বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের দ্বিতীয় ম্যাচ জয় । [ বিশ্বকাপের বিশ্লেষণ ও ব্যাক্তিগত অভিমত ]

in hive-129948 •  20 days ago 

তারিখ : ১৪.০৬.২০২৪ খ্রিস্টাব্দ, শুক্রবার।

শুভ বিকাল, বন্ধুগণ।

আজ শুক্রবার, বাংলার যথাবিহিত নিয়মানুযায়ী এটি সাপ্তাহিক ছুটির দিন।

আপনারা সবাই কেমন আছেন? আশা করি বেশ দারুণভাবেই অবসরের সময়টা উপভোগ করছেন। যেহেতু তেমন কোন কাজের চাপ হাতে থাকে না এ দিনটিতে, তাই খুব স্বাভাবিক যে, কিছুটা অবসরের মধ্য দিয়েই সময়টাকে পার করা যায়, প্রতিটা মুহূর্ত আনন্দের সাথে অতিবাহিত করতে পারার মাঝেই তো একটি পরিতৃপ্তি থাকে যা অতুলনীয়।

শুক্রবারের দিনটিতে আমার তেমন কোন কাজের চাপ কিংবা ব্যস্ততা রাখতে দেই না, এটি তেমন ব্যাক্তিগত পছন্দের মধ্যে পড়ে না। তবে এমন চিন্তাধারার বিপরীতধর্মী মানুষও যে নেই, তা বলা ভুল হবে। যখন চারপাশে বেশ কিছু মানুষ নিজেকে খুব প্রোডাক্টিভ দাবি করে, তখন হাতের কাছে থাকা অবসরকেও কাজে লাগাতে চায়। এটি সময়ের দাবি ও জীবনের আকাঙ্ক্ষাকে ধরে নিয়ে চলে।

photo-1631194758628-71ec7c35137e.jpeg
Src

যা হোক, আজ আমি আজকের পোস্টে বিশেষভাবে একটি ক্রীড়া সংক্রান্ত কিছু বিষয়, ব্যাক্তিগত অভিমত ও চিন্তাধারা তুলে ধরবো। আপনারা সবাই জানেন, বর্তমানে এখন ক্রিকেট দুনিয়ায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ চলছে। এটি সপ্তাহখানেক সময় আগে শুরু হলেও গ্রুপ স্টেজ বা মূলপর্ব এখনো শেষ হয় নি, মোটামুটি মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে এবং আরো কিছু ম্যাচ বাকি আছে যেগুলো এখনো মাঠে গড়ানের অপেক্ষায় রয়েছে।

স্বাভাবিকভাবেই, বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে সবসময়ই জাতীয় দলের প্রতি সাপোর্ট থাকে এবং তা চলমান থাকবে নানা জয় পরাজয় ও ঘাত প্রতিঘাতের মধ্যে দিয়েও। বেশ কিছুদিন আগে গ্রুপ পর্বের একটি ক্রিকেট ম্যাচ এবং বাংলাদেশের ম্যাচ জয়ের অনুভূতি ও বৃষ্টিবিধুরা বিকেলের নানা দিক তুলে ধরেছিলাম। তারই ধারাবাহিকতায় আজকের পোস্টটিও হবে, ক্রিকেট কেন্দ্রিক।

যদিও পুরোটা সময় ক্রিকেট নিয়ে ব্লগ লিখে এবং নিজের মতামতের খসড়া ও বিস্তারিত রিভিউ উপস্থাপন করতে পারি নি, তা যদিও সম্ভব নয় এতটা সময় ধরে বর্ণনা করা যদিনা বিশেষজ্ঞ স্পোর্টস লেখক হওয়া যায়। কিন্তু আমি যে এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞ কেউ নই, সাধারণ একজন ক্রীড়ামোদী ও ক্রিকেট বিশ্লেষক, হা হা !

তবে যে যা- ই বলুন, বাংলাদেশ দলের বিশ্ব ক্রিকেট মঞ্চে প্রবেশ এবং অভিষেক প্রাপ্তি, তারপর একে একে সব ফরম্যাটে নিজেকে মেলে ধরা, অল্প বিস্তর ধীরগতির উন্নতিলাভ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পিছিয়ে পড়া - এসবই ছাপিয়ে বাংলার জনসাধারণের কাছে ক্রিকেট একটা আবেগের নাম হয়ে পড়েছে।

photo-1540747913346-19e32dc3e97e.jpeg
Src

ক্রিকেট খেলা না বোঝা এবং ক্রিকেটপাগল হয়ে ওঠার ব্যবধান এক দশক, বড়জোর প্রায় একযুগের সময় - এরই মধ্যে লাল-সবুজের জার্সিতে রচিত হয়েছে বর্ণাঢ্য ইতিহাস, প্রলয়োল্লাসে ভরা পদ্মার পাড়ের চড়া স্রোতে বিজয়কাব্য ও প্রাণোচ্ছল বিশ্ব উঠান কাঁপানো জয়ধ্বনিতে মুহুর্মুহু অর্জনের ধারা।

বাংলার ক্রিকেটের নানা গল্প ও ইতিহাস লিখতে গেলে পুরো দিনে লেখাও শেষ হবে না। তার চেযে বরং গত ম্যাচের কিছু বিষয় তুলে ধরে আজকের লেখা শেষ করি, সেটাই ভালো হবে। গতকাল বাংলাদেশ সময় রাত ৮ ঘটিকায় নেদারল্যান্ডস বনাম বাংলাদেশের ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়, যেটি টিভির পর্দায় দেখবার জন্য বিকেল থেকে অপেক্ষায় ছিলাম।

কখন যে সন্ধ্যা গড়িয়ে রাত হবে আর প্রি ম্যাচ বিশ্লেষণ, পিচ রিপোর্ট আর প্রেস মিডিয়ায় নানা আলোচনা সমালোচনা শুরু হবে, তার দিকে পূর্ণ মনেযোগ ছিল। যখন বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ দলের খেলা চলছে আমার সে সময় সকাল হোক কিংবা রাত, ভরদুপুর কিংবা সন্ধ্যা বয়ে চলে, দিনের সমস্ত কাজ ও ব্যস্ততাকে ছুটিতে পাঠিয়ে আমি একমনে একধ্যানে টিভি দেখতে বসে যাই। গল্পটি একদিনের নয়, সেই শৈশবের দিনগুলো থেকে।

photo-1598287528525-52378f2977c5.jpeg
Src

যা হোক, ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচ শুরুর আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খুব কাছ থেকেও ম্যাচ হেরে যাওয়ার একটা ঘা তখনো মুছে যায় নি, তার চেয়ে বেশি যেটা ছিল তা হলো অন ফিল্ড আম্পায়ারের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ ; বেশ কয়েকটা ওয়াইড বল এত লো স্কোরিং টার্গেট অর্জন করতে গিয়ে না দেয়া, ইচ্ছাকৃতভাবে লেগ বিফোর আউট দিয়ে চার রান বঞ্চিত করার প্রবঞ্চনা বেশ ভুগিয়েছে।

তার মাশুল দিতে হয়েছে সে চার রানের জন্য ম্যাচ হাতছাড়া হয়ে। এমন অপেশাদারি আম্পায়ারিংয়ের সমালোচনা কমবেশি সারা বিশ্বব্যাপী হয়েছে, আইসিসির আইন নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে এবং তা সংশোধন করার উদ্যোগও নেয়ার জন্য আহবান করাও হয়েছে।

একটি ম্যাচ হারের পর সুপার আটে যাওয়ার জন্য পরের ম্যাচে জয় পাওয়ার কোন বিকল্প ছিল না। কেননা যদি একটি ম্যাচও হেরে যেতে হয় তাহলে পরের রাউন্ডে যাওয়া সম্ভব হবে না, নানা সমীকরণের মারপ্যাচ থেকে যাবে। ডাচদের বিপক্ষে ব্যাটিং বোলিং দুইক্ষেত্রেই দারুণ পারফরম্যান্স দেখিয়েছে টাইগাররা, সাকিব আল হাসানের অল রাউন্ডিং পারফরম্যান্স ও ফর্ম ফিরে পাওয়া এবং কিছু ব্যর্থতা কাটিয়ে উঠে আগের অবস্থানে আসার মধ্যে একটি কৃতিত্ব লুকিয়ে আছে।

photo-1637635753380-20bf6f46ede0.jpeg
Src

তবে আশা করা যায়, বাংলাদেশ আবারো শেষ ম্যাচে দুর্বল প্রতিদ্বন্দ্বী নেপালের সাথে জয়লাভ করে এগিয়ে যাবে সামনের দিকে, সুপার এইটের লক্ষ্য অর্জন করা হবে এবং সে অনুযায়ী ভালো একটি ফলাফল নিয়ে ঘরে ফিরবে। সকল দলের প্রতি শুভকামনা রইলো।

আজ ক্রিকেটীয় বিশ্লেষণ এ পর্যন্তই ; আবারো ইন শা আল্লাহ দেখা হবে আগামী পর্বের লেখায়, সে পর্যন্ত ভালো থাকবেন আর আমার বাংলা ব্লগের সাথেই থাকবেন।

ধৈর্য্য ধরে পোস্টটি পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ, যেকোন গঠনমূলক মন্তব্য সাদরে গ্রহণীয়। খোদা হাফেজ।

নিজের সম্পর্কে কিছু কথা


Blue Abstract Watercolor Blank Template Instagram Story_20240516_152026_0000.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

গতকাল বাংলাদেশ খুবই সুন্দর খেলেছে। আমি গতকাল খেলার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত দেখেছিলাম। আসলে আমি ও‌ আপনার মতোই ক্রিকেট পাগল। আমি ছোট বেলা থেকেই ক্রিকেট খেলা দেখতে পছন্দ করি। ফুটবল খেলা দেখতে আমার তেমন একটা ভালো লাগে না। যাইহোক বাংলাদেশ টিমের জন্য শুভকামনা রইল।

বাংলাদেশ গতকাল ১০০ শতাংশ সুন্দর খেলেছে তা আমি বলবো না, কিছুটা দ্বিমত আছে ; তা হলো ওপেনিং জুটিতে ভালো পারফরম্যান্স দেখাতে পারে নাই ।বেশ কয়েকটি উইকেট বিশেষ করে লিটন দাস ও ক্যাপ্টেনের ব্যাটিং পারফরম্যান্স বাজে ছিল।

টপ অর্ডার ব্যাটাররা ঠিক নিজেদের মেলে ধরতে পারে নি, তাহলে দলের টার্গেট আরেকটু বেশি হতো, অন্তত ২০ রান নিজেদের সক্ষমতার চেয়ে কম করেছে।

তারপরও বোলারদের পুরো বাহবা দিতে হয়, কেননা তারা ১৬০ এর কম টোটাল ডিফেন্ড করতে পেরেছে এই উইকেটে, ফিজ ও রিশাদ ভালো বল করেছে, উইকেটগুলো ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিয়েছে।

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ভাই, নিজের মতামত শেয়ার করার জন্য। ক্রিকেট খেলার প্রতি টান থাকার কারণে আপনাকে সাধুবাদ জানাই।
পরের ম্যাচ দেখার জন্য শুভকামনা রইলো বিস্তর।
ভালো থাকবেন।