হ্যালো আমার বাংলা ব্লগ পরিবার। আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করছি আপনারা সবাই অনেক ভালো আছেন। ইঁদুর দৌড় সম্পর্কে প্রথম পর্বে আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছিলাম তারই দ্বিতীয় পর্ব আজ আপনাদের সাথে উপস্থাপন করব। তবে একটি বিষয়ে আমার নিজে থেকেই প্রশ্ন চলে আসছে, গতকাল অনেকেই অনেক ধরনের মন্তব্য করেছেন এবং তাদের মন্তব্য থেকেই এই কথাটুকু বলতে চাই।
আসলে আমরা প্রত্যেকেই পৃথিবীতে এসেছি নির্দিষ্ট একটি উদ্দেশ্য নিয়ে। সেই উদ্দেশ্যটা শুধুমাত্র টাকা ইনকাম করা যাতে না হয় সেই বিষয়ে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। আমরা সবাই পরিশ্রম করি এবং আমাদের জীবনযাত্রার মান একটু উন্নত করার জন্য প্রতিনিয়ত পরিশ্রম করেই যাচ্ছি। জীবনে বেঁচে থাকতে হলে কাজ তো করতেই হবে তাহলে এটা সাথে ইদুর দৌড়ের সম্পর্কটা কি আসলে? এর সম্পর্কটা কেন রয়েছে! সেই বিষয়টি আজকে আলোচনা করব। যারা প্রথম পর্বটি পড়েননি তারা আগে প্রথম পরবর্তী পড়ে আসুন।
আমাদের বেঁচে থাকতে হলে আমাদের পরিশ্রম করতে হবে। আমাদের কাজ করে যেতে হবে কোন না কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে সংযুক্ত হয়ে নিজের জীবনকে অতিবাহিত করতে হবে। এটা আমরা সবাই জানি কিন্তু এর মাঝেও কিছু বিষয় বস্তু রয়েছে। আসলে আমরা প্রতিনিয়ত ইনকাম করছি এবং খরচ করছি। দিনশেষে আমাদের মানি ম্যানেজমেন্ট এবং সঞ্চয় টা কোথায়? এই বিষয়ে আমরা কেউ কোন কথা বলি না এবং কিছু শিখিনা। আমি সবার কথা বলছি না হয়তো কেউ ব্যতিক্রম থাকতে পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় অনেকের কাছেই এই সঞ্চয় জিনিসটা থাকে না। কারণ যে পরিমাণে আমরা ইনকাম করি তার থেকে অনেক বেশি আমাদের খরচের পরিমাণ। কোন ভাবে টেনেটুনে বেঁচে থাকা হয়, সে ক্ষেত্রে আবার সঞ্চয় কিভাবে করব!
আরো একটি বিষয় রয়েছে আমরা প্রতিনিয়তই কাজ করছি, কাজ আমাদের করে যেতেই হবে কিন্তু কাজের বাহিরেও যে নিজের একটা জীবন রয়েছে সেই জীবনটা উপভোগ করতে আমরা ভুলে যাই। নিজের ছোটখাট ভালো লাগা গুলোকে বিসর্জন দিয়ে দেই, নিজের পরিবারের সাথে সময় কাটাই না। এর সব কিছু যদি আপনি করে থাকেন তাহলে মনে করবেন আপনিও এই ইঁদুর দৌড়ের মধ্যে পরেছেন। আপনার একটি কথা বিশ্বাস করবেন কিনা জানিনা। আমাদের এই পৃথিবীতে এমন কোন মানুষ নেই যে পরিপূর্ণ অবস্থানে রয়েছে। সবার জীবনেই কোনো না কোনো সমস্যা লেগেই রয়েছে এবং এই সমস্যা কখনো শেষ হবার নয়। কারণ আমরা সবাই ইদুর দৌড়ের মধ্যে রয়েছি। আমরা কখনোই নিজেদের মনের কথাগুলো প্রকাশ করি না এবং নিজের মনের মত করে চলাচল করতে পারি না। আমরা সবসময়ই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিয়ম অনুযায়ী চলাচল করছি এবং এর কারণে আমাদের ব্যক্তিগত সত্তাটা নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটের কথা বলি, তাহলে আপনি কি কখনো মানি ম্যানেজমেন্ট নিয়ে কোন শ্রেণীকক্ষে কিংবা কলেজে কিংবা ইউনিভার্সিটিতেও পড়াশোনা করেছেন! কখনো কি!!! মনে পড়ে?? এই মানে ম্যানেজমেন্ট টা কি আসলে এটা কখন আমাদের কাজে লাগবে এবং এই মানি ম্যানেজমেন্টের গুরুত্বটা কতখানি! এটা কেউ আমাদের শিখায়নি এবং এই বিষয়গুলো নিয়ে কেউ কথাও বলে না। গতকালের পোস্টে একটি বিষয় বলেছিলাম, যদি আপনার ২০ হাজার টাকা স্যালারি হয় তাহলে কিন্তু সেই বিশ হাজার টাকার মধ্যেই আপনার দৈনন্দিন সমস্ত চাহিদা গুলো আপনি পূরণ করার চেষ্টা করেন। সে ক্ষেত্রে যদি কিছুদিন পরে আপনার ৩০০০০ টাকা বেতন হয়ে থাকে তাহলে দেখবেন আপনার বাড়তি সেই ১০ হাজার টাকাও কোথাও না কোথাও কোনো না কোনোভাবে খরচ হয়ে গেছে। এটা কিভাবে হচ্ছে! এই বিষয়টা বোঝার জন্য এবং কিভাবে এই অবস্থান থেকে বেরিয়ে আসা যায় এর জন্যই মানি ম্যানেজমেন্টে অনেকটা গুরুত্বপূর্ণ।
আমরা মানুষ, সামাজিক জীব। সমাজের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে পছন্দ করি। মনে করুন আপনার একটি বন্ধু কিংবা অফিসের কলিগ একটি আইফোন নিয়েছেন। আপনারও ইচ্ছা করতেই পারে আপনি iphone নিবেন। আপনার যে সামর্থ্য নেই তা কিন্তু নয়, আপনি চাইলেই এই আপনি একটি আইফোন নিতে পারেন। তবে এই আইফোন নেওয়ার জন্য আপনাকে যে দুই তিন মাস আগামীতে ভোগান্তি পোহাতে হবে সেই বিষয়গুলো আমরা মনে করতে পারি না। যদি এই বিষয়টি আপনি অনুধাবন করতে পারেন তাহলে আপনার যা আছে তাই নিয়েই সন্তুষ্ট থাকবেন। টাকা কিভাবে খরচ করতে হয় এটাও কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। মনে করুন আপনি মাসের সবগুলো বাজার করবেন এবং সেই বাজারগুলো কি কি হবে তার একটি আগে থেকে লিস্ট আপনাকে তৈরি করতে হবে। এরপরে সেখান থেকে খুব দরকারী জিনিসগুলো আগে কিনতে হবে এবং যেগুলো আপনার অপ্রয়োজনীয় কিংবা এই মাসে না হলেও চলবে সেইগুলোকে আপনার লিস্ট থেকে বাদ দিয়ে দিতে হবে। সেই খরচ থেকে আপনার টাকাগুলোকে বাঁচাতে হবে এবং ভবিষ্যতের জন্য হলেও কিছুটা সঞ্চয় করতে হবে।
মাসে দুই থেকে তিন দিন হলেও নিজের সাথে সময় ব্যয় করতে হবে। ভালো লাগার জায়গাগুলোতেও ঘুরতে যেতে পারেন কিংবা বন্ধু বান্ধবের সাথে আড্ডাও দিতে পারেন। এভাবে করে জীবন যাপন করলেই জীবনের মানেটা আপনি ফিরে পাবেন। শুধুমাত্র নয়টা পাঁচটা জব করে এসে বাসায় শুয়ে থাকবেন এটা আসলে কোন জীবনের মধ্যেই পড়ে না। তাই যাই করুন না কেন নিজের জীবনকে উপভোগ করুন, নিজেকে ভাবতে শিখুন এবং অন্যকে জীবন উপোভোগ করতে সাহায্য করুন। আজকের মত এখানেই শেষ করছি, সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন ধন্যবাদ।
VOTE @bangla.witness as witness
OR

250 SP | 500 SP | 1000 SP | 2000 SP | 5000 SP |

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।
বিষয়: ইঁদুর দৌড় || Rat Race (২য় পর্ব)
কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ
আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......
হ্যাঁ ভাই ছুটির দিনে নিজেকে সময় দিতে হবে, শুধু চাকরি আর কাজের উপর থাকলে জীবনটা অনেকটাই যান্ত্রিক বাহনের মত হয়ে যায় আর আপনি যখন নিজেকে সময় দিবেন প্রকৃতির মাঝে নিজেকে মিলিয়ে ধরতে পারবেন তখন জীবনটা উপভোগ করতে পারবেন।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
মানুষের আয় বাড়লে ব্যয় বাড়বে এটা স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু আমরা অনেক সময় সঞ্চয় না করে বিলাসিতার পিছনে অনেক টাকা নষ্ট করে ফেলি। এটা মোটেই ঠিক নয়। কারণ সঞ্চয় অবশ্যই দরকার। অনাকাঙ্খিত বিপদের সম্মুখীন আমরা যেকোনো সময় হতে পারি। তখন সঞ্চয়ের টাকা দিয়ে আমরা সেই বিপদ থেকে উদ্ধার হতে পারি। আবার নিজের সাধ্যের মধ্যে থাকা ছোট ছোট ইচ্ছে বা শখগুলো পূরণ করা উচিত। কারণ আমাদের একটাই জীবন, আর সেই জীবনটা উপভোগও করা উচিত। যাইহোক পোস্টটি পড়ে খুব ভালো লাগলো ভাই। শেয়ার করার জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit