হাসির গল্প "লাল খাতা"।। [১০% লাজুক শিয়ালের জন্য [

in hive-129948 •  2 years ago 

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি অবারাকাতুহু।



রোজ- মঙ্গলবার।১৬ ই,কার্তিক।১৪২৯,বঙ্গাব্দ।হেমন্তকাল।।


হ্যালো বন্ধুরা ?


আমি আনিসুর রহমান।আমার ইউজার আই ডি @anisshamim।মাতৃভাষা বাংলা ব্লগিং এর একমাত্র কমিউনিটি “আমার বাংলা ব্লগ” এর ভারতীয় এবং বাংলাদেশী সদস্যগণ,আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন।আপনাদের দোয়ায় আলহামদুলিল্লাহ আমি ও ভালো আছি।আজ আমি আপনাদের মাঝে আবারও হাসির গল্প লাল খাতা নিয়ে হাজির হয়েছি।আশাকরি,গল্পটি আপনাদের ভালো লাগবে।


pexels-anna-tarazevich-5196810.jpg

Source


পিন্টুর হাতে লাল খাতা।খাতাটা তার ছেলে বল্টুর স্কুলের।রোল টানা সেই খাতায় সে নামের তালিকা তৈরি করছে।তালিকাটা সে বানিয়েছেন এভাবে -খাতার বাম পাশের প্রথম কলামে আত্মীয়ের নাম, দ্বিতীয় কলামে সম্পর্ক,তৃতীয় কলামে ঠিকানা, চতুর্থ কলামে তারিখ।পিন্টুর স্ত্রী গভীর মনোযোগে স্বামীর তালিকা বানানো দেখছিল। তালিকায় অধিকাংশ নাম তার পরিচিত।কিছু নাম পিন্টুর বাবার বাড়ির দিকের।কিছু নাম পিন্টুর বউয়ের বাপের বাড়ির দিকের।যদিও বাবার বাড়ি অপেক্ষা পিন্টুর শশুরবাড়ির দিকের আত্মীয়দের নাম বেশি বেশি।


এর মধ্যে পিন্টুর স্ত্রী কয়েকবার ছেলেকে পাঠিয়ে কাহিনি বোঝার চেষ্টা চালিয়েছিল,লাভ হয়নি।বল্টু অনেকক্ষণ বাবা পাশে দাঁড়িয়ে থেকেও কিছু বুঝতে পারেনি।এভাবে দীর্ঘ সময় কেটে যাওয়ার পর পিন্টুর স্ত্রী আর প্রশ্ন না করে থাকতে পারলও না। সে জিজ্ঞেস করল,ওগো, তুমি আমার বাপ,দাদা,আত্মীয়দের নাম ঠিকানা লিখতেছ কেন ? পিন্টু খাতা থেকে মুখ তুলে মিটিমিটি হাসে।কলম কামড়ে কি যেন ভাবে।বাদ পরে যাওয়া কারও নাম মনে পরলে আবার লিখে। এতে তার স্ত্রীর কৌতূহল আরও বাড়ে।


মনে মনে পিন্টুর স্ত্রী এমন অদ্ভুত খাতা তৈরির কারণ ভাবতে শুরু করে। পিন্টু হয়তো সব আত্নীয়র নাম ধরে ধরে দোয়া করতে চাইছে। এমন ভেবে পিন্টুর স্ত্রী দারুণ খুশি হয়। তার স্বামী নিজের বাড়ি থেকে শশুরবাড়ির আত্মীয়দের নাম বেশি লিখছে। একটু পরেই তার মনে হয়, তাহলে নামের সঙ্গে ঠিকানা লিখছে কেন? পিন্টুর স্ত্রী হিসাব মিলাতে পারছে না।অগত্যা স্বামীকে সে আবারও জিজ্ঞেস করে,এই বল্টুর বাপ,ঘটনা খুলে বল তো।


পিন্টু এবার বিরক্ত হয়।খাতা থেকে মুখ তুলে স্ত্রীর দিকে চেয়ে বলে,জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে, সে খবর রাখ।এ মাস থেকে বাড়িতে আর বাজার সদাই করতে পারব না।আত্নীয়দের নাম লিখে রাখছি।সিরিয়াল ধরে ঘুরে ঘুরে একেক দিন একেক আত্মীয়র বাসায় গিয়ে দাওয়াত খাব।তালিকার শুরু থেকে শেষ সবার বাসায় খাওয়া শেষ হলে আবার প্রথম থেকে শুরু করব।বাড়িতে তোমাকে আর রান্না করতে হবে না।


রান্না কম হলে তেল সহ অন্যান্ন জিনিসের ব্যবহার কম হবে। আমাকে আর খাওয়ার জিনিসপত্র কিনতে হবে না।স্বামীর এমন আয় করার পুরোনো বুদ্ধিতে স্ত্রী খুব খুশি হয়। সে নিজেও কয়েকজন আত্মীয়র নাম তালিকায় ঢুকিয়ে দেয়। স্বামী -স্ত্রী মিলে মহাউৎসবে খাতায় নাম টুকতে ব্যস্ত তখন বাসার কলিংবেল বেজে উঠে।পিন্টুর স্ত্রী উঠে দরজা খুলে দেখে পিন্টুর ফুপাতো ভাইয়ের পরিবার বাহিরে দাঁড়িয়ে আছে। তাকে দেখে চব্বিশ দাঁত বের করে হেসে বলে, ভাবী,বহুদিন দেখা সাক্ষাৎ নেই, তাই তোমাদের দেখতে চলে এলাম।এ বেলা তোমাদের সাথে খাবো।পিন্টুর স্ত্রী অবাক চোখে চেয়ে দেখে ওদের হাতে ও মিষ্টির প্যাকেটের পরিবর্তে পিন্টুর মতোই বাঁধাই করা লাল খাতা।


আশা করি,হাসির "লাল খাতা" গল্পটি পড়ে আপনাদের ভালো লেগেছে।আর গল্পের মধ্যে কোন ভুল ত্রুটি হলে ক্ষমার সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোন বিষয় নিয়ে। ভাল থাকবেন ও সুস্থ থাকবেন। নিজের প্রতি খেয়াল রাখবেন।আর গল্পটি ভালো লাগলে আপনাদের মূল্যবান কমেন্ট করে আমাকে উৎসাহিত করবেন।আজ এ পর্যন্তই।


C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNz8uuU7jNdUdZcqn6h7peG3CH7HW4Dj4EnjdfKn9T6S1nX92sULZRaFUhpFmzY87Rh7WVkoNuC (1).png

আমার পরিচিতি

PXL_20210326_120329396.MP.jpg


আমি আনিসুর রহমান। আমার স্টিমিট আইডি @anisshamim।আমার জন্মস্থান মুন্সিগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরে।আমি বাংলা ভাষার মাধ্যমে মনের ভাব প্রকাশ করতে স্বাচ্ছন্দ্যেবোধ করি এবং বাঙালি হিসেবে নিজেকে খুব গর্বিত মনেকরি।ভ্রমন করা আমার খুব সখ।তাছাড়া সময় পেলেই কবিতা লিখা এবং মজার মজার রেসিপি তৈরি করা।গল্পের বই পড়তে ও খুব ভালো লাগে।অন্যের কষ্টে নিজেকে বিলিয়ে দিতে খুব ভালোলাগে।



VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png



আল্লাহ হাফেজ


Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

ওরে ভাই হাসতে হাসতে পাগল হয়ে গেলাম। হা হা হা....🤣 আমি তো প্রথম অংশটুকু পড়ে ভেবেছিলাম আমি নিজেও এই রকম একটা লাল খাতা বানাবো এবং সেখানে আত্মীয়-স্বজনদের নাম লিখব। তারপর সারা বছর আত্মীয় স্বজনদের বাড়ি খেয়ে বেড়াবো। কিন্তু পরে দেখছি ঘটনা উল্টে গেল, আত্মীয়-স্বজনরাই উল্টে বাড়ি চলে আসলো। অনেক দিন পর খুব ভালো একটা গল্প পড়লাম ভাই। হা হা হা...।

ভাই আর বইলেন না। কাল গল্প লিখতে না লিখতে আমার বাড়িতেই সকালে আত্নীয় ভরে গেছে।হা হা হা।

হাহাহাহা বেশ মজা পেলাম ভাইয়া আপনার লাল খাতা গল্পটি পড়ে। বুদ্ধির আর শেষ নেই সারা বছর সবার বাড়িতে ঘুরে বেড়াবে আর খাবে। সে বদ্ধি বের করতে না করতে অন্যরা তাদের বাসায় এসে হাজির🤣🤣🤣।

আসলে আমরা যা চিন্তা করি,আমাদের থেকে যে কেউ আরো আগে সেই চিন্তা করে রাখতে পারে,সে বিষয়ে অনেক সময় আমাদের একেবারেই ধারনা থাকে না।অসংখ্য ধন্যবাদ আপু, এত সুন্দর মন্তব্য করে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।

আপনার লাল খাতা গল্পটি পড়ে অনেক ভালো লাগলো। সত্যি ভাই আপনার গল্পটি অনেক হাসি ছিলো। বাহ বেশ দুর্দান্ত গল্প আপনি মাঝে মাঝে উপস্থাপন করেছেন। আপনার থেকে এ ধরনের গল্প আরো আশা করি। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনাকে শেয়ার করার জন্য।

আমার গল্পটি আপনার ভালো লেগেছে জেনে খুব ভালো লাগলো ভাইয়া। আমার জন্য দোয়া করবেন যাতে আরো চমৎকার ও অর্থবহ গল্প নিয়ে আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে পারি।

বর্তমানে দেশের যে অবস্থা পিন্টুর বুদ্ধিটা কাজে লাগলে মন্দ হয় না। কিন্তুু এটা তো জানা থাকা দরকার যে সেরের ‍উপর সোয়াসের আছে হা হা হা। এখন কি আর করা যেহেতু পিন্টুর বাসায় মেহমান এসেই পড়েছে এখন তো পিন্টুকে কাদঁতে কাদঁতে বাজারে যেতে হবে হা হা হা। ধন্যবাদ ভাইয়া। গল্পটা পড়ে হাসি পেল।

ভাই গল্প লিখার পরের দিন আমার অবস্থা ও পিন্টুর মতো হয়েছে। হা হা হা। অসংখ্য ধন্যবাদ এত সুন্দর উৎসাহমূলক মন্তব্যের মাধ্যমে আমাকে উৎসাহিত করার জন্য।