আসসালামু আলাইকুম।
তারিখ : ২৭.০৫.২৪ খ্রিস্টাব্দ ।
প্রিয় আমার বাংলা ব্লগ সদস্যবৃন্দ, শুভানুধ্যায়ী ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট সকলকে আমার শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করছি। আশা করি আপনারা সবাই ভালো আছেন আর জীবনের নানাবিধ প্রতিকূলতা, ভালোলাগা - মন্দলাগার মাঝেও মুখের হাসিটা ধরে রেখেছেন।
সকলের প্রতি অনেক ভালোবাসা আর আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। আপনারাই দিনশেষে নিজ নিজ গল্পের প্রধান চরিত্র শত খলনায়কদের মাঝে । তাই, একটি শুভকামনা আর সাফল্যের সাথে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টার জন্য সাধুবাদ জানাই।
আজকের দিনে এসে যে বিষয়টি খুব মনে পড়ছে তা হলো - দুঃখের মাঝে যে সুখ নিহিত আছে তার একটি বিকাশমান চর্চা কেমন করে একটি মানুষের সামগ্রিক চিন্তাচেতনাকে বদলে দিতে পারে তার কিছু রূপ অনুধাবন করা। কেউ কেউ যদিও বলে, আমি সমাজ নিয়ে খুব বেশি একটা ভাবি, আর কিছু বিষয় বা মত যা সবার সাথে মিলে না। তবে সত্যি তো তাই, যখন সমাজের ভেতরে বা বাইরে যা ঘটে, তার থেকে দূরে গিয়ে বাস করা সম্ভব নয়।
আজকের যেই পৃথিবী বিদ্যমান আছে তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের হাতে উঠলে তার রূপ কেমন হবে তা অনুধাবন করা কঠিন। কখনো আশাবাদী হয়েছি, কখনো আশাহত হয়েছি। হতাশা এসে গ্রাস করেছে কিছু মূল্যবোধের অবক্ষয় দেখে, কুটিলতাবৃত্তির চর্চা দেখে, ভালো মানুষগুলোকে খারাপ কিন্তু ক্ষমতাধররা নিষ্পেষিত করেছে বলে।
যদিও যে বিষয়টি সম্পর্কে ইঙ্গিত দিচ্ছি তা পৃথিবীব্যাপী যুগে যুগে ঘটেছে, নিত্যনতুন অবক্ষয় আর স্থূল কিছু কায়েমী স্বার্থের কারণে বুদ্ধিমত্তা, মনোবৃত্তি ও উদ্ভাবনীশক্তির বিকাশ করে মানবতার চর্চার উন্নতি করে অন্তর্ভুক্তিমূলক সবার জন্য গ্রহনযোগ্য একটি পৃথিবী সমাজ সভ্যতা বিনির্মানের চেষ্টা দেখিনি। বিশ শতকে সর্বগ্রাসী যুদ্ধের দামামা বেজেছে, যা বদলে দিয়েছিল বিশ্ব মানচিত্র, নিয়ে এসেছিল নতুনতর ধ্বংসের খেলা যার শিখা কখনো নিভেছে, কখনো ধিকিধিকি জ্বলেছে।
আজকাল যখন কেউ ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় শুধুমাত্র দুর্বলতার কারণে, ছোট অবস্থানের দরুন কম মূল্য পেয়ে অবহেলায় বেড়ে ওঠে অবমূল্যায়নে, তখন আমি খুব বিচলিত হই না। বোধহয় একটি জিনিস বারবার ঘটলে তা সওয়া হয়ে যায়। তেমনি হয়েছে যখন অনেক কিছু পরিবর্তিত হতে দেখেছি, দুর্বলের ওপর স্টিম রোলার চালিয়ে মহত্ত্বের গান গাওয়া ভুরি ভুরি স্তুতিকাব্য, তেলা মাথায় তেল ভরপুর জমপেশ একটি নাট্যমঞ্চের দক্ষযজ্ঞের বিভীষিকাময় সার্কাসের অট্টহাসি।
সবচেয়ে বড় যেটি শিক্ষা, জীবনের একটি বড় সময় এসে ভালোভাবে তিক্ততার অনুভূতি জাগিয়ে দেয় তা হলো, আপনি যাদের জন্য খুব ভালো কিছু চাইবেন, স্বপ্ন দেখবেন - তারাই বড় একটি ঝড়ে আপনার সেই স্বপ্ন ভেঙে নাশ করবে সেই ভাবনা। কুটিলতার চর্চা খুব বেড়ে গেছে দেখে অবাক লাগে, যদিও তার থেকে উত্তরণের খুব বেশি পথ খোলা থাকে না যদিনা একটি বড়সড় নবজাগরণ না আসে।
ব্যতিক্রমধর্মী চিন্তাকে পন্ড হতে দেখেছি। নতুন করে যখন ভাবনার উদয় হয়, আলাদা পথে হাঁটা পথিক কখনো উপহাস, পথের কাঁটা এড়িয়ে চলে নি - এমন নজির খুব কমই আছে। তবুও যারা নিজের পথে অটল আছেন, তাদেরকে ধন্যবাদ না দিয়ে পারা যায় না।
খুব করে মনে পড়ছে, বিজ্ঞানী এডিসনের ছেলেবেলার কথা যখন ভিন্নধর্মী ভাবনার জন্য তাকে বিদ্যালয় থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। হাজারবারের বেশি ব্যর্থ হয়ে আবিষ্কার করলেন বৈদ্যুতিক বাতির মতো যুগান্তকারী সৃষ্টি যা সারা পৃথিবীর অন্ধকারকে মুছে দিয়ে আলোকিত করেছে যা আজো শ্রেষ্ঠ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারদের মধ্যে একটি হয়ে রয়ে গেছে।
মহৎ উদ্যোগ সাথে নিয়ে যারা পথ চলে, মোটামাথার দলভারীরা পদে পদে বাধা হয়ে দাঁড়াবে, একদিন এসব কিছু আপনাকে স্থির হতে দেবে না, হতাশা আর নৈরাশ্যের গুমোট স্তব্ধতায় থেমে যেতে আহবান করবে, কিন্তু কখনোই হাল ছাড়া যাবে না। জীবন কিছু জিনিস, কিছু অপমান রেখে দিবে একান্ত ধৈর্য্য ধরার জন্য। এটি শুধুমাত্র পরীক্ষামাত্র।
আমি যখন খুবই হতাশ ছিলাম কোন কোন ব্যাপারে, চারদিকে কিছু সাফল্য আর তিরস্কারের মধ্যে দিয়ে নিরুদ্দেশ যাত্রায় স্থির হয়ে রয়েছি, তখন নেতিবাচক কত মন্তব্য রেখাপাত করতে চেয়েছিল প্রচেষ্টাকে। কিন্তু সেসব মূল লক্ষ্য থেকে দূরে রাখতে পারে নি। প্রত্যেকটা মানুষই কিছু মহত্ত্ব নিয়ে জন্মায় যার মূল্য কখনো আগে কখনো পরে পাওয়া যায়।
আশাকে কখনো ফুরাতে দিতে নেই। আর আপনার জীবনের কিছু ঘৃণা জমা থাকুক কিছু সময়ের জন্য, একদিন তা মূছে যাবে সমুদ্র সৈকতের বালির মতো, যখন ঢেউ আসে আছড়ে পড়ে তটরেখার তখন পায়ের চিহ্ন কবে রয়ে যায়? একটি সময়ের পর তার কোনই মূল্য নেই, ঘৃণাগুলো ঝরে যায়, বেঁচে থাকে সময়ের খামে ধরে রাখা মুহূর্ত, প্রেম আর পূর্ণতা।
ভালো থাকবেন, সবার জন্য আবারো শুভকামনা । আমার প্রিয় বন্ধুগণ ও সবাইকে নতুন দিনের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি, 💐🫡✒️✅💖