"বিকালে সংসদ ভবনের সামনে ঘোরাঘুরি"

in hive-129948 •  8 months ago 


হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক

আজ- ১৯ ই এপ্রিল, শুক্রবার, ২০২৪ খ্রিঃ

আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্যসদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।



কভার ফটো

1000081548.jpg

কয়েকটি ফটোগ্রাফি একত্রিত করে সুন্দর একটি কভার ফটো তৈরি করে নিয়েছি।



আমি আজকে আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন পোস্ট শেয়ার করতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। ঢাকা থেকে ঈদের ছুটিতে বাড়িতে যাওয়ার আগে আমার ভাই চমক এসেছিলো সরকারি চাকুরীর পরীক্ষা দিতে।‌‌ এর আগেও অবশ্য বেশ কয়েকবার এসে আমাদের মেসে থেকে পরীক্ষা দিয়েছিলো। আমাদের দেশে বিভিন্ন সরকারি চাকরির পরীক্ষাগুলো ঢাকাতেই সব থেকে বেশি হয়ে থাকে। এবারে পরীক্ষা শেষ করে এসে চমক ভাই বলল যে, বাইরে কোথাও ঘুরতে যাই চলো। আমি তখন চমক ভাইকে বললাম যে, তোমার কোথায় যাওয়ার ইচ্ছা বল সেখানে যাবো। তখন চমক ভাই বললে যে, সংসদ ভবনের সামনে থেকে চলো ঘুরে আসি। তাই আমরা দুজন মিলে সংসদ ভবনের সামনে বিকালে বেশ ঘোরাফেরা করেছিলাম সেই সুন্দর মুহূর্ত আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।

1000070220.jpg

আমার ভাই চমকে সরকারি চাকরির পরীক্ষা শেষ হতে হতে প্রায় বিকাল হয়ে গিয়েছিলো। তারপর এসে যখন আমাকে বলল যে, চলো ঘুরতে যাই কোথাও তখন তার ইচ্ছাতেই সংসদ ভবনের সামনে ঘুরতে যাওয়াতে রাজি হই। যদিও আমি এর আগে অনেকবার সংসদ ভবনের সামনে গিয়ে ঘোরাফেরা করেছি সত্যি বলতে বিকালের সময় সেখানে ঘোরাফেরা করতে ভীষণ ভালো লাগে। আর ভাই চমক যেহেতু গ্রাম থেকে এসেছে তার ইচ্ছাটা যদি না পূরণ করি তাহলে কি আর হয়!

1000070224.jpg

আমরা দুজন খুব তাড়াতাড়ি রেডি হয়ে আমাদের বাসা থেকে মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ডে গিয়ে সেখান থেকে লেগুনাতে করে সংসদ ভবনের সামনে রওনা দিই। মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে অবশ্য সংসদ ভবনের সামনে যাইতে বেশি সময় লাগে না। সেদিন অবশ্য তেমন একটা যানজট ছিল না তাই খুব তাড়াতাড়ি আমরা সংসদ ভবনের সামনে পৌঁছে যায়। মোহাম্মদপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে সংসদ ভবনের সামনে লেগুনাতে করে গেলে দশ টাকা করে নেয়।

1000070222.jpg

আমরা যে সময়ে সংসদ ভবনের সামনে গিয়েছিলাম তখন মানুষজন কম ছিলো। যদিও বিকাল টাইমে সংসদ ভবনের সামনে প্রচুর লোকজন লক্ষ করা যায় কিন্তু রোজার মাস চলাকালে মানুষজন বাসা থেকে কম বের হয়। পড়ন্ত বিকালের দিকে দুজন একসাথে গল্পের সাথে সাথে ঘোরাফেরা করতে ভীষণ ভালো লাগছিলো‌। এটাই অবশ্য চমক ভাইয়ের সাথে প্রথম ঘুরতে যাওয়া। আমরা দুজন অবশ্য একই সাথে পড়তাম আমারা দুজনেই ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং শেষ করেছিলাম। মামা বাড়িতে শৈশবে আমাদের দুজনের অনেক স্মৃতি রয়েছে।

1000070227.jpg

আমরা সংসদ ভবনের সামনে ঘোরাফেরা করার সময়ে দেখলাম যে, একজন আর্টিস্ট মোবাইলে ছবি দেখে হুবহু আর্ট করছে। সত্যি বলতে এদের দক্ষতা বেশ সুন্দর। এর আগে অবশ্য বেশ কয়েকবার সংসদ ভবনের সামনে আসলেও আর্টিস্টদের আর্ট করা ভালোভাবে লক্ষ্য করে দেখা হয়েছিল না। কিন্তু এবারে লোকজনের সমাগম কম থাকাতে আমি আর আমার ভাই চমক অনেকটা সময় এই আর্টিস্টের আর্ট করা দেখলাম। আমার কাছে মনে হয় আমাদের দেশে আর্টিস্টদের তেমন একটা কোন দাম নেই বা কেউ মূল্যায়ন করে না। কিন্তু এই ফুটপাতের আর্টিস্টদের ভেতর অরিজিনাল ট্যালেন্ট রয়েছে।

1000070226.jpg

আমি নিজেও অবশ্য আর্ট করতে ভীষণ পছন্দ করি তবে সময়ের অভাবে আর্ট করা হয়ে ওঠে না। এসব আর্টিস্টদের যদি আমাদের দেশের সরকার বা মানুষেরা সঠিক মূল্যায়ন করতো তাহলে এদের হয়তো ফুটপাতে বসে আর্ট করতে হতো না। আমরা অনেকটা সময় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে এই আর্টিস্টের আর্ট করা দেখলাম। তারপর একটু সন্ধ্যা হয়ে আসলে হাঁটতে হাঁটতে ফার্মগেটের দিকে এগোতে থাকি।

1000076067.jpg

ফার্মগেটের মোড়ে গিয়ে দেখতে পেলাম একজন ভ্যান গাড়িতে করে আনারস বিক্রি করছে। অবশ্য এদিন মানুষজন কম থাকাতে তেমন একটা আনারস বিক্রি হচ্ছিল না। তারপর আমি আমার ভাই চমকে বললাম যে, চলো উনার কাছ থেকে আনারস খাই। তারপর দুই ভাই এসে এই আনারস বিক্রেতার সাথে অনেক সময় কথা বললাম। একটা হাতের অর্ধেক অংশ না থাকার কারণে অবশ্য আনারস কাটতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয় তার। তারপরও সে নিজের কর্ম দিয়ে জীবন জীবিকা নির্বাহ করছে বিষয়টা আমাদের কাজ ভীষণ ভালো লেগেছিলো।

1000070231.jpg

এই আনারস বিক্রেতা লেখাপড়ায় অনেক ভালো ছিলো। ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং সম্পূর্ণ করার পরে বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং ভর্তি হয়েছিলো। তারপর পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে লেখাপড়া বাদ দিয়ে ঢাকা শহরে ভ্যানে করে আনারস বিক্রি করে। একজন মানুষ বাস্তবতার সম্মুখীন হলে কি করতে পারে ভেবে দেখুন। ‌ বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছেলে এখন ফুটপাতে ভ্যানে করে আনারস বিক্রি করে। অবশ্য এটা অসম্মানের নয় কারণ প্রতিটি কর্মই সমান। আমরা অনেক সময় তার সাথে আনারস খাইতে খাইতে গল্প করলাম। তারপর আমাদের আনারস খাওয়া শেষ হলে আনারসের টাকা দিয়ে আমরা আবার হাঁটতে হাঁটতে বাসায় চলে আসি।



পোস্টের ছবির বিবরন

ডিভাইসস্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪
ক্যামেরা১০৮ মেগাপিক্সেল
তারিখ১৮ ই মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ
লোকেশনঢাকা


প্রিয় বন্ধুরা,

আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।



আমি কে !

20230826_112155.jpg

আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।



সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ
@aongkon



VOTE@bangla.witness as witness witness_proxy_vote.png
OR
SET @rme as your proxy
witness_vote.png

standard_Discord_Zip.gif

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

image.png

বিকালে সংসদ ভবনের সামনে বেশ ভালো একটা সময় কাটিয়েছেন। সত্যি ভাইয়া বাস্তবতা অনেক কঠিন। আসলে আনারস বিক্রেতা পারিবারিক সমস্যার কারণে এই পথ বেছে নিয়েছে। যাইহোক ভাইয়া সৎ পথে থেকে যেকোনো কাজ করাই অনেক
ভালো। ধন্যবাদ ভাই সুন্দর কাটানো মুহূর্ত আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

অবশ্যই আপু সৎ পথে থেকে যেকোনো কাজ করায় অনেক ভালো। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

সংসদ ভবন প্রথমত বুঝতাম না কেমন? মানুষের মুখে শুনতাম অনেক কিছুই।তারপর নিজের চোখে দেখে বুঝলাম, এই জায়গাটা বিশ্ব মারাত্মক ভয়ংকর।যারা নতুন তাদের জন্য বেশ কঠিন ঢাকা শহর। একটা জিনিস কিন্তু এখানে গেলে হরেক রকমের মানুষ দেখা যায়। সংসদ ভবন রাত্রের সময় দেখতে ভীষণ ভালো লাগে। বিকালে সংসদ ভবনের সামনে ঘোরাঘুরি করেছেন। দেখতে ভীষণ ভালো লাগতেছে আবারো অতীত মনে পড়ে গেল।

তাই নাকি ভাই এখানে এসে কি কোন সমস্যাতে পড়েছিলেন নাকি? তবে সন্ধ্যার পরে এখানে একা একা না ঘোরাফেরা করাই ভালো। এখানে খারাপ মানুষ ভালো মানুষ সব ধরনের মানুষ পাওয়া যায়। আমরা বিকালবেলাতে গিয়ে বেশ ভালোই ঘোরাফেরা করেছিলাম অনেক মজা করেছিলাম। সুন্দর মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।

সংসদ ভবনের সামনে বেশ উৎসব মুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয় বিকেল বেলায়। যখন ঢাকায় ঘুরতে গিয়েছিলাম তখন সংসদ ভবনের সামনে গেছিলাম। অনেক ভালো লাগে সবাই এসে ভিড় করে। আপনার ভাই চমক কে নিয়ে সংসদ ভবনের সামনে ঘুরতে গেলেন। বিষয়টি বেশ ভালো লাগলো আমাদের সাথে শেয়ার করলেন।

ও তাই নাকি আপু আপনিও ঢাকা ঘুরতে এসে সংসদ ভবনের সামনে এসেছিলেন জেনে অনেক ভালো লাগলো। অনেক সুন্দর মন্তব্য করে পাশে থাকার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।

সংসদ ভবনে ঘুরতে গিয়ে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। এবং অনেকগুলো ফটোগ্রাফি করেছেন যেগুলো অসাধারণ সুন্দর লাগছে আমার কাছে। মোবাইলের ছবি দেখে যে কোন আর্টিস্ট হুবহু ছবি আঁকতে পারে সেটা কাছ থেকে না দেখলে বোঝা যায় না। এটা ভেবে খুব খারাপ লাগলো একজন বিএসসি ইঞ্জিনিয়ার পারিবারিক সমস্যার কারণে ঢাকা শহরে এসে আনারস বিক্রি করে । আসলে বাস্তবতা বড়ই কঠিন। সুন্দর একটি পোস্ট দেখে সত্যি অনেক ভালো লাগলো।

এটা সত্যি বলেছেন আপু বাস্তবতা বড়ই কঠিন আজ বাস্তবতার জন্য এই বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়া ছেলে আনারস বিক্রি করছে। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

পড়ন্ত বিকালে সংসদ ভবনের সামনে বেশ সুন্দর মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন। আসলে বিকেল বেলায় বাহিরে ঘুরতে বের হলে খুব ভালো লাগে। জি ভাই, ফুটপাতের আর্টিস্টদের ভেতর অনেক ট্যালেন্ট রয়েছে। তাদের আর্ট গুলো সত্যি বেশ অসাধারণ। আসলে আনারস বিক্রেতার কথা শুনে খুব খারাপ লাগলো।

হ্যাঁ ভাই বিকাল বেলা বাইরে ঘোরাঘুরি করতে ভীষণ ভালো লাগে। আর্টিস্টদের ভেতরে আলাদা একটা ট্যালেন্ট আছে সত্যি যেটা আমার কাছে অনেক ভালো লাগে। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ।

বিকেলবেলা সংসদ ভবনের পাশে ভ্রমণের মুহূর্ত খুবই আনন্দের সাথে উপভোগ করেছেন। আসলে এরকম পরিবেশের মধ্যে ভ্রমণ করলে মন অনেক ভালো হয়ে যায়। খুবই সুন্দর মুহূর্ত উপভোগ করেছেন। আর ফটোগ্রাফি করেছেন। ফটোগ্রাফি গুলো দেখে অনেক ভালো লাগলো।

হ্যাঁ ভাই এরকম পরিবেশে ঘোরাফেরা করতে ভীষণ ভালো লাগে আমরা দুজনে বেশ সুন্দর সময় অতিবাহিত করেছিলাম। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই।