রেল বিভাগের একটি পরীক্ষা ছিল এটি, যার ফরম ফিল আপ হয়েছিলো বছর দুয়েক আগে। সাধারণত ফরম ফিল আপের পর কয়েক মাসের মধ্যেই পরীক্ষা শুরু হয়ে যায়, কিন্তু করোনা মহামারীর করাল গ্রাসে প্রায় দু বছর সমস্ত কিছু স্তব্ধ হয়ে ছিলো। তাই সমস্ত দিক একটু স্বাভাবিক হওয়াতে এত দিন বাদে পরীক্ষা টা নেওয়া সম্ভবপর হয়েছে। যাই হোক পরীক্ষা ছিলো আমার সকাল সকাল। পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল সৌভাগ্যক্রমে আমার বাড়ি থেকে গাড়িতে প্রায় ২০ মিনিটের পথ।জায়গাটি ছিল কল্যাণী শহরের একটি স্বনামধন্য ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ, নাম আইডিয়াল ইনস্টিটিউট। আসলে এই ধরনের পরীক্ষাতে কার সিট কোথায় পড়বে সেটা জানা খুব মুশকিল। আমার পাশেই একজন পরীক্ষার্থী ভোর পাঁচটার ট্রেন ধরে এসছিল। আরও অনেকে ছিলো যারা অনেক দূর দূরান্ত থেকে এসেছিলো। কেউ কেউ তো শুনলাম গত রাতে এসেই হাজির হয়েছিল। যে কলেজ টায় আমার পরীক্ষা পড়েছিল তার আশপাশ থেকে কয়েকবার যাতায়াত করলেও ভেতরে ঢোকার ভাগ্য এই প্রথম। গেট থেকে ভেতরে ঢুকতেই খানিক অবাক হয়ে দেখছিলাম সব কিছু। এতো বড়ো একটা কলেজ না জানি কত ছাত্রছাত্রী পড়ে এখানে।
ঢুকতে গেলেই যে প্রথম গেট খানা পার হতে হয় সেটিও অসম্ভব সুন্দর করে তৈরি করা। গেটের পাশেই ভিতরের দিকে একটা ছোট মত ঘর সেখানে দুজন সিকিউরিটি গার্ড ছিলেন, যাদের দায়িত্ব ছিল সকলের ওপর নজর রাখা এবং স্যানিটাইজার স্প্রে করা, কোভিড গাইড লাইন ফলো করা আর কি। যাই হোক ভেতরে ঢোকার সময় ডকুমেন্ট ভেরিফিকেশনের তাড়াহুড়োতে আর বাকি জিনিস গুলি দেখা হয় নি।
ভেরিফিকেশন করার জন্য লাইনে দাড়াতেই মনে পড়লো এক্সট্রা একটা পাসপোর্ট সাইজ ছবি লাগবে, যেটা আনতে আমি একেবারেই ভুলে গেছি। চিন্তায় পড়ে গেলাম । ভাবলাম এখন যদি আবার বাড়ি গিয়ে ছবি আনতে হয় তাহলে নির্দিষ্ট সময় পাড় হয়ে যাবে। আমার মত আরও দুই জনের এই একই অবস্থা। চিন্তার ভাঁজ আমাদের চোখে মুখে স্পষ্ট হতে লাগলো। গ্যারেজ থেকে গাড়ি বার করে আশে পাশের অঞ্চলে সাইবার ক্যাফের খোঁজ নিতে লাগলাম। বেশ খানিকটা দূরে অনেকগুলি দোকান পেয়েও গেলাম, কিন্তু দুঃখের বিষয় অত সকালে কোনো দোকানই খোলে নি। আরও কিছুক্ষন এদিক ওদিক ঘুরে অবশেষে একটা দোকান পেলাম, সেখানেই লাইন দিলাম ফটোকপি বার করার জন্য। দোকান দারকে দেওয়ার জন্য টাকা বার করতে গিয়ে দেখি মানিব্যাগে অলরেডি একটা ছবি রাখা রয়েছে, যার কথা আমি বেমালুম ভুলে গিয়েছিলাম। যাই হোক ছবি আর তুলতে হলো না। ঝটপট করে ইন্সটিটিউটে পৌঁছে ভেরিফিকেশন সম্পূর্ণ করে পরীক্ষার হলে প্রবেশ করলাম। পুরো পরীক্ষাটি অনলাইনে ছিলো, কিন্তু মুশকিল হলো এই ব্যাপারটিতে আমি খুব একটা অভ্যস্ত নই, আমার কাছে খাতায় পেন ঘসে পরীক্ষা দিলেই যেনো আত্ম তৃপ্তি ঘটে। তারপর কোনো রকমে পরীক্ষাটি দিলাম। আসলে প্রশ্নের মান এত টাই কঠিন ছিল যে খুব বেশি উত্তর করে আসতে পারিনি। ওই সত্তরের কাছাকাছি হচ্ছে, এতে যদিও আশা করা বৃথা। আশির ওপরে করে আসতে পারলে তাও একটা সুযোগ ছিলো।পরীক্ষা শেষে বাইরে বেরোতেই মোবাইল টাকে অন করলাম, এত সুন্দর কলেজ টার ছবি তুলতে শুরু করলাম। বিশালাকার সেই সব বিল্ডিং, সুন্দর রঙ করা। মাঝামাঝি জায়গায় একটা ফাউন্টেন লাগানো আর তার দুপাশে অভাবনীয় সুন্দর করে তৈরি করা ঘাসের কারুকার্য। দেখে চোখ জুড়িয়ে যাচ্ছিল। সকলে যখন লাইন দিয়ে বেরোচ্ছি পাশেই খেয়াল করলাম কিছুটা ঘেরা ফাঁকা জায়গা রয়েছে, দেখে বুঝলাম এটা ফুলের বাগান, যদিও এখন পুরোটাই ফাঁকা, আসলে গ্রীষ্মের দাবদাহে ফুল গাছ তেমন একটা চোখে পরে না।
ফুলের মেলা তো বসে শীতের সময়, নানা চেনা অচেনা রঙিন ফুলের বাহারে সেজে ওঠে সব দিক অন্য লালিমায়। খবর নিয়ে জানলাম এটিও ভিন্ন নয়, শীতের সময় এখানেও হরেকরকম ফুলের সম্ভার হাজির হয়। মনে মনে সুপ্ত বাসনা তৈরি হলো শীতের সময় এসে এর সৌন্দর্য উপভোগ করার। যেহেতু অনেক গুলো শিফটে পরীক্ষা চলছিল তাই আমাদের পরের পরীক্ষার্থীরা গেটের বাইরে অপেক্ষারত দন্ডায়মান। সিকিউরিটি কাকু তাই সকলকে তাড়া দিচ্ছিল যাতে শীঘ্রই আমরা বেরিয়ে যাই, তাতেই সকলের সুবিধা হবে। ইচ্ছে ছিলো আরও কিছুক্ষন সেখানে থেকে সময় আর সৌন্দর্য টা উপভোগ করার কিন্তু বাধ সাধলো নিয়ম।
অগত্যা বাইরে বেরিয়ে একটা নিজস্বী তুলে বিদায় জানলাম কলেজটিকে, আর মনে মনে বললাম,
" আবার দেখা হবে বন্ধু। "
লোকেশন | ডিভাইস | ছবিকর্তা |
---|---|---|
কল্যাণী, পশ্চিমবঙ্গ | রেডমি নোট 7s | @asitbhatta |
আপনার এক্টিভিটিস খুবই কম গত সাতদিন আপনি মাত্র তিন টি পোস্ট করেছেন এবং কমেন্টের সংখ্যা খুবই কম। এভাবে করে কিন্তু আপনি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি তে টিকে থাকতে পারবেন না। আপনার এক্টিভিটিস অবশ্যই বাড়াতে হবে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলে দাদা পরীক্ষা নিয়েই একটু ব্যস্ত ছিলাম। এবার থেকে রেগুলারিটি মেইনটেইন করার চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আসলেই ইন্সটিটিউটের ভিতর টা বেশ সুন্দর। আসলেই করোনার জন্য অনেক অনেক চাকরির পরীক্ষা পিছিয়েছে। যাই হোক ভাগ্যিস মানিব্যাগে আপনার ছবি ছিলো,তাই বেশি ঝামেলাশ পড়তে হয়নি।আসলে এত এত এপ্লাই করে প্রশ্ন কঠিন না হয়ে উপায় নেই। যাই হোক আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ঠিক সময়ে ছবিটা পেয়েছিলাম বলে রক্ষা। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আরে ভাই সরকারি চাকরি এখন একটা সোনার হরিণ হয়ে গিয়েছে। তবে বর্তমানে যে অবস্থা যতই পড়ালেখা করেন না কেন চাকরি হওয়ার কোন সুযোগ নেই বাকিটা আর নাই বললাম। আপনার আজকের এই অনুভূতিটা আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন পড়ে খুব ভালো লাগলো তবে একটা বিষয় খারাপ লেগেছে ভবিষ্যতে যেকোনো পরীক্ষা দেওয়ার আগে সবকিছু ভালো করে চেক করে নিবেন যাতে করে পরবর্তীতে এর জন্য আর আপনাকে হ্যাস্ত ন্যাস্ত না হতে হয়। যাই হোক আপনার মাধ্যমে আইডিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটের কিছু অংশ বিশেষ দেখা হল বেশ ভালই লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
এইরকম ভুল সাধারনত আমার হয় না, এই বার কি হয়েছিল কি জানি, যাই হোক পরিস্থিতি যেমন ই হোক আমাদের হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। লড়াইতে টিকে থাকতে হবে। ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
দুইবছর আগের পরীক্ষা মাএ হলো আমাদের দেশে তো আরও খারাপ অবস্থা চাকরির বাজারে তবে ছবির ব্যপারাটা শুনে বেশ হাসি পেল পকেটে ছবি রেখে এদিক সেদিক ঘুরে বেড়ালেন হা হা। কলেজটা আসলেই সুন্দর।।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সেই মুহূর্তে ছবির কথা একেবারেই মনে ছিলো না।যাইহোক দেখি কি হয় ভবিষ্যতে।
ধন্যবাদ
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit