শীতকালে বাবার সাথে খেজুরের রস খাইতে যাওয়ার অনুভূতি //পর্ব-৩

in hive-129948 •  8 days ago 

আসসালামুআলাইকুম/আদাব

হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশাকরি সকলেই ভালো আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় খুব ভাল আছি। আমি @alif111, বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগ থেকে।


শীতকালে খেজুরের রস খাওয়ার মুহূর্তগুলো সত্যিই অসাধারণ। যার কারণে যখনই শীতকাল আসে তখনই আমি বন্ধুদের সাথে খেজুরের রস খেতে যায়।আর এই খেজুরের রস খেতে যাওয়ার মুহূর্তগুলো মনে করিয়ে দেয় বাবার সাথে প্রথম খেজুরের রস খেতে গিয়েছিলাম। সেই স্মৃতিময় মুহূর্তগুলো, তাই আপনাদের সাথে স্মৃতির পাতায় থেকে বাবার সাথে খেজুরের রস খেতে যাওয়ার সেই স্মৃতি গল্পটি শেয়ার করতেছিলাম। আজকে এই গল্পের শেষ পর্ব নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হলাম। আশা করছি আমার এই গল্পটি শেষ পর্ব পড়ে আপনাদের ভালো লাগবে।


father-and-son-8828819_1280.jpg



বাবার সাথে সেই খেজুরের বাগানে গিয়ে আমি আনন্দের সাথে খেজুরের রস খেলাম, আসলে খেজুরের রস আমাদের জ্বাল দিয়ে দিয়েছিলো, যার কারণে খেতে আমি অনেক বেশি মজা পেয়েছিলাম। গাছ থেকে খেজুরের হাড়িপাড়ার দৃশ্য অসাধারন ছিল। তারা এই খেজুরের রস আমাদের সামনে জ্বাল দিয়ে খেজুরের গুড় বাড়িয়ে দিল। আর এই খেজুরের গুড় খেতে অনেক বেশি মজা লেগেছিলো, যার কারণে বাড়ির জন্য খেজুরের রস আর খেজুরের গুড় দিয়ে আমরা মোটরসাইকেল করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। তো রাস্তার মধ্যে আসার সময় একটু আগেই দেখতে পেলাম আমাদের সাথে যারা মোটরসাইকেল দিয়ে গিয়েছিল তারা একটি ব্রিজের পাশে এক্সিডেন্ট করেছে।


বাবা তখন মোটরসাইকেল থামিয়ে সেখানে গেল, গিয়ে দেখতে পেল একজনের হাত ভেঙে গেছে, আর একজন রাস্তায় শুয়ে রয়েছে এবং সবাই তাকিয়ে রয়েছে। আসলে রাস্তায় একটি কুকুর ছিল আর তাদের মোটরসাইকেলে অনেক স্পিড ছিল এই কুকুরের সাথে আঘাত লেগে রাস্তায় পড়ে গেছে, আর যার হাত ভেঙ্গে গেছে, তার ব্রিজের সাথে আঘাত লেগে হাতটা ভেঙ্গে গেছে। অল্পের জন্য এসে ব্রিজের নিচে পড়ে যায়নি এবং যে মোটরসাইকেল চালাচ্ছিল সে যেন অজ্ঞান হয়ে আছে। বাবা আশেপাশে মানুষদের বলল এরা আবার পরিচিত আপনারা একটু সাহায্য করুন, তখন বাবা তাদের সাথে সাহায্য করে তাদেরকে ভ্যানে করে উঠিয়ে হসপিটালে দিকে নিয়ে গেল। হাসপাতালের দিকে যেতে হবে, তখন মোটরসাইকেল নিয়ে আমরাও হসপিটালে আসলাম।

হাসপাতালে এসে ইমারজেন্সি ভাবে ভর্তি করানো হলো এবং যার হাত ভেঙেছে তার হাতেতে প্লাস্টার করে দেওয়া হলো। আর যে অজ্ঞান হয়ে আছে, তাকে রক্ত দিতে হবে, তাই বাবার রক্তের গ্রুপের সাথে মিলে গিয়েছিল। তাই বাবা তাকে রক্ত দিয়ে এলো এবং বাবা ফোন করে তার বাড়ির লোকজনকে আসতে বলল এবং হাসপাতালে লোকজন বলল আপনারা একটু কিছুক্ষণ এখানে থাকুন, তার পরিবারের সবাই আসলে তারপরে আপনারা বাড়ি যেতে পারবেন। আসলে তখন তাদের পাশে কেউ ছিল না। যার কারণে আমাদের সেখানে কিছুক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখলো। তখন বাবা রক্ত দেওয়ার পরে সেখানে শুয়ে ছিল। আসলে বাবারে রক্ত দেওয়ার দৃশ্যটি দেখে আবার অনেক ভয় হয়েছিলো।


তারপরে তাদের বাড়ির সবাই আসলো এসে বাবাকে অনেক ধন্যবাদ জানালো। যে আপনি ছিলেন বলেই, আসলে তারা আমার ওইভাবে পরিচিত ছিল না। রস খাওয়ার নিয়ে আসার জন্যই রাস্তার ভিতরে পরিচয় হয়েছিলো। বাবা বলল যে এই জন্যই আমি তোমাকে অন্য কারো কাছে রস খাইতে আসতে মানা করি। কারণ এখানে সকালবেলা আসতে হয় এবং আসতে অনেকেই এক্সিডেন্ট করে, তাই সাবধানতার সাথে আমাদের মোটরসাইকেল চালিয়ে আসতে হবে। আর বাবা বলল যে মানুষের সেবায় নিজেকে বিলিয়ে দিও, কারণ তাদের সাখে আমাদের রক্তের কোন সম্পর্ক নেই। রাস্তায় মধ্যে পরিচয় হয়েছে। তাই আমি তাদের সাহায্য করলাম। তাদের অনেক বড় উপকার হয়েছে। না হলে তাদের অনেক কষ্ট হয়ে যেত। বাবার এই কথাটি আমার আজও মনের ঘরে।মানুষ সেবা করবা নিঃস্বার্থভাবে।

banner-abbVD-1.png

আমার পরিচয়

IMG-20240117-WA0007.jpg
আমার নাম মোঃআলিফ আহমেদ।আমি বাংলাদেশের রাজশাহী বিভাগে সিরাজগঞ্জ জেলায় বসবাস করি। আমি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে নিজেকে গর্বিত মনে করি। আমি আমার জন্মভূমিকে খুবই ভালোবাসি। আমি সিরাজগঞ্জ সরকারি কলেজের একজন ছাত্র। আমি ছোট বেলা থেকেই আর্ট করতে পছন্দ করি।তাই অংকন করতে আমার খুব ভালো লাগে।তাই আমি সময় পেলেই বিভিন্ন চিত্র অংকন করি।বিভিন্ন জায়গায় ভ্রমন করতে ও ফটোগ্রাফি করতে আমার খুবি ভালো লাগে।🌼💖🌼

সবার প্রতি শুভেচ্ছা রইল এবং আমার পোস্টটি সমর্থনকারী সকল বন্ধুদের বিশেষ ধন্যবাদ।🌹🌻

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

XRecorder_14122024_200500.jpg

XRecorder_14122024_200708.jpg

XRecorder_14122024_200615.jpg

শীতকাল সিজনটা আমাদের কম বেশি সবার কাছে প্রিয় হয়ে থাকে। বিশেষ করে শৈশবের স্মৃতিগুলো আমাদের অনেক বেশি আনন্দ দেই। আপনি খুব সুন্দর একটি স্মৃতিচারণ করলেন। বাবার সাথে খেজুর রস খাওয়ার মুহূর্ত শেয়ার করলেন। অনেক ভালো লাগলো আপনার এত সুন্দর স্মৃতি পড়ে।

দেখতে দেখতে আপনি তিনটি পর্ব আমাদের মাঝে ইতিমধ্যে শেয়ার করেছেন। শীতকালে বাবার সাথে খেজুরের রস খাইতে যাওয়ার খুব সুন্দর একটা মুহূর্ত পড়ে বেশ ভালো লাগলো।এর আগের দুইটি পর্ব আমি পড়েছি। আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে। শীতকালটা কম বেশি আমাদের সবার কাছেই অনেক ভালো লাগে। শীতকালে খেজুরের রস খেজুরের গুড় ও পিঠাপুলি খাওয়ার ধুম পড়ে যায়। শীতের সকালে মিষ্টি রোদ আমার কাছে অসম্ভব ভালো লাগে। সুন্দর একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ ভাই। আশা করি খুব শীঘ্রই আপনি পরবর্তী পর্ব আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।