ষোলআনা সজ্জাবদলের ব্যাবহারিক রূপ !

in hive-129948 •  8 months ago 

তারিখ : ১১ই জ্যৈষ্ঠ -১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ২৫.০৫.২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ, শনিবার।

হ্যালো প্রিয় কমিউনিটির বন্ধুগণ,

সবাই কেমন আছেন ? আশা করি আপনারা বরাবরের মতো ভালোই আছেন আর পরম করুণাময়ের কৃপায় সুস্থ সাবলীল একটি প্রাণময় জীবনযাপন করছেন ৷ সবার সুস্থতা ও শান্তির বার্তা জ্ঞাপন করে আজকের ব্লগ শুরু করছি ।
ধন্যবাদ ৷

দেয়ালে টানানো বাংলা পঞ্জিকাটির দিকে তাকিয়ে আজ কিছুটা শ্রান্তি অনুভব করলাম। মনের ভেতর হালকা বেলীফুলের সুঘ্রাণ নাড়িয়ে গেল যেন কোথাকার কোন যুগের সময়ে যখন আধুনিক পৃথিবীর এই বিচিত্র কর্মযজ্ঞ, প্রযুক্তির সর্বব্যাপী রমরমা অবস্থা আর ইউরোপীয় ধাঁচের জীবন সবখানে নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করে নিয়েছে।

pexels-photo-6032669.jpeg
Src

তারপরেও কিছু জিনিস পুরোপুরি মুছে দিতে পারে নি।

আজকে যে বিষয়টি নিয়ে শুরুতেই কথা বলতে চাই তা হলো একটি নিতান্তই সামান্য ব্যাক্তিগত পর্যবেক্ষণ অথচ যার ভেতরে বড় একটি প্রসঙ্গের অবতারণা রয়ে গিয়েছে । যখন দাপ্তরিক কাজকর্মে, আর নিত্যদিনের অনলাইন কিংবা অফলাইন যোগাযোগ, কিংবা আলাপচারিতা, শিক্ষা - সামাজিক আর ব্যাবসায়িক লেনাদেনা ইত্যাদি নানা ধরণের অনুশীলনে ইংরেজি সরঞ্জামের ধার ঘেঁষতে হয় সবসময়, তখন কিছু বাঙালিয়ানা অল্প ক্ষণের জন্য বাঁচিয়ে রাখা আছে।

কিছুদিন আগে বেশ বড় একটি জেলাশহরের বাজারে গিয়েছিলাম কিছু ঘরে রাখার জিনিসপত্র কিনবো বলে। বড় ধরনের মেলা কিংবা মনোহরি আনুষ্ঠানিক জাঁকজমক না হলে অনেকগুলি বাহারি দোকানপাটে ঘুরে বেড়ানোর মধ্যে নান্দনিকতা কিংবা মজা খুঁজে পাই না।

যা হোক, এমনিতে বিকেলবেলা আবহাওয়া আর চারপাশের প্রকৃতি বেশ ঠান্ডা ছিল, তারপরো গরমের উত্তাপ একেবারে কমে যায় নি তখনো।

বেশ অনেকটা পথ হেঁটে বেড়ালাম, সারিসারি দোকানের এ মাথা থেকে ও মাথা। এই অভ্যাসটি অবশ্য আমার বেশ কয়েক বছর ধরেই আছে, হা হা । কোন জিনিস কিনতে যাবো, সে একটি হোক কিংবা একগুচ্ছ ; সবার প্রথমে আমি একটি রাউন্ড দিয়ে আসি যদি কিছু চমৎকার অথবা নতুনত্ব থাকে, চিত্তাকর্ষণ কিছু যা হয়তো আরো আগ্রহ নিয়ে আসবে অনেকগুলোর মধ্য থেকে একটা কেনার ব্যাপারে।

যা হোক, যখন ফর্দ অনুসারে কিছু জিনিস কেনা প্রায় শেষ করে ফেলেছি, তখন একবার মনে হলো হয়তো যে দিকটায় পুরোপুরি ঘুরে বেড়াতে পারি নি, দৃষ্টির অগোচরে রয়ে গিয়েছে সেখানটায় একবার গিয়ে দেখি, যদি কিছু নজরে আসে তাহলে খুব দারুণ হবে।

free-photo-of-a-man-is-holding-a-bunch-of-balloons-in-the-air.jpeg
Src

আর তাছাড়া হাতে তখন সময় অঢেল আছে বলা চলে। অবসরের শেষ সময়, উপরন্তু তখন সপ্তাহান্তের ছুটির দিনও চলছে।

যে দোকানটায় অনেকগুলো বইপত্র সাজানো থরে বিথরে, সাথে করে ম্যাগাজিন, চিঠিপত্রের বাহারি কাগজ, ফাউন্টেন পেনের সমাহার, কিছু তৈজসপত্র আর কারুশিল্পের সংগ্রহ বেশ চলনসই ধরনের রয়েছে দোকানীর। আর বিক্রয় ও হচ্ছে বেশ, যেমন খদ্দের আছে তেমন লোকবর্গ দর্শনার্থীদের ভীড় ; কেউ পছন্দের জিনিস কিনতে পেরে খুশি - কেউবা বেচতে পেরে লাভের মুখ দেখে।

আমি যে বিষয়টি দেখি যারপরনাই অবাক হলাম, সাথে কিছুটা বিস্ময় সেটা হলো অনেক রকমের ক্যালেন্ডার, ছোটবড় দেয়ালে সাঁটানোর উপযোগী, কিছু হাতের তালুতে রাখা যায় এমন সাইজের আবার টেবিলে সাজানোর মতোও আছে।

ম্যাক্সিমামই ইংরেজি আর খুব বেশি ব্যাবহারিক প্রয়োগ নাই বিধায় বাংলা পঞ্জিকা সবার তেমন একটা পড়া হয় না, জানা হয়না কি মাস চলছে বাংলার হিসেবে।

এটি কিন্তু নিজেদের দোষ বলবো না, হয়তো সবাই প্রয়োজন বোধ করে না বিধায় তার হিসেব রাখে না। যেমনি করে কোন বইয়ের দোকানে অপ্রয়োজনীয় কিন্তু মূল্যবান বই বিক্রয় হয় না আর মূখ্যপাঠ্য বই স্টক থেকে শেষ হয়ে যায়৷ যেমন স্রোত, তেমন পানির বয়ে যাওয়া।

কিন্তু একটি বিষয় না বললেই না, সেটি হলো এ দেশের আবহাওয়ার ঋতুপ্রকৃতির পরিবর্তন কিন্তু সময়ের সাথে তাল মিলিয়ে পালাবদল ঘটে। এই যেমন বেশ কিছুদিন গরম পড়লো, আজকের দিনটি জ্যৈষ্ঠের আম, লিচুর সময় আর এটি ইংরেজি ক্যালেন্ডার দেখে অনুমেয় নয় সহজে। তার জন্য খাপে খাপ হিসেবে বাংলা পঞ্জিকাই সেরা এবং মানানসই।

free-photo-of-golden-hour-captured-in-dhaka-ramna-park.jpeg
Src

শেষ বিকেলে কেনা জিনিসপত্র ঘরে রেখে এসে বাইরে বেরিয়ে এলাম আর তখনই হাওয়া বেশ জোরে বইতে শুরু করেছে। মনে হলো কয়েক শতাব্দী পূর্বে ফিরে গেলাম। তখন গরুর গাড়ি চলছে রাস্তায় আর কাঁচাকাদা রাস্তা বয়ে চলেছে। এরূপ কল্পনায় অল্পেই আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়লাম...

অবসান ।

নিজের সম্পর্কে কিছু কথা


Blue Abstract Watercolor Blank Template Instagram Story_20240516_152026_0000.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাহ ভাই আপনার কথা এবং যুক্তি দু দিক থেকেই যথার্থ মিন রয়েছে। আসলেই বর্তমান ওয়েদার পরিস্থিতি আর ক্যালেন্ডার এ দেওয়া তারিখ দুটোর মধ্যেই আসমান জমিন তফাৎ রয়েছে। ঋতু যেন সময়ের সাথে সাথে পালাবদল করে নিচ্ছে নিজেকেও। মেলায় গেলে কিংবা কোন শপে গেলে নিজের প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার জন্য আমারও একটি স্বভাব রয়েছে সেটা হচ্ছে পুরো মার্কেট আগে ঘুরে দেখব নতুনত্ব মন আটকায় কিনা। তারপর একে একে কেনা শুরু করি। যাইহোক সুন্দর কিছু কথা আমাদের মাঝে ব্যক্ত করেছেন আজকে। আশা করছি আগামীতেও আপনার পোস্ট থেকে এরকম গতানুগতিক কথাগুলো আমরা জানতে পারবো ,ধন্যবাদ।

সমাজে পরিবর্তন কিন্তু যথানিয়মে আসতেই থাকবে আর তার থেকে নিজেকে আড়াল করারও বেশি কিছু নেই। তবে আমাদের কিছু পুরনো ঐতিহ্যকে অবশ্যই নিজের অভ্যাসের মধ্যে লালন করা উচিত।
যেমন বাংলা ক্যালেন্ডার দেখা, আর কিছু ঐতিহ্য যা আমাদের একান্তই নিজের সেগুলোর ব্যাপারে জানা ও পরবর্তী প্রজন্মকে জানানো অতীতের সোনালী দিনগুলোর ব্যাপারে।
ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এত উৎসাহ মূলক কমেন্ট করার জন্য, 💐