"আমার বাংলা ব্লগ" 🌹প্রতিযোগিতা -২২ // 🌹আমার প্রথম মোবাইল ফোন হাতে পাওয়ার অনুভূতি।🌹[10% shy-fox]💗💗💗

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম/আদাব


হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @alif111, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের এডমিন এবং মডারেটরদের অসংখ্য ধন্যবাদ। যারা সুন্দর একটি প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে।বিশেষ করে আমার প্রথম মোবাইল ফোন পাওয়া অনুভূতি এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শেয়ার করতে পারবো।তাই আমি খুবই আনন্দিত। আসলেই এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে আমরা আমার বাংলা ব্লগ পরিবারের সকল সদস্য অনুভূতি জানতে পারব। তাই এই প্রতিযোগিতাটি আমার খুবই ভালো লেগেছে।আজকে আমি আপনাদের মাঝে আমার জীবনের প্রথম মোবাইল ফোন পাওয়ার অনুভূতি শেয়ার করতে এসেছি।আশা করছি আমার অনুভূতিটা আপনাদের ভালো লাগবে।


android-gc9439a9c3_1920.jpg


আমার জীবনে প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতিটা ছিল অনেক আনন্দের। আসলে আমি যখন ক্লাস এইটে পড়ি তখন আমার বন্ধুদের মধ্যে অনেকেই মোবাইল রয়েছে এবং তারা অ্যান্ড্রয়েড ফোন ব্যবহার করে। সেই ফোনে অনেক রকমের গেম রয়েছে। আর এই গেম গুলো দেখে আমার মোবাইলের প্রতি যেন একটা নেশা হয়ে গেল। আমি মোবাইল কিনার জন্য বায়না করতাম। কিন্তু বাবার সামনে বলতে সাহস পেতাম না।মাকে সব সময় বলতাম। আমাকে মোবাইল কিনে দাও। না হলে আমার পড়াশোনা হচ্ছে না। মা বলল জেএসসি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করলে তোকে আমি মোবাইল কিনে দেবো। কিন্তু জেএসসি পরীক্ষা পর্যন্ত আর আমার তর সইছে না। কি করব এভাবেই প্রতিদিন বলতে থাকলাম। তারপরে এভাবে চলতে থাকলো চারটি মাস।তারপরে একদিন আমার ইস্কুলে আমার বন্ধুর মোবাইল দিয়ে আমি গেম খেলা দেখতে ছিলাম এবং তারপর ফোনটি নিয়ে আমিও খেলাটা খেলতে লাগলাম।হঠাৎ ফোনটি আমার হাত থেকে পড়ে যায় এবং ফোনটা একটু ফেটে যায়। সেই নিয়ে বন্ধু আমাকে অনেক কথা বলেছিল। ঐদিন খুব খারাপ লেগেছিল। ভেবেছিলাম আজকে বাড়িতে বলে ফোন কিনবো। যদি ফোন কিনে না দেয় তাহলে আমি স্কুলে আসবো না। মার কাছে বায়না করলাম। অনেক কান্না করে বললাম। যে আমাকে ফোন কিনে দাও। আমি ভালো রেজাল্ট করব প্লিজ মা আমাকে ফোন কিনে দাও। অনেক জোরাজুরি পর মা রাজি হল না। তারপরে আমি দুপুরের খাবার না খেয়ে বাইরে চলে গেলাম।



তারপরে আমি রাগ করে আমাদের পুকুর পাড়ে একা একা বসে আছি। মা আমাকে অনেক খুঁজে পায় নাই। পরে বিকেল পাঁচটার দিকে এসে দেখে আমি পুকুর পাড়ে বসে আছি। তখন মা আমার কাছে আসলো এবং আমাকে হাত ধরে বাড়িতে নিয়ে গেল এবং আমাকে খেতে বলল। আমি খেলাম না। না খেয়ে আমি শুয়ে থাকলাম। মা বারবার জোর করলো তাও খেলাম না। পরে মা বলল ভাত খেয়েনে আমি তোর ফোনে ব্যবস্থা করছি।মার কথা শুনে মনে হল না মা সত্যিই আমার জন্য ব্যবস্থা করবে। তাই অনেক খুশি হলাম এবং আমি ভাত খেয়ে ঐদিন সকল কথা শুনতে লাগলাম।পরের দিন আমি স্কুলে যাইনি। স্কুলে না গিয়ে শুয়ে আছি। মা বলল ঠিক আছে আমি তোর মামা বাড়ি যাব। তুই এখানে থাক, আমি আজকেই আসবো।আমি বললাম ঠিক আছে মা।মা সকালবেলায় মামা বাডি গিয়েছে। মামা বাড়ি গিয়ে আমার ছোট মামাকে সাথে নিয়ে মার্কেটে গিয়ে, স্যামসাং এম থার্টি ওয়ান একটি ফোন কিনেছে এবং সেই ফোনটি কিনে আবার বাড়িতে এসেছে। বিকেলবেলা আমি হাত মুখ ধুয়ে খাবার খেয়ে বসে ছিলাম। মা বলল আলমারিটা খোলো। ভিতরে একটা গিফট আছে ওটা তোমার।মার কথা শুনে বুকের ভিতর একটা ধাক্কা লাগল। আমি দৌড়ে এসে আলমারি খুলে দেখি প্যাকিং করা।আমি তাড়াতাড়ি করে প্যাকিং খুলতে লাগলাম।



গিফটটা আমি তাড়াতাড়ি খুলে দেখলাম গিফটের ভিতরে স্যামসাং এম থার্টি ওয়ান মোবাইল। মোবাইলটা দেখে আমি সত্যি অবাক হয়ে গেছি। আমার মুখের ভাষা হারিয়ে গেছে। আমি বললাম মা এটা কি সত্যি আমার। মা বললে বাবা এটি তোর তুই আমার একটিমাত্র ছেলে। মোবাইলের জন্য খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দিয়েছে।আমি বললাম আমি এত দামি ফোন চাইনি, আমি কখনোই কল্পনা করিনি তুমি আমাকে এত দামি মোবাইল কিনে দিবা। আমি ভাবছি নরমাল একটা ফোন। এই ফোনটা তুমি আমাকে দিয়েছো। এই বলে মাকে আমি জড়িয়ে ধরলাম এবং মাকে আমি চুমু খেলাম। মা বলল আমি জানি আমার ছেলে আর কিছু করলেও কোনো খারাপ কাজ করবে না। তাই আমি তাকে ভালটায় দিয়েছি।যেটা চেয়েছো তার চেয়ে আরও বড় কিছু দিয়েছি। বিনিময় তুমি আমাকে উপহার দিবা ভালো রেজাল্ট। আমি বললাম মা তুমি আমার প্রতি বিশ্বাস রাখো তুমি আমাকে যে গিফট দিয়েছো, আমি জীবনে ভুলবো না। আজকে আমার খুবই আনন্দের দিন। আর আনন্দের দিনে তোমাকে আমি কথা দিলাম আমার রেজাল্ট ভাল করে তোমার মুখে আমি হাসি ফোটাবো। সত্যিই ঐ মুহূর্তটা যে কত আনন্দের ছিল। আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারবো না।মার কাছ থেকে আমার জীবনের প্রথম মোবাইল গিফট পেয়েছি। ওই দিনের অনুভূতিগুলো আমার মনের মধ্যে জমা হয়েছিল। আজকে শেয়ার করতে পেরে খুবই ভালো লাগছে।

আমার জীবনের প্রথম মোবাইল পেয়েছি আমার মায়ের কাছ থেকে। যে মোবাইল আমি আশা করেছিলাম। তার চাইতে হাজারগুণ ভালো মোবাইল আমাকে দিয়েছিল। আসলে ওই মুহূর্তেটা খুবই আনন্দের ছিল। ওই দিনটা আমি কখনো বলবো না। আর এই মোবাইলটা আমি আমার কাছে সারা জীবন রেখে দেবো। যদি এই মোবাইলটা কোনদিন নষ্ট হয়ে যায়। তাও মোবাইলটা আমি খুবই যত্ন সহকারে রেখে দেবো। আসলে আমার প্রথম মোবাইল পাওয়ার অনুভূতিটা আমার কাছে শ্রেষ্ঠ অনুভূতি। এর চেয়ে ভালো অনুভূতি আমার জীবনে আর কখন আসবে কিনা সেটা আমি জানিনা। হয়তো এর চাইতে ভালো অনুভূতি আমি আর জীবনে কখনো পাবো না। আশা করছি আমার অনুভূতিটা আপনাদের ভাল লেগেছে।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG_20211118_120137.jpg

আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।🌹🌻🌻🌹

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

মোবাইল কেনার জন্য খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেয়া, স্কুলে না যাওয়া যদিও পন্থাগুলো ভাল ছিল না কিন্তু মজার ছিল। আপনার জীবনে প্রথম মোবাইল হাতে পাওয়ার অনুভূতি পড়ে ভাল লেগেছে ভাই। ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার সুন্দর মতামতের জন্য ধন্যবাদ

আপনার মোবাইল ফোন পাওয়ার অনুভূতি জানতে পেয়ে খুবই ভালো লাগলো আসলে মায়ের কাছ থেকে প্রথম মোবাইল ফোন পাওয়ার অনুভূতি এটি সত্যিই অসাধারণ। আসলে মা-রা সবসময় সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে চাই। আপনার অনুভূতিটা আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে।

আপনার মতামতের জন্য ধন্যবাদ

মা আসলে এমনই হয়। সন্তানের মনের আশা পূরণ না হলে মা নিজেই কষ্ট পায়।

ঠিক বলেছেন ভাই, হাজার কষ্ট হলেও মা সন্তানের মুখে হাসি ফোটাতে চেষ্টা করে