।। হেমন্ত ঋতুর বৈচিত্রময় ও মোহনীয় সূর্যাস্ত।। 10% shy-fox beneficiary।।

in hive-129948 •  2 years ago 

৩০শে অক্টোবর/২০২২ইং।
রোজঃ রবিবার।

বন্ধুরা, নমস্কার/আদাব
আমি @amitab বাংলাদেশ থেকে "আমার বাংলা ব্লগ" কমিউনিটির এপার বাংলা এবং ওপার বাংলার বাংলা ভাষাভাষী সকল বন্ধুদের জানাই হেমন্ত ঋতুর উষ্ণ শুভেচ্ছা। আশারাখি সকলেই ভাল আছেন। আমিও ঈশ্বরের কৃপা ও আপনাদের আশীর্বাদে ভালো আছি। আজ আমি আপনাদের সামনে "হেমন্ত ঋতুর বৈচিত্রময় ও মোহনীয় সূর্যাস্তের" দৃশ্য উপভোগ করার বিষয় নিয়ে আলোকপাত করব। আশা করি সকলকে ভাল লাগবে।

ষড়ঋতু এই বাংলাদেশের ঋতু বৈচিত্রে ভরপুর। প্রায় সপ্তাহ দিক হলো এই বাংলার ধরণী থেকে বিদায় নিল অপরূপ সৌন্দর্যের শরৎ ঋতু। বর্তমানে চলছে হেমন্ত ঋত। এই হেমন্ত ঋতুতে বাংলার ঘরে ঘরে উদযাপিত হবে নবান্নের উৎসব। কৃষাণ কিসানীরা ব্যস্ত থাকবে তাদের ফসল ঘরে তোলার জন্য। সন্ধ্যার পর ধরণীতে নেমে আসে হালকা শীত শীত দিনের সূর্যোদয়ের সাথে সাথে দুপুর পর্যন্ত বাড়তে থাকে তাপমাত্রা। হেমন্ত ঋতু তে টাটকা শাকসবজি সহ নিত্যনতুন ফসলের সমাহার প্রতিটি ঘরে ঘরে। চারিদিকে একটা আনন্দময় পরিবেশ। গত ২৭শে অক্টোবর/২০২২ ইং এই হেমন্ত ঋতুর সূর্যাস্তের অপরূপ নয়নেভিরাম মায়াবী একটি দৃশ্য আমাকে খুবই মোহিত করেছিল।

IMG_20221027_174847127.jpg

ঐদিন পেশাগত দায়িত্ব পালনের জন্য গিয়েছিলাম পীরগঞ্জ উপজেলা সদরে। সূর্যাস্তের পূর্বে বাড়ি ফিরছিলাম। উপজেলা সদর থেকে যখন কুমেদপুর নামক স্থানে এসে পৌঁছলাম। ঠিক তখনই পশ্চিম আকাশে লক্ষ্য করে আমি থমকে দাঁড়ালাম। একটা মায়াবী পরিবেশে মুগ্ধ হয়ে উপভোগ করতে লাগলাম হেমন্তের সেই সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্য। দৃশ্যটি দেখে যতটা উপভোগ্য ছিল ততটা ভয়েরও কারণ ছিল আমার কাছে। কারণ ওই মুহূর্তে রাস্তায় আমিও আমার এক বন্ধু দুজনেই মোটরসাইকেলে ছিলাম। আর কোন মানুষজন দেখছিলাম না।

IMG_20221027_174858769.jpg

দীর্ঘ ১০ মিনিট সময় ধরে দেখছিলাম এই দৃশ্যটি। যখন দেখছিলাম মনে হচ্ছিল দাবানলের আগুন লেগেছে কোন বনে। চারিদিকে চারিদিকে আগুনের দাউদাউ লেলিহিন শিখা। পুরো আকাশ ও ধরণীতে একটা অগ্নি মূর্তি ধারণ করেছে সেই লেলিহান। এ কারণেই খুবই চমকিত হয়ে ভয়ে পড়েছিলাম দুজনে।

IMG_20221027_175131037.jpg

মায়াবী পরিবেশে পশ্চিম আকাশের এক কোণে চাঁদের কোনাও দেখা যাচ্ছে খুবই কষ্ট করে। মনে হচ্ছিল চাঁদের কণাটিও এই বুঝি পুড়ে যাবে। অসাধারণ একটি দৃশ্য, আমার জীবনে এই প্রথম দেখলাম হেমন্ত ঋতুতে সূর্যাস্তের মায়াবী ও উপভোগ্য এই দৃশ্য। দুই বন্ধু দাঁড়িয়ে বেশ উপভোগ করলাম সেই দৃশ্যটুকু। আর সেই সাথে পকেট থেকে মোবাইল ফোনটি বের করে বারবার ক্লিক করতে থাকলাম। যা আজকে আপনাদের সামনে উপস্থাপন করতে পারছি। আমাদের এই উপভোগ্য সময় টাকে আপনাদের কাছে উপভোগ্য করে তোলার জন্য।

IMG_20221027_174813668.jpg

সত্যি ঈশ্বরের কি আপার নীলা, প্রকৃতির একেক সময় একেক রূপ। প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে উপভোগ করে সারা জীবন স্মৃতি করে রাখার মত একটা মুহূর্ত পেয়েছিলাম আমরা দুই বন্ধু মিলে। হয়তোবা দূর থেকে আরো অনেকেই পেয়েছে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে আমাকে মনে হচ্ছে আমরা মায়াবী পরিবেশ উপভোগের প্রথম সারিতে ছিলাম।

IMG_20221027_175059262.jpg

দীর্ঘ ১০ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকার পর ধীরে ধীরে প্রকৃতির শান্তরুপ ফিরে আসছিল। পশ্চিম আকাশের সেই অগ্নি মূর্তি মায়াবী রূপ সন্ধ্যা যতই গড়িয়ে আসছে ধীরে ধীরে প্রকৃতির সান্ত রূপ প্রস্ফুটিত হতে থাকছে। এ দৃশ্য দেখে আরো ভালো লাগছে। শেষ পর্যন্ত দুই বন্ধু মিলে আরো ২০ মিনিট অপেক্ষা করলাম সেই দৃশ্যটি দেখার জন্য।

IMG_20221027_175052373.jpg

তবেই দৃশ্যটি মনমুগ্ধকর ও মায়াবী পরিবেশের হলেও আমার কাছে একটা কিন্তু রয়েই গেছে। বাসায় ফিরছিলাম আর দুই বন্ধু মিলে একে অপরকে প্রশ্ন করছিলাম। এই দৃশ্য কি সত্যি কোন শুভ লক্ষণ ? এই দৃশ্য কি কোন অশ্ব লক্ষণ ? এর উত্তর আমাদের দুজনের কাছে কারোই জানা নেই।

IMG_20221027_175434712.jpg

তবে দৃশ্যটি আমাদের কাছে উপভোগ্যের চেয়ে ভয়ানকই বেশি ছিল। আমাদের বাংলা ব্লক কমিউনিটিতে যদি প্রকৃতির রূপ সম্পর্কে কারো কোন ধারণা থাকে তাহলে কমেন্ট করে জানানোর জন্য অনুরোধ রইল।

IMG_20221027_175248072.jpg

তবে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, এই দৃশ্য যেন সকলের জন্য শুভ হয়। গত সপ্তাহে ঘটে যাওয়া ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং এর পূর্ব মুহূর্তে বাংলাদেশের পশ্চিম আকাশে এই চিত্র দেখা গেছে। আবার দেখলাম গত ২৭ এ অক্টোবর।

IMG_20221027_175420801.jpg

2N61tyyncFaFVtpM8rCsJzDgecVMtkz4jpzBsszXjhqan9xBEnshRDSVua5J9tfneqYmTykad6e45JWJ8nD2xQm2GCLhDHXW9g25SxugWCoAi3D22U3571jpHMFrwvchLVQhxhATMitu.gif

বন্ধুরা, এই ছিল আজকে আমার "হেমন্ত ঋতুর বৈচিত্র্যময় ও মোহনীয় সূর্যাস্ত।"* নিয়ে আজকের আলোকপাত। আজ এ পর্যন্তই, আবার কথা হবে আগামীকাল অন্য কোন বিষয় নিয়ে। সে পর্যন্ত সকলে ভালো থাকুন, সুন্দর থাকুন, এই প্রত্যাশায় শুভ সন্ধ্যা।

k75bsZMwYNtze9xHvT6xWCdz7q3QGD35ZKdaPpVrFksWkH68jVCNK4hKZwCGfUMBFP8ZsUJgfSSBfzXnu7zpWkg5zGzFwka5KMkG7dT2yTrZYwE6LM85iWR2zCzbpbtGXnNUJuioFxovEYAGN2FJd85aUUR7tXXgz.png

নামশ্রী ফণিভূষণ রায় অমিতাব।
User Id@amitab
CameraSymphony Mobile phone.
Mobile Phone ModelZ-35.
Photo Locationkumedpur pirganj rangpur.
My AddressVendabari Prigonj Rangpur Bangladesh.

Writing location

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনি অসাধারণ কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন হেমন্ত বিকেলের। ঠিক বলেছেন ভাইয়া ,,‌জিনিসটা আসলে আমিও কখনো খেয়াল করিনি হেমন্ত বিকালের এই সূর্যাস্তের দৃশ্যটি। হেমন্ত সূর্যাস্ত বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে। এবং ছোট্ট চিকন ‌‌ চাঁদ টিও বেশ সুন্দর দেখাচ্ছে ফটোগ্রাফিতে। আপনাকে ধন্যবাদ ভাই এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলোর জন্য।

সত্যিই দারুণ দেখাচ্ছি আপু। আমি তো দেখে থমকে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম। এমন দৃশ্য কখনো দেখা হয়নি এমন দৃশ্য কখনো দেখা হয়নি। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আপনি পরী গঞ্জে খুব সুন্দর কিছু সূর্যাস্তের ছবি তুলেছেন। পুরিগঞ্জ জায়গাটির নাম যেমন সুন্দর আপনি সে জায়গার খুব সুন্দর ফটোগ্রাফি ও করেছেন। সত্যি সূর্যাস্তের ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমি একদম মুগ্ধ। আপনার তোলা প্রত্যেকটা ফটোগ্রাফি আমাকে মুগ্ধ করেছে। আকাশে লাল রক্তিম আভা দেখে খুবই ভালো লাগলো আপনার ফটোগ্রাফিতে। সেই সাথে খুব সুন্দর লেখা আপনার লেখাগুলো পড়েও খুব ভালো লাগলো। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাইয়া এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য।

মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

হেমন্তের গোধুলী আসলেই অনেক অপরূপ দাদা। খোলা মাঠের মাঝে এমন দৃশ্য উপভোগ করার সুযোগ যে কতদিন হয়না।এতদিন পর দেখে অনেক ভাল লাগল।আপনাকে ধন্যবাদ আমাদের দেখার সুযোগ দেওয়ার জন্য। ফটোগ্রাফ গুলো অনেক সুন্দর হয়েছে।

ঠিক বলেছেন দাদা। হেমন্তের বিকেল চমৎকার একটি দৃশ্য। মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

প্রকৃতির এমন রূপ দেখতে অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি প্রায় সময় আমাদের বাড়ির পিছনের একটা জায়গায় যেতাম। যেখানে সন্ধ্যে বেলায় এইরকম গোধূলি সন্ধ্যা দেখা যেত। তবে যদিও হেমন্ত ঋতুতে কখনো যাওয়া হয়নি। এমন দৃশ্য হয়তো বারবার চোখে পড়ে। এই ছবিতে আকাশের লাল আভার সাথে সাথে হালকা কুয়াশাও দেখা যাচ্ছে। ছোট্ট চাঁদটাও ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। সত্যি বলতে এত সুন্দর মুহূর্তটা আপনি উপভোগ করেছেন নিজ চোখে। আর আমাদের মাঝে ছবির মাধ্যমে শেয়ার করেছেন, ধন্যবাদ রইল।

জি আপু অসাধারণ একটি দৃশ্য উপভোগ করেছি আমি। সব সময় এইরকম দৃশ্য পাওয়া মুশকিল। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

আপনাকে ও অনেক ধন্যবাদ আমার মন্তব্যের খুব চমৎকার একটি ফিডব্যাক দেওয়ার জন্য।

শরৎ শেষে হেমন্ত এলো , আসলেই এই হেমন্ত কালে বাংলার ঘরে ঘরে পালিত হবে নবান্নের উৎসব ৷ নতুন এক আনন্দ বাংলায় ঘরে ঘরে এখন ৷ হেমন্তের এমন দিনগুলো খুব ভালো লাগে ৷ আপনি দারুণ একটি বিকাল উপভোগ করেছেন ৷ হেমন্তের সূর্যাস্ত আজ চমৎকার ছিলো ৷ প্রকৃতির এমন সৌন্দর্য সত্যিই মুগ্ধ করে ৷ হেমন্তের অনেক সুন্দন একটি সূর্যাস্ত উপভোগ করার পাশাপাশি মুগ্ধ করার মতো কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন ৷ অনেক ভালো লাগলো ৷ ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর মুহূর্ত গুলো শেয়ার করার জন্য ৷

মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।

শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পর পর ছবিগুলো দেখলাম দাদা। কি ভাবে আলো ধীরে ধীরে মিলিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই দেখির মত। শেষ ছবিটা যেনো একটা দিনের শেষ আর রাতের শুরুর সূক্ষ্ম একটা রেখা দিয়ে বিভাজিত।এমন সুন্দর পরিবেশ উপভোগ করার জন্য মানুষ ১০ মিনিট কেনো ১০ ঘন্টাও দাঁড়িয়ে থাকতে পারে। পীরগঞ্জ থেকে ফেরার পথে আপনার লাভ বৈ লোকসান হয় নি দেখছি।

ঠিক বলেছেন দিদি এরকম দৃশ্য সব সময় পাওয়া যায় না। সত্যি মাঝ পথে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে উপভোগ করেছি এই দৃশ্য। মন জুড়িয়ে যাবার মতো দৃশ্যগুলি। আপনার জন্য অনেক অনেক শুভকামনা রইল।