🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001।
কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ক্রিয়েটিভ রাইটিং পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি। মানুষ হিসেবে আমাদের চাহিদের কোন শেষ নেই। দিন যত যায় ততই আমাদের চাহিদা বাড়তে থাকে। আমাদের শাহেদাপাড়া মূল কারণ হলো আমাদের অত্যাধিক প্রত্যাশা। অন্যকে দেখে নিজের মনকে বার বার ভাবনায় ফেলে নিজের ভেতরে প্রত্যাশা জাগ্রত করছি প্রতিনিয়ত। আজকে আমি অতিরিক্ত চাওয়া পাওয়া নিয়েই কথা বলতে চলেছি। আশা করছি আমার পোস্টটি আপনাদের কাছে অনেক ভালো লাগবে।
অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া যা বর্তমানে সমাজে এক ধরনের মানসিক অসুখ হিসেবে দেখা যাচ্ছে। তার পেছনে অনেক গভীর মনস্তাত্ত্বিক এবং সামাজিক কারণ রয়েছে। অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া শুধুমাত্র বাহ্যিক বস্তু বা সম্পদ অর্জন করার তাড়না নয়, এটি মানুষের অভ্যন্তরীণ অসন্তুষ্টি, অস্থিরতা, এবং মানসিক চাপের প্রকাশও হতে পারে। এখানে আমি বিস্তারিতভাবে এই অসুখের কারণ এবং তার প্রভাব নিয়ে আলোচনা করব।
মানুষের মধ্যে সর্বদা কিছু একটা পেতে চাওয়ার প্রবণতা একটি মানসিক সমস্যা তৈরি করতে পারে। যা তাকে কখনোই শান্তি দিতে পারে না। মানুষ যত বেশি কিছু চায় তত বেশি তা না পাওয়ার অসন্তুষ্টি অনুভব করে। এই অসন্তুষ্টির কারণে তাদের মধ্যে এক ধরনের অন্তর্দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়, যার ফলে তারা জানে না আসলে কী চায় বা তাদের প্রয়োজন কী? এটি এক ধরনের মানসিক অস্থিরতা সৃষ্টি করে যার কারণে তারা কখনোই আত্মবিশ্বাসী বা শান্ত থাকতে পারে না। এর ফলে তারা জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলির উপভোগ করতে পারে না এবং সবসময় কিছু পাওয়ার দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ রাখে।
বর্তমান সমাজের মধ্যে সাফল্য, সৌন্দর্য, এবং অর্থের প্রতি অতিরিক্ত আগ্রহ মানুষের চাওয়া-পাওয়ার মাত্রা অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। সামাজিক মাধ্যম, বিজ্ঞাপন, সিনেমা ইত্যাদির মাধ্যমে আমাদের সামনে এমন একটি আদর্শ ধরা হয়েছে যেখানে মানুষ সুখী হতে গেলে তাকে ‘বেশি’ চাওয়া উচিত। সামাজিক চাপে অনেকেই মনে করে যে তারা যদি পরিপূর্ণ কিছু না পায়, তবে তাদের জীবন অপূর্ণ। এর ফলে তারা আরো কিছু পাওয়ার জন্য নিরন্তর দৌড়াতে থাকে। কিন্তু এভাবে চাওয়া-পাওয়া শুধুমাত্র ভেতর থেকে এক ধরনের হতাশা এবং অস্থিরতা তৈরি করে যা দীর্ঘমেয়াদে মানসিক অসুখে পরিণত হয়।
যারা নিজের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বা আত্মসম্মান কম অনুভব করেন তারা অনেক সময় বাইরের জিনিসপত্রের মাধ্যমে নিজের মূল্য বিচার করতে চান। তারা মনে করেন যদি তাদের কাছে অনেক কিছু থাকে তাহলে তারা সমাজে সম্মানিত হবে। এই দৃষ্টিভঙ্গি দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকলে তাদের মধ্যে এক ধরনের গভীর শূন্যতার অনুভূতি তৈরি হয়। চাওয়া-পাওয়ার এই তাগিদ তাদের মনে স্থায়ী সুখ বা শান্তি এনে দেয় না, বরং আরও বেশি হতাশার সৃষ্টি করে। যে ব্যক্তি নিজেকে না জানে এবং সবসময় অন্যের চোখে ভালো হওয়ার চেষ্টা করে সে কখনোই আত্মবিশ্বাসী হতে পারে না এবং তার জীবনে শূন্যতা থেকেই যায়।
অনেক মানুষ অতিরিক্ত কিছু পেতে চায় কেবলমাত্র ভবিষ্যতের অজানা বা অনিশ্চয়তার কারণে। তারা মনে করে যদি তাদের কাছে যথেষ্ট সম্পদ বা অর্জন না থাকে তাহলে ভবিষ্যতে তারা বিপদে পড়তে পারে। এই অনিরাপত্তার অনুভূতি তাদের মানসিক শান্তি কেড়ে নেয় এবং তারা একে অপরকে টেক্কা দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করতে থাকে। এই অস্থিরতা এবং উদ্বেগের কারণে তারা কখনোই বর্তমান মুহূর্তে শান্তি অনুভব করতে পারে না, বরং শুধু ভবিষ্যতের জন্য একটি নিরাপদ জায়গা তৈরি করার চেষ্টা করে থাকে।
অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া দীর্ঘসময় ধরে মানুষের শারীরিক এবং মানসিক শক্তিকে দুর্বল করে তোলে। মানুষ যখন আরও বেশি কিছু পেতে চায়, তখন তার মনের ওপর চাপ বাড়ে এবং অবশেষে এটি শরীরের ওপরও প্রভাব ফেলে। দীর্ঘ সময় ধরে এই চাপ অনুভব করলে মানসিক ও শারীরিক ক্লান্তি দেখা দেয়, যা চিন্তা করার ক্ষমতা কমিয়ে দেয় এবং ব্যক্তিকে আরো অস্থির করে তোলে। এর ফলস্বরূপ আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দেয় এবং জীবনযাত্রার মান নষ্ট হয়ে যায়।
মুক্তির কিছু উপায়।
আত্মবিশ্বাস ও আত্মমুল্য উপলব্ধি: নিজের শক্তি এবং দক্ষতা সম্পর্কে আত্মবিশ্বাসী হতে হবে। নিজের আত্মমূল্য জানলে বাইরের বস্তু বা সাফল্যের উপর নির্ভরশীলতা কমে যাবে।
সন্তুষ্টি শেখা: জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তগুলির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করলে আপনি উপলব্ধি করবেন, আপনার জীবনে আসলে অনেক কিছু আছে যা আপনাকে সুখী করতে পারে। অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়ার তাগিদ কমে যাবে।
মনোযোগের পরিবর্তন: বাইরে না গিয়ে, নিজের অভ্যন্তরীণ শান্তি ও সাফল্যকে মূল্য দিন। নিজের আত্ম-উন্নয়ন এবং শখের কাজগুলির প্রতি মনোযোগ দিন, যা আপনাকে সত্যিকারের সুখ এনে দিতে পারে।
ভবিষ্যত নিয়ে উদ্বেগ কমানো: জীবনের প্রতি আসক্তি কমিয়ে, বর্তমান মুহূর্তকে উপভোগ করুন। চিন্তা করুন, আপনি যেটা করতে চান তা আপনার সুখের জন্য প্রয়োজনীয় কিনা, বা শুধু বাইরের চাপ থেকে আসা এক ধরনের তাগিদ?
অতিরিক্ত চাওয়া-পাওয়া শুধু বাহ্যিক সুখ নয়, একটি মানসিক অসুখের প্রকাশ। নিজেকে জানার এবং শান্ত থাকার প্রক্রিয়া আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় সাফল্য হতে পারে।
সমাপ্ত
পোস্টের বিষয় | ক্রিয়েটিভ রাইটিং |
---|---|
পোস্টকারী | মোঃ আশিকুর রহমান |
ডিভাইস | গ্যালাক্সি এ ১৫ |
লোকেশন | পাবনা |
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
চাওয়া পাওয়ার মধ্যে দিয়ে মানুষের অশান্তি গুলো শুরু হয়। তাই এই চাওয়া এবং পাওয়া গুলি যত নষ্টের গোড়া। আপনি সেই বিষয়টা খুব সুন্দরভাবে ব্লগের মাধ্যমে তুলে আনলেন। যদি কোন মানুষের চাওয়া পাওয়া গুলি অল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে তবে আর এত সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় না।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit