হ্যালো স্টিমিট বন্ধুরা, আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে আপনারা অনেক ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়া, ভালোবাসা এবং আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানীতে অনেক ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। আজ আমি ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি। আমার এই ভারাক্রান্ত মনের অর্থাৎ মন খারাপের গল্প শোনাব বলে এসেছি আজ আমি আপনাদের মাঝে। তার আগে আমার গুরুত্বপূর্ণ একটি কথা আমরা মনে হয় সকলেই কমবেশি সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধের ইতিহাস টা জানি। সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধের এই কাহিনীর মাঝে মীরজাফরের একটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে রয়েছে।
আমি সাধুবাদ জানাই সেই লেখককে যিনি আমাদের মাঝে সিরাজউদ্দৌলার ইতিহাসটা তুলে ধরেছেন। কেননা এই জীবন যুদ্ধের ইতিহাস থেকে আমাদের অনেক কিছু জানার আছে। এবং তা আমাদের বাস্তব জীবনে অনেক সময় ঘটে থাকে। যারা সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধের ইতিহাস টা খুব ভালোভাবে পরেছেন তারা হয়তো আমার কথার অর্থ গুলো খুব সহজেই বুঝে ফেলেছেন। আসলে আমি কি বলতে চাচ্ছি। মীরজাফর বলতে আমরা সকলেই বুঝি এই নামের মাঝে শুধু বেইমানির ছায়ায় রয়েছে। কেননা মীরজাফর ছিলেন সিরাজউদ্দৌলার খুব কাছের লোক এবং বিশ্বস্ত একজন সৈনিক।
সিরাজউদ্দৌলার যুদ্ধে এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে সিরাজদৌলার বিজয় সুনিশ্চিত। যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা একেবারেই জয়ের দ্বারপ্রান্তে সকলেই ভেবে নিয়েছিল যে সিরাজউদ্দৌলা এই যুদ্ধে জয়লাভ করবেই করবে। সকল সৈনিকের মনের একটা আশার আলো জেগে উঠেছিল তারা জয়লাভ করবে বলে। কিন্তু গল্পের শেষে এমনভাবে মীরজাফর তার চরিত্র ফুটিয়ে তোলে যে সেই যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা জয়লাভ করতে পারে না। এই যুদ্ধে সিরাজউদ্দৌলা পরাজিত হবার আসল কারণ হচ্ছে মীরজাফর। মীরজাফর ক্ষমতার দাপটে এবং ক্ষমতার শক্তি আরও ক্ষুরধার করার জন্য অন্ধ হয়ে যায়। ক্ষমতার লালসা তাকে মানুষ থেকে অমানুষে করে দেয়।
যার ফলে ভেঙে যায় হাজারো সহজ-সরল সৈনিকের মনের আশা। বিজয় যখন সুনিশ্চিত মীরজাফর তখন ক্ষমতার লোভে সিরাজউদ্দৌলার সঙ্গে এক চরম বিশ্বাসঘাতকতা করে। যার কারণে নিশ্চিত বিজয়ের দ্বারপ্রান্তে থেকেও বিজয় ছিনিয়ে আনতে পারেনি সিরাজউদ্দৌলা। সিরাজউদ্দৌলার প্রধান সেনা এবং বিশ্বাস এর জায়গা ছিল মীরজাফর। কিন্তু তার বেইমানির ফলে সিরাজউদ্দৌলা যুদ্ধে পরাজয় বরণ করে নিতে বাধ্য হয়। এবং শেষমেষ সিরাজউদ্দৌলাকে ও প্রাণ হারাতে হয়। আমার পাঠক বন্ধুগণ আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ মীরজাফরের মত এমন মানুষের থেকে সবসময় দূরে থাকার চেষ্টা করবেন।
পাঠক বন্ধুগণ উপরের কথাগুলো আপনারা মনে হয় নিশ্চয়ই বুঝতে পেরেছেন। আসলে আমি কি বলতে চাইছিলাম বাকি বুঝাতে চেয়েছিলাম। আমাদের জীবনের এমন নানান ঘটে যাওয়া গল্প থাকে। হয়তোবা আমরা আমাদের কর্মগুলো এমন ভাবে সাজিয়ে গুছিয়ে নিয়ে এগিয়ে যায় যেখানে আমাদের কোন ফাঁকিবাজি থাকে না। আর ফাঁকিবাজি না থাকলে সেই কাজে সফল হওয়াটা খুবই সহজ একটি ব্যাপার। কিন্তু অনেক সময় আমরা ভুল মানুষকে বিশ্বাস করে থাকে যার ফলে আমরা কঠোর পরিশ্রম এবং সততার সঙ্গে পরিশ্রম করেও সফলতা অর্জন করতে পারিনা। যেমনটি হয়েছিল সিরাজদৌলার মীরজাফরকে বিশ্বাস করার ফলে। সুনিশ্চিত বিজয় জেনেও পরাজয় মেনে নিতে হয়েছিল তাকে।
আমাদের জীবনের অনেক বন্ধু অনেক আত্মীয়স্বজন এবং আপনজন থাকে। যাদেরকে আমরা নিজের থেকেও বিশ্বাস করে ফেলি। তারা কোন কথা বললে তা আমরা সব সময় প্রমাণ করার চেষ্টা না করে অন্ধের মত বিশ্বাস করে ফেলি। এমন কিছু লোক আছে যারা কিছু বলল এবং আমরা সেটার ভালো-মন্দের বিচার বিবেচনা না করে সেই কাজটি করে ফেলি। আর এসবের পিছনে একটাই কারন সেটা হচ্ছে আমাদের বিশ্বাস। কেননা বাংলা একটা প্রচলিত প্রবাদ আছে বিশ্বাসে বস্তু মেলে। আর সেই বিশ্বাসের জায়গাটা যদি হয় ভুল তাহলে আমাদের ভালোর দিকে থেকে মন্দের দিকটাই বেশি হবে। এজন্যই এমন মানুষ জন থেকে আমাদের সাবধান থাকতে হবে।
এই কথাগুলো আসলে আমার মনের একটা ক্রোধ থেকে বের হয়ে আসতেছে। আমার লাইফেও অনেক বড় একটা ধাক্কা সামলে উঠেছে আমি। এই কথাগুলো যখন আমি বলতে যাই তখনই আমি যেন আবেগঘন হয়ে পড়ি। কেননা আমি সেই সময়ে প্রচুর ভেঙ্গে পড়েছিলাম আমার মনে হচ্ছিল এই জীবনটা আমার কাছে বৃথা। আর এসবের পেছনে একজন মীরজাফর টাইপের বড় ভাই ছিল দায়ী। সে বড় ভাই টি ও আমার খুব কাছের এবং বিশ্বস্ত ছিল। তাকে আমার প্রতিদিনের ঘটে যাওয়া সকল খুঁটিনাটি বিষয় শেয়ার করতাম। আমার ভালোলাগা খারাপ লাগা পারিবারিক অবস্থা থেকে সবকিছু তার সঙ্গে আমি শেয়ার করতাম। কিন্তু শেষমেশ সেও আমার সঙ্গে মীরজাফরের মত বিশ্বাসঘাতকতা করে ফেলেন।
বিশ্বাসঘাতকতা করে শুধুমাত্র একজন ছলনাময়ী নারীর জন্য। যদিও বা তাকে আমি অনেক শ্রদ্ধা সম্মান করতাম এখনও করি। কিন্তু কেন জানি মনের কোন থেকে তার প্রটি একধরনের আক্রোশ জন্ম নিয়েছে। চাইলেও তার প্রতি আগের মত আর সহানুভূতিশীল এবং শ্রদ্ধাশীল হতে পারি না। সেই মেয়েটির ছিল আমার ক্লাসমেট আমরা ছোটবেলা থেকেই একসঙ্গে পড়াশোনা করেছিলাম। আমার খুবই কাছের ছিল সেই বান্ধবীটা। আমরা দুজন দুজনকে খুবই পছন্দ করতাম এক পর্যায়ে আমরা একটা সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। তার ছিল একটু পারিবারিক সমস্যা সে মাঝে মাঝে ভেঙে পড়তো। আর আমার কাছে কান্নাকাটি করত হয়তবা তারা পড়াশোনা করা হবে না। পড়াশোনা থমকে যাবে তার পারিবারিক ঝামেলার কারণে।
কিন্তু আমি তার প্রতি ছিলাম খুবই দুর্বল। তার কোনো খারাপ সময় আমি সহজে মেনে নিতে পারিনি। আমরা যখন মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করে কলেজ লাইফে পদার্পণ করব এমন সময় তার জীবনে বড় ধরনের বাধা আছে। তার পরিবার থেকে তাকে ভালো কোন কলেজে ভর্তি করাবে না। সেই সময় বলতে পারেন আমি ছোট মানুষ হয়েও ছোটখাটো একটি যুদ্ধের মতো করে তাকে ভালো কলেজে ভর্তি করায়। কলেজে ভর্তি হওয়ার পর আমি তাকে প্রাইভেট এবং কোচিং এর ব্যবস্থা করে দেই। একদিন তোকে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের বড় ভাইয়ের সঙ্গে পরিচিত করে দিই এবং সেই দিনটি ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে বড় ভুল। আমি যার জন্য এত কিছু করলাম আমার সেই বান্ধবী ভালো থাকার জন্য ক্ষমতা পাবার জন্য অর্থের লোভে বলেন আর যাই বলেন, যাই হোক সে বড় ভাইয়ের সঙ্গে আলাদা একটি সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। এবং আমি সেই সময় যদিও ভীষণ ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ি।
আমি আমার জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বুঝেছি যে মানুষকে বিশ্বাস করার আগে অন্তত তাকে চিনে নেওয়া উচিত। আর সহজে কাউকে অন্ধের মত বিশ্বাস করতে নেই যাকে অন্ধের মত বিশ্বাস করি আমরা। সে যদি একবার আমাদের সাথে কোন বিশ্বাস ঘাতকতা করে তাহলে আমাদের জীবন হুমকির মুখে পড়ে যাবে। এজন্যই আমরা সব সময় বেইমান মানুষের থেকে সাবধানে থাকবো। এবং আমার পাঠক বন্ধুগণ আপনারা সব সময় এমন মানুষকে এড়িয়ে চলবেন তাহলে সফলতার দ্বারপ্রান্তে পৌছাতে পারবেন ইনশাল্লাহ। আপনারা সকলেই ভালো থাকবেন আশাকরি সকলেই সঠিক মানুষকেই বিশ্বাস করে জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন।
প্রথমে আপনাকে অনেক ধন্যবাদ জানাই যে আপনি অনেক সুন্দর একটা বিষয় আমাদের সাথে তুলে ধরেছেন। আসলে আমরা কোন কিছুই যাচাই না করেই অন্ধের মত বিশ্বাস করি কারণ তাকে আমরা ভালোবাসি বলে। কিন্তু সেই মানুষ যদি বিশ্বাসঘাতকতা করে তাহলে তার মত কষ্ট আর নেই। তার প্রমান আমি কত মাস আগেই পেয়েছি। ধন্যবাদ আপনাকে বিষয়টি সুন্দরভাবে শেয়ার করার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ ভাই আর আমাদের এসব ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েই জীবনকে এগিয়ে নিতে হবে। ধন্যবাদ আপনার মূল্যবান মন্তব্যের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit