।। এ যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস।। 10% shy-fox beneficiary।।

in hive-129948 •  2 years ago 

১৯ই আশ্বিন ১৪২৯ বাং।
৬ই অক্টোবর/২০২২ইং।
রোজঃ বৃহস্পতিবার।

বন্ধুরা, নমস্কার/আদাব
আমি @amitab বাংলাদেশ থেকে "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার বাংলা ভাষাভাষী সকল বন্ধুদের জানাই শরৎ ঋতুর অপরূপ সৌন্দর্য কাশফুলের শুভেচ্ছা। আশারাখি সকলেই ভাল আছেন, আমিও ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সামনে " নিজ বাড়িতে শারদীয়া উৎসব উপলক্ষে গত এক মাস ধরে শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই একটা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে ছিলাম। আজকে থেকেই একটু ঝামেলা মুক্ত হয়েছি। সেই বিষয় নিয়ে আজকে আমার লেখা এ যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস।

pexels-jill-wellington-39853.jpg image source

।। এ যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস।।

আমাদের বাড়িতে প্রায় ৬০ বছর ধরে দুর্গাপূজা হয়ে আসছে। ছোটবেলায় দেখেছি বাবা কাকারা মিলে ঝাঁকজমক ভাবে এই পূজা করতো। আমার তখন বয়স চার থেকে পাঁচ বছর। দুর্গাপূজা হিন্দু ধর্মাবলীদের সবচেয়ে বড় উৎসব ও ব্যয়বহুল একটি পূজা। মধ্যবিত্ত নিম্নবিত্ত পরিবারের পক্ষে পূজা করা কঠিন একটা ব্যাপার। এ কারণেই দুর্গাপূজাকে রাজসিক পূজা বলা হয়ে থাকে।
আমার খুব মনে পড়ে ১৯৮৮ইং সনে আর্থিক দৈন্যতার কারণে বাবা কাকারা সমাজের লোকজনদেরকে ডেকে এই দুর্গাপুজো দশয়ারী ভাবে উদযাপনের প্রস্তাব করেন। সমাজের লোকজন এতে উৎফুল্লতার সহিত তা গ্রহণ করেন। ওই সময়েই বাবা কাকারা মা দুর্গার মন্দির ও জায়গাটুকু সমাজের নামে লিখে দেন। সেই থেকেই প্রতিবছরই খুবই জাকজমকপূর্ণভাবে দুর্গাপূজা উৎযাপিত হয়ে আসছে।
এবারে এক মাস পূর্বেই আমরা সমাজের লোকজনকে বাড়িতে ডেকে গীতা সংঘের মাধ্যমে জানিয়ে দেই যে, এবারে মা দুর্গার পূজার সমস্ত দায়-দায়িত্ব আমাদের। কারণ আমাদের একটি পারিবারিক মানত ছিল। মার অসীম কৃপায় সেই মানত পূর্ণ হয়েছে। আপনারা শুধু আমাদেরকে সহযোগিতা করবেন। এই প্রস্তাবে সমাজের লোকজন মহাখুশি।
যেই কথা সেই কাজ, মা দুর্গার পূজা উদযাপনের সকল দায়িত্ব এসে চাপলো আমার ঘাড়ে। পুজোর এক মাস আগেই শুরু করে দিলাম পুজোর কাজবাজ। মন্দির সংস্কারের কাজ, প্রতিমা তৈরীর জন্য ভালো কারিগর এর খোঁজ, পুজোর ঢাকের বায়না করা, দুর্গাপূজার সময় ব্রাহ্মণ পাওয়া দুষ্কর। তাই আগেভাগে ব্রাহ্মণকে নিমন্ত্রণ করে বায়না দেয়া, পুজোর ডেকারেশনের জন্য ডেকোরেটর বায়না করা ইত্যাদি কাজগুলো আমাকেই করতে হলো।
পুজোর ১৫ দিন পরেই মালা কর (প্রতিমা তৈরীর কারিগর) বাড়িতে এসে প্রতিমা তৈরি কাজ শুরু করলো, সেই কাজের দৈনন্দিন তদারকি সহ পুজোর অন্যান্য জিনিসপত্র ধীরে ধীরে যোগার যন্ত্রণা করা শুরু করে দিলাম। অবশ্যই এজন্য সমাজের লোকজন সর্বদা পাশে থেকেই সহযোগিতা করেছে আমাদের।
আমি আমার হাত দিয়ে অর্থনৈতিক যোগান দেয়া সহ সর্বক্ষণিক একটা তদারকিতে ব্যস্ত থাকতে হতো। আর ভাবতাম ঈশ্বর কি পায় যেন মা দুর্গার পূজা সুষ্ঠুভাবে পারি দিতে পারি। আমার জীবনে এই প্রথম এত বড় একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানিকতার গুরু দায়িত্ব পালন করা। যাইহোক শেষ পর্যন্ত সকল কল্পনা জল্পনার অবসান ঘটিয়ে চলে আসলো সেই মহেন্দ্রক্ষণ। ষষ্ঠী থেকে দশমী পর্যন্ত কঠিন একটা উদ্বিগ্ন আর উৎকণ্টার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিলাম আমি।
শেষ পর্যন্ত কোন ত্রুটি বিচ্যুতি ছাড়াই অনারম্বর পরিবেশে ও আনন্দ উল্লাসের মধ্য দিয়ে গত করলো সমাপ্ত করলাম শারদীয় দুর্গা পূজা উৎসব। অবশ্য এ কৃতিত্ব আমার একার নয়, এজন্য সহযোগিতা পেয়েছি স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বার ও চৌকি গ্রাম্য পুলিশদের, সহযোগিতা পেয়েছি পুলিশ প্রশাসনের, সর্বোপরি সর্বক্ষণিক সহযোগিতা পেয়েছি সমাজের লোকজনদের নিকট থেকে। আমি এ সকল মানুষদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। জীবনে প্রথম ধর্মীয় বড় একটি অনুষ্ঠান নানান ঘাট প্রতিঘাতের মধ্য দিয়ে সুসম্পন্ন করতে পেরে নিজেকে খুবই গর্বিত মনে হচ্ছে। "এ যেন স্বস্তির নিঃশ্বাস।"

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

বন্ধুরা, আজকে এ পর্যন্তই। আবার কথা হবে আগামীকাল অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন, সকলের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে শুভ সন্ধ্যা।

k75bsZMwYNtze9xHvT6xWCdz7q3QGD35ZKdaPpVrFksWkH68jVCNK4hKZwCGfUMBFP8ZsUJgfSSBfzXnu7zpWkg5zGzFwka5KMkG7dT2yTrZYwE6LM85iWR2zCzbpbtGXnNUJuioFxovEYAGN2FJd85aUUR7tXXgz.png

নামশ্রী ফণিভূষণ রায় অমিতাব।
User Id@amitab
CameraSymphony Mobile phone.
Mobile Phone ModelZ-35.
My AddressVendabari Prigonj Rangpur Bangladesh.

Writing location

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

প্রথমে আপনাকে অনেক অভিনন্দন জানাই দাদার শারদীয়া প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হয়েছেন এই জন্য। আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। আজকের ফার্স্টে একটা বিষয় পড়ে বেশ অবাক হলাম, আপনাদের বাড়িতে 60 বছর ধরে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে। তাহলে তো বেশ আগেকার কথা। আপনার বাবা কাকারা মিলে সব কিছু করে আসছে। সবকিছু মিলিয়ে বেশ ভালো লিখেছেন।

জি আপু আমাদের মন্দিরটি পৈতৃক সূত্রে ৬০ বছর হবে। এক সময় আমাদের পরিবারের আত্মিক সুস্থতা বেশ ভালই ছিল। আর এই পূজাটি খুবই ব্যয়বহুল। পরবর্তীতে আর্থিক দৈন্যতার কারণে এটি এখন সামাজিকভাবে করা হয়। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।