ফ্ল্যাটমেট নাটকের রিভিউ
সবাই কেমন আছেন ? আশাকরি সবাই ভালো আছেন। আজকে আমি আবারো একটি বাংলা নাটককে রিভিও করার চেষ্টা করেছি ও আপনাদের সাথে নাটকের সম্পূর্ণ কাহিনী সুন্দর ভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি।
বাংলা নাটক বাংলাদেশের সকলের কাছে বেশ জনপ্রিয়। এই ঈদ কে কেন্দ্র করে অনেক সুন্দর সুন্দর ও ভালো কিছু বাংলা নাটক বের হয়েছে যা দেখলে সত্যি অনেক ভালো লাগে। আমার বাংলা নাটক দেখার প্রতি আগ্রহ ছিল না কখনোই। তবে এখন অনেক বেশি আগ্রহ নিয়ে নাটক গুলো দেখি। প্রতিদিন একটা করে নাটক দেখার চেষ্টা করি ও রিভিও করার চেষ্টা করি কিন্তু একটা নাটকের এত বড় কাহিনী লিখতেও বেশ সময় লাগে যায়। আজকে আমি ফ্ল্যাটমেট নাটকটি দেখলাম। আমার কাছে বেশ ভালো লাগলো তাই নাটকের পুরো কাহিনী সুন্দর ভাবে নিজের মতো করে রিভিউ করার চেষ্টা করলাম।
নাটকের গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য |
---|
নাটকের নাম | ফ্ল্যাটমেট |
---|---|
প্লাটফর্ম | ইউটিউব |
পরিচালক | মেহেদী হাসান হৃদয় |
অভিনয়ে | মুশফিক আর ফারহান, কেয়া পায়েল, এ কে এম হক, রিসা, ওয়াসিম আকরাম নিলয়, সিনথিয়া, আলামিন সরকার ও আরো অনেকেই। |
প্রকাশিত | ২১ এপ্রিল ২০২৩ |
সময় | ৪৪:৪১ মিনিট |
নাটকের মূল কাহিনী শুরু। |
---|
প্রথমে তাদের সম্পর্কে কিছু কথা বলে নেই তাহলে আপনাদের বুঝতে সুবিধা হবে। তারা দুইজনই থাকে অস্টোলিয়াতে। একটি বাসায় দুইজন দুইরুম ভাড়া নিয়ে থাকে। তাদের মধ্যে আগে থেকে কোনো পরিচয় ছিল না । আর তাদের পরিচয়টাই হয় ঝগড়া থেকে। পুরো নাটক দেখে আসলে ছেলেটি কি করে সেটা বুঝতে পারিনি তবে মেয়েটি একটি রেস্টুরেন্টে জব করে যে রেস্টুরেন্টে তিন মাসেও একটা কাস্টমার আসে না। আর সেই রেস্টুরেন্টের যে ওয়েটার আছে তারা সবাই মিলে সেখানে কুকপলান্তি খেলে।
নাটকের শুরুটা হয় তাদের ঝগড়া দিয়ে। শুরুতেই আমরা দেখতে পাই মেয়েটির কোনো একটা খারাপ ব্যবহারের কারণে ছেলেটি তার উপর প্রতিশোধ নেয়ার জন্য অনেক ভাবেই বিরক্ত করে তার প্রতিশোধ নেয়ার চেষ্টা করছে। তারা ছিল পাশাপাশি রুমে তাই একরুম থেকে গান বাজালে আরেক রুমে শুনা যেত। তাই ছেলেটি শুরুতেই রাত বারোটায় স্পিকার দিয়ে গান বাজিয়ে তাকে বিরক্ত করার চেষ্টা করে একটা সময় মেয়েটি বিরক্ত হয়ে ছেলেটির রুমের সামনে এসে দরজা নক করে ও বলে কেন এত জোরে গান বাজাচ্ছে। এখানে তাদের মধ্যে বেশ কিছুক্ষন ঝগড়া হয়।
তাদের দুইজনের কিচেন রুম ছিল একটা। সকালে মেয়েটি আগে নাস্তা তৈরি করে নিয়ে যাচ্ছিলো ঠিক এমন সময় ছেলেটিও কিচেন রুমে আসে ও সেখানে ইচ্ছা করে তার পানির গ্লাসটা ফেলে দিয়ে ভেঙ্গে ফেলে। আর এই গ্লাস ভাংগার দায়ভার মেয়েটির উপর দিয়ে মেয়েটিকে অনেক গুলো কথা শুনিয়ে দেয়। এখানেও তাদের মধ্যে অনেক্ষন ঝগড়া হয়ে থাকে।
পরদিন রাতে ছেলেটি ড্রিংস করে মেয়েটির রুমে গিয়ে দরজা নক করে ও খারাপ ভাবে মেয়েটিকে অনেক গুলো কথা বলে আর বলে মেয়েটি নাকি ছেলেটির রুমে এসে তার জন্য অপেক্ষা করছে। আর এই উল্টাপাল্টা কথা শুনে মেয়েটি বুঝতে পারে সে ড্রিংস করে এসেছে ও তাকে আঙ্গুল দিয়ে তার রুম দেখিয়ে দেয়।
এরপর মেয়েটি বাড়ির মালিকের কাছে গিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তার সব রকম কথা বলে নালিশ করে ছেলেটিকে বাসা থেকে বের করে দিতে বলে। আর বাড়ির মালিক খেপে দিয়ে বলে আজকেই তাকে আমি আমার বাড়ি থেকে বের করে দিবো। কিন্তু রাতের দিকে মেয়েটি যখন রেস্টুরেন্ট থেকে ফিরলো তখন দেখে তার কথার উল্টোটা হয়ে গেলো। বাড়ির মালিক নিজেই ওই ছেলের সাথে ড্রিংস করে ওই ছেলের কাঁধে হাত রেখে বাসা থেকে বের হচ্ছে। আর মেয়েটি এই অবস্থা দেখে জিজ্ঞাসা করলে বাড়ির মালিক উল্টো মেয়েটিকে বের করে দেয়ার কথা বলে। মেয়েটি এতে বেশ অবাক হয়।
এখানেই প্রতিশোদের পালা শেষ হয়নি। আরো কয়েকদিন কয়েক ভাবেই মেয়েটিকে বিরক্ত করার চেষ্টা করেছে আর এতে যতবার বাড়ির মালিকে নালিশ করেছে ততবারই তার সাথে উল্টো কিছু হয়েছে। একটা সময় এই সব কিছু সহ্য করতে না পেরে সে নিজেই বাসা ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করে ও বেগ ঘুচিয়ে মাঝরাতে বাসা থেকে বের হয়ে যায়। আর বাসার চাবিটা ছেলেটির কাছে দিয়ে বলে আমি চলে যাচ্ছি এবার আপনি আপনার নিজের মতো করে যেভাবে ইচ্ছা সেই ভাবেই থাকতে পারবেন। আপনাকে ডিস্ট্রাব করার মতো এমন কেউ আর এখানে থাকবে না। এসব কথা বলে মেয়েটি বের হয়ে যাই বাসা থেকে।
এরপর এই শীতের মাঝরাতে মেয়েটি রাস্তার পাশে গিয়ে বসে থাকে ও রাস্তা দিয়ে চলাচল করা কিছু মানুষ মেয়েটিকে খাৱাপ প্রস্তাব দিলে মেয়েটি বেশ রাগ হয় ও বিরক্ত বোধ করতে থাকে। কিছুক্ষন পর সেই প্লাটমেট ছেলেটি একটি গাড়ি নিয়ে চলে আসে ও তার ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করে। আর এটা বলে মেয়েটির উপর তার কোনো রাগ ছিল না কিন্তু প্রথম দিন সামান্য কারণে যদি ছেলেটির সাথে এত রাগ দেখিয়ে কথা না বলতো তাহলে এতদিন সে যা করেছে তা কিছুই করতোনা। এই গল্পটি ঝগড়ার গল্প না হয়ে একটি ভালোবাসার গল্প হতে পারতো। আর এখানেই তাদের মধ্যে ভালো একটা বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক তৈরি হয় ও তারা আবার বাসায় ফিরে আসে।
ব্যক্তিগত মতামত |
---|
নাটকের শুরু থেকেই ছিল তাদের মধ্যে ঝগড়া। আর এমন ঝগড়া যেন সবসময় আমরা একপ্রতিবেশীর সাথে আরেক প্রতিবেশীর দেখে থাকি কিন্তু এই ঝড়গা গুলো কি আসলেই কাম্য ? না , আমরা চাইলে নিজেদেরকে পরিবর্তন করতে পারি। এমন ঝগড়া পূর্ণ ভাবে না থেকে বন্ধুত্বপূর্ণ ভাবে থাকতে পারি খুব সহজেই। আর এই বিষয়টিকে সহজ করতে হলে আমাদের একজন আরেকজনকে ছাড় দিতে হবে। একজন কোনো অন্যায় করলে তার সাথে রাগ দেখিয়ে কথা না বলে বুঝিয়ে বললেই সকলের মধ্যে একটা বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে উঠতে পারে। এই নাটক থেকে আমরা এটাই শিখেছি একজনের সাথে খারাপ ব্যাবহার করে নিজে কখনো শান্তিতে থাকতে পারবো না বরং ভালো ব্যবহার করেই সম্পর্কটাকে আরো বেশি উন্নত করা সম্ভব।
নাটকটির ইউটিউব লিংক |
---|
মুশফিক আর ফারহান ও কেয়া পায়েল এই সময়কার খুবই জনপ্রিয় শিল্পী। দুজনেই দারুন অভিনয় করেন। যদিও এই নাটকটি আগে দেখিনি। তবে মনে হচ্ছে নাটকটি বেশ ভালো হবে। প্রতিবেশীর কাছে যদি শত্রুতা গড়ে ওঠে তাহলে কেউ শান্তিতে থাকতে পারে না। তাই আমার মনে হয় দুজন মানুষের বন্ধুত্ব দুজনকে ভালো রাখতে পারে। দারুন একটি নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি আপু।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ফ্ল্যাটমেট নাটকের রিভিউটি খুবই সুন্দরভাবে উপস্থাপন করেছেন আপনি। আপনার এই রিভিউটি করে নাটকটি দেখতে আমার খুবই ইচ্ছে করছে। আসলে একই ফ্ল্যাটে বসবাস করতে গিয়ে পরস্পরের সাথে ঝগড়া বিবাদ না করে বন্ধুত্বের সম্পর্ক স্থাপন করাটাই উত্তম। খুবই সুন্দর একটি শিক্ষামূলক নাটকের রিভিউ শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
নাটকের রিভিউ পড়ে খুব ভালো লাগলো আপু।আপনি ঠিক ই বলেছেন একজনের সাথে অন্যজনের বন্ধুত্বপূর্ন মনোভাব থাকতে হবে।দুজন একসাথে রেগে গেলে চলবে না।এতে সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যায়। খুব ভালো লাগলো, সময় পেলে নাটকটি দেখার ইচ্ছা রইলো।ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি লাটকের রিভিউ পোস্ট শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ফ্ল্যাটমেট নাটকের রিভিউটি আমার কাছে খুবই ভালো লেগেছে ।আপনি ঠিকই বলেছেন রাগারাগি বা ঝগড়া করে কেউ কখনো ভালো থাকতে পারেনি। মেয়েটি যদি প্রথমে তার সাথে ভালোভাবে কথা বলত তাহলে ছেলেটিও ভালোভাবেই কথা বলতো প্রতিশোধ নেওয়ার কোন কথাই ছিল না।এটি ঝগড়ার গল্প না হয়ে একটি ভালবাসার গল্প হতে পারতো। যাই হোক পরে তাদের বন্ধুত্ব হয়েছে এটা আমার কাছে খুবই ভালই লেগেছে। দারুন একটি নাটকের রিভিউ আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit