আসসালামু আলাইকুম / আদাব।
সবাইকে আমার বাংলা ব্লগে স্বাগতম জানাই।
আজ ২১ শে এপ্রিল, ২০২৪। বাংলার আবহাওয়া এখন অনেকটাই তপ্ত আর গরমের পারদ এখন তুঙ্গে উঠার উপক্রম। বাংলাদেশের চুয়াডাঙ্গা নামক স্থানে তাপমাত্রা ৪০° সেলসিয়াসের কিছুটা উপরে উঠে এসেছে যা ভীষণ দাবদাহ তৈরি করতে শুরু করেছে। তীব্র গরমের ক্ষেত্রে হিটস্ট্রোক একটি বড় উপসর্গ যা স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে।
আমি আশা করি আপনারা নিজেরা গরমের প্রতাপ থেকে নিরাপদে রয়েছেন এবং ক্রান্তিকালীন স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। বেশ অনেকসময় দেখা যায়, ম্যাক্সিমাম মানুষ নিজেদের সুরক্ষার কথা তোয়াক্কা করে না এবং সময়োপযোগী খাবারের কথা একেবারে ভুলে যায়। যা মোটেই ভালো পরিণতি ডেকে আনে না, পরিণামে স্বাস্থ্যহানি ঘটাতে শুরু করে।
রাস্তাঘাটে মানুষজন সবচেয়ে বেশি ভুল করে পানীয় পান করার ক্ষেত্রে। এ বিষয়টি যেটি আমি তুলে ধরছি তা বোধহয় খুব বেশি কেউ আলাপ করে না, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয় কিনা আর মানুষ কেমনই বা তা পাত্তা দেয় - তা প্রশ্নবিদ্ধ। যদিও অনেক ক্ষেত্রে তা বিরূপ পরিণতি নিয়ে আসে আর আমরা তা বুঝতে পারি না।
যেটি সচরাচর দেখা যায়, গ্রীষ্মকাল এলেই আইসক্রীম, কোমল পানীয় আর হিমাগারের ফ্যাক্টরিগুলোর কদর খুব বেশি বেড়ে যায়। এ দেশে নির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়, তা গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণও হয় বাড়তি রূপে। তারপরেও দেখা যায় সরকারি বিদ্যুৎ বিভাগ দিনের কিছু সময় কমবেশি ২-৮ ঘন্টা লোডশেডিং করে বিদ্যুৎ ঘাটতি পোষিয়ে নেয়। কিন্তু বিদ্যুৎ সরবরাহ হ্রাসের পিছনের কারণ কি ?
ঐ যে ঠান্ডা খাবার পানীয়ের ফ্যাক্টরিগুলোর বাড়তি বিদ্যুৎ খরচ, বাসাবাড়ির এয়ারকন্ডিশন আর ফ্যানের সুইচ একবার অন করার পর সারাদিন ঘরোয়া বসবাসের ফলে আর অফ করার ফুরসত পাওয়া যায় না, শীতকালের তুলনায় এ দিকে তাই বাড়তি বিদ্যুৎ।
একদিকে আইসক্রিমের লোভ বাচ্চা থেকে বুড়োদের সম্বরণ করা কঠিন, তার পাশাপাশি তার বিক্রয়ও বেশি। আমি কৌতুহলের কারনে পাড়ার ৪-৫ টি স্টেশনারি দোকানে একটি ছোট্ট সার্ভে করে নিলাম। ঠান্ডা খাবারগুলোর মধ্যে কোনটি বেশি বিক্রয় করা হয়, তারপর যা দেখতে পেলাম তার সাথে বাস্তবের কিছু অভিজ্ঞতা আর পর্যবেক্ষণের অনেক মিল খুঁজে পেলাম।
কোকা কোলা, ফান্টা, সেভেন আপ কোন জমকালো অনুষ্ঠান, বিয়েবাড়ি কিংবা জন্মদিন, জয়ন্তী কিংবা ধর্মীয় উৎসব সবখানেই এ সফ্ট ড্রিংক্সের জুড়ি মেলা ভার। গরম আসলে তো কথাই নেই , বাকি রেখে হলেও যেকোন একটা কিনতে হবে।
প্রাচীনকাল থেকে বাংলার সংস্কৃতিতে একটি কথা প্রচলিত আর তা হলো -
ঋণং ঘৃতং পীবেৎ, যাবজ্জীবন সুখং জীবেৎ।
এটি একটি সংস্কৃত কথা যার চলতি অর্থ দাঁড়ায়, ঋণ করে হলেও ঘি খাও। তবে এখনকার গরমের দিনের ক্ষেত্রে বোধহয় সত্য হয়ে ধরা দেয়, বাকিটাকি খাতায় নাম লেখিয়ে হলেও মুদি দোকানদারের থেকে কোমল পানীয় লও 😁।
কিছুদিন আগে একটি হাসপাতালে গিয়েছিলাম কোন একটি কাজে। সেখানে গিয়ে দেখি কিছু রোগী আছে যারা গলাব্যাথার উপসর্গ নিয়ে এসেছে, বোধহয় গরমে ঠান্ডায় এলার্জি এটাক করেছে। গরমের দিনেও ডাক্তারমশাই গরম পানি খেতে বলেছেন। এটা বোধহয় মোক্ষম শাস্তি নয়তো কটাক্ষ, ঠান্ডা -গরমের ভারসাম্য রইলো না বলে।
ছাতা মাথায় ঘরের বাইরে বের হওয়াটাই শুধু জরূরি নয়, তার পাশাপাশি দেশি তাজা ফলমূলের দিকে দৃষ্টি দিতে হবে। বাংলার আবহাওয়ায় বেলেমাটিতে খুব স্বাভাবিকভাবেই তরমুজ ফলে। এ ফলটি যেমন রসালো তেমন পানিশূন্যতা পূরণ করে। ডাবের পানিও গরমের দিনে সহায় হবে। তবে দৈনিক পানি পানের ঘাটতি যাতে বিঘ্নিত না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আমরা নিজেদেরকে হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচাতে শরীরের নির্দিষ্ট তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারি, তার জন্য প্রতিদিন ২-৩ বার গোসল বা স্নান করে নিতে পারি। এতে শরীর মন ভালো রাখা সম্ভব হবে। দিনের খরতাপে অপ্রয়োজনীয় ঘোরাাফেরা ভ্রমণ এড়িয়ে চলাই ভালো, তাতে স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে আসবে।
আশা করি, এই পরামর্শ ও টিপ্সগুলো যথার্থভাবে কাজে আসবে। কিছু বিষয় যোগ করার থাকলে কমেন্ট করূন আর যেকোন মতামত জানাতে পারেন ডিসকর্ডের মাধ্যমে।
ভালো থাকবেন, নিরাপদে থাকবেন।
সবার জন্য শুভকামনা 💐💖 ।
শুধু গরমের ক্ষেত্রে নয় যে কোন ক্ষেত্রেই ন্যাচারাল খাবার গুলো খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত। আপনি চাইলে টাটকা ফলগুলো খেতে পারেন ডাব খেতে পারেন যেগুলো শরীরের জন্য উপকারে আসবে। আর যদি এই গরমের কথা বলা হয় তাহলে লেবুর শরবত সবচেয়ে বেশি কাজে দিবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ন্যাচারাল বা প্রাকৃতিক খাবার খাওয়া সবার জন্য জরুরি আপনি ঠিক বলেছেন, এবং তা যেকোন সিজনেই এনসিউর করতে হবে।
তবে, গরমে কোমল পানীয় পানের ক্ষেত্রে বাড়তি সতর্কতা গ্রহন জরুরি, আর হাইড্রেটেট থাকা, বিভিন্ন প্যাথোলজিক্যাল সমস্যা এড়ানোর জন্য তা উপকারী।
আপনাকে ধন্যবাদ নিজস্ব মতামতের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit