হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ গতকালের তুলনায় আজ একটু ভালো আছি। আজ একটি ছোট ভালোবাসার গল্প নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। আশা করছি এই গল্পটি আপনাদের অনেক পছন্দ হবে। তবে চলুন কথা না বাড়ি সেই গল্পটি শুরু করা যাক।
ভালোবাসা সত্যি মধুর। আমরা ছোটবেলায় কখনো না কখনো কাউকে না কাউকে অবশ্যই পছন্দ করতাম। সেই বিষয়টি আমরা অনেকেই মানি আবার কেউ মানতে চাই না। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি আপনারা আপনাদেন মনের বিষয়টি আপনারা সঠিকভাবে জানেন। জীবনের প্রথম ভালবাসাগুলো হয়তো স্কুল জীবনেই শুরু হয়। এই গল্পের প্রধান চরিত্র হিসেবে থাকবে মেঘ ও মিম।
মেঘ সবেমাত্র প্রাইমারি স্কুলের গণ্ডি পার হয়ে মাধ্যমিকে ভর্তি হয়েছে. সেই সাথে মিম ও মাধ্যমিকে উঠেছেন তবে। মেঘ এবং মিম এর প্রথম দেখা হয়েছিল একটি টিউশনিতে। যখন তারা মাধ্যমিকের চাপ সইতে না পেরে আলাদা টিউশনিতে জয়েন করেছিল। মেঘ ছিল খুবই সাধারণ একটি ছেলে এবং সেই সাথে আর কোন মেয়েদের সাথে কথা বলতে না। প্রাইমারি স্কুলে যখন পড়তো তখন তাকে অনেকেই ক্ষ্যাপাতো এবং অনেক ধরনের নির্যাতন করতো তার বন্ধুরা।
মেঘ যখনই স্কুলে যেত সব সময় পিছনের বেঞ্চে বসতো এবং মেঘের কোন বন্ধু ছিল না। যার কারণে সে সব সময় একা থাকতো যদিও সে অনেক চুপচাপ ছিল তবে তার অনেক ভালো কিছু গুন ও ছিল। সে ম্যাথমেটিক্স ফিজিক্স এবং কেমিস্ট্রিতে অনেকটাই ভালো ছিল। সেই সময় মাধ্যমিকের যেই শ্রেণীতে সে পড়তো তার থেকেও অনেক উপরে শ্রেণীর ম্যাথমেটিক্স ক্যালকুলেশনগুলোর সহজেই সমাধান করতো। মেঘ সবগুলো সাবজেক্টেই অনেক ভালো থাকা সত্ত্বেও তার একটি সাবজেক্টে অনেকটাই দুর্বল ছিল। সেটা হচ্ছে ইংরেজি। সে ইংরেজি দেখলেই অনেকটা ভয় পেয়ে যেত এবং সেই ইংরেজি পরীক্ষায় কোনভাবে টেনেটুনে পাস করতো।
মেঘ যেমনটা শান্তশিষ্ট ছিল তার বিপরীত ছিল মিম। অনেকটাই চঞ্চল এবং অনেকগুলো বন্ধু-বান্ধব ছিল তার। সে সবসময়ই স্কুলে সময় মত আসতো এবং বন্ধু-বান্ধবের সাথে আড্ডা দিতে বেশি পছন্দ করত। অর্থাৎ তাদের একটা মেয়েদের ছোট খাটো গ্যাং আছে বলা চলে। মিমো পড়াশোনা অনেক ভালো ছিল। তবে পড়াশোনার পাশাপাশিও মিম অনেকগুলো অ্যাক্টিভিটিস এর সাথে নিজেকে জড়িয়ে নিত। যেমন স্কুলের বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে পারফর্ম করা এছাড়াও স্কুলের ভলিবল টিমে প্রতিনিয়ত খেলাধুলা করা এবং অন্যান্য স্কুলদের সাথে প্রতিযোগিতা করা। মূলত সমস্ত ধরনের সাংস্কৃতিক বিষয়গুলোর সাথেও সেই জড়িত ছিল।
একদিকে মেঘ হচ্ছে শান্ত সৃষ্ট যে অন্যদিকে মিম হচ্ছে চঞ্চল স্বভাবের। এখন দেখার বিষয় এই দুজনের কিভাবে মিলন হয়! কিভাবে দুজনের ভালোবাসা হয়! জানতে অনেকটাই এক্সাইটেড লাগছে তাই না? যদিও আমি আমার এই গল্পটি একটু অন্যআঙ্গিকে লেখার চেষ্টা করছি, আশা করছি পরবর্তী বিষয়গুলো আপনাদের বুঝতে সুবিধা হবে।
মিম এবং মেঘ দুজনের একটি কমন সমস্যা ছিল। তারা ইংরেজিতে দুজনেই অনেক কাঁচা ছিল। যার দরুন প্রথম এবং দ্বিতীয় কেউ হতে পারত না, মাঝখান থেকে অন্য একজন এসে প্রথম স্থান অধিকার করত। তবে মেঘের এত কিছু যায় আসে না, সে তার মত করেই দিন পার করছিল। তবে মিমের রেজাল্ট বের হওয়ার পরপরই সে অত্যাধিক কান্না এবং চিন্তা করে। জানেনই তো মেয়েরা এ প্লাস পেয়ে গেলেও আর চিন্তা করে, যে আরো ভালো কিছু করা যেতে হয় তো। এইদিকে মেঘের বাবা-মা মেঘ নিয়ে অনেকটাই চিন্তিত ছিল কারণ অন্যান্য সবগুলো সাবজেক্টেও এ প্লাস থাকলেও ইংরেজি সাবজেক্টের কোন ভাবে টেনেটুনে পাশ করেছে। তাই তার বাবা-মা সিদ্ধান্ত নিল তাকে একটি টিউশনে দিবে, তখন তারা মাধ্যমিকের অষ্টম শ্রেণীতে পড়ে। গত ৩ বছর মেঘ এবং মেঘ একই ক্লাসে রয়েছে। কিন্তু মেঘ, মিমের সাথে কথা বলা তো দূরে থাকা কোন বান্ধবীর সাথেই কথা বলেনা। তবে মেঘের একটি খুব কাছের বন্ধু ছিল। সেটা অনেকটা মেঘের মতোই। সে কারো সাথে কথা বলত না। অনেক গ্রাম থেকে আসতো এবং আর সাথে করে টিফিন নিয়ে আসতো এবং মাঝে মাঝে মেঘ কে তার টিফিন অফার করতো। এভাবেই তাদের বন্ধুত্ব হয়েছিলো।
যেহেতু এখন অষ্টম শ্রেণীতে তারা দুজনেই রয়েছে তাই মিম এবং মেঘের বাবা-মা একটি টিউশন ঠিক করে। সেই টিউশনে শুধুমাত্র ইংরেজি পড়াবে এমন কিন্তু নয়। সেই টিউশনের টিচার মূলত সবগুলো সাবজেক্ট এই পড়াবে রুটিন অনুযায়ী এবং ভাগ্যক্রমে সেই টিউশনে মেঘ এবং মিমের প্রথম কথা হয়েছিল। মেঘ প্রথম যেদিন টিউশনিতে যায় তখন দেখে শুধুমাত্র মেয়েরাই সেখানে পড়াশোনা করছিল অর্থাৎ মেয়েদের গ্রুপ ছিল সেটা। সেখানেই মূলত মেঘ এবং মেঘের সেই ছেলে বন্ধুটি গিয়েছিল ইংরেজি থেকে টিউশনের জন্য।
সেখানে ১০ জনের একটি মেয়েদের গ্রুপ ছিল এবং সারের কাছে তারা প্রতিনিয়ত পড়াশোনা করত। যেহেতু স্যারের অন্য কোন ব্যাচে জায়গা নেই তাই এই ব্যাচে তাদের দুজনকে সুযোগ করে দেওয়া হয়েছিল। প্রথম দিন থেকেই মেঘ এবং তার বন্ধু একটি সাইডে বসে স্যারের কাছ থেকে টিউশন নিত এবং টিউশন শেষ করার সাথে সাথেই তারা সেই স্থান ত্যাগ করত অর্থাৎ তখনও তারা কেউ কখনো মেয়ের সাথে কথা বলেনি। এভাবে কিছুদিন যাওয়ার পর একদিন হঠাৎ নিম মেঘকে একটি প্রশ্ন করে বসে। মীম প্রশ্ন করে, আমাদেরকে দেখে রাক্ষসী মনে হয়? আমাদের সাথে আপনারা কথা বলেন না কেন! মেঘ এবং তার বন্ধু কি বলবে ভেবে পাচ্ছিল না! কিছু উত্তর না দিয়েই তারা সেই স্থান ত্যাগ করলো এবং পরবর্তীতে দিনে ঘটলো আসল ঘটনা।
চলবে......
VOTE @bangla.witness as witness
OR
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ছোট গল্প || জীবনের প্রথম ভালোবাসা (১ম পর্ব)
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
বাহ্! গল্পটি পড়ে বেশ ইন্টারেস্টিং লাগছে ভাই। রোমান্টিক গল্প পড়তে আমার খুব ভালো লাগে। গল্পের নায়ক এবং নায়িকা দুইজন দুই টাইপের। একজন শান্তশিষ্ট এবং একজন বেশ চঞ্চল। কম্বিনেশনটা কিন্তু দারুণ লেগেছে আমার কাছে। পরবর্তী পর্বে মেঘ এবং তার বন্ধুর সাথে মিম ও তার গ্রুপ কি করবে, সেটা জানার আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে গিয়েছে। আশা করি পরবর্তী পর্ব খুব শীঘ্রই শেয়ার করবেন আমাদের সাথে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাই, অনেক দিন গল্প লেখার চেষ্টা করছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকে যতটুকু জানি জল্লাদ টাইপের মেয়েরা হুটহাট করে এরকম প্রশ্নই করে হা হা। বেশ মজা পাচ্ছি পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম সিয়াম ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মনে হচ্ছে আবারো স্কুল লাইফে ফিরে যাচ্ছি... স্কুল লাইফে ঘুরে ফিরে এমন ঘটনা অহরহই ঘটে থাকে। মিমের প্রশ্ন শুনে তো ভীষণ হাসি পেলো!! শেষ পর্যন্ত রাক্ষুসী! পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম সিয়াম ভাই।বেশ দারুণ এবং আকর্ষণীয় ভাবে লিখছেন কিন্তু!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মীমের এই কথাটা আমার কাছে বেশ হাস্যকর লেগেছে আমাদের দেখলে কী রাক্ষসী মনে হয় যে আমাদের সঙ্গে কথা বলেন না হা হা। আর সত্যি বলতে এইরকম গ্যাং নিয়ে চলা মেয়ের সঙ্গে কথা বলবে কে হা হা। গল্পটা এখন পযর্ন্ত বেশ ভালো লাগল। ইংরেজি টিউশনে গিয়ে দুজনের দেখা। এখন দেখা যাক আর কী কী হয়। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম ভাই।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit