আর্জেন্টিনা বনাম মেক্সিকো খেলা দেখার অনুভূতি

বর্তমানে বাংলাদেশ ও বিশ্বের প্রত্যেকটা দেশের একটি তর্ক বিরাজমান রয়েছে। কোন দল সবচেয়ে ভালো খেলে সেই বিষয় নিয়ে তর্কবিতর্কের যেন শেষ নেই। এরই মাঝে গতকাল আর্জেন্টিনা এবং মেক্সিকোর খেলা অনুষ্ঠিত হয়। যদিও আমি একজন আর্জেন্টিনার সমর্থক। আমার কাছে খেলাটি অনেক মজা লেগেছে। প্রথম যখন আর্জেন্টিনা সৌদি আরবের সাথে হেরে গিয়েছিল তখন অনেকটাই কষ্ট পেয়েছিলাম এবং অনেকটা আশা করছিলাম তারা যেভাবেই হোক মেক্সিকোকে হারিয়ে দেবে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বড় স্ক্রিনে খেলা দেখার একটি আলাদা অনুভূতি রয়েছে। আমাদের এদিকে ব্যতিক্রম হয়নি। ঢাকার বিভিন্ন জায়গায় এই ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বরে একটি এলইডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। এছাড়াও আমাদের বাসার আশেপাশে অনেক ধরনের এলইডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছে। তার মধ্যে একটিতে গতকাল রাতে আমি খেলা দেখেছি এবং অনেক ইনজয় করেছি। প্রত্যেকটি খেলা আমি বাসায় আমার ল্যাপটপে দেখার চেষ্টা করি, বিশেষ করে আর্জেন্টিনা এবং ব্রাজিলের খেলা গুলো। তাছাড়াও আমার পর্তুগালের খেলা অনেক ভালো লাগে।

গতকাল আর্জেন্টিনার ডু ওর ডাই ম্যাচ ছিল। এক কথায় বলতে গেলে আর্জেন্টিনার জন্য ফাইনাল একটি ম্যাচ ছিল। তাই আমরা সবাই মিলে চিন্তা করলাম আমাদের বাসার পাশে মাইটিভি ভবনের পাশে বিরাট বড় একটি এলইডি স্ক্রিন লাগানো হয়েছে এবং সেখানেই খেলা দেখবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। খেলা শুরু হওয়ার ১০ মিনিট আগেই আমরা সেখানে পৌছে যাই। আমার বাসা থেকে খুব একটা বেশি দূরে নয় সর্বোচ্চ হেঁটে যেতে এক মিনিট সময় লাগে। সেখানে গিয়ে দেখি ইতিমধ্যেই অনেক মানুষজন সেখানে ভিড় করছে এবং খেলার প্রস্তুতি গ্রহণ করছিল প্লেয়ার গুলো।

খেলা শুরু হওয়ার পরে আমরা খেলাটি এনজয় করছিলাম। তবে প্রথমাবস্থায় আর্জেন্টিনার অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না। মোট কথা বলতে গেলে তাদের খেলার যেমন ধরন থাকে সেই ধরনটা আমরা দেখতে পাচ্ছিলাম না। আর অন্যদিকে দেখছিলাম মেক্সিকোর প্রায় এগারো টা প্লেয়ারই ডিফেন্সে অবস্থান করছে। যার কারণে কোন বল তাদের গোলপোস্ট নিয়ে যাওয়া প্রায় অসম্ভব হয়ে পরছিল।। এভাবেই ৪৫ মিনিট অতিক্রম হয়ে গেল এবং হাফ টাইম হয়ে গেল. এর মধ্যেই আশেপাশে দেখছি প্রায় ৫০০ মানুষের মতো আর্জেন্টিনার সমর্থক সেখানে ছিল. মজার বিষয় হচ্ছে সেখানে কিছু ব্রাজিল সমর্থক ও ছিল এবং তারা খেলা দেখতে এসেছিল ব্রাজিলের টি-শার্ট পরে।

প্রথম অবস্থায় সে সব ব্রাজিলের সাপোর্টাররা ছিল তারা আর্জেন্টিনা সাপোর্টারদের সাথে তুমুল তর্ক বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল। যেটা আসলেই অনেক আনন্দময় একটি বিষয় ছিল। অতঃপর যখন ৬৩ মিনিটে মেসি একটি গোল দিল তখন তারা সবাই চুপ হয়ে গিয়েছিলো। সেই আনন্দটা বলে বোঝাতে পারবো না। যদিও আমি নিজেই একজন আর্জেন্টিনার সমর্থক। তাই আমার কাছে অনেক ভাল লাগছিল। সবাই দাঁড়িয়ে লাফালাফি করছিল, আনন্দ উদযাপন করেছিল।

এরপর থেকেই মেক্সিকোর প্লেয়ারগুলো ডিফেন্স থেকে ছেড়ে এটাকিং মুডে চলে আসে। অতঃপর আর্জেন্টিনা সেই আগের রুপের খেলার কিছু নিদর্শন পাই আমরা। অতঃপর শেষের দিকে আরো একটি গোল হয়। তখন তো খুশীর সীমানা ছিলো না। কারণ তখন প্রায় জয় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল আর্জেন্টিনার। তবে আর্জেন্টিনার গোলকিপার এবং মেক্সিকো গোল কিপার এর প্রশংসা করতেই হবে। তারা অনেক চমৎকার কিছু বল আটকে ছিল, যেটা সত্যিই প্রশংসার যোগ্য।

অতঃপর ৯০ মিনিট পরে যখন খেলা শেষ ঘোষণা হল তখন একটি বিজয় উল্লাস হচ্ছিল। ৫০০ জন সমর্থকরা অনেক চিৎকার করছিল অনেক হৈ-হুল্লোড় করছিল এবং হাতিরঝিলের মত একটি জায়গায় এইরকম খোলা পরিবেশে অনেক ইনজয় করেছি। সেখান থেকে একটি আনন্দ মিছিল বের হয়েছিল কিন্তু সেখানে অংশগ্রহণ করি নি এবং তখনই বাসায় চলে এসেছি।

ঢাকায় এর আগে অনেকগুলো ক্রিকেট ম্যাচ দেখেছিলাম বড়পর্দায় তবে এত ইনজয় আগে কখনোই করিনি। সত্যি বলতে নতুন একটি অভিজ্ঞতা হয়েছে গতকাল রাতে। রাত তিনটের সময় বাসায় এসে শুয়ে পরি। তবে আমি অনেক জোর গলায় বলতে পারি যারা আর্জেন্টিনা সমর্থক রয়েছেন এবং যাদের সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তারা বাহিরে গিয়ে এরকম ইনজয় করে খেলাটি উপভোগ করেছে। যাই হোক আজকের মত আমার অনুভূতি এখানের শেষ করছি। পরবর্তী ব্রাজিল ও আর্জেন্টিনার খেলা হলে সেগুলোর অনুভূতিও আপনাদের সাথে শেয়ার করে নেব, ধন্যবাদ সকলকে।।

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: আর্জেন্টিনা বনাম মেক্সিকো খেলা দেখার অনুভূতি

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......