“মা”কে নিয়ে ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেন্ট সেন্টারে কিছুক্ষণঃ

in hive-129948 •  2 years ago 
আসসালামু আলাইকুম

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম।

আমি আজিজুল মিয়া।
বাংলা ব্লগের একজন নিয়মিত ব্লগার।
বাংলা ভাষা আমার প্রাণের ভাষা।
ভালোবাসি বাংলা ব্লগকে।

কেমন আছেন বন্ধুরা? বন্ধুরা, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি আলহামদুলিল্লাহ। বন্ধুরা, আজকে আমি সম্পূর্ণ ভিন্ন ধরনের একটা পোস্ট নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। বন্ধুরা, আমি আমার মাকে নিয়ে আজকে ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেন্ট সেন্টারে গিয়েছিলাম ডাক্তারের কাছে এবং সেই অভিজ্ঞতাটাই আমার বাংলা ব্লগের সবার সাথে শেয়ার করতে যাচ্ছি। চলুন তাহলে শুরু করা যাক-


আমার বাসা মিরপুর দুই নাম্বারের এইচ ব্লকের ছয় নাম্বার রোডে। আমার বাসা থেকে শিয়াল বাড়ি ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেন্ট সেন্টারে যেতে রিকশা ভাড়া লাগে ২০ টাকা, আর হেঁটে যেতে লাগে মাত্র ৫ মিনিট। যেহেতু মা বৃদ্ধ মানুষ তাই মাকে নিয়ে আমি রিকশায় করেই গিয়েছিলাম।

IMG_20221115_185414.jpg
চিত্রঃ ইবনে সিনা ডায়াগনস্টিক এন্ড কনসালটেন্ট সেন্টার, মিরপুর।

আমার মা মাদারীপুরে গ্রামের বাড়িতে থাকে। বয়স ৭৫ বছর। বাবা মারা গেছেন প্রায় ৪০ বছরের কাছাকাছি। মা বাড়িতে একাই থাকেন। যেহেতু বয়স্ক মানুষ সে কারণে মাঝে মাঝেই অসুস্থ হয়ে পড়েন কিন্তু সহজে ডাক্তারের কাছে যেতে চান না। কিন্তু যখন খুব বেশি অসুস্থ হয়ে পড়েন তখন নিজে ইচ্ছে করেই বলেন যে, আমাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যা। লাস্ট যখন অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তখন বাড়িতে মানে আমাদের যে ঘরটা আছে সেই ঘরে মা একাই ছিলেন। বাড়িতে অবশ্য বড় ভাই থাকেন, থাকলে কি হবে, সে থাকে আলাদা ঘরে। তো এইবার মা যখন একা ঘরে অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন তখন মা নাকি রাতে অনেকবার বড় ভাইকে ডেকেছিল কিন্তু শোনেন নি।

IMG_20221115_184943.jpg
চিত্রঃ হাসপাতালের প্রবেশদ্বার।

সকাল বেলায় ও খবর নেয় নি, যে মায়ের কি অবস্থা। সকালে আমি যখন ঢাকা থেকে মাকে ফোন দিলাম তখন মা কথা বলতে পারছিলেন না। আমি তখন জিজ্ঞেস করলাম কি অবস্থা আপনার? তখন মা আমাকে বলে যে, তার অবস্থা খুবই খারাপ। তখন আমি আমার ছোট বোনের কাছে ফোন দিয়ে বলি তুই এখনি মাকে তোর বাড়িতে নিয়ে ডাক্তার দেখা। এরপর ছোট আপু এক ঘন্টার মধ্যে এসে মাকে ওর বাড়িতে নিয়ে যায় এবং প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঔষধ নিয়ে নেয়। মায়ের সমস্যা হচ্ছে, তার মাথা এবং কান সহ চিলিক মেরে ব্যাথা হয় এবং সেটা প্রায় সব সময়ই হয়। এরপর আমি একদিন বাড়িতে গিয়ে মাকে ঢাকায় নিয়ে আসি ডাক্তার দেখানোর জন্য। ৮ ই অক্টোবর ২০২২ তারিখে মাকে মিরপুর শিয়ালব ইবনে সিনা ডায়াগনস্সলটেন্ট এ ডাক্তার মোমেন সাহেবের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন অবশ্য আমার ওয়াইফ মাকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে গিয়েছিল যার কারণে সেবার আমি পোস্টটি করতে পারিনি।

IMG_20221115_184354.jpg
চিত্রঃ ফ্লোর ভিত্তিক সেবা নির্দেশিকা।

সেদিন ডাক্তার সিটি স্কান এবং আর ও কয়েকটি পরীক্ষা দেয় এবং পরীক্ষা করার পরে জানতে পারলাম যে, মা ছোট ছোট কয়েকটি স্টোক করেছিল, এর আগে অবশ্য বড় একটা স্টক করেছিল ২০২১ সালের জুলাই মাসে। তখন মিরপুরে আলোক হাসপাতালে চিকিৎসা করিয়েছিলাম।

IMG_20221115_181425_610.jpg
চিত্রঃ হাসপাতালে মা এবং আমি।

একমাস পরে আজকে আবার আমি মাকে ইবনে সিনায় নিয়ে গেলাম। ডাক্তার প্রেসার মেপে দেখলেন মায়ের প্রেসার ৮০/১৭০। ডাক্তার মাকে অনেক শাসালেন কারণ, মা নাকি আগের বার তার প্রেসারের কথা বলেন নি। ডাক্তার এবার মাকে প্রেসারের ঔষধ লিখে দিলেন এবং বললেন যে এক বেলা না খেয়ে থাকলে সমস্যা নাই কিন্তু প্রেসারের ঔষধ না খেয়ে থাকা যাবে না। আবার দেড় মাস পরে আসতে বলেছেন। তারপর ডাক্তারের দেওয়া প্রেসক্রিপশন দেখিয়ে আমি ঔষধ কিনে মাকে নিয়ে বাসায় ফিরলাম।

IMG_20221115_184520_907.jpg
চিত্রঃ ফার্মেসিত ঔষধ কেনার সময়।

মূলতঃ বয়স বাড়ার সাথে সাথে মানুষের রোগ ব্যধি ও বেড়ে যায়। কারণ এ সময় মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ও অনেক কমে যায়। যার কারণে সব সময় ঔষধ খেয়েই বেঁচে থাকতে হয়। মায়ের ঔষধ খাওয়ায় ভিষন রকম অনিয়ম রয়েছে, যার কারণে সে কিছুদিন পরে পরেই অসুস্থ হয়ে পড়ে।

IMG_20221115_181540.jpgIMG_20221115_205753.jpg
চিত্রঃ ডাক্তারী ফাইল এবং প্রেসক্রিপশন।

আমার মনে হয় এই বয়সে এসে শুধু ডাক্তার দেখালেই হবে না ডাক্তারের নিয়ম এবং পরামর্শ অনুযায়ী ও চলাটা অত্যাবশ্যক।

বন্ধুরা, আমার পোস্টটি কষ্ট করে আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে ভিজিট করার জন্য সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ। সবাই আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন। আল্লাহ যেন তাকে সব সময় সুস্থ রাখেন। ভালো থাকবেন সবা। আল্লাহ হাফেজ।
HFcFmHBiAeR2oP8xXotf9GhVZ2UVLfizAkm26SLD9Ksq63dTYvrrycGbUPAEdikxGD2cqVMH8heE8DJW36AaZjZ4fD6Yt6w5ks6jyrVJqR...SPKhpaGF3R77N6UCcw6tHuYvyw7YjLACEvtraNkFm1AbXaoof2ZWppk6CphcwuiCL9iHDNMmYZX8Bq4y4gXniUDWXhBKVWevHte3V4qsJQhXhen8d6ttKVvadL.png

আমি আজিজুল মিয়াঁ, আমার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর। আমি জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে ম্যানেজার পদে কর্মরত আছি। লিখতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি ছোট বেলা থেকেই কম-বেশি লেখা-লেখি করতাম। লেখা-লেখির পাশা-পাশি আমি ঘুরতে এবং খেলা-ধুলা করতে অনেক পছন্দ করি। সময় পেলেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে বের হই। অতিরিক্ত কথা বলা এবং মিথ্যা কথা বলা আমি সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি।

পোস্ট সম্পর্কিত যা যা-

ডিভাইসের নামমডেলক্যামেরা
TECNOPouvoir 413M QUAD
ক্যামেরায়স্থান
@azizulmiahমিরপুর

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9rrJ7XyVNTSa1iNMV1HLEdGN9BVzpqr9qD8n9c6Cnsw4ig5kmwCUdZ2cXfBkqCk6bnMVXsU.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNz8uuU7jNdUdZcqn6h7peG3CH7HW4Dj4EnjdfKn9T6S1nX92sULZRaFUhpFmzY87Rh7WVkoNuC.png

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

5zGozCj1raAPxR2gxtAcC4PqrgwoJ7g4fhsaZBQiGiZqD8hpYQsVChctAgy2kS9mV6SZsMEvTo3JtHG1SaGTiVSZZvj1Cg7LApcJj7E7w6...xqohobR55AqvLPXjzPqinZxCCFYysfbwamCx1yYp3py1hevyBzxkMvXqSeLmVUJLnzYpDruY5pBwnAN3sJb5ntBM7ndcPvAMjSex58XEWXtasSNpzGQAySX6HL.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

আপনার মায়ের যেহেতু ৭৫ বছর বয়স হয়েছে তাহলে অবশ্যই উনাকে আরো সচেতন থাকতে হবে। আসলে এই বয়সে এসে কোন ওষুধ সহজে কাজ করতে চায় না। ঔষুধের পাশাপাশি ডাক্তারের দেওয়া নির্দেশনা মত চলতে হবে। যেহেতু উনার ছোট ছোট স্টোক হয়েছিল তাই আরো বেশি সতর্ক থাকতে হবে। আপনার মায়ের জন্য অনেক অনেক দোয়া রইলো ভাইয়া।

জী আপু আমার মায়ের জন্য দোয়া করবেন।

এই পৃথিবীতে একমাত্র মা নিঃস্বার্থভাবে তার সন্তানকে ভালোবেসে থাকে। মায়ের যেমন সন্তানের উপর দায়িত্ব রয়েছে তেমনি সন্তানের ও মায়ের নিয়ে অনেক দায়িত্ব রয়েছে। যেটা আপনি করেছেন মায়ের অসুস্থতার কথা শুনে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া এবং মায়ের সেবা যত্ন করা সত্যিই এটা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সেবামূলক কাজ।

ভাইয়া এমন একটা সুন্দর একটি কমেন্টের জন্য ধন্যবাদ।

যেহেতু ওনার বয়স অনেক বেশি হয়েছে তাই এখন ওনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কমে গেছে। এজন্যই উনি বেশি অসুস্থ এবং ছোট ছোট কত গুলো স্ট্রোক করেছেন। আর এই বয়সে উনাকে একা একা থাকতে দেওয়া ঠিক হবে না। এসময় ওনার পাশে একজনকে রাখা দরকার। আপনার মায়ের জন্য অনেক অনেক সুস্থতা কামনা করছি।

ধন্যবাদ আপু, সুন্দর এবং পরামর্শমূলক একটি কমেন্টের জন্য।

ভাইয়া প্রথমেই আপনার মায়ের জন্য অনেক দোয়া রইল যেন তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যায়। আমার মা ও কিছু দিন পর পর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাদের এখন বয়স হয়েছে তার জন্য এই সমস্যা ঐ সমস্যা দেখা দিচ্ছে। ডাক্তারের দেওয়া প্রতিটি নিয়ম ঠিক মতো পালন করলে দেখবেন সুস্থ হয়ে যাবে। ধন্যবাদ।

ধন্যবাদ আপু। মায়ের জন্য দোয়া করবেন যেন আল্লাহ খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ করে দেন।

এই বয়সে আপনার মা একা একা ঘরে থাকে এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।উনার নিয়মিত ঔষধ খেতে হবে এবং সব সময় একজন থাকতে হবে উনার সাথে।এই ব্যাপারটা খুবই কষ্টের ঘরে অসুস্থ হয়ে পড়ে আছে দেখার কেউ নেই। 😭 আপনার মায়ের জন্য দোয়া রইল।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি কমেন্টের জন্য।

কি বলেন, আপনার মায়ের বয়স ৭৫ বছর আর উনি বাড়িতে একা থাকেন। আপনার বড় ভাই বাড়িতে থাকা সত্ত্বেও উনি আলাদা থাকেন। বিষয়টা শুনে সত্যিই আপনার মায়ের জন্য খারাপ লাগলো। এত বয়স্ক মানুষকে অনেক বেশি যত্নে রাখা দরকার। আর সে জায়গায় কিনা উনি একা থাকেন। আগের বারে একা একা অসুস্থ হয়ে পড়া সত্ত্বেও কেউ দেখেন ও নি। বিষয়টা শুনে সত্যিই খুবই খারাপ লাগলো। পাশের ঘরের ছেলে থাকা সত্ত্বেও জানতে পারল না আর আপনি ঢাকা থেকে ফোন করলেন। তবে এবারে আপনি সহ ডাক্তারের কাছে এনেছেন ভালোই হলো। ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা করবেন। আর দেড় মাস পর অবশ্যই আবারো ডাক্তার দেখাবেন।

ধন্যবাদ আপু সুন্দর একটি পরামর্শ দেওয়ার জন্য।