হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ২৬শে মার্চ , রবিবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আজকে ২৬ শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা রইলো সবাইকে। বাংলাদেশের এই দিনটিকে বিশেষভাবে উদযাপন করা হয়। স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের এমনি এমনি হয়ে যায়নি এর পিছনে রয়েছে অনেক আত্মত্যাগ ও করুণ ইতিহাস। আমি আজকে আপনাদের সাথে শেয়ার করব যেভাবে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের হলো। তাহলে চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।
প্রায় ২০০ বছর ব্রিটিশ শাসনের পরে দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালের ১৫ ই আগস্ট ভারত এবং পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টি হয়। পাকিস্তানের দুটি অংশ একটি ছিল পূর্ব পাকিস্তান এবং অন্যটি ছিল পশ্চিম পাকিস্তান। আমরা পূর্ব পাকিস্তান ছিলাম সংখ্যাগরিষ্ঠ বর্তমান বাংলাদেশ। পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর পূর্ব পাকিস্তানীরা অর্থাৎ বাঙালিরা শোষণ এবং নিপীড়নের শিকার হতে থাকে পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছে। কারণ রাষ্ট্রের সকল ক্ষমতা ছিল পশ্চিম পাকিস্তানিদের হাতে। পাকিস্তান রাষ্ট্রের সৃষ্টির পর ১৯৪৮ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নর মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ঢাকায় এসে কাজল হল সমাবর্তনে ঘোষণা দেন উর্দু হবে পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা।
এই ঘোষণা দেয়ার পর থেকেই কার্জন হলের সামনে থেকে বাঙালিরা নো- নো বলতে থাকে ভীষণ প্রতিবাদ জানায়। তারপর ১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি বাঙালিরা ধর্মঘটের আয়োজন করে সেই পাকিস্থানে সরকার কর্তৃক ১৪৪ ধারা জারি করা হয় ধর্মঘট ভাঙ্গার করার জন্য। কিন্তু সাহসী বাঙালিরা ভাষার জন্য রাজপথে নেমে পড়ে তারপর সেই ধর্মঘটে লাঠিচার্জ এবং গুলি বর্ষনে মারা যায় রফিক, জব্বার, বরকত।
১৯৫৪ সালে পাকিস্তানের প্রাদেশিক নির্বাচনে যুক্তফ্রন্ট সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে সরকার গঠন করে। মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী, শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মিলে পাকিস্তানের প্রাদেশিক শাসনভার গ্রহণ করে। কিন্তু আড়াই মাসের ভেতর মন্ত্রিসভা ভেঙে রাষ্ট্রপতি শাসন আইন জারি করা হয়। তারপর ১৯৫৪ সালেই সংবিধানে বাংলাকে একটি রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রস্তাব গ্রহণ করা হয়। ১৯৫৬ সালে সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রভাষা বাংলা স্বীকৃতি লাভ করে।
পূর্ব পাকিস্তানিদের উপর অর্থনৈতিক , সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বৈষম্যের জন্য ১৯৬৬ সালের বিরোধী দলের সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান লাহোরের ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেন। ছয় দফা দাবিকে বাঙালির মুক্তির সনদ বলা হয়। বঙ্গবন্ধুর এই দাবি তখন গৃহীত হয়নি। তারপর ১৯৬৮ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনকে আসামি করে গ্রেফতার করা হয় কূটনৈতিকভাবে।
১৯৬৯ সালে স্বায়ত্ত শাসনের দাবিতে বাঙালিরা সারা দেশব্যাপী আন্দোলনে নেমে পড়ে। আন্দোলনের চাপে পড়ে পাকিস্তানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী আইবুর খান পদত্যাগ করে সামরিক শাসন জারি করে জেনারেল ইয়াহিয়া খানের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করে ভোটে জয়লাভ করে। তারপর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে লাখো মানুষের সামনে বজ্রকণ্ঠে ১৮ মিনিটের ভাষণে তিনি বলেন "এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম" মূলত এখান থেকে স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের ভাবতে শুরু করেছিলাম।
তারপর ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বাঙ্গালীদের উপর নির্মমভাবে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এজন্য এখন এই দিনটিকে বাঙালিরা কালরাত হিসাবে স্মরণ করে। এই রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। তবে গ্রেফতার এর আগেই বঙ্গবন্ধু স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে দেয়। তারপর ২৬ শে মার্চ থেকেই বাঙালি জাতি তাদের স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ শুরু করে দেয়। আর ২৬ শে মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের পক্ষে এম এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন এবং ২৭ শে মার্চ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন।
তারপর সমস্ত বাঙালি স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। পূর্ব পাকিস্তান বর্তমান বাংলাদেশ এবং পশ্চিম পাকিস্তান যুদ্ধের শেষ ভাগে এসে বাঙ্গালীদের পক্ষ নিয়ে ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনী এবং বাংলাদেশের সেনাবাহিনী নিয়ে গঠিত হয় যৌথ বাহিনী। টানা নয় মাস রক্ত খয়ী যুদ্ধের পর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যুদ্ধে পরাস্থ হয়ে আত্মসমর্পণ করে এবং জেনারেল আব্দুল্লাহ খান নিয়াজী যৌথ বাহিনীর প্রধান জেনারেল জগজিৎ সিং অরোরা ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে আত্মসমর্পণ দলিলে স্বাক্ষর করে। ৩০ লক্ষ তাজা প্রাণ এবং ৩ লক্ষ মা বোনের নির্যাতনের পরেই ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর স্বাধীনতা অর্জন করি। ১৬ ই ডিসেম্বর এই দিনটিকে বিজয় দিবস বলে আখ্যায়িত করা হয়। স্বাধীনতা অর্জনটি ছিল বাঙালি জাতি হিসাবে পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করে ধরার। সৃষ্টি হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ নামক একটি রাষ্ট্রের।
এভাবেই অনেক কষ্ট এবং আত্মত্যাগের বিনিময়ে স্বাধীনতা শব্দটি ধীরে ধীরে আমাদের নিজের করে নিয়েছিলাম।
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
@aongkon
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমরা অনেক কষ্টে আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। স্বাধীনতার ইতিহাস হয়তো আমাদের সবার জানা। তবে আপনার এই পোস্টের মাধ্যমে আরো অনেক কিছু জানতে পারলাম। ভাইয়া স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আপনি দারুন একটি পোস্ট করেছেন। অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো তুলে ধরেছেন। শুভকামনা রইল ভাইয়া।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ আপু স্বাধীনতার ইতিহাস আমাদের সবারই জানা আছে, স্বাধীনতা নিয়ে লিখতে অনেক ভালো লাগে। সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit