হ্যালো বন্ধুগণ,
আমার বাংলা ব্লগ এর সকল সদস্যদের জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমি ভালো আছি ঈশ্বরের কৃপায়।
আজ আমি আপনাদের সংগে নতুন একটি ব্লগ নিয়ে হাজির হলাম।
চট্টগ্রাম গেইট
গত শুক্রবার ২৪ শে নভেম্বর ২০২৩ হঠাৎ খবর পেলাম আমাকে শনিবার সকালে চট্টগ্রাম থাকতে হবে একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য। খুব চিন্তায় পড়ে গেলাম। কারণ শুক্রবার আমার সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্ত্বেও একটা গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য অফিস করতে হচ্ছে। বুঝে উঠতে পারছিলাম না কিভাবে কি করব। কোন মত অফিস শেষ করে ছয়টায় অফিস থেকে বের হলাম। বের হয়ে চলে আসো মিরপুর ১২ নম্বরে এনা কাউন্টারে। সেখানে এসে রাত ১১ টার বাসের টিকিট করলাম।
তাড়াহুড়া করে বাসায় আসলাম বাসায় এসে ফ্রেশ হয়ে তারপরে ঠিক সাড়ে দশটায় বের হলাম চট্টগ্রাম যাওয়ার উদ্দেশ্যে। আসলে সময় স্বল্পতার কারণে আমি অন্য কোন বাসের টিকেট করতে পারেনি। যার কারণে বাসার পাশের কাউন্টার থেকেই টিকিট করে নিয়েছিলাম।
আসলে এনা বাসে চলাফেরার করার অভিজ্ঞতা আমার নাই বললেই চলে। প্রায় পাঁচ ছয় বছর আগে আমি একবার এনা বাসে ঢাকা থেকে সিলেট গিয়েছিলাম। এটা ছিল আমার দ্বিতীয়বারে না বাসে ওঠা। আসলে একটু চিন্তায় করছিলাম কারণ সবার কাছে শুনি এনা বাস অনেক রাফ গাড়ি চালায়। ভেবেছিলাম রাতের গাড়ি হয়তোবা আমার সঙ্গে এটা হবে না।
ঠিক রাত ১১ টায় বাস ছেড়ে মিরপুর ১৪ নম্বর কাউন্টার থেকে যাত্রী উঠিয়ে আবার মিরপুর ১০ নাম্বার কাউন্টার থেকে কিছু যাত্রি নিয়ে মিরপুর কালশি দিয়ে ঠিক ১২ টায় গাড়ি রওনা হলো চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে। পর্যন্ত গাড়ি বেশ ভালোই চালাচ্ছিল। কাঁচপুর ব্রিজ পার হওয়ার পর ভাবলাম ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু গাড়ি চালানো দেখে আমি আর ঘুমানোর সাহস পেলাম না।
কোন একটা বাসও আমাদের বাস ওভারটেক করতে পারেনি বরং যত দূরে চোখ যায় যখনই কোন একটা বাসকে দেখতে পেয়েছে তখনি আমাদের বাসের গতি বাড়িয়ে দিয়ে সেই বাসকে ওভারটেক করেছে। তুমি অনেক বেশি ভয় পেয়ে গিয়েছিলাম আর ভাবছিলাম যে আজ সুস্থভাবে পৌঁছাতে পারবো কি। ঠিক রাত দুইটা ছয় মিনিটে আমরা কুমিল্লা হোটেলে পৌঁছাই।
লোকেশন: কুমিল্লা
আমি ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলাম ভাই কি খেলা দেখাইলেন কোন একটা বাসকে যে ওভারটেক করতে দেন নাই। উত্তরে সে বলল ভাই গাড়িতো টানতেই পারি না। গাড়িতে জিপিএস লাগানো আছে। ৯০ কিলোমিটার গতিতে চালাতে হবে প্রতি ঘন্টায় বাস। এটা নাকি তার কাছে কিছুই না। আমি দেখছিলাম বাস এর গতি ১০০ কি.মি. এর উপরে বাস চলছে কিন্তু সে বলল তার উলটা টা।
কুমিল্লাতে হোটেলের নেমে ফ্রেশ হয়ে একটা কফি খেয়ে নিলাম। এর পর হোটেল থেকে ঠিক রাত ২ টা ৩৯ মিনিটে আমরা আবার চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা হই। ভেবেছিলাম চট্টগ্রাম পৌঁছাতে পৌঁছাতে ছয়টা থেকে সারে ছয়টা হয়ে যাবে। কিন্তু তার গাড়ি চালানোর দক্ষতা দেখে আমি হিসাব মেলাতে পারছি না।
ঠিক ভোর পাঁচটায় আমাকে নেভি গেট নামায় দেয়। নেমে আমি কিছুই বুঝতেছি না যে কি করবো না করবো। পরে ওখান থেকে একটা রিকশা নিয়ে ইপিজেড এর গেটে আসি।
ইপিজেড এসে দু কাপ চা একসঙ্গে খেলাম৷ সকাল সাড়ে আটটা পর্যন্ত সেই দোকানে বসে বসে চা খাই আর গল্প করি।
এরমধ্যে ইপিজেড এর আশেপাশের সকল রাস্তা হেঁটে হেঁটে ঘুরে ঘুরে বেড়াচ্ছিলাম। কিছুক্ষণ পর একটা হটেলে বসে নাস্তা করে নিলাম।
সকালে ইপিজেড দাঁড়িয়ে থাকাটা অনেক মুশকিল। এত মানুষ এক সঙ্গে কাজে ঢুকছে দেখে আমার বেশ ভালই লাগছিল।
ঠিক ৯ টায় আমি যে কাজের উদ্দেশ্যে এসেছি সেখানে পৌঁছাই। ম তারপর সেখানে বসে অপেক্ষা করছিলাম তাদের সকলের উপস্থিতির। কারণ আমি অনেক আগেই সেখানে পৌছায় গিয়েছিলাম।
সারারাত না ঘুমানো আমি
তারা সকলে আসার পর একে একে সকলের সংগে পরিচয় হয়ে নিলাম। আসলে তারাসবাই অনেক বেশি আন্তিরিক ছিলেন। আমি বসে আমার ডকুমেন্টস রেডি করছিলাম এর মধ্যেই তাদের পক্ষ থেকে আমাকে সকালের নাস্তা দেয়া হলো। বেশ ভালো মানের নাস্তা ছিলো।
সকালের নাস্তা
লোকেশন: চট্টগ্রাম
যেহেতু আমি বাহিরে নাস্তা করে নিয়েছিলাম তারজন্য সেখানে তেমন কিছু খেতে পারলাম না শুধু কয়েকটা আঙ্গুর খেয়ে আমি আমার কাজ সেরে ফেললাম। কাজ শেষ করে আমি পতেঙ্গা বিচে ঠিক দেড়টা বাজে পৌছালাম। সেখানে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর আবারো রওনা দিলাম
এ কে খান বাস টার্মিনাল এর উদ্দেশ্যে।
লোকেশন: পতেঙ্গা সি বিচ
সেখানে পৌঁছাইয়া গ্রীন লাইনের দুপুর ৩ টার বাসে উঠি।
লোকেশন: মায়ামী হোটেল, কুমিল্লা
রাস্তায় অনেক জ্যাম থাকার কারনে বাসায় পৌছালাম রাত সাড়ে ১১ টায়। সারা রাত না ঘুমানোর কারনে অনেক বেশি দুর্বল হয়ে পড়ি। ভগবানের আশর্বাদে ভালোভাবে বাসায় এসে পৌঁছেছি।
জার্নিটা অনেক এনজয় করেছি সঙ্গে ভয়ও পেয়েছি অনেক। আসলে এভাবে গাড়ি চালানো যায় এটা দেখেই আমার মুখ বন্ধ।
সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকব