হ্যালো আমার বাংলা ব্লগের প্রিয় বন্ধুরা আপনারা সবাই কেমন আছেন। আশা করি ভাল আছেন। ভাল থাকেন সুস্থ থাকেন এই কামনাই করি
copyright free image source
বন্ধুরা আপনারা সকলেই জানেন সম্প্রতি আমাদের ফাউন্ডার দাদা একটি প্রতিযোগিতা ঘোষণা করেছেন, শেয়ার করো তোমার প্রথম প্রেমের অনুভূতি। এরই ধারাবাহিকতায় আজ আমি আমার জীবনে প্রথম এবং শেষ এবং অব্যক্ত একটি প্রেমের অংশবিশেষ আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি। জানিনা আপনাদের কেমন লাগবে। তবে আমি চেষ্টা করব আপনাদের সবাইকে আমার অব্যক্ত বা প্রকাশ করতে না পারা প্রেমের ঘটনাটি জানাতে।
"প্রেম একবার এসেছিল নীরবে
আমার দুয়ার প্রান্তে
সেতো হাই মৃদু পায়"
এর সাথে সাথে এন্ড্রু কিশোর ও রিজিয়া পারভীন এর আরেকটি গানের দুইটা লাইন উল্লেখ করার জন্য খুব মন চাইছে। গানটি হচ্ছে।
"সবার জীবনে প্রেম আসে
তাইতো সবাই ভালবাসে
প্রথম যারে লাগে ভালো
যায় না ভোলা মানুষটারে।"
হ্যাঁ বন্ধুরা, সবার জীবনের মত আমার জীবনেও একবার প্রেম এসেছিল। সময়টা ২০০৩ সাল। স্থান বান্দরবান সদর। তখন আমি সম্প্রতি একটি অফিসে চাকরিতে যোগদান করছিলাম। আমার অফিসটা এমন একটা জায়গায় ছিল, আমার অফিসের পাশেই একটি রাস্তা ছিল অর্থাৎ আমার অফিস থেকে রাস্তাটি দেখা যায়। এই অফিসের পাশ দিয়ে ওই এলাকার সমস্ত মেয়েরা ছেলেরা কলেজে যেত এবং আমি অফিস থেকে বসে বসে তা লক্ষ্য করতাম কিন্তু কোনদিন তেমন কোনো অনুভূতি জাগে নাই। আর যেহেতু ওই এলাকায় চাকরি করি। তাই ওখানেই থাকা হতো। এবং থাকতে থাকতে আশপাশের আমার বয়সী ছেলেদের সাথে পরিচয় হয়ে গিয়েছিল। একজনের সাথে বেস্ট বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছিল, তার নাম ছিল জীবন। এই সুবাদে তাদের সবার সাথে ভালো বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। অফিস এর সময় অফিস করি বাকি সময় তাদের কে নিয়েই আড্ডা দেই বা সময় পার করি। এভাবে বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর হঠাৎ লক্ষ্য করলাম, একটি মেয়ে যার।
"চোখ দুটো টানা টানা ঠোঁট দুটো লাল
লজ্জায় রাঙ্গা হয়ে তাকে তার গাল"
এমন একটি মেয়ে প্রত্যেকদিন ওই রাস্তা দিয়ে কলেজে যায়। যেটা আমি লক্ষ্য করলাম এই মেয়েটি অন্য সকল মেয়েদের মতো নয়। সে দৃঢ়, শান্ত ও গুটি গুটি পায়ে এবং ডানে বামে কোন দিকেই তাকায় না, সে তার মত কলেজে যায় এবং সময় মতো চলে আসে। কিন্তু অন্যদের মতো ছটফটে নয়। কিন্তু কেন জানি আমার মনে হতে থাকলো এই মেয়েটি আমার জন্য পারফেক্ট। আমি এতদিন যাবত আমার মনের মাঝে যাকে লালন করে এসেছি, এখন বুঝি সে মেয়েটির দেখা পেলাম। আমি মনে হয় এরকম কাউকেই চায়। আমি যদি এই মেয়েটিকে আমার করে পেতাম, তাহলে হয়তো আমার এতদিনের স্বপ্ন, আশা বা আমার মনের মানুষ আমি পেতাম। তাকে প্রথম দেখাতেই আমার কেমন জানি ভালো লেগে গেছে। আর তখন থেকেই আমি প্রত্যেকদিন ঠিক ও কলেজে যাওয়ার সময় অফিস থেকে বাহির হয়ে গেটের পাশে দাঁড়িয়ে অপলক দৃষ্টিতে তার কলেজে যাওয়া এবং আসার দৃশ্যটি তাকিয়ে থাকতাম। এভাবে প্রায়ই বেশ কিছুদিন যাওয়ার পর লক্ষ্য করলাম মেয়েটিও আমাকে আড় চোখে তাকায়, দেখেও না দেখার ভান করে এবং সেও কিছু বলার চেষ্টা করে। কিন্তু আমি কেন জানি সাহস করে কিছুই বলতে পারি না। শুধুই তাকিয়ে থাকি। আর সেও আমাকে আড় চোখে তাকিয়ে এবং মিষ্টি মিষ্টি হেসে নিজের মতো করে চলে যেতো। বুঝতে পারতাম, তার মনের মাঝে হয়তো আমাকেও তার ভালো লাগতো। হয়তো সেও চাইতো আমি তাকে কিছু বলি। কিন্তু আমার মনে হতো আমার চেহারা তেমন ভালো নয়, তাছাড়া চাকরিটাও তেমন পারফেক্ট নয়। তাই সে আমাকে রিজেক্ট করে দেবে। এই ভেবে মনের মধ্যে কখনোই সাহস করে তুলতে পারলাম না, যে বলব আমি তোমাকে পছন্দ করি, ভালোবাসি। কিন্তু আমি শুধু তাকিয়েই থাকতাম, আর মনে মনে তাকে নিয়ে স্বপ্নের এক বিশাল সাম্রাজ্য গড়ে তুলতাম, মনে হতো সে যেন আমার কত দিনের আপন, আমি তাকে নিয়ে স্বপ্নের রাজ্যে কত জায়গায় ঘুরে বেড়াতাম। কত কিছু যে স্বপ্ন দেখলাম, তা আজ ভাষায় প্রকাশ করে আপনাদের বলতে পারবো না। কিন্তু সবই ছিল মনে মনে মন কলা খাওয়ার মতো। সাহস করে কিছুই বলতে পারি নাই। এরপর আমি স্থানীয় বন্ধুদের কাছে ওই মেয়েটির খোঁজখবর নিতে থাকি। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত জানতে পারি ওই এলাকায় আমার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মামাতো বোন সে। তার মামাতো বোন এসেছে তাদের বাড়িতে থেকে কলেজে লেখাপড়া করার জন্য। কিন্তু কেন জানি একটা ভয় আমাকে সবসময় পিছুটানতো। আমি কোনদিন তাকে সাহস করে বলতে পারি নাই, আমি তাকে ভালোবাসি।
যাই হোক, সাহস করে তাকে যেহেতু বলতে পারছি না ভালোবাসি তাই একটি চিঠি লেখার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি বিভিন্ন জায়গা থেকে লেখার শ্লোক সংগ্রহ করে একটি দুই পৃষ্টের চিঠিও লিখেছিলাম। চিঠির লেখা গুলো এখন আমার কাছে তেমন মনে নেই তবে, চিঠিটা আমি দীর্ঘ ৮-১০ বছর (বিয়ের কিছুদিন পর পর্যন্ত) নিজের কাছে রেখে দিয়েছিলাম। বিয়ের পর একদিন আমার স্ত্রী আমার পুরাতন কাগজ পত্র ঘাটাঘাটি করতে গিয়ে এই চিঠিটা পেয়ে যায়। সে এক বিশাল ঘটনা ঘটে যায়। বাকিটা ইতিহাস। এ বিষয়ে এখন কিছু বলতে চায় না।
শেষে আমার বন্ধুর সাথে কথা বলে যখন আমি চিঠিটা তাকে দেবো বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলাম। ঠিক তার কয়েকদিনের মধ্যে আমার বদলি হয়ে যায়। তাই আর চিঠিটাও তাকে দেয়া হয়নি এবং আমার অব্যক্ত ভালোবাসা, না বলা প্রেম, তাকে আর বলা হয়নি। আমার প্রথম প্রেম আমার মনের মধ্যে রয়ে গেল। বদলি হওয়ার পর, আর তার কোন খবর নেইনি এবং তার সাথে যোগাযোগ ও করিনি। এই অব্যক্ত ও ব্যর্থ ভালোবাসা এখনো মাঝে মাঝে আমাকে সেই অতীতে নিয়ে যায়। বলতে পারেন, প্রথম প্রেম আসলে..., ভুলার মতো নয় এবং কেউ ভুলতে চাইলেও ভুলতে পারে না।
তো বন্ধুরা, আপনাদের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে ফেলেছি। আমার এই পোস্ট আপনাদের কেমন লেগেছে, আপনাদের ভালোলাগা মন্দলাগা কমেন্টে জানাবেন, ধন্যবাদ।
আমার নাম আশীষ বড়ুয়া। আমার ইউজার আইডি-@asishbarua . আমার বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার, রাঙ্গুনিয়া থানায়। আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করি। পাশাপাশি স্টিমিটে লেখা লেখি করছি।
ঠিক বলেছেন ভাই, প্রথম প্রেম কখনো কেউ কখনো ভুলতে পারবে না। তবে একটি বিষয় আপনি লক্ষ্য রাখবেন অন্য কারো গান বা কবিতার কোন অংশ যদি আপনি আপনার পোস্টে উল্লেখ করতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই কোটেশন ব্যবহার করবেন।
যেমন:
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আপনার নির্দেশনা অনুযায়ী আমি কোটেশন ঠিক করে দিয়েছি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার সম্পুন্ন লেখাটি তো কোটেশন হয়ে গিয়েছে। ঠিক করে নিন। শুধুমাত্র কবিতার লাইন গুলো কোটেশন হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার প্রথম প্রেমের, বাস্তব অনুভূতি অন্তরে অতৃপ্তিই রেখে গেল। কেন জানি মনে হল পুনরায় যোগাযোগ করে অন্তত চিঠিটা দিতেন। এদিক থেকে আপনাকে স্বার্থপর মনে হল। হয়তোবা মেয়েটা আপনাকে অনেক খুঁজেছে কিন্তু কোথাও পায়নি আপনাকে। যাইহোক চিঠিটি না দেওয়ার কারণে, সুন্দর অনুভূতিগুলি জানতে পারলাম না। দুর্দান্ত লিখেছেন। শুভকামনা রইল ভাই।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
হ্যা ভাইয়া, আমার মন বার বার চেয়েছিল তাকে চিঠিটা পাঠাই। কিন্তু ঐ যে বললাম মনের দূর্বলতা, যদি রিজেক্ট করে দেয়। তাই দিতে পারিনি।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
তাতো বুঝলাম, আপনি যখন পোস্টিং হয়ে গেলেন অন্য জায়গায় তখন কেন যোগাযোগ করলেন না মেয়েটার সাথে। কোন মাধ্যম বা আপনার নাম্বার না থাকার কারণে মেয়েটা হয়তোবা আপনার সাথে যোগাযোগ করতে পারেনি । হয়তোবা কলেজে যেতে যেতে মেয়েটা অনেকবার আপনার পথ চেয়ে রয়েছিলো। আপনি কি মেয়েটার দিক থেকে কখনো ভেবেছিলেন যেহেতু উনিও আপনাকে ফলো করতো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit