিছু মনে হয় না। যাইহোক এত সুন্দর একটা লেখা আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাই আমার পোস্টটি পড়ে আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মানুষ সত্যিই অভ্যাসের দাস। মশা দিয়ে উদাহরন টা ভালো লেগেছে ভাই। ভালো লিখছেন আপনি। ভালোবাসা আপনার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাদের ভাল লাগাই আমার সার্থকতা। অসংখ্য ধন্যবাদ পাশে থেকে উৎসাহ প্রদানের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার উদাহরণটি পড়ে আমার খুবই ভালো লাগলো। আসলেই মানুষ অভ্যাসের দাস। আপনি খুবই সুন্দর ভাবে এটা উপস্থাপন করেছেন। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ এই ধরনের পোস্ট আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
খুবই ভালো লাগলো আমার পোস্টটি আপনার কাছে ভালো লেগেছে। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান সময় ব্যয় করে পোস্টটি পড়ে গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit