যুগে যুগে মানুষের ওপর রোজা ফরজ। হজরত আদম আলাইহিস সালাম প্রত্যেক মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ রোজা পালন করতেন। যা হজরত নুহ আলাইহিস সালামের সময় পর্যন্ত বিদ্যমান ছিল।
এভাবে হজরত দাউদ আলাইহিস সালামসহ অনেক নবি-রাসুলই রোজা বিধান পালন করেছেন। শুধু তা-ই নয়, ইসলাম ছাড়াও অন্যান্য ধর্মের লোকেরাও উপোস করে থাকেন।
সর্বশেষ আল্লাহ তাআলা উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য পুরো রমজান মাস জুড়ে রোজা পালনকে বিধান করে দিয়েছেন। কুরআনে পাকে আল্লাহ তাআলা ঘোষণা করেন-
‘হে ঈমাদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা পালন করাকে আবশ্যক করেছেন। যেভাবে তোমাদের আগের লোকদের ওপর রোজা পালন করা আবশ্যক ছিল। যাতে তোমরা (রোজা পালনে) তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় অর্জন করতে পার।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৩)
কুরআনের পরবর্তী আয়াতে আল্লাহ তাআলা অসুস্থ ও মুসাফিরদেরকে রোজার এ বিধান থেকে অব্যহতি দেন। আর বলেন, ‘রমজান মাস। যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে। যাতে ছিল মানুষের জন্য হেদায়েত।’ (সুরা বাকারা : আয়াত ১৮৫)’
হাদিসে পাকে রমজানের রোজার আবশ্যকতা তুলে প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঘোষণা করেন-
হজরত তালহা ইবনে উবায়দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, (একবার) এলোমেলো চুলসহ এক গ্রাম্য আরব প্রিয় নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের কাছে আসলেন। অতঃপর বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসুল! আমাকে বলুন, আল্লাহ তাআলা আমার ওপর কত রাকাআত নামাজ ফরজ করেছেন?
তিনি বললেন, ‘পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ; তবে তুমি যদি কিছু নফল আদায় কর তবে তা স্বতন্ত্র।’
তারপর সে ব্যক্তি বলল, আমাকে বলুন, আল্লাহ আমার ওপর কত সিয়াম ফরজ করেছেন?
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘রমজান মাসের সাওম বা রোজা; তবে তুমি যদি কিছু নফল রোজা আদায় কর তবে তা স্বতন্ত্র কথা।’
তারপর তিনি বললেন, বলুন, আল্লাহ আমার ওপর কী পরিমাণ জাকাত ফরজ করেছেন?
রাবি বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁকে ইসলামের বিধান জানিয়ে দিলেন। এরপর তিনি বললেন, ‘ওই সত্ত্বার কসম! যিনি আপনাকে সত্য নবি করে সম্মানিত করেছেন।
(লোকটি বলল) আল্লাহ আমার ওপর যা ফরজ করেছেন, আমি এর মাঝে কিছু বাড়াবো না এবং কমাবোও না।
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সে সত্য বলে থাকলে সফলতা লাভ করবে কিংবা বলেছেন, সে সত্য বলে থাকলে জান্নাত লাভ করবে।’ (বুখারি)
কুরআন এবং হাদিসের নির্দেশনা অনুযায়ী রমজান মাসব্যাপী রোজা পালন করা আল্লাহর বিধান ও ফরজ তথা আবশ্যক ইবাদত। যারা এ ইবাদত যথাযথ পালন করবে, তাদের জন্য পরকালের সফলতা তথা জান্নাত লাভ সুনিশ্চিত।