তীব্র তাপদাহের পর প্রশান্তির শীতল হাওয়া

in hive-129948 •  last year  (edited)

হ্যালো বন্ধুগণ,

আমার বাংলা ব্লগ এর সকল সদস্যদের জানাচ্ছি ঈদ মোবারক। আশা করি সকলেই ভালো আছেন। আমি ভালো আছি ঈশ্বরের কৃপায়।

আমার আজকের বিষয় হলো তীব্র তাপদাহের পর প্রশান্তির শীতল হাওয়া।

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ

IMG_20230422_165752.jpg

তীব্র তাপদাহের কারণে জনজীবন অতিষ্ঠ প্রায়। চৈত্রের শেষ দিক থেকে শুরু হয় তীব্র তাপদাহের। যত দিন যাচ্ছে ততই তাপের তীব্রতা বাড়ছে। হঠাৎ করে প্রকৃতির এই পরিবর্তন অসহনীয়। যতই ভাবছি যে হইত এক দুই দিনের মধ্যে ঝড় বৃষ্টি হবে কিন্তু না তাপের তীব্রতা বেড়েই যাচ্ছে।

প্রায় প্রতিদিনই আশায় থাকি কখন বৃষ্টি নামবে আর পরিবেশটাকে শীতল করবে। অপেক্ষার শেষ আর হয় না।

সকালে যখন অফিস এর জন্য বের হই রাস্তায় তাকাতে পারি না সূর্যের আলোর ঝলকানিতে। ঠিক আমার বাসার উল্টো পাশ থেকে গাড়িতে উঠতে হয়। এই টুকু রাস্তা পার হয়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষা করতে হয় ২-৪ মিনিট কিন্তু এর মধ্যে ঘেমে শেষ। অফিসে পৌঁছানোর পর একটু শান্তি।

সারাদিন বেশ ভালোই যায়। গরমের তীব্রতা বোঝা যায় না, অফিসে এ সি থাকার কারনে। কিন্তু আবার যখন বারি ফেরার সময় হয় তখন আর আস্তে ইচ্ছে করে না। এতটাই গরম যা বলে বোঝাতে পারবো না।

বাসায় ফেরার পর মনে হয় না যে রুম এ বসি। পুরো রুম আগুনের গোলায় পরিনত হয়। ওয়াল গুলোতে হাত দেয়া যায় না গরমের কারনে। সারা রাত এ ঘুমাতেই পারি না। দেখা যাচ্ছে সকাল হয়ে যায় কিন্তু গরম কমে না বরং বাড়ে।

আমরা অফিস করি তাতেই এই অবস্থা, তাহলে যারা দিনমজুর এর কাজ করে তাদের কি অবস্থা ভাবতেয় অবাক লাগে।

তীব্র তাপদেহের কারণে আমারদের জীবন অতিষ্ট। গরম বারার কারণে গ্রীষ্মের ফল তরমুজের দাম ৩০ টাকা কেজি থেকে ২-১ দিনের ব্যবধানে ৮০ টাকা কেজি হয়েছে, কচি ডাব এর দাম ৬০-৭০ টাকা থেকে বেড়ে ১৪০-১৫০ টাকা হয়েছে। এভাবে প্রায় সকল ফলের দাম বেড়ে আমাদের কেনার আয়ত্বের বাহিরে চলে গেছে।

এতো গরম সজ্জ করতে না পেরে গেলাম এসি কিনতে। কি আর বলবো সিন্ডিকেটের কারণে প্রায় সব ব্র্যান্ডের এসির দাম ১০-১৫ হাজার টাকা বেড়েছে। পারলাম না সেটাও কিনতে।

এভাবে কিছুদিন চললাম। আমার বয়সে এমন তাপমাত্রা কখনো দেখি নি। প্রায় প্রতিদিন ৪০ ডিগ্রি এর উপর তাপমাত্রা থাকছে। বৃষ্টি না হওয়াতে বিল্ডিং বাড়ি গুলোতে তাপমাত্রা বেড়েই চলেছে। তার ওপর তো ঢাকাতে কল কারখানা আছেই। সব মিলিয়ে বাজে একটা অবস্থার সৃষ্ট। যা ছিলো আমাদের কাছে অসহনীয়।

আমি তো প্রতিদিন আবহাওয়ার আপডেট নিউজ দেখতাম যে কবে হবে বৃষ্টি। দেখাত বৃষ্টি হবে পাঁচটায় বা ছয়টায় কিন্তু সে সময় আসলে দেখা যেতো আকাশে সূর্যের আলোতে ভরা কোথাও কোন মেঘ নেয়। এভাবে কিছুদিন কাটার পর অবশেষে দেখা পেলাম সেই মাহেন্দ্রক্ষণের। ২১ এপ্রিল বিকেলে হঠাৎ আকাশ কালো হয়ে আসলো এবং ধুলা ঝর শুরু হলো। ধুলা ঝর হক আর যাই হক বাতাস টা ছিলো শীতল। ঘরের সব দরজা জানালা খুলে দিলাম। নিমিশেই পুরো বাসা ঠান্দা হয়ে গেলো সংগে পুরো ঘর ধুলো দিয়ে ভরেও গেলো।

IMG_20230422_160440.jpg

IMG_20230422_160409.jpg

IMG_20230422_160337.jpg

ধুলো ঝড়

আসলে এই তাপদাহে মুসলিম ধর্মাবলম্বীদের রোজা রাখতেও অনেক কষ্ট হয়েছে। অবশেষে ঈশ্বরের কৃপায় পরিবেশটা ঠান্ডা হলো। এবার হয়তো বাড়ন্ত জিনিসের দাম কিছুটা কমতে পারে।

তবে এখন আমরা সবায় একটু শান্তিতে আছি। আমাদের মিরপুরে এখনো বৃষ্টি হয় নাই। কিন্তু ঢাকার বাইরে এবং ঢাকার ভিতরে কিছু কিছু অংশে বৃষ্টি হয়েছে যার ফলশ্রুতিতে আমরা শীতল হাওয়ার ভাগ পাচ্ছি 😊।

ঠান্ডা হলো পুরো বাংলাদেশ। কিছুটা স্বস্তিতে দিনমজুর।

আজ এই পর্যন্তই থাক। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

বিষয়তীব্র তাপদাহের পর প্রশান্তির শীতল হাওয়া।
ফটো ক্রেডিট@amitroy
ডিভাইসরেডমি নোট ৮প্রো
লোকেশনমিরপুর-১২, ঢাকা
Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আসলেই দীর্ঘদিন মানুষ খুবই কষ্ট ভোগ করার পর যখন বৃষ্টির ছোঁয়া পেয়েছে তখন মানুষ অনেকটাই প্রশান্তি লাভ করতে পেরেছে। বৃষ্টির মাধ্যমে আসলেই পুরো পরিবেশ যেন চেঞ্জ হয়ে গেছে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি পোস্ট করার জন্য।

ঠিক বলেছেন আপু। আমরা সবাই অনেক কষ্ট পেয়েছি এই কইটাদিন। তাপদাহের জন্য সব কিছু থমকে ছিলো। এখন অনেকটা শান্ত সবাই। ধন্যবাদ আপু আপনাকে আপনার মুল্যবান মন্তব্যের জন্য।

আমরা শেরপুরের মানুষ এখনো বৃষ্টির দেখা পাইলাম না দাদা । আফসোস এখানেই 😭😭। তবে ভেবসা গরমের ভাবটা একটু কমেছে। আর দাদা এসিটা কিনে ফেলেন তাড়াতাড়ি, মাঝেমধ্যে গিয়ে একটু আরাম করে আসতে পারবো 🤪

কিন্তু ভাই তারপরও শেরপুর এ অনেক শান্তি আছে ঢাকার তুলনায়। হ্যা কেনার তো ইচ্ছে আছেই কিন্তু এই যে তুই ফ্রি তে আরাম করতে আসবি এই জন্য কেনার ইচ্ছে কমে গেছে।