আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও আপনাদের দোয়ায় ভালো আছি ইনশাআল্লাহ। বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের মাঝে শেয়ার করবো আমার দালাল গল্পের তৃতীয় পর্ব। বন্ধুরা গল্পটার যতই শেষের দিকে যাচ্ছি এর ট্রাজেডি ততই বেশি। আশা করি সবাই প্রত্যেকটি পর্ব পড়বেন। তাহলে সবাই গল্পটার মূল বিষয়টা বুঝতে পারবেন। |
---|
Copyright free image source:pixabay
পোস্ট ক্যাটাগরিঃ ধারাবাহিক গল্প। |
---|
পোস্টের শিরোনামঃ দালাল। |
---|
তারিখঃ ২৪ শে আশ্বিন ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দ(বাংলা)। |
---|
জাহিদ আমার সাথে আলাপ করতে ছিল যে, কতগুলো ইট লাগবে, বাউন্ডারি কিভাবে দেবে, কয়টা রুম করবে কিংবা কতজন শিক্ষক নিয়োগ দিবে, কিভাবে স্টুডেন্টদের ভর্তি করাবে, কাকে শিক্ষক নিয়োগ দিবে ইত্যাদি সকল বিষয়ে আমার সাথে মাঝে মাঝেই কথা বলতো, তবে জাহিদ আমাকে এ কথা বলতো যে বড় ভাই জায়গাটা নিয়ে ঝামেলা করতেছে আমি আমার কাজটা সম্পন্ন করতে পারবো কিনা নিশ্চিত নই তারপরও চেষ্টা করবো আমি যাতে আমার ভবিষ্যত পরিকল্পনাটা স্কুল নির্মাণের কাজ সঠিক ভাবে করতে পারি।
আমার ছোট ছেলে মেয়েদের পড়ানোর অনেক শখ ছিল, তাই আমি চাইছিলাম জাহিদ যেন স্কুলটা করতে পারে।
জাহিদের বড়ভাইয়ের বাগড়া দেওয়ার কারণে স্কুলের কাজটা শেষ পর্যন্ত আর করা হয় নি। ওদিকে জাহিদের দালালির কাজ ভালো ভাবেই চলতেছে।
এরই মধ্যে জাহিদ আমাকে একদিন ফোন দিয়ে বলে ভাই আপনার পরিচিত এমন কোন ট্রাভেল এজেন্সি আছে, যারা করোনার কারণে অফিস ছেড়ে দিয়েছে বা কেউ ট্রাভেল এজেন্সী ছেড়ে দিবে। এমন কেউ থাকলে আমাকে জানাইয়েন। জাহিদের কথা শুনে আমি বুঝলাম যে ওর দালালির ব্যবসা খুব জমজমাট যাচ্ছে। তারপর ও আমি জিজ্ঞেস করলাম কেন ট্রাভেল এজেন্সী দিয়ে কি করবি, জাহিদ আমাকে বলল ভাই এভাবে লোক আনলে লোকের মাঝে কনফিডেন্স খুঁজে পাওয়া যায় না, তারা আমাকে খুব বেশি একটা বিশ্বাস করতে পারে না বা আমার উপর নির্ভর করে টাকা দিতে ভয় পায়।
তাই একটা ট্রাভেল এজেন্সি থাকলে মানুষ অফিস দেখতে পাবে এবং অফিস দেখতে পেলে তাদের আস্থা টা বেড়ে যাবে, সেক্ষেত্রে আমার কাজ করতে খুব সুবিধা হবে। ট্রাভেল এজেন্সিতে আমি বিশ্বস্ত কিছু লোক রাখব তারা ওখান থেকে বাংলাদেশের যত কার্যক্রম সম্পাদন করে লোক পাঠাবে এবং আপনি এখান থেকে লিবিয়া থেকে ইতালিতে পৌঁছে দেব।
আপনি একটু গুরুত্বসহকারে আমার ব্যাপারটা দেখেন, দেখেন কেউ ট্রাভেল এজেন্সি ছেড়ে দিয়েছে কিনা বা ছেড়ে দেবে এরকম আছে কিনা তাহলে আমাকে জানাবেন।
ছোট ভাই একটা অনুরোধ করছে সেটা কি আমি না রেখে পারি তাই আমি তড়িঘড়ি করে আমার পরিচিত জনদের সাথে আলাপ করলাম এবং আমার এক ভাগিনা হুমায়ূন কবির যিনি সৌদি আরব ট্রাভেল এজেন্সিতে চাকরি করেন তার সাথেও যোগাযোগ করলাম।
কিন্তু কেউ আমাকে কোন ট্রাভেল এজেন্সির খবর দিতে পারল না, তাদের সন্ধানে এমন কোন ট্রাভেল এজেন্সি ছিল না যারা রিসেন্টলি ট্রাভেল এজেন্সি ছেড়ে দিবে বা করোনার কারণে ছেড়ে দিয়েছে।
একদিন আমি জাহিদকে মেসেঞ্জারে নক দিয়ে বললাম জাহিদ ভাই তুমি আমাকে একটা দায়িত্ব দিয়েছিলি সেটা আমি করতে পারিনি। জাহিদ আমাকে বললো ভাই এখন আর ট্রাভেল এজেন্সী লাগবে না। তখন জাহিদ আমাকে বলে, ভাই এখন আর অফিস নিচ্ছি না। অন্যভাবে কাজ করতেছি.. (চলবে)
গল্পটার মুল বিষয়বস্তু হচ্ছে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে গিয়ে কখন ই অতিরিক্ত লোভ করা ভালো না। আমাদের সমাজে অনেকেই আছে যা অতিরিক্ত লোভ করে শেষ পর্যন্ত নিজেকে হারিয়ে ফেলে।