সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি তে যখন আমি একটি কম্পিউটার ল্যাবের দায়িত্ব পেলাম তখন থেকে আমার কাজের ধারা আরো পরিবর্তন হয়ে গেল। আমি বেশিরভাগ সময়ে কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে নিজের স্কিল ডেভলপমেন্ট করার ক্ষেত্রে বেশি গুরুত্ব দেই। তার সাথে বিভিন্ন ধরনের কাজ আমি নতুন ভাবে শিখতে থাকি যার কারণে কম্পিউটারের প্রতি আমার ভালোবাসা এবং দক্ষতা বেড়ে যায়।
এই ল্যাবে সাধারণত সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি বিভিন্ন ধরনের কম্পিউটারের ক্লাস হত এবং যখন ক্লাস চলতো তখন আমি পিছনে বসে যে কোন একটি কম্পিউটারে সেই ক্লাস গুলো মনোযোগ সহকারে করার চেষ্টা করতাম। সেখান থেকেই কম্পিউটারের অনেক কিছু বিষয় জানতে পারি এবং পরবর্তীতে সেই জিনিসগুলো আমি অন্যান্য কাছে এপ্লাই করতে থাকি। এভাবে দিনকাল ভালোই চলছিলো কিন্তু তখনও আমার থাকার কোনো স্থায়ী জায়গা ছিল না। সোনারগাঁও ইউনিভার্সিটি থেকে তখন আমাদের একটি কোয়াটার দিয়েছিল কিন্তু সেখানে থাকার মত কোন পরিবেশ ছিল না। একটি ছোট হোস্টেলে আমি ও আমার একটি বন্ধু মিলে থাকতাম। তখনও আমার স্যালারি স্কেল বাড়েনি এবং প্রতিনিয়ত এই সেই আগের মতই সকাল আটটায় ডিউটিতে জয়েন করতে হয় এবং রাত দশটার ডিউটি থেকে ফিরতে হয়। বলতে গেলে একদম একটি রোবটিক জীবন এবং সেই জীবনে কোন ছুটি ছিল না।।
আমি সবসময় একটি বিষয় চিন্তা করতাম বর্তমানে কাজ করার সময়।। আনন্দ, জীবনটা উপভোগ হয়তো পরে করা যাবে। এই কথাগুলো ভেবেই আমি আমার কাজের প্রতি অনেকটা মন দিয়ে কাজ করি। কারণ আমি দেখেছি আমার সাথে যারা কাজ করতো তারা অনেকেই ফাকিবাজি করতো, নিজের কাজগুলো রেখে দিত কিন্তু আমি কখনো নিজের কাজ পেন্ডিং রেখে কখন ঘুমোতে যাই নাই। আমার কাছে যে জিনিসটা খুবই খারাপ লাগে আমি চেষ্টা করেছি আমার জায়গা থেকে সবকিছু সঠিক ভাবে করার জন্য তারপরও দিন শেষে অনেক কথা শুনতে হতো।
বেসরকারি ইউনিভার্সিটি বেসরকারি চাকরি এর অর্থ তো আপনারা বুঝেন। তারা অন্ততপক্ষে বসিয়ে বেখে টাকা দিবেনা, এটা আপনারা সবাই জানেন। যে টুকু সময় অফিসে থাকতাম কোনো না কোনো কাজের মধ্যেই আমাকে থাকতে হতো। বিশেষ যখন বাসায় যেতাম রাতে রান্না করতে হত এবং রাতে পড়াশোনা করতে হতো কারণ আমার প্রধান উদ্দেশ্য ছিল ঢাকায় পড়াশোনা করা এবং ভালো একটা রেজাল্ট করা। রাতের বেলা রান্না-বান্না শেষে খাওয়া-দাওয়া করে আমি পড়তে বসতাম। পড়াশোনা শেষ করে ঘুমাতাম এবং রাতে যেসব রান্না করে রেখেছিলাম সেসব সকালের নাস্তা হিসেবে খেয়ে আমি আবার ডিউটিতে যেতাম। শুধুমাত্র দুপুরের খাওয়াটা আমি বাহিরে খেতাম। কারণ দুপুরে রান্না করে খাওয়ার মতো কোনো সিচুয়েশন ছিলো না।
এক বছরের মধ্যেই আমার একটু প্রমোশন হয়। তখন আমি আইটি সেক্টরে অফিশিয়াল যে কাজ ছিল সেখানেই আমার ট্রানস্ফার হয় এবং সেখানে বসে বসে কাজ করতে থাকি। মূলত আমি একটা বিষয় দেখলাম আসলে যারা কাজ পারে এবং যারা প্রতিনিয়ত নিজের কাজগুলোকে আনন্দের সাথে উপভোগ করে করেন তারা কখনও পিছিয়ে থাকে না। এমনটা না যে আপনার কাজ কে বেশি বেশি হাইলাইট করতে হবে বা সবার সামনে উপস্থাপন করতে হবে, আজ আমি এটা করেছিলাম ওটা করেছা। যে যেভাবে পারে সেভাবেই করুন শুধুমাত্র আপনার নিজের কাজগুলোকে আনন্দের সহিত করতে হবে। এই বিষয়টা আমি সেখান থেকেই শিখেছি।
একটি বিষয় যদিও খারাপ লাগত যখন আমার ক্লাস শেষ হতো তখন আমি ছুটে আসতাম অফিসের কাজে এবং আমার বন্ধুবান্ধবরা পার্কে বা কোন শপিংমলে একটু আড্ডা দেওয়ার জন্য যেক। যদিও সেই দিনগুলো আর ফিরে পাবোনা আর আফসোস করেও লাভ নেই। আমি যেমনটা শিখেছি নিজের জীবনকে নিজের মতো করেই পরিচালনা করতে হবে। তখন নিজের ছোট ছোট ইচ্ছাগুলোকে মেরে ফেলতাম জানিনা কেন এটা করেছি তবে এখন আমি চেষ্টা করি নিজের ছোট ছোট ইচ্ছে গুলো নিজের পূরণ করার জন্য। সবথেকে খারাপ লাগত আমার খাওয়া এবং ঘুমের বিষয়টা কারণ যে পরিবেশে আমি ছিলাম আমি মনে করি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির কোন সদস্য সেই পরিবেশে চারটা বছর কেউ যাপন করে নি।
আসলে আমি গর্ব করে কিছু বলছিনা। আমি শুধু বলছি কোন কাজ কে ছোট করে দেখাতে যাবে না। কারণ আমি যেসব কাজ করেছি হয়তো আপনারা সেগুলো কেউ কল্পনাও করেননি। যাই হোক না কেন আমি ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছে এবং আমাদের কলেজের প্রথম থেকে তৃতীয় স্থান এর মধ্যেই সব সময় আমার রেজাল্ট ছিল। আমি চেষ্টা করেছি নিজের সবটুকু দিয়ে কাজ এবং পড়াশোনা কে একসাথে চালিয়ে নেওয়ার জন্য।
250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |
আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: আমার জীবনের ছোট্ট একটি অধ্যায় (পর্ব ২)
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.........
মানুষে লক্ষ্য যদি ঠিক থাকে তাহলে সে তার যতই কষ্ট হোক না কেনো সে তার লক্ষ্যে পৌছাবেই। যেমন টা আপনার দিক থেকে হয়েছে এবং আমার দিক থেকে হয়েছে।সব সত্য যদি আপনি নিজের জীবনকে একটু অন্যভাবে দেখেন। আর হ্যা ভাই আমি নিজেই প্রমানীর কষ্ট করলে আল্লাহর রহমতে জীবনে এক সময় সুখের দেখা পাওয়া যায়। তাই আমি মনে করি আপনার কষ্ট কোণ দিন বৃথ্যা যাবে না- দোয়া করি আপনি একটি ভালো আবস্থানে পৌছান, যেখানে আপনার সব পথ শুভ হয়- যা মাধ্যমে আপনার মেড়ে ফেলা আশা আর ইচ্ছে গুলো পুর্ণ হয়। শুভকামনা এবং দোয়া রইল
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ছোট থেকেই আমি চেষ্টা করে গেছি ভাই, আপনার মন্তব্যের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
স্ট্রাগল না করলে আসলে আমাদের চারপাশের কঠিন বাস্তবতাকে কখনোই সঠিকভাবে উপলব্ধি করা যায় না। আপনার ডিপ্লোমা লাইফে আপনি যেরকম কষ্ট করেছেন আশা করি তার ফল মোটেও খারাপ হয়নি। সময়ের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করেছেন। আর আমার মনে হয় এটাই জীবনের সার্থকতা।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চেষ্টা করেছি ভাই সময়কে কাজে লাগানোর জন্য। আপনার অনুপ্রেরণামূলক কমেন্টের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দ্বিতীয় পর্ব পড়তে হলে প্রথম পর্ব অবশ্যই ঘুরে দেখতে হবে তাইনা!তাই প্রথম পর্ব পড়ে আসলাম ভাইয়া।😊সত্যিই মধ্যবিত্ত পরিবারের অনেক সমস্যা থাকে যা মুখ ফুটে বলা যায় না ।শুধু লোক দেখানো হাসিমুখে সব সইতে হয়।সব মানুষের জীবনে এইরকম কষ্টের কাহিনী রয়েছে।কিন্তু কেউ প্রকাশ করে ,কেউবা কষ্ট দিয়ে চেপে রাখে মনে।তার মাঝে ও সৎ থাকতে হবে, মনে সাহস নিয়ে ধৈর্য্য ধারণ করতে হবে।যারা কষ্ট করেছে তারাই জীবনের সঠিক মর্মার্থ খুঁজে পেয়েছে এটি আমার নিজের চোখে দেখা, হতে পারে আমার পরিবারেরও।তবুও সফলতার প্রতীক্ষায় দিন গুনি, আপনি ও বিশ্বাস রাখুন একদিন সফল হবেন।জীবনটাই এমন,শুভকামনা রইলো ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমি আমার জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি নিজের পায়ে দাঁড়ানোর জন্য... এখনো চেষ্টা করে যাচ্ছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
যে কোন কাজকে ঠিক ভাবে পরিচালনা করার জন্য এবং সেই কাজে সফল হওয়ার জন্য অবশ্যই অনেক পরিশ্রম করতে হয় ভাইয়া। আসলেই আপনি ঠিকই বলেছেন যেকোনো কাজ কে ছোট করে দেখা যাবে না। নিজের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে হবে। আপনার পোস্ট পড়ে খুবই ভালো লাগলো আর বুজতে পারলাম আপনি খুবই পরিশ্রমী।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
অধ্যবসায়ের মাধ্যমে নিজের স্কিল গুলোকে আরো ডেভলপ করা যায় সেটা ও চেষ্টা করেছি আমি। আপনার মন্তব্যের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার এই পোস্টটি পড়ে অনেক শিক্ষা পেলাম। আপনি আপনার এই পোষ্টের মাধ্যমে অনেক মোটিভেশনাল কথা উপস্থাপন করেছেন আসলে আপনার এই পোস্ট করে আমী অনেক অনুপ্রাণিত হয়েছি। আসলে আমাদের বর্তমান সময়ের কাজে বেশি মন দেওয়া উচিত আর আনন্দটা হয়তোবা পরেও করা যাবে। সফলতা আসলে আনন্দের ধারা ও বই আসবে আমাদের জীবনে। এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ এবং আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চেষ্টা করেছেন নিজের কিছু বাস্তব ঘটনা আপনাদের সামনে তুলে ধরার জন্য
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই জীবন অনেক কঠিন আর বাস্তবতা অনেক নির্মম। বিশেষ করে আমার মনে হয়েছে একটা জিনিস তা হলো আপনার ভাগ্য ভালো যে আপনি কম্পিউটার এবং আইটি সেক্টরে কাজ পেয়েছিলেন। যার দরুন আপনার দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি মনে করি আপনি জীবন যুদ্ধে জয়ী একজন মানুষ এখন পর্যন্ত। যাক আপনার বাকী জীবন যাতে সুন্দর কাটে এই দোয়া সবসময়ই করছি। আর আমি যদি কোনভাবে কোন সময় পরামর্শ দিতে পারি, যেকোন সমস্যায় অবশ্যই জানাবেন ভাই।
কারন আমার জীবনের পুরোটা বিশাল এক অভিজ্ঞতা। যাক দোয়া সবসময়ই রয়েছে ❣️
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এই কথাটি বলার মত আমার কোনো বড় ভাই ছিল না তবে আপনি এই সেই দায়িত্বটি পালন করলেন। ভবিষ্যতে কোনো প্রয়োজন হলে অবশ্যই আপনাকে সবার আগে জানাবো ধন্যবাদ ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit