জেনারেল রাইটিংঃ প্রযুক্তি: আশীর্বাদ না অভিশাপ?

in hive-129948 •  6 days ago  (edited)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001

৩১ জানুয়ারি ২০২৫ ইংঃ ।

রোজ শনিবার ।


1000016037.jpg

Source

কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভাল আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি জেনারেল পোস্ট নিয়ে হাজির হলাম। আজকে আমি পোস্টের বিষয় যেটা বেছে নিয়েছি সেটা হলো প্রযুক্তি। দিন দিন আমাদের মানব সভ্যতার উন্নতি হচ্ছে। আর এর প্রধান যে কারন সেটা হলো প্রযুক্তি। দিনের পর দিন প্রযুক্তি যে কতটা উন্নতি হচ্ছে সেটা হয়তো বলে বুঝানো যাবে না। প্রযুক্তির এই বিল্পবের কারনে আমরা আজ অনেক দূর পর্যন্ত এগিয়ে গিয়েছি। প্রতিটা কাজে এখন প্রযুক্তির ছোয়া লেগে গেছে। তবে সব কিছুরই দুইটা দিক থাকে একটা হলো ভালো আর মন্দ। তেমনই এই উন্নত প্রযুক্তির মধ্যেও অনেক বিষয় আছে যেগুলা আমাদের জন্য অমঙ্গল।

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

প্রযুক্তি আধুনিক সভ্যতার অন্যতম প্রধান চালিকাশক্তি। এটি আমাদের জীবনকে সহজ, গতিময় ও আরামদায়ক করেছে। কিন্তু একইসাথে এর কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে যা অনেক ক্ষেত্রে মানবজাতির জন্য ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। তাই প্রযুক্তি আসলে আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ এই প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। আসুন আমরা জেনে নেয় এই প্রযুক্তি কতটুকু আমাদেরকে উন্নতি করেছে আর কতটুকু আমাদের নিম্নস্তারে নামিয়ে ফেলেছে।

প্রযুক্তির আশীর্বাদ।

১. যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি।

প্রযুক্তির কল্যাণে আমরা এখন মুহূর্তের মধ্যে বিশ্বের যে কোনো প্রান্তের মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারি। মোবাইল ফোন, ই-মেইল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম (ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ, টেলিগ্রাম ইত্যাদি) আমাদের জীবনকে অনেক সহজ করে তুলেছে।

২. শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জন।

অনলাইন শিক্ষা, ডিজিটাল লাইব্রেরি, এবং ই-লার্নিং প্ল্যাটফর্ম যেমন: কুর্সেরা, ইউডেমি, ইউটিউব ইত্যাদি শিক্ষাকে আরও সহজলভ্য করেছে। এখন ঘরে বসেই পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তের বিশ্ববিদ্যালয়ের কোর্স করা সম্ভব। প্রযুক্তির এই বিল্পবের অনেক বড় বেশি দরকার ছিলো।

৩. চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিপ্লব।

সব থেকে আমাদের জন্য প্রযু৬যে বিল্পব বয়ে এনেছে সেটা হলো চিকিৎসা ক্ষেত্রে। মানুষ সুন্দর ভাবে জীবন যাপন করতে হলে এই চিকিৎসার ক্ষেত্রটি ছিলো বেশি গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক প্রযুক্তির কারণে স্বাস্থ্যসেবা অনেক উন্নত হয়েছে। রোবটিক সার্জারি, টেলিমেডিসিন, ওষুধ গবেষণা, এবং উন্নত রোগ নির্ণয় প্রযুক্তি মানুষের আয়ু বৃদ্ধিতে সাহায্য করছে।

৪. অর্থনীতি ও কর্মসংস্থান।

প্রযুক্তির কারণে নতুন নতুন চাকরির ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। ফ্রিল্যান্সিং, রিমোট জব, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং ইত্যাদি অনেকের জীবিকা নির্বাহের উপায় হয়েছে।

৫. পরিবহন ও যোগাযোগ।

আধুনিক যানবাহন এবং স্মার্ট ট্রাফিক সিস্টেম আমাদের যাতায়াত সহজ ও দ্রুততর করেছে। উচ্চগতির ট্রেন, ইলেকট্রিক গাড়ি, উড়োজাহাজ, এমনকি মহাকাশ ভ্রমণও এখন বাস্তবতা।

প্রযুক্তির অভিশাপ

১. আসক্তি ও মানসিক সমস্যা

স্মার্টফোন, সোশ্যাল মিডিয়া ও ভিডিও গেমের প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি মানুষের সামাজিক সম্পর্ক নষ্ট করছে এবং মানসিক সমস্যার যেমন: হতাশা, উদ্বেগ সৃষ্টি করছে।

২. কর্মসংস্থান হ্রাস

যন্ত্র ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এ আই) মানুষের অনেক কাজ দখল করে নিচ্ছে, ফলে অনেক কর্মসংস্থান হারিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে, শিল্প ও উৎপাদন ক্ষেত্রে রোবটের ব্যবহার শ্রমিকদের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

৩. সাইবার অপরাধ ও নিরাপত্তা ঝুঁকি

হ্যাকার, তথ্য চুরি, ফিশিং, ডার্ক ওয়েবের মতো বিষয়গুলো এখন বিশ্বজুড়ে বড় সমস্যা। ব্যক্তিগত তথ্য চুরি এবং অনলাইন প্রতারণা বেড়ে চলেছে।

৪. পরিবেশ দূষণ

প্রযুক্তির অত্যধিক ব্যবহারের ফলে বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি, ইলেকট্রনিক বর্জ্য এবং শিল্প কারখানা থেকে নির্গত দূষিত গ্যাস আমাদের পরিবেশের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠছে।

৫. পারমাণবিক অস্ত্র ও যুদ্ধ

প্রযুক্তির অপব্যবহারের ফলে পারমাণবিক অস্ত্রের উদ্ভাবন হয়েছে, যা বিশ্বশান্তির জন্য মারাত্মক হুমকি। প্রযুক্তির কারণে সাইবার যুদ্ধ ও আধুনিক সামরিক প্রতিযোগিতা বেড়ে চলেছে।

মন্তব্য

প্রযুক্তি আশীর্বাদ না অভিশাপ, তা নির্ভর করে আমাদের ব্যবহারের ওপর। যদি আমরা এর ইতিবাচক দিকগুলোকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়ন করি এবং নেতিবাচক দিকগুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পারি, তাহলে প্রযুক্তি মানবজাতির জন্য আশীর্বাদই হবে। অন্যথায়, এটি অভিশাপে পরিণত হতে পারে। তাই প্রয়োজন সচেতনতা ও দায়িত্বশীল ব্যবহার।


সমাপ্ত


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ার জন্য। আশা করছি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লেগেছে। আজ আমি এখানেই শেষ করছি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন দেখা হবে আবার নতুন কোন পোস্টের মাধ্যমে। আল্লাহ হাফেজ।


পোস্টের বিষয়জেনারেল রাইটিং
পোস্টকারীমোহাঃ আশিকুর রহমান
ডিভাইসগ্যলাক্সি এ ১৫
লোকেশনপাবনা


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জুগির গোফা গ্রামে বাস করি। সবুজ শ্যামলে ঘেরা আমাদের গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমি একজন সরকারি চাকরিজীবি। আমি চাটমোহর ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত আছি। বাইক নিয়ে ঘুরতে, খাওয়া দাওয়া আর ঘুমাতে বেশি পছন্দ করি। আমি বিবাহিত। আমার একটি ছেলে আছে। আমি আমার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বসবাস করি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য। সবার জন্য দোয়া রইলো সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিনদের। যারা আমাকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছে। আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের সকল কর্মরত সদস্যদের। লেখার ভেতর ভুল ত্রুটি হতে পরে। সেক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । দোয়া করি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।


Logo.png

Banner.png

1000006183.png

1000008782.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

1000016033.jpg

Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.

প্রযুক্তি মানুষের জন্য সুফল বয়ে এনেছে আবার পাশাপাশি খারাপ কিছু দিক এনে দিয়েছে। মানুষ প্রযুক্তির মাধ্যমে খুব সহজে অনেক কিছু যেমন করতে পারে, আবার খুব সহজে খারাপ পন্থা অবলম্বন করতে পারে। তাই আমি বলব প্রযুক্তির ব্যবহারটা হতে হবে প্রয়োজনীয়। এছাড়া যে যত বিলাসিতা ভাবে নিতে যাবে তত ক্ষতি বয়ে আসবে। তবে এটা সত্য বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির বেশি উন্নয়নের জন্য অনেক মানুষের কর্মসংস্থান হ্রাস পেয়েছে। আবার অন্যদিকে বিবেচনা করতে গেলে প্রযুক্তির জন্য অনেক মানুষ কর্মসংস্থানের জায়গা করে নিতে পেরেছে সহজে। তাই প্রযুক্তিকে সঠিক পথে ব্যবহার করার প্রতি গুরুত্ব আরোপ করতে হবে, অপ্রয়োজনে খারাপ পথে ব্যবহার করা যাবে না।

প্রযুক্তির জন‍্যই মানুষের জীবন যাএার মান এতো উন্নত হয়েছে। প্রযুক্তির জন‍্যই মানুষের জীবন সহজ হয়েছে। এটা নির্ভর করবে আপনার উপর আপনি প্রযুক্তি টাকে কীভাবে ব‍্যবহার করছেন। প্রযুক্তির ভালো খারাপ দুইটা দিকই রয়েছে। তবে আমার মতে ভালো দিকটাই বেশি।