বাবুই পাখির বাসার ফটোগ্রাফিঃ

in hive-129948 •  2 years ago 


পোস্ট ক্যাটাগরিঃ ফটোগ্রাফি

বিষয়ঃ বাবুই পাখির বাসার ফটোগ্রাফি

তারিখঃ ৯ ই ভাদ্র ২৪২৯ খ্রিস্টাব্দ

আসসালামু আলাইকুম আমার প্রিয় বাংলা ব্লগের বন্ধুরা আজ আমি আপনাদের মাঝে একটি ফটোগ্রাফি পোস্ট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এটা হচ্ছে বাংলা ব্লগে আমার প্রথম ফটোগ্রাফি পোস্ট। চলুন তাহলে শুরু করা যাক-


আমার গ্রামের বাড়ি হচ্ছে ঢাকা বিভাগের মাদারীপুর জেলার মাদারীপুর সদর উপজেলায়। ঢাকার পাশাপাশি হওয়া সত্বে ও বাড়িতে খুব একটা যাওয়া হয় না। আবার মাঝে মাঝে যদি ও যাই তাহলে ও কিন্তু তেমন একটা কোথাও বের হই না। তো এবার সবশেষ যখন বাড়িতে গেলাম, ভাবলাম একবার পাশের গ্রাম থেকে একটু ঘুরে আসি। চিন্তা অনুযায়ী কাজ। দুপুরের খাবার খেয়ে আমি এবং আমার ভাগ্নে বের হলাম। আমার সেঝো চাচার বাড়ি পর্যন্ত যেতে না যেতেই বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল, যার কারণে ইচ্ছা থাকলে ও আর বেশি ঘুরতে পারলাম না। আমাদের এলাকায় আবার সামান্য বৃষ্টিতেই কাঁদা এবং পানি জমে যায়।

Untitled design-17.png

যা-ই হোক চাচাতো ভাই বোনদের সাথে গল্প করে বৃষ্টির সময়টা কাটিয়ে দিলাম, মাঝখানে চাচি হাল্কা নাস্তা তৈরি করে দিলেন। গল্প করতে করতে আমরা নাস্তাটা শেষ করলাম। এরপর আমরা যথারীতি আবার বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। কিন্তু এবার আমরা ওই পথে না গিয়ে অন্য পথে আসার চেষ্টা করলাম। এবার আমরা কিছুটা ঘুরে একটা ভিটার কাজ দিয়ে আসতেছিলাম। আমাদের দেশে ভিটা বলতে বোঝায় যেখানে অনেক পুরনো কিছু গাছপালা থাকে। তো আসার সময় হঠাৎ আমার চোখের সামনে একটা বাবুই পাখির বাসা পড়ল। বাবুই পাখির বাসা টা নিচে পড়েছিল। মাটিতে বাবুই পাখির বাসা টা দেখে আমার মনে কিছুটা কৌতুহল জাগলো, এবার আমি উপরের দিকে তাকালাম, দেখলাম একটা তাল গাছের মাথায় অনেকগুলো বাবুই পাখি বাসা বেধেছে। বাসাগুলো দেখে ছোট বেলার কথা মনে পড়ে গেল।

Untitled design-15.png

ছোট বেলায় যখন গ্রামের বাড়িতে থাকতাম তখন দেখেছি, অনেক বাবুই পাখি তালগাছ অথবা অন্য কোন গাছের উপরে বাসা বেেধঁছে। বাবুই পাখি মূলত তালগাছের সাথেই বেশি বাসা বেঁধে থাকে।

বাবুই পাখির বাসর বুনন দেখলে আমি চেয়ে থাকতাম। চিন্তা করতাম সৃষ্টকর্তা একটা পাখিকে কত জ্ঞান এবং দক্ষতা দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। একটা গাছের উপরে বিভিন্ন খড় কূটা এবং চিকন চিকন গাছের ডাল একটা একটা করে সংগ্রহ করে নিজেরদের থাকার ঘর তৈরি করে থাকে।

Untitled design-16.png

এই বাবুই পাখির বাসা বানানো থেকে আমরা শিখতে পারি যে চেষ্টা, ইচ্ছা শক্তি এবং পরিশ্রম করলে সবই সম্ভব। আমরা মানুষ হয়ে ও অনেক সময় আমাদের ইচ্ছে, দক্ষতা এবং পরিশ্রমকে কাজে লাগিয়ে এমন সুন্দর সৃষ্টি করতে পারি না।

ছোট বেলায় আমরা লেখক রজনীকান্ত সেনেরএকটা কবিতা পড়েছিলাম, কবিতাটির নাম হলো স্বাধীনতার সুখ। কবিতাটি হলো-

বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
"কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্রালিকা পরে,
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।
বাবুই হাসিয়া কহে,"সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই তবুও থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা
নিজ হাতে গড়া মোর, কাঁচা ঘর খাসা।

বাবুই পাখির বাসাগুলো দেখে মনে হলো এটি একটি ফ্রেমে বেঁধে রাখার মতো শৈল্পিক সৃষ্টি। তাই আমি আমার হাতের মোবাইল দিয়ে কয়েকটি ছবি তুলে নিলাম। আসলে ফটোগ্রাফি একটা শৈল্পিক সৃষ্টি, এই সৃষ্টিকে ফুটিয়ে তোলা অনেক কঠিন একটি কাজ।

তারপর ও একটা দুঃসাহসিক পদক্ষেপ নিয়ে এই শিল্পকে আমি আমার বাংলা ব্লগের সকল বন্ধুদের মধ্যে শেয়ার করলাম। জানিনা কতটা সফলভাবে কাজটা করতে পেরেছি, তবে ১০০% চেষ্টা এবং আন্তরিকতা ছিলো কাজটি করার ক্ষেত্রে। এবার বাকিটা দেখবেন আমার বাংলা ব্লগের সকল পাঠকবৃন্দ।

Untitled design-18.png

Untitled design-19.png

Untitled design-21.png

Untitled design-23.png

Untitled design-22.png

পোস্ট সম্পর্কিত যা কিছুঃ

সিরিয়ালজেলার নামস্থানের নাম
মাদারীপুরনিজ গ্রাম
সিরিয়ালডিভাইস মডেলক্যামেরা
TECNO pouvoir 413M QUAD

পোস্ট ক্রিয়েট--@azizulmiah


বাবুই এবং চড়ুই পাখির মধ্যে যে কথোপকথন আমারা দেখতে পাই তা থেকে এই উপলব্ধি হয় যে আমার নিজের যা আছে তা নিয়ে সন্তুষ্টি থাকা উচিৎ। অন্যান্য ভালো বা দামী জিনিস দেখে কখনো ই আমাদের আফসোস করা উচিৎ না।


আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা এটি আমার প্রথম ফটোগ্রাফি পোস্ট। এর আগে আমি একবার ও ফটোগ্রাফি পোস্ট দেইনি। কিন্তু আমার বাংলা ব্লগের অন্যদের পোস্ট দেখে এবং পড়ে ভালো লাগলো এবং মনে হলো যে এটা একটা অন্য রকম ক্রিয়েটিভ, অন্য পোস্টগুলোর মতো চাইলেই এখানে অনেক কিছু লেখা সম্ভব নয়। যা কিছু লিখব তা সব হতে হবে বাস্তব। যাই হোক চেষ্টা করেছি ভালো করার, বাকিটা দেখবেন আমার সম্মানিত বিচারকবৃন্দ এবং আমার বাংলা ব্লগের সকল পাঠক ভাই ও বন্ধুরা। সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে আমি আমার পোস্ট আজকের মতো শেষ করলাম। আল্লাহ হাফেজ।









Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

বাবুই পাখির বাসার ফটোগ্রাফি অনেক দিন পর দেখলাম। অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া। চমৎকার একটি পোস্ট শেয়ার করার জন্য। আপনার জন্য শুভ কামনা রইলো ভালো থাকুন।

চেষ্টা করেছি, কিন্তু কতটা পেরেছি সেটা আপনারাই বলতে পারবেন ভাইয়া। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর একটি কমেন্টের জন্য।

বাবুই পাখির বাসা দেখে খুবই ভালো লাগলো। অনেকদিন পর বাবুই পাখির বাসা দেখলাম। আপনি অনেক সুন্দর ভাবে দক্ষতার সাথে এই ফটোগ্রাফি করেছেন। সেই সাথে অনেক সুন্দর করে আপনার এই পোস্টটি সাজিয়েছেন। ধন্যবাদ আপনাকে ভাইয়া।

ধন্যবাদ ভাইয়া, আপনাদের সহযোগিতা এবং উৎসাহ আমাকে সামনের দিকে চলার সুযোগ করে দিচ্ছে। ধন্যবাদ ভাইয়া সুন্দর একটি কমেন্টের জন্য।

বাবুই পাখির বাসা গুলোর খুবই সুন্দর ফটোগ্রাফি করেছেন। এই বাসা গুলো সব সময় তাল গাছের মধ্যে দেখা যায়। একটি তাল গাছের মধ্যে অনেকগুলো বাবুই পাখির বাসা তৈরি করে থাকে। অনেক সুন্দর লাগে তাদের ছোট ছোট বাসা গুলো দেখতে। ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

জী আপু, বাবুই পাখিরা এই বাসাটা তালগাছেই বাধে কিন্তু সময়ের সাথে সাথে হারিয়ে যাচ্ছে এইগুলা। এখন আর সেভাবে দেখা যায় না। ধন্যবাদ আপু আপনার সুন্দর মন্তব্যর জন্য।

খুবই বিরল একটা জিনিস দেখালেন। ছেলেবেলায় কত দেখেছি কিন্তু আজ বাবুই পাখি এবং বাবুই পাখির বাসা দুটোই বিরল হয়ে উঠেছে ।এই বাসা তো আর দেখাই যায় না বাংলাদেশে আছে এটা বেশ ভালো লাগলো।

নিজের চোখে সামনাসামনি বাবুই পাখির বাসা কখনও দেখিনি। একদিকে পোস্ট টা দেখে আমার মন খারাপ হয়ে গেলো। আমিও দেখতে চাই এমন।

বাবুই পাখির বাসার ফটোগ্রাফি দেখে আমার অনেক ভালো লাগলো। পশুপাখি দেখতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে আর আপনার ফটোগ্রাফির মাধ্যমে বোঝাই যাচ্ছে বাবুই পাখির বাসা গুলো অনেক সুন্দরভাবে আপনি আপনার মাঝে ক্যামেরা বন্দী করে আমাদের মাঝে শেয়ার করেছেন। প্রতিটি ফটোগ্রাফি অসাধারণ ছিল ধন্যবাদ।

আগে অনেক তালগাছ ছিল এবং এইসব গাছে অনেক বাবুই পাখির বাসা ছিল কিন্তু এখন আর নাই। তাই আমরা হয়তো একদিন চিরতরেই হারিয়ে ফেলব এই সব।

আপনি বাবুই পাখির বাসার খুব সুন্দর কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন। গ্রামের বাড়িতে ছোটবেলায় তালগাছে এমন বাবুই পাখির বাসা দেখতাম। বাসাগুলো দেখতে আমার কাছে খুবই ভালো লাগতো। আপনার ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আমার ছোটবেলার কথা মনে পড়ে গেল।

অনেকদিন পর বাবুইপাখি দেখলাম। গ্রামে এরকম বাকিগুলোও বেশ নজরে পড়ে। তবে শহরের দালানকোঠার ভিড়ে বাবুই পাখি যেন হারতে বসেছে। যাই হোক ধন্যবাদ আপনাকে এত সুন্দর ফটোগ্রাফি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।

বাবুই পাখির বাসার ফটোগ্রাফি গুলো দারুন ছিল। অনেক দিন পর দেখলাম বাবুই পাখির বাসা।
বাবুই পাখিরে ডাকি, বলিছে চড়াই,
"কুঁড়ে ঘরে থেকে কর শিল্পের বড়াই,
আমি থাকি মহাসুখে অট্রালিকা পরে,
তুমি কত কষ্ট পাও রোদ, বৃষ্টি, ঝড়ে।
বাবুই হাসিয়া কহে,"সন্দেহ কি তায়?
কষ্ট পাই তবুও থাকি নিজের বাসায়।
পাকা হোক, তবু ভাই, পরের ও বাসা
নিজ হাতে গড়া মোর, কাঁচা ঘর খাসা।এই লেখাটি ভালো লেগেছে। ধন্যবাদ আপনাকে সুন্দর কিছু চিত্র আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য। শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

জী ভাই, এখন এই বাবুই পাখির বাসাগুলো খুব একটা দেখা যায় না। কারণ এই বাসার উপযুক্ত স্থান হচ্ছে তালগাছ, সেই তালগাছই এখন তেমন একটা নাই।