আমি সেই মেয়ে || বাংলা নাটকের রিভিউ

in hive-129948 •  7 months ago  (edited)

আমি সেই মেয়ে বাংলা নাটকের রিভিউ

হ্যালো বন্ধুরা।
সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আবার একটি বাংলা নাটককে রিভিও করার চেষ্টা করেছি ও আপনাদের সাথে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।

image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

আমি সেই মেয়ে নাটকটি সত্যিই দারুন একটা নাটক। এটা একটা ট্রিলিং টাইপ নাটক। এটা মূলত বাস্তব জীবনের ঘটনা গুলোকে তুলে ধরেছে আমাদের সামনে। সত্যি বলতে নাটকটি থেকে আমাদের অনেক কিছু শিখার আছে। প্রথমত নারীদের সম্মান করা এবং অন্যায়ের বিরুদ্দে রুখে দাঁড়ানো। যাই হোক , তো চলুন নাটকের মূল কাহিনী শুরু করা যাক।


নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
নাটকের নামআমি সেই মেয়ে
প্লাটফর্মইউটিউব
পরিচালকমাবরুর রশিদ বান্না।
অভিনয়েমুশফিকুর ফারহান , মেহজাবিন চৌধুরী ও আরো অনেকেই।
প্রকাশিত২৮ এপ্রিল , ২০২৪
সময়৩৪.২৭ মিনিট
নাটকের মূল কাহিনী শুরু
নাটকের শুরুতেই দেখা যায় একটি পরিবার, যেখানে বাবা-মা ও এক ভাই এক বোন। এখানে বাবা হুইলচেয়ারে বসে টিভি দেখছেন। তিনি কোন কাজকর্ম করতে পারেন না, কারণ পঙ্গু হয়ে ঘরে বসে আছেন অনেকদিন। আর তাই মা প্রতি নিয়ত বাবার সাথে যে কোন বিষয় নিয়ে রাগারাগি করেন ও খোটা দিয়ে কথা বলেন। ছোট ভাই পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকে, মা তার সাথেও বেশ খারাপ ব্যবহার করে বাবার কারণে। আর পরিবারের বড় মেয়ে পরিবারের সব দায়িত্বের ভার কাঁধে নিয়েছেন। তার ভাষ্যমতে সে একটি কল সেন্টারে কাজ করে যেখানে তার ডিউটি রাতের বেলায়। আবার সকাল ভরে এসে কিছুক্ষণ রেস্ট নিয়েই চলে যাই টিউশন করতে। আর এই নিয়ে আশেপাশ থেকে বাবা মা মায়েদের বেশ কটু কথা শুনতে হয়।


image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

এরপর একদিন বাবা নিউজে দেখছেন এক হোটেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক বড় ব্যবসায়ী মারা গিয়েছেন। ইদানিং খুন খারাপি যেন অনেক বেশি বেড়ে গেছে তাই বাবা বেশ চিন্তিত গলায় মেয়েকে বললেন মা তোমার কি রাতের ডিউটি ছেড়ে দিলে হয় না ?যেভাবে মানুষ নিহত হচ্ছে, না জানি কখন কোন বিপদ আমাদেরও চলে আসে। তখন মেয়েটি বাবাকে বুঝিয়ে বলে যে আমি কাজ না করলে পরিবারটা চলবে কি ভাবে, যেমনই হোক আমাদের কিছু হবে না।


এদিকে পুলিশ হয়রানি হয়ে গেছে খুনি খুঁজতে খুঁজতে, কিন্তু কোনভাবেই খুনের কোন উদ্দেশ্য খুঁজে পাচ্ছে না। উপরে লেভেল থেকে তাদেরকে বেশ চাপ দেয়া হচ্ছে। কেন একের পর এক বড় বড় ব্যবসায়ীরা খুন হচ্ছে কিন্তু খুনিকে ধরতে পারছে না।


image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

এরপরের দিন মেয়েটির বাসায় পাশের বাসার দুইজন পরিচিত আন্টি আসেন। তাদেরকে চা নাস্তা দেয়া হয় এবং এক পর্যায়ে মেয়ের বিষয়ে কথা উঠে, তখন মেয়ের মা তাদেরকে বলে যে সে কল সেন্টারে কাজ করে বলেই আমাদের পরিবারটা খুব সুন্দরভাবে এখনো চলছে। এর পাশাপাশি টিউশনও করছে। তখন বেশ আমতা আমতা গলায় পাশের বাসায় আন্টি বলতে লাগলো যে আমার বাচ্চার বাবা নাকি তাকে রাতের বেলায় অন্যরকম পোশাকে অন্যরকম সাজে হোটেলে দেখা গিয়েছে। আর এই কথা শোনার সাথে সাথে হাত থেকে চায়ের কাপটি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়ে যেতে বলে, আর সাথে এটাও বলে আর যাতে কোনদিন এই বাসায় না আসে। আরো কিছু কটু কথা বলে ঘর থেকে অপমান করে তাদেরকে বের করে দেওয়া হয়। কারণ মা কখনো কল্পনাও করে নাই তার মেয়ে এমন কিছু করতে পারে। কখনো এটা বিশ্বাসযোগ্য না।


ঠিক তখনই মেয়ে বাহির থেকে বাসায় আসে ডিউটি শেষ করে। আর মায়ের এরকম রাগান্বিত হতে দেখে জিজ্ঞাসা করল কি হয়েছে মা? তখন সবকিছু মেয়েকে খুলে বলল যে তারা এমন এমন বলছে, তখন মেয়ে শুধু একটাই উত্তর দিল যে তুমি কেন উনাকে জিজ্ঞাসা করলা না যে এত রাতে উনার হাসবেন্ড সেই হোটেলে কি করছিল ??


image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

এরপরের দৃশ্যতেই দেখা গেল সত্যিকারের আসল ঘটনা। সে গুলিবিদ্ধ হয় এবং হসপিটালে ভর্তি হয়, কারণ সে সত্যিই হোটেলে যেতো এবং তিনজন ব্যক্তিকে টার্গেট করেই তাদের সাথে ফ্লাট করে হোটেলে নিয়ে যেত। প্রথমত দুজনকে খুন করেছে এবং শেষ তিন নাম্বারটি খুন করতে গিয়ে সে পুলিশের নজরে পড়ে এবং গুলিবিদ্ধ হয়। কিন্তু পুলিশের হাতে ধরা খাইনি, কোন ভাবে পালিয়ে যায়। আর এরই মধ্যে বাবা ও মা সহ সকলেই তার সত্যিকারের বিষয়টি জানতে পারে।

image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

হসপিটালে মেয়ের পাশে বসে মা কান্না করে এটাই বলছে আমি কখনো ভাবতে পারিনি আমার মেয়ে এমনটা করবে। কেন করেছিলে এমনটা? আমার জন্য নাকি তোর বাবার জন্য, এই পরিবারের জন্য ? আমরা কি কখনো চেয়েছিলাম নাকি বলেছিলাম এমনটা আমাদের জন্য করতে ? তখন মেয়েটি উত্তর দিল এর উত্তর চাও ? এর জবাব চাও ? ঠিক আছে শুধু তোমাদেরকে না সারা দুনিয়াকে আমি এর উত্তর দিব। এই কথা বলে হসপিটালের বেড থেকে উঠে যায় ও ল্যাপটপ অন করে ফেসবুক লাইভে চলে আসে।


ফেসবুক লাইভে এসে তার জীবনের সকল ঘটনা বলতে থাকে। যে সে কেন তাদের তিনজনকে খুন করেছে। তার বড় বোন নাম মিরা। বেশ কিছুদিন আগে মীরাকে এই তিন মানুষ নামের হিংস্র প্রাণী বাসায় ফেরার পথে তাকে আর ফিরতে দেয়নি। তাকে নিয়ে গিয়ে অপহরণ করে এবং একপর্যায়ে মেয়েটিকে মেরে ফেলে। তার পরিবার পুলিশের কাছে গিয়েছে এবং অনেক ভাবে তাদের শাস্তি দেয়ার চেষ্টা করেছে কিন্তু তারা প্রভাবশালী বলে তাদের কোন শাস্তি কেউ দিতে পারেনি। তারা খুব আনন্দে ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের সুন্দর জীবন নিয়ে। তাই এই প্রতিশোধ নেয়ার জন্যই সে রাতের অন্ধকারে তাদের সাথে ফ্লাট করে তাদেরকে হোটেলে নিয়ে গিয়ে তাদের কোমরে থাকা পিস্তল দিয়েই তাদেরকে খুন করে।


image.png

ইউটিউব থেকে স্ক্রিনশট নেয়া

সে সবার সামনে তার অপরাধ স্বীকার করে ও সে খুন করেছে বলে স্বীকার করে।এখন পুলিশ তাকে যে শাস্তি দিবে সে শাস্তি সে মাথা পেতে নিবে।


শেষ পর্যায়ে একটি কথাই বলে যারা লাইভে এসে তাকে দেখছে , তাদের কাছে একটায় অনুরোধ নারীদেরকে সম্মান করা শিখুন। তারা যাতে তাদের সকল কিছু নিরাপদ ভাবে করতে পারে। আমাদের অধিকারটা আমাদের দেয়া আপনাদের দায়িত্ব। এই বলে লাইভ শেষ করেন। আর এদিকে বাবা মা ও তার ছোট ভাই পানি ভরা চোখ নিয়ে হাসি মুখে মেয়ের কথা গুলো শুনছিলেন।


ব্যক্তিগত মতামত
বাস্তবধর্মী নাটক হিসেবে এই নাটকটি সত্যিই দারুন একটি নাটক। এটা যেমন রোমাঞ্চকর তেমনি অনেক কিছু শিখারও আছে আমাদের। কেননা আমাদের বাস্তব জীবনে সেইসব পিশাচর মানুষদের অভাব নেই যারা কিনা নারীদের সম্মান দিতে জানে না। টাকার দাপটে নানান রকম অপরাধ করেও তারা পার পেয়ে যাচ্ছে। সেইসব ঘটনাকে আমাদের সামনে তুলে ধরার মাধ্যমে নাটকটি সত্যিই দারুন ভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে আমাদের সামনে।



নাটকটির ইউটিউব লিংক

ব্যক্তিগত রেটিং
9/10

সমাপ্ত

1.png


VOTE @bangla.witness as witness

witness_proxy_vote.png

OR

SET @rme as your proxy


witness_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

_

Heroism_3rd.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

একদম ঠিক বলেছেন আপু আমাদের সমাজে এমন কিছু মানুষ আছে যারা নারীদের সম্মান করতে জানে না। টাকা দিয়ে সবকিছু কিনতে চায়। এই নাটকটির কিছু সিন দেখেছিলাম। তবে নাটকটি সম্পূর্ণ দেখা হয়নি। আপনার শেয়ার করার রিভিউ পড়ে ভালো লাগলো আপু।

আপু আমি এই নাটকটি সেদিন দেখেছি আমার কাছে ভীষণ ভালো লেগেছে। গতানুগতিক নাটক থেকে কিছুটা ভিন্ন। আপনি খুব সুন্দরভাবে নাটকটির রিভিউ পোস্ট শেয়ার করেছেন দেখে সত্যি ই খুব ভালো লাগলো।নাটকটির মধ্যে একটি বিশেষ দিক তুলে ধরা হয়েছে।নারীর সম্মান।এই নাটকটিতে শিক্ষনীয় এই ব্যাপারটি আমার কিন্তু দারুন লেগেছে।

আপু আপনি খুব সুন্দর একটি নাটক রিভিউ দিয়েছেন। আমি অনেক বার ভেবেছিলাম এই নাটক দেখবো কিন্তু এরপর আবার ভুলে গিয়েছি। আপনার রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো। সত্যিই আমাদের সমাজে এমন অনেক মানুষ রয়েছে যারা সবসময় নারীদের অসম্মান করে চলেছে। তাদের টাকা রয়েছে বলে যেকোনো অন্যায় কাজ করেও কোনো শাস্তি পায় না। তারা সবসময় টাকা দিয়ে সবকিছু কিনে ফেলে। যাই হোক বাস্তবধর্মী অনেক ঘটনা তুলে ধরা হয়েছে। আপনি খুব সুন্দর ভাবে সম্পূর্ণ ভাবে তুলে ধরেছেন। ধন্যবাদ আপু শিক্ষনীয় একটি নাটক রিভিউ দেওয়ার জন্য।

আমাদের দেশে আইন রয়েছে, কিন্তু আইনের সঠিক প্রয়োগ নেই। তাইতো হরহামেশাই প্রভাবশালী লোকজন অপরাধ করেও শাস্তি পায় না। এমন একটা দেশে আমরা বসবাস করি,যেদেশে নিরাপত্তা একেবারে নেই বললেই চলে। আর মেয়েদের তো রাস্তা ঘাটে চলাফেরা করার নিরাপত্তা একেবারেই নেই। যাইহোক এই নাটকের রিভিউ পড়ে ভীষণ ভালো লাগলো আপু। মেহজাবিন বরাবরই দারুণ অভিনয় করে থাকে। এই নাটকের রিভিউ আমাদের সাথে শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।