হিংসা করে নয় ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করতে হয়।

in hive-129948 •  19 hours ago 
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু /আদাব

🌿আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি বাংলাদেশ 🇧🇩 থেকে বলছি। আমার স্টিমিট আইডির নাম @ayaan001

১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।

রোজ শুক্রবার ।


কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে অনেক ভালো আছি। বেশ কিছুদিন ধরে বাংলাদেশ এবং ভারতের মাঝে একটি বিষয় নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় চলছে। যা মাঝে মাঝেই দেখা যায়,আসলে মানুষের মন আর বিবেক সব থেকে বড় আদালত। আর এই আদালতে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলেই সব সমস্যার সমাধান করা সম্ভব। জোর করে কোন কিছুই প্রতিষ্ঠা করা যায় না একে অপরের সহযোগিতা ও ভালোবাসা দিয়ে ভালো কিছু অর্জন করে নিতে হয়।

1000007514.jpg

Source

2FFvzA2zeqoVJ2SVhDmmumdPfnVEcahMce9nMwwksSDdRvZA8GzS2DQRCenaYmQc8PKmKoqUpUeK1EYkXvpDQ1G4vq9r2thnL24nVMe9HEoTA18P3XxZmEBqKV5Qa.png

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্ক এক দীর্ঘ ইতিহাস ও ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধনের ওপর প্রতিষ্ঠিত। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় এই ভ্রাতৃত্ব আরও দৃঢ় হয়, যখন ভারত বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে দাঁড়িয়ে সামরিক ও মানবিক সহায়তা প্রদান করে। সেই সহযোগিতা দুই দেশের জনগণের মধ্যে এক গভীর বন্ধুত্বের সূচনা করে।

বাংলাদেশ ও ভারতের সম্পর্কের শিকড় বহু পুরোনো। দুই দেশের ভাষা, সংস্কৃতি, ও ঐতিহ্যের মধ্যে রয়েছে অসংখ্য সাদৃশ্য। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো কবি দুই দেশের মানুষের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন। আবার ভারতীয় উপমহাদেশে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে একসঙ্গে লড়াইয়ের ঐতিহ্য দুই দেশের জনগণকে মানসিকভাবে আরও কাছে এনেছে। দুই দেশের মধ্যে রয়েছে অর্থনীতি, শিক্ষা, এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ের সুদৃঢ় সেতু। ভারত বাংলাদেশের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার এবং বিদ্যুৎ, অবকাঠামো ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত বাংলাদেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।

যদিও দুই দেশের মধ্যে পানি বণ্টন ও সীমান্ত ইস্যু নিয়ে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তবুও উভয় দেশ শান্তিপূর্ণ সমাধানের জন্য কাজ করছে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠক এবং পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধের মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় হচ্ছে। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক শুধুমাত্র কূটনৈতিক নয়, এটি দুই দেশের মানুষের ভ্রাতৃত্বের প্রতীক। এই সম্পর্কের শক্তি নিহিত রয়েছে দুই দেশের জনগণের পারস্পরিক বিশ্বাস ও সম্মানের ওপর। বাংলাদেশ ও ভারতের ভ্রাতৃত্বের এই বন্ধন বিশ্ববাসীর কাছে এক উদাহরণ, যেখানে সীমান্তের বাইরে মানবতা ও সহযোগিতার জয়গান হয়।

মানুষ হিসেবে আমাদের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো মানবতা। ধর্ম, বর্ণ, জাতি, কিংবা ভাষা আমাদের আলাদা পরিচিতি দিলেও এগুলো আমাদের মৌলিক অস্তিত্বকে নির্ধারণ করে না। আমাদের প্রকৃত পরিচয় আমরা মানুষ একটি বৃহৎ মানবজাতির অংশ। এই মানবিক পরিচয়েই লুকিয়ে আছে আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো।

ধর্ম, বর্ণ বা জাতিগত পরিচয় মানুষকে ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীতে ভাগ করে কিন্তু মানবতা সবাইকে একত্রিত করে। একজনের ধর্ম হিন্দু বা মুসলিম, বর্ণ শ্বেত বা কৃষ্ণ হতে পারে, কিন্তু দুঃখ, কষ্ট বা সুখে আমরা সবাই একই রকম অনুভূতিশীল। মানুষ যখন বিপদে পড়ে, তখন তার ধর্ম বা বর্ণ নয়, তার মানবিক অনুভূতির প্রয়োজন হয়।

ধর্ম বা বর্ণ আমাদের আলাদা করে নয়, বরং আমাদের ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে যুক্ত হয়েছে। কিন্তু ইতিহাসে আমরা দেখেছি, এই পরিচিতিগুলো মানুষকে বিভেদ ও সংঘর্ষের পথে ঠেলে দিয়েছে। যুগ যুগ ধরে বিভিন্ন ধর্মের নামে যুদ্ধ হয়েছে, যা মানবতাকে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। বর্ণ বা জাতি নিয়ে অহংকার মানবসমাজে বিভাজন সৃষ্টি করেছে, যা আমাদের প্রকৃত পরিচয়কে আড়াল করেছে।

জন্মসূত্রে আমরা সবাই এক। আমাদের শ্বাস নেওয়া বাতাস, পান করা জল, এবং জীবনযাপনের পরিবেশ এক। তাহলে কেন এই বিভেদ? জন্ম ও মৃত্যু প্রতিটি মানুষের জন্য সমান সত্য। এখানে কোনো বিভাজন নেই।আমাদের চামড়ার রঙ, ভাষা বা সংস্কৃতিতে পার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু সবার ভেতরে একই হৃদয় ও আত্মা বাস করে। আসুন, আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে একে অপরের পাশে দাঁড়াই। মানবতার জয় সেখানেই, যেখানে আমরা সবাই একসঙ্গে হাসতে, কাঁদতে ও জীবনযাপন করতে পারি।

"মানুষ মানুষের জন্য"—এই সত্যটাই আমাদের সবচেয়ে বড় শিক্ষা। ধর্ম-বর্ণ-জাতি নয়, ভালোবাসা ও সহানুভূতির মাধ্যমেই আমরা প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারি। মানবতাই আমাদের একমাত্র পরিচয়।


মন্তব্য

দুটি জাতি একসাথে থাকলে কিছু কিছু সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। তবে এই সমস্যাগুলোকে আমাদেরকে ঠিক করে নিতে হবে যেহেতু মানুষ হিসেবে আমাদের প্রথম পরিচয়। তাই ধর্ম কিংবা বর্ণ দিয়ে বিচার না করে মানুষ হিসাবে বিচার করতে হবে। একে অপরের প্রতি সহনশীল ও ভালবাসার মাধ্যমে সব কিছুকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।

সমাপ্ত


পোস্টের বিষয়ভারত বাংলাদেশের ভ্রাতৃত্বের বন্ধন।
পোস্টকারীমোঃ আশিকুর রহমান
ডিভাইসগ্যালাক্সি এ ১৫
লোকেশনপাবনা


১০% প্রিয় লাজুক খ্যাঁক এর জন্য।


আমার সংক্ষিপ্ত পরিচয়

আমি মোঃ আশিকুর রহমান। আমি মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার জুগির গোফা গ্রামে বাস করি। সবুজ শ্যামলে ঘেরা আমাদের গ্রামটি দেখতে খুবই সুন্দর। আমি একজন সরকারি চাকরিজীবি। আমি চাটমোহর ফায়ার ষ্টেশনে কর্মরত আছি। বাইক নিয়ে ঘুরতে, খাওয়া দাওয়া আর ঘুমাতে বেশি পছন্দ করি। আমি বিবাহিত। আমার একটি ছেলে আছে। আমি আমার পরিবারে মা, বাবা, ভাই, স্ত্রী ও ছেলে নিয়ে বসবাস করি।


সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি দেখার জন্য। সবার জন্য দোয়া রইলো সবাই ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের প্রতিষ্ঠাতা, এডমিনদের। যারা আমাকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছে। আবারও ধন্যবাদ জানাচ্ছি আমার বাংলা ব্লগের সকল কর্মরত সদস্যদের। লেখার ভেতর ভুল ত্রুটি হতে পরে। সেক্ষেত্রে আপনাদের ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টি আকর্ষণ করছি । দোয়া করি সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। আমার জন্য সবাই দোয়া করবেন।


Logo.png

Banner.png

1000006183.png

1000006180.png

1000006181.webp

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

1000007517.jpg

1000007515.jpg

1000007516.jpg

হিংসা করে নয় ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করতে হয় একদমই চিরন্তন সত্য কথা বলেছেন। জোর করে সব কিছু যদিও করা যায় সেটা বেশিদিন টিকে না। তবে ভালোবাসা হচ্ছে শক্তিশালী। ধর্ম-বর্ণ-জাতি নয়, ভালোবাসা ও সহানুভূতির মধ্যে দিয়ে আমাদের সকলে এগিয়ে যেতে হবে। সবার জন্য শুভ কামনা রইল চমৎকার লিখেছেন।

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ ভাই এত চমৎকার করে আপনার মূল্যবান মতামত শেয়ার করার জন্য।

হিংসার মাধ্যমে কোনো কিছুই ভালোভাবে করা যায় না। প্রতিটা সম্পর্কের মধ্যে ভালোবাসা থাকাটা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। তেমনি ভারত আর বাংলাদেশের মধ্যে ছিল সুন্দর একটা সম্পর্ক। কিন্তু বর্তমানে এরকম কিছু মানুষ রয়েছে যারা পতাকার অবমাননা করছে। পতাকার অবমাননা নয় বরং সম্মান দেওয়া উচিত। কারণ এটা একটা দেশের গৌরব। যেটা অর্জন করার জন্য লক্ষ লক্ষ মানুষ প্রাণ দিয়েছে।

আসলে আপু আমরা মানুষ সবাই এক নই। ভালো-মন্দ দিয়ে মানুষের ভেতর তৈরি। আপনি যে সবার কাছ থেকে ভালো আচরণ আশা করবেন সেটা কিন্তু নয়। যারা পতাকাকে অসম্মান করেছে আমি বলবো তাদের জ্ঞানের অনেক কমতি আছে। ধন্যবাদ আপু

হিংসা কখনো ভালো কিছু বয়ে আনে না। হিংসা সব সময় দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে। আসলে ভালোবাসা দিয়েই সবকিছু জয় করতে হয়। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কিছু মানুষ এই হিংসা বিদ্বেষ ছড়িয়ে দেয়। সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।

ইতিহাস সাক্ষী হিংসা দিয়ে নয় ভালোবাসা দিয়ে সবকিছু জয় করতে হয়। আজকে যারা সামান্য বিষয় নিয়ে একটি দেশের পতাকাকে অবমাননা করছে আমি বলব তাদের বিবেক বলতে কিছুই নেই।

ভালোবাসার বন্ধনে সকল কিছু জয় করা যায়। তাই সকল হিংসা বিদ্বেষ ভুলে গিয়ে ভালোবাসা দিয়ে এই বন্ধন অটল রাখতে হবে।

জি ভাই আপনি একদম ঠিক কথা বলেছেন অনেক ভালো লাগলো ভাই আপনার মূল্যবান মতামত পড়ে ভালো থাকবেন।