বিজ্ঞানভিত্তিক সিরিজ || নিকোলা টেসলা (২য় পর্ব)

২০১৮ সালের ঘটনা বলছি, ডক্টর ট্রেইলার একজন বিজ্ঞানী ছিলেন। তিনি নিকোলা টেসলা একটি পরীক্ষা আবার নিজস্বভাবে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। যার কারণে সে প্রমাণ করতে চেয়ে ছিলেন নিকোলা টেসলা আসলেই কত মহান ছিল। কারণ আজ থেকে ১০০ বছর আগে যেসব এক্সপেরিমেন্ট এবং যেসব জিনিস আবিষ্কার করেছিল তার বেশিরভাগই আমাদের কাছ থেকে লুকায়িত হয়েছে। তিনি টেসলা কয়েলের মাধ্যমে ওয়ারলেস ভাবে ইলেকট্রিসিটি প্রবাহ করতে চেয়েছিল। এর আগের পর্বে আমরা নিকোলা টেসলা এর সংক্ষিপ্ত জীবনী সম্পর্কে জেনেছি এবং এটাও আমি এই জানানোর চেষ্টা করেছি তার অনেকগুলো রিসার্চ পেপার চুরি হয়ে গিয়েছিল নিজস্ব হোটেল থেকে কিন্তু এর পিছনে কারা রয়েছে? কেন আমাদের সাধারন জনগনের কাছ থেকে তার রিসার্চগুলো লুকানো হলো? কেন তার বাস্কগুলো আমাদের কাছ থেকে লুকানো হলো? এইসব বিষয়গুলো আমি আলোচনা করব আস্তে আস্তে। যদিও এসব বিষয়ে অনেকটাই গোপনী, কোন না কোন ভাবে এই তথ্যের গুলো ইন্টারনেটে এসেছে, সেগুলো আমি জানতে পেরেছি। যে সবগুলোই আমি নিজের মতো করে আপনাদের সাথে আলোচনা করব।

আমরা সকলে জানি নিকোলা টেসলা অনেক গরীব পরিবার থেকে ছিল কিন্তু তারপরও সে তারা প্রতিনিয়ত এক্সপেরিমেন্ট চালিয়ে যেত। আমরা সকলেই জানি থমাস এডিসন ডিসি কারেন্ট এর আবিষ্কার করেছিল এবং সে অনেক কিছুই আবিষ্কার করেছিল। তার পরও তারা ডিসি কারেন্টের জেনারেটরে অনেক ধরনের সমস্যা দেখা দিয়েছিল। তখন নিকোলা টেসলা কে হায়ার করা হয় এবং বলা হয় তুমি যদি এই বিষয়টি ঠিক করে দিতে পারো তাহলে তোমাকে প্রচুর পরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে এবং তোমার রিসার্চ এ ও সাহায্য করা হবে। এই কথা শুনে নিকোলা টেসলা সমস্ত ফোকাস দিয়ে বিষয়টি ঠিক করে ফেলে কিন্তু থমাস এডিসন তাকে তার অর্থ দিবে না বলে সাফ বারন করে দেয়।

পরবর্তীতে নিকোলা টেসলা সেখান থেকে চাকরি ছেড়ে দেয় এবং আমেরিকার উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করে। এবং নিজের গবেশনায় মন দেয়। এখানে আমি একটু কথা বলতে চাই। আর এখানে এসি কারেন্ট এবং ডিসি কারেন্ট এবং কারেন্ট মূলত কি এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করব।

কারেন্ট শব্দ শুনলেই আমরা বিদ্যুতের সাথে যেটা তুলনা করি কিন্তু আসলেই বিষয়টি এমন নয়। কারেন্ট শব্দের অর্থই হচ্ছে প্রবাহ এবং এই প্রবাহ হচ্ছে ইলেকট্রনের প্রবাহ। ইলেকট্রন প্রবাহ মানে আমরা ইলেকট্রনিক কারেন্ট বলতে পারি।তাহলে এখন আপনাদের মনে প্রশ্ন হতে পারে তাহলে শুধুমাত্র পাওয়া কোন একটি ফোর্স এপ্লাই করে যদি ইলেকট্রনকে একদিক থেকে অন্যদিকে নিয়ে যাওয়া যায় তাহলেই তো কারেন্ট আবিষ্কার হবে, বিষয়টি একদম সঠিক কিন্তু এতটাও সহজ নয়।

আমরা সকলেই নিউটনের তিনটি সূত্র পড়েছি, তার মধ্যে তিন নম্বর সূত্র হচ্ছে প্রত্যেক বস্তুর এই সমান এবং বিপরীত প্রতিক্রিয়া রয়েছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে এই ইলেকট্রনকে ধাক্কা দেওয়ার কাজটি কে করে? কে এই ইলেকট্রনের ঘুম হারাম করে রেখেছে? শুধুমাত্র ইলেকট্রনকে এদিক থেকে ওদিক দৌড়া দৌড়ি করতে বলে!

সংক্ষিপ্ত-উত্তর হচ্ছে ইএমএফ। তাহলে অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন তাহলে ইএমএফ লাগিয়ে শুধুমাত্র ইলেকট্রনের স্থান পরিবর্তন করে ইলেকট্রন কে সচল করেই তো কারেন্ট তৈরি করা যায়। কিন্তু বিষয়টা এতটা সহজ নয়। কারেন্ট কি আমরা দুই ভাবেই চিনি। একটি এসি কারেন্ট, এবং ডিসি কারেন্ট।

এখন প্রশ্ন আসতে পারে এই দুই কারেন্টের মধ্যে মূল পার্থক্য কি? এর মূল পার্থক্য যদি সংক্ষিপ্ত আকারে বলতে চাই তাহলে হচ্ছে এসি কারেন্ট হলো এমন একটি কারেন্ট যেখানে ইলেকট্রনগুলো চলার সময় নির্দিষ্ট কিছু চলে না বরঞ্চ তারা বিক্ষিপ্তভাবে চলাচল করে এবং তাদের চলাচলের কিছু প্রকারভেদ ও তৈরি করা হয়েছে যে বিষয়গুলো পরবর্তীতে আমরা জানব। ডিসি কারেন্ট হল, ইলেকট্রনের একদম সহজ একটি চলাচলের রাস্তা তৈরি করে এবং ইলেকট্রন সেই রাস্তায় চলাচল করে। এবং অন্য কোথাও যায় না অর্থাৎ আপনি যদি সহজ ভাষায় বলতে যদি বুঝতে চাও তাহলে এসি কারেন্ট হচ্ছে দুষ্টু সন্তান এবং ডিসি কারেন্ট হচ্ছে একদম সুশৃংখল সন্তান। যারা মা-বাবার প্রত্যেকটি কথা শুনে। কিন্তু এখন প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে আমরা এসি কারেন্ট কেন এত বেশি ব্যবহার করি?

_{Image Source}

ডিসি কারেন্ট যখন প্রথম প্রথম মানুষের কাছে পরিচিত করা হয় তখন ডিসি কারেন্টের উৎপাদনের জায়গা থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়া টা অনেক কষ্টসাধ্য। আপনি যেখানে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করছেন সেখান থেকে শুধু মাত্র 3-4 কিলোমিটার পর্যন্ত বিদ্যুৎ পৌছে দিতে পারবেন কিন্তু এসি কারেন্ট এর এক্ষেত্রে এই বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। হাজার হাজার মাইল পর্যন্ত আপনি এসি কারেন্ট কে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যেতে পারবেন।।

নিকোলা টেসলা এবং থমাস এডিসন এর মধ্যে একটি অপ্রকাশিত যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। থমাস এডিসন সাধারণ মানুষকে বুঝাতে চায় তার এসি কারেন্ট কতটা ভয়াবহ হতে পারে! এবং বিভিন্ন ধরনের মানুষকে দেখাতে থাকে কিন্তু তারপরও এই এসি কারেন্টের সুযোগ-সুবিধা বুঝে এসি কারেন্ট পপুলার হয়। সেই সময়ে এবং এডিসনের কাছে টাকা এবং পাওয়ার থাকার পরও নিকোলা টেসলার কাছে হেরে যায় এবং এর প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য মনে মনে সুযোগ খুঁজতে থাকে।

এভাবে করেই নিকোলা টেসলা এবং টমাস এডিসনের মধ্যে একটি দন্দেরর সৃষ্টি হয়ে যায়। নিকোলা টেসলা অনেক সাধারন একটি মানুষ ছিল সে সবসময় এতটাই অ্যাডভান্স লেভেলের চিন্তা করত যা আমরা এখনো কল্পনা করতে পারবো না। তিনি এমন এমন গবেষণা করে গেছেন যা হয়তো আজকে প্রকাশিত হলে পৃথিবীর চিত্র টা অন্যরকম হতে পারতো। এই বিষয়গুলো নিয়ে পরবর্তী পর্বে আলোচনা করে নেব। আপনাদের এই সিরিজটি কেমন লাগছে সেটা অবশ্যই কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না, ধন্যবাদ।

---

VOTE @bangla.witness as witness

OR

SET @rme as your proxy

---

---

Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP	500 SP	1000 SP	2000 SP	5000 SP

---

|| Join the Discord Server for more Details ||

---

আমি আল সারজিল ইসলাম সিয়াম। আমি বাঙালি হিসেবে পরিচয় দিতে গর্ববোধ করি। আমি বর্তমানে টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের বিএসসি-র ছাত্র। আমি স্বতন্ত্র স্বাধীনতা সমর্থন করি। আমি বই পড়তে এবং কবিতা লিখতে পছন্দ করি। আমি নিজের মতামত প্রকাশ করার এবং অন্যের মতামত মূল্যায়ন করার চেষ্টা করি। আমি অনেক ভ্রমণ পছন্দ করি। আমি আমার অতিরিক্ত সময় ভ্রমণ করি এবং নতুন মানুষের সাথে পরিচিত হতে ভালোবাসি। নতুন মানুষের সংস্কৃতি এবং তাদের জীবন চলার যে ধরন সেটি পর্যবেক্ষণ করতে ভালোবাসি। আমি সব সময় নতুন কিছু জানার চেষ্টা করে যখনই কোনো কিছু নতুন কিছু দেখতে পাই সেটার উপরে আকর্ষণটি আমার বেশি থাকে।

---

---

বিষয়: বিজ্ঞানভিত্তিক সিরিজ || নিকোলা টেসলা (২য় পর্ব)

কমিউনিটি : আমার বাংলা ব্লগ

আন্তরিক ভাবে ধন্যবাদ জানাই এই কমিউনিটির সকল সদস্য কে, ধন্যবাদ.......