হ্যালো..!!
আমার সুপ্রিয় বন্ধুরা,
আমি @aongkon বাংলাদেশের নাগরিক।
আজ- ১০ই নভেম্বর, শুক্রবার, ২০২৩ খ্রিষ্টাব্দ।
আমি আশা করি, আপনারা সবাই সুস্থ এবং সুন্দর আছেন। আমার মাতৃভাষা বাংলার একমাত্র ব্লগিং কমিউনিটি আমার বাংলা ব্লগ এর ফাউন্ডার, এডমিন প্যানেল, মডারেটর প্যানেল এবং সকল সদস্য ও সদস্যাদের আমার অন্তরের অন্তরস্থল থেকে প্রাণঢালা শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন রইল।
আজকে আমি আপনাদের সামনে নতুন একটি পোস্ট হাজির হয়েছি। প্রতিনিয়ত আমার বাংলা ব্লগে নতুন নতুন ও শেয়ার করতে অনেক বেশি ভালো লাগে আমার। আমাদের অত্র এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের ধর্ম প্রতিষ্ঠান ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশান পরিষদ। এই ব্যাংগাড়ীয়া আমার মহাশ্মশান অত্র অঞ্চলের সকল হিন্দু সম্প্রদায়ের মিলিত হবার একটি ধর্মীয় স্থান। আমি ছোটবেলা থেকে এই প্রতিষ্ঠানকে অনেক বেশি ভালোবাসি। কারণ এই প্রতিষ্ঠানে ১০ বছর আগে যত অনুষ্ঠান হতো সব অনুষ্ঠানের খাওয়া দাওয়া আমাদের বাড়িতে হতো। আর আমার বাবা প্রায় ৪৮ বছর ধরে এই প্রতিষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত রয়েছে। আমাদের এই ব্যাংগাড়িয়া মহাশ্মশান পরিষদ ১৪৮ বছরের পুরনো একটি প্রতিষ্ঠান। আজকে আমাদের ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশানের পুরাতন কমিটি কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা এবং নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে সেগুলো এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
প্রতি তিন বছর পর পর আমাদের এই ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশানে পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করে উপদেষ্টা পরিষদের গঠন করা নির্বাচন কমিশনার দ্বারা নতুন কমিটি গঠন করা হয়। আমাদের ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশান পরিষদের ৩৭ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করা হয় প্রতি তিন বছর পর পর। আর এই নির্বাচন কমিশন সকল সদস্য এবং গ্রামের প্রতিনিধিদের কাছে অনুমতি নিয়ে কমিটি গঠন করে থাকে। আমাদের ব্যাংগাড়িয়া মহাশ্মশানের কমিটি গঠন প্রক্রিয়াটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এরকমভাবে কমিটি গঠন পদ্ধতিতে আমার কাছে অনেক বেশি ভালো লাগে।
আমাদের ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশানের এর আগের একটি মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিলো যে আজকে পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা এবং নতুন কমিটি গঠন করা হবে। তাই এলাকার সকল হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রতি আহবান ও নিমন্ত্রণ জানানো হয়েছিলো এই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ে অংশগ্রহণ করার জন্য। যাতে করে সবাই মিলে সুষ্ঠ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুরাতন কমিটি বিলুপ্ত এবং নতুন কমিটি গঠন করতে পারে।
আমার বাবা যেহেতু ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশানে পুরাতন কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে ছিলো। তাই আমার বাবার প্রতি দায়িত্বটা একটু বেশিই ছিলো। আসলে এরকম ধর্মীয় দায়িত্ব পালন করতে আমার বাবা নিজেও স্বাচ্ছন্দ বোধ করে। আপনার হয়তো অনেকেই জানেন যে, একটি প্রতিষ্ঠানের সভাপতির সবথেকে বড় পদ হলেও সাধারণ সম্পাদকের পদটা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
আজকে সকাল ১০ টার দিকে আমার বাবা ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশানে যাওয়ার পরপরই আমিও গেলাম। কারণ এরকম একটি মিটিংয়ে সবার উপস্থিতি থাকাটা কাম্য। আমরা যার পরেই আস্তে আস্তে চারপাশের এলাকার সনাতন ধর্মাবলম্বীরা ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশানে আসতে থাকে। এই গুরুত্বপূর্ণ মিটিং শুরুর পূর্বে শ্রীমৎ ভাগবত গীতা থেকে পাঠ করে আমাদের এলাকার রঞ্জন কুমার বিশ্বাস।
আমাদের ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশান পরিষদের পুরাতন কমিটির সভাপতি পদত্যাগের কারণে সহ-সভাপতি দায়িত্বে থাকা ধীরেন চন্দ্র বিশ্বাস কার্যকরী সভাপতি দায়িত্ব পালন করছিলেন। সবার উপস্থিতিতে কার্যকর সভাপতির আদেশে মিটিং শুরু করা হয়। তারপর সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন বিশ্বাস অর্থাৎ আমার বাবা এই প্রতিষ্ঠান যাদের দ্বারা একসময় সূচনা হয়েছিলো সেসব গুণীজনদের আত্মার শান্তি কামনায় এক মিনিট নীরবতা পালনের অনুরোধ জানাই সবাইকে।
তারপর পুরাতন কমিটির সকল উন্নয়নমূলক কার্যকলাপক এবং কমিটির বর্তমান অবস্থা আমার বাবা সবার সামনে তুলে ধরে। তারপর সবাই মিলে আরো অনেক রকম আলোচনার শেষে এই কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিশ্বরঞ্জন বিশ্বাস অর্থাৎ আমার বাবা পুরাতন কমিটিকে বিলুপ্ত ঘোষণা করে। আর আমার বাবা ব্যক্তিগত কিছু সমস্যার কারণে নতুন করে কমিটির বড়পথ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে না আসার জন্য সবার কাছে করজোরে অনুরোধ জানায়। কারন বাবা জানতো যে, সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য সবাই মিলে আমার বাবাকে আবার নতুন করে নির্বাচিত করবে।
তারপর উপদেষ্টা মন্ডলীর সভাপতি দায়িত্বে থাকা মাদকচন্দ্র বিশ্বাস পাঁচজন বিশিষ্ট নির্বাচন কমিশন গঠন করে নতুন কমিটি তৈরি করার জন্য।তারপর নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিকভাবে কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়। প্রথমে সভাপতির দায়িত্বের জন্য গণতান্ত্রিকভাবে পুরাতন কমিটির কার্যকরী সভাপতি দায়িত্বে থাকা ধীরেন্দ্রনাথ বিশ্বাসকে নতুন কমিটির সভাপতি ঘোষণা করা হয়। তারপর সহ-সভাপতি হিসেবে আমার বাবা বিশ্বরঞ্জন বিশ্বাসকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত হয়। যদিও আমার বাবা কোন পদে না আসার জন্য সবাইকে অনুরোধ করেছিলো। তারপরেও বর্তমান সভাপতি অসুস্থতার কারণেই সহ-সভাপতি দায়িত্ব প্রদান করেন নির্বাচন কমিশনার।
তারপর সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য পুরাতন কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক সন্তোষ কুমার সন্ন্যাসীকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। আর সহসাধারণ সম্পাদক পদের জন্য পুরাতন কমিটির সদস্য থেকে সুজন কুন্ডুকে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। তারপর কোষাধ্যক্ষ পদের জন্য পুরাতন কমিটির কোষাধ্যক্ষ কে আবার নতুন কমিটিতে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত করা হয়। আর সহ কোষাধক্ষ হিসাবে গণতান্ত্রিকভাবে প্রশান্ত মন্ডলকে নির্বাচিত করা হয়।
আজকে পাশের গ্রামে একটি ভোগ আরাধনার অনুষ্ঠান থাকার কারণে বড় বড় ছয়টি পদে নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে গণতান্ত্রিকভাবে এই ছয় জনকে নির্বাচিত করা হয়। আর যে সকল পদগুলো রয়েছে সেগুলো পরবর্তী মিটিংয়ে নির্বাচন কমিশনার এবং এই নতুন কমিটির বিবেচনায় সে সকল পদগুলো পূরণ করা হবে।
তারপর নতুন পদে প্রতিষ্ঠিত সবাই নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে শপথ গ্রহণ করে। তারপর ব্যাংগাড়ীয়া মহাশ্মশানের এই গুরুত্বপূর্ণ মিটিংয়ের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।
পোস্টের বিবরন
পোস্ট ধরন | জেনারেল রাইটিং |
---|---|
ডিভাইস | স্যামসাং গ্যালাক্সি এফ-৫৪ |
ক্যামেরা | ১০৮ মেগাপিক্সেল |
তারিখ | ১০ ই নভেম্বর ২০২৩ |
লোকেশন | কুষ্টিয়া |
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি স্টিমিট প্ল্যাটফর্মে আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটিতে প্রতিনিয়ত আমার সৃজনশীলতা দিয়ে ভালো কনটেন্ট শেয়ার করে এই কমিউনিটিকে সমৃদ্ধ করতে চাই এবং উচ্চতার শিখরে নিয়ে যেতে চাই। আমার ব্লগটি কেমন হয়েছে আপনারা সবাই কমেন্টের মাধ্যমে অবশ্যই মন্তব্য করবেন, সামান্য ভুল ত্রুটি অবশ্যই ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন এবং সুপরামর্শ দিয়ে পাশে থাকবেন। আবার দেখা হবে নতুন কোনো পোস্ট নিয়ে শীঘ্রই, ততক্ষণে সবাই নিজের খেয়াল রাখবেন সুস্থ এবং সুন্দর থাকবেন এটাই কাম্য করি।
আমি অংকন বিশ্বাস, আমার ইউজার নেম @aongkon। আমি মা, মাতৃভাষা এবং মাতৃভূমিকে সব থেকে বেশি ভালোবাসি। আমি হৃদয় থেকে ভালবাসি সৃষ্টিকর্তা ও তার সকল সৃষ্টিকে। আমি বর্তমানে ইউরোপিয়ান ইউনিভার্সিটিতে সিভিল টেকনোলজিতে বি.এস.সি ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে লেখাপড়া করছি। আমি ভ্রমণ করতে, গান গাইতে ও শুনতে, কবিতা লিখতে ও পড়তে, আর্ট করতে, রান্না করতে ও ফটোগ্রাফি করতে খুবই পছন্দ করি। "আমার বাংলা ব্লগ" আমার গর্ব "আমার বাংলা ব্লগ" আমার ভালোবাসা। আমার নিজের ভেতরে লুকায়িত সুপ্ত প্রতিভাকে বিকশিত করার লক্ষ্যে "আমার বাংলা ব্লগে" আমার আগমন। এই স্বল্প মানব জীবনের প্রতিটা ক্ষণ আমার কাছে উপভোগ্য। আমি মনে করি, ধৈর্যই সফলতার চাবিকাঠি।
@aongkon
কথায় আছে-পুরাতনকে সরিয়ে নতুনকে স্থান করে দিতে হবে।তাই আপনাদের ওখানেও পুরোনো কমিটি বিলুপ্তি ও নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে জেনে ভালো লাগলো দাদা।আসলে আমি মনে করি যেকোনো পদ গ্রহণের থেকে তা দায়িত্ব সহকারে পালন করা অনেক বেশি কঠিন।আশা করি আপনার বাবা সুন্দরভাবে তার পদ পালন করে মানুষের মনে স্থান করে নিতে পারবেন।ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যাঁ দিদি পুরাতন কমিটি কে বিলুপ্ত করে নতুন কমিটি গঠন তো করতেই হবে এটাই তো নিয়ম। অবশ্যই আমার বাবা এই পদের সম্মান দেখে কাজ করে যাবে দায়িত্ব সহকারে। অসংখ্য ধন্যবাদ দিদি সুন্দর মন্তব্য করে সব সময় পাশে থাকার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit