রহস্যময় রাজবাড়ী

in hive-129948 •  2 years ago 

গ্রামের পাশেই পুরানো রাজবাড়ী। দিনের বেলাতে ঐ বাড়িতে যেতে কেউ সাহস করে না। সবাই বলে এই বাড়িতে নাকি ভূত থাকে। মাঝে মাঝে নাকি এ বাড়ি থেকে চিৎকার, গান, নৃত্যের শব্দ আসে।
অনেক দিন আগে রাজবাড়ীর পাশ দিয়ে এক ছেলে ও মেয়ে তাদের গন্তব্যে যাইতেছিলো। যেতে যেতে অনেক রাত হওয়ার কারনে তারা রাত কাটানোর জায়গা খুজতেছিলো।
আশ্রয়ের স্থান খুজতে খুজতে তারা এই রাজবাড়ীর সামনে এসে উপস্থিত হয়। তারা দেখে রাজবাড়ীটা অনেক আলোয় জ্বলজ্বল করছে। তাদেখে তারা এই বাড়িতে রাত কাটানোর সিন্ধান্ত নেয়।
কিন্তু তারা তো আর জানতো না যে এই বাড়িতে রাত কাটালে এটি হবে তাদের শেষ রাত। তারা এগুতে এগুতে রাজবাড়ীর ভিতরে ঠুকে পরে। ঠুকার সাথে সাথেই তারা অবাক হয়ে যায়।
কারণ তাদের বরন করার জন্য সবাই পথ চেয়ে বসে আছে। এর মধ্যে একজন বলে উঠল তোমরা এত দেরি করে আসলে কেনো, আসতে কোনো সমস্যা হয়নিতো। না, কিন্তু আপনারা আমাদের চিনেন কি?
আর আমরা এখানে আসবো আপনারা জানলেন কিভাবে! এসব কথা পরে হবে আগে কিছু খেয়ে নাও। তারা খেয়ে বলল এবার আমাদের বলেন? তাহলে বলছি শুনো,
রাতের বেলা এখান দিয়ে কেউ গেলে আমরা জানতে পারি এবং তারা সবাই এখানে আশ্রয় নেয়। ওহ! তারা সেখানে বসে কিছুখন গল্প করল এবং রাতে থাকার জন্য একটি দেখিয়ে দেওয়া হলো।
যরটিতে তারা ঘুমালো ঠিকি কিন্তু পরের দিনের সকাল আর দেখতে পেলো না। পরেরদিন তাদের লাশ রাজবাড়ীর বট গাছে ঝোলানো অবস্থায় পাওয়া যায়।
এর পর থেকে সবাই এই বাড়িটিকে ভূতূরে বাড়ি করে বলে থাকে। এসব কাহিনি আশরাফুল তার দাদার কাছে শুনেছিলো এবং সে তার বন্ধুদের কাছে শেয়ার করে।
ওর কাহিনি শুনে সবাই হাসতে হাসতে মাটিতে গড়াগরি পারতে ছিলো। এটা দেখে আশরাফুল অনেক রাগ করে এবং বাসায় চলে যায়। আশরাফুলের তেমন কোনো বন্ধু নেই হাতে গুনা তিন জন।
উক্ত কারনে আশরাফুল তার বন্ধুদের সাথে একসপ্তাহ ধরে কোনো যোগাযোগ করে না। এটা দেখে জান্নাত বলে শাহিন আশরাফুলের আবার কিছু হলো না তো। সেই কবে গেলো কোনো খোজ নাই
ঠিক বলছিস তুই। বিথী আশরাফুলকে ফোন দেতো। আচ্ছা দিতেছি,দোস্ত আশরাফুলের ফোন বন্ধ বলতেছে। চল তাহলে ওদের বাসায় যাই দেখি ওর কি হবাই বলল শাহিন।
ঠিক আছে চল তাহলে বলল জান্নাত
শাহিনেরা আশরাফুলের বাসায় গিয়ে বলল তোর কি হইছে আমাদের সাথে যোগাযোগ করস না। কি যোগাযোগ করমু তোরা আর আমাকে বন্ধু ভাবস না। তোরে কে বলছে আমরা তোকে বন্ধু ভাবি না।
তোরে কে বলছে তোকে আমরা বন্ধু ভাবি না
কে বলবে আবার বন্ধু ভাবলে তো আর আমার সাথে তোরা এই রকম করতে পারতি না।
আচ্ছা আমাদের ভুল হয়ে গেছে ক্ষমা চাইতেছি আর এই রকম করবো না
যা এবার আর কিছু বললাম না ক্ষমা করে দিছি (আমি)
চলনা আমরা কোথাও ঘুরতে যাই (জান্নাত)
জান্নাত ঠিক কথা বলছে কিন্তু যাবো আমরা কোথায় (বিথী)
কেনো আমরা রাজবাড়ীতে যাবো আর দেখবো রাতে ওখানে কি হয় (জান্নাত)
তোর কি মাথা খারাপ হইছে নাকি। আশরাফুল কি বলছিলো শুনছিলি তো এইরকম যদি কিছু হয় (শাহিন)
আরে কিছু হবে না আমাদের সবাই তো এক সাথেই থাকবো (জান্নাত)
তোদের কথা শেষ হলে আমি বলি কি আমরা জান্নাতের কথা মতোই যাবো আর কাল রাতেই যাবো (আমিতোদের কথা শেষ হলে আমি বলি কি আমরা জান্নাতের কথা মতোই যাবো আর কাল রাতেই যাবো (আমি)
ঠিকআছে আমরাও তাহলে যাবো (বিথী/শাহিন একসাথে)
ঠিকআছে কাল রাতে সবাই রেডি থাকবি (জান্নাত)
আমরা রাজবাড়ীর উদ্দেশ্যে রওনা দিলাম। সেখানে গিয়ে রাজবাড়ীটা ঘুরে দেখলাম। একটু পরেই রাজবাড়ীটা আগের মতো হয়ে গেলো।
এই জান্নাত দেখ সবকিছু আগের মতো হয়ে গেছে আমার কিছু ঠিক মনে হচ্ছে না (বিথী)
আরে আমাদের কেউ ভয় দেখানোর জন্য এইরকম করছে চারপাশে ঘুরে দেখ তাই তোরা বুঝে যাবি (আমিআরে আমাদের কেউ ভয় দেখানোর জন্য এইরকম করছে চারপাশে ঘুরে দেখ তাই তোরা বুঝে যাবি (আমি)
কি বুঝবো আমরা (শাহিন)
দেখ বাতি গুলো নতুন আর ঘরগুলো কেমন পরিষ্কার (আমিদেখ বাতি গুলো নতুন আর ঘরগুলো কেমন পরিষ্কার (আমি)
ঐ দেখ কারা যেনো এই দিকে আসছে পালা তোরা (জান্নাত)
আমরা সবাই ভয় পেয়ে দোরাতে লাগলাম। দোরাতে দোরাতে একটা ঘরে গিয়ে ঠুকে পরি। আমরা ঘরে ঠুকার পর দুইজন লোক বেরিয়ে আসলো।
এটা দেখে শাহিন বলল আপনারা এখানে আসলেন কিভাবে আপনাদের মনে হয় ঐ আন্তারা আটকিয়ে রেখেছে (অচেনা লোক)
হ্যা, আমাদের এখানে আটকিয়ে রেখেছে। ওরা আমাদের সবাইকে দুইদিন পর মেরে ফেলবে (লোক)
আমাদের মেরে ফেলবে কেনো? আর আপনারা কারা (আমি)
আমি রবিন আর এ আমার ভাই রুহুল। আমরা পুরানো জিনিষের উপর গবেষনা করি। আর আমরা এই বাড়ির সম্পর্কে বই পরে জানতে পেরেছি। তাই আমরা গবেষনার কাজ করার জন্য এই বাড়িতে এসেছি।
আমাদের গবেষনার কাজ শেষ করতে রাত হয়ে যায় আর আমরা এখানেই আটকে পরি (রবিন)
একমিনিট আপনাদের পরিচয় পত্র কই। আর আপনারা কোথা থেকে এসেছেন (আমি)
কি সব বলছিস তুই (জান্নাত)
আমি ঠিক বলছি আপনাদের আইডি কার্ড দেখান (আমি)
এই যে আমাদের আইডি কার্ড। আর আমরা আংহি এজেন্সি থেকে এসেছি (রবিন)
আপনারা মিথ্যা কথা বলছে এই নামে এখন প্রযন্ত কোনো এজেন্সি খোলা হয়নি (আমি)
এ ছেলেটা দেখছি অনেক চালাক। এই ধর এদের সবাইকে (রবিন)
আপনারা এই সব কি বলছেন আর আপনারা আমাদের ধরবেন কেনো (শাহিন)
শাহিনের কথা শেষ করতে না করতেই কিছু লোক এসে আমাদের ধরে ফেললো।
তোদের ধরবো না তোরা থাকলে আমাদের কোনো কাজ ঠিক ভাবে করতে দিবি না (রবিন)
কেনো? আর আপনারা এই জায়াগায় কি কাজ করেন। এই জায়গায় নাকি ভূত আছে। তাহলে আপনারা এই জায়গায় থাকেন কিভাবে (জান্নাত)
তোদের এতো কিছু জানতে হবে না। এদের সবাইকে বসের কাছে নিয়ে চল (রবিন)
আপনাদের বস কে আর আপনারা আমাদের কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন (বিথী)
নিয়ে গেলেই তোরা বুঝবি এখন চুপচাপ চল আমাদের সাথে (রবিন)
আমাদের ধরে ওদের বসের কাছে নিয়ে যাচ্ছে। আর আমাদের তারা কি করবে। ইচ্ছে করলে তারা আমাদের এখানে মেরে ফেলতে পারতো। জানি না আমাদের জন্য সামনে কি অপেক্ষা করছে।
বস ওদের সবাই নিয়ে এসেছি (রবিন)
আচ্ছা তোমরা যাও এখান থেকে আমি ওদের সাথে কথা বলছি (বস)
সব লোক চলে গেলো সেখান শুধু আমরা চার জন আর সেই বস।
আশরাফুল তোমরা এখানে এসে ঠিক করো নাই। এখন তোমাদের সবাইকে মরতে হবে (বস)
কে আপনি? আমার নাম জানলেন কিভাবে (আমি)
আমি তোদের দাদু
দাদু তুমি! তুমি এখানে কেনো? আর ওই লোক গুলো তোমাকে বস বলছিল কেনো? আর এখানে নাকি ভূত আছে (আমি)
হা হা হা ভূত! এখানে কোনো ভূত নেই। আমি তো শুধু মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য এই রকম করেছি (দাদু)
কেনো দাদু তুমি এমটা করছ। দয়াকরে আমাদের ছেরে দাও। আমরা বাহিরে গিয়ে কাউকে কিছূ বলবো না (বিথী)
কি বললি আমি তোদের ছেরে দেবো। তোরা যে বাহিরে গিয়ে কাউকে কিছু বরবি না এর কি প্রমাণ আছে। এর থেকে তোরা এখানে থেকে তিলে তিলে মারা যা। আর যেনো কি বলছিলি আমি এসব কি জন্য করেছি। তাহলে শোন,
আমি এখানে বিশেষ একটা বোম তৈরি করছি। যা দিয়ে আমি পৃথিবী ধংষ করতে পারবো। আর এটা দিয়েই আমি সবাইকে ভয় দেখাবো। (দাদু)
এসব করে তোমার লাভ কি (জান্নাত)
এটাও বুঝিস না। ভয় দেখিয়ে আমি সারা পৃথিবীতে রাজত্ব করবো। সবাই আমার কথা শুনে চলবে এটাও বুঝিস না। ভয় দেখিয়ে আমি সারা পৃথিবীতে রাজত্ব করবো। সবাই আমার কথা শুনে চলবে (দাদু)
দাদু তুমি নিশ্চই পাগল হয়ে গেছো। দয়াকরে এসব করা তুমি বাদ দাও (আমি)
এসব বাদ দিবো মানে এগুলো আমি এমনি এমনি করেছি নাকি। আমার কোটি কোটি টাকার সব কিছু তোদের কথায় নষ্ট করব (দাদু)
দাদু তাহলে তুমি এসব বাদ দিবে না (আমি)
না আমি বাদ দিবো না (দাদু)
তাহলে শুনো একটা কথা বলি এই বাড়িটা পুলিশ চার দিক দিয়ে ঘেরাও করে রয়েছে। আর তারা যেকোনো সময় হামলা করবে (আমি)
তুই এমন কাজ করতে পারলি। আর জানলি কিভাবে এখানে ভূত নেই অন্য কিছু চলছে তুই এমন কাজ করতে পারলি। আর জানলি কিভাবে এখানে ভূত নেই অন্য কিছু চলছে (দাদু)
হা হা হা, তাহলে তোমাকে সত্তিটা বলেই দেই। আমি মানে আমরা সবাই সিআইডিতে কাজ করি। তোমার কাছে রাজবাড়ীর ভূতের কথা শুনে আমার সনদেহ হয়েছিলো।
তারপর আমি বিভিন্ন ওয়েব সাইড থেকে এ রাজবাড়ীর তথ্য খুজেছি। এর মধ্যে বিগত ৫০ বছরের মধ্যে কোনো মৃত্যুর খবর পাওয়া যায় নি। আর এতেই আমরা মুল বিষয়টা জানতে এখানে এসেছি। এখানে এসে আমরা তোমাকে পেয়ে গেলাম (আমি)
এই তোরা সবাই কোথায় গেলি এদের সবাইকে ধরে মেরে ফেল (দাদু)
দাদু তুমি আমাকে হাসালে। এখানে কেউ নেই সবাইকে ধরা হয়ে গেছে এখন তোমাকে ধরা বাকি (আমি)
কি তোরা আমাকে ধরবি। তোরা আমাকে ধরতে পারবি না। এইযে রিমোট দেখছোস এটা টিপলেই সারা বাড়ি উরে যাবে। আমার সাথে তোরাও মারা যাবি। (দাদু)
দাদু রিমোট ফেলে আন্তসম্পন কর। এতে তোমারই ভালো হবে (শাহিন)
কি ভালো হবে দারা এখনই চাপ দিতেছি (দাদু)
দাদু চাপ দেওয়ার আগেই আমি গুলি করতে বাধ্য হই। এই তোমরা কোথায় দাদুকে হাসপাতালে নিয়ে যাও। আমি হেড আফিস থেকে আসতেছি।
ঠিকআছে স্যার (শাহিন)

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!