আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমি ও ভালো আছি ইনশাআল্লাহ। বন্ধুরা আজ আমি আমার দালাল গল্পের দ্বিতীয় অংশ প্রকাশ করছি। এটা সম্পুর্ণ বাস্তব কাহিনী নিয়ে লেখা একটা গল্প। প্রথম অংশ থেকে শেষ অংশ পর্যন্ত পড়লেই আপনারা এই গল্পের বিস্তারিত জানতে পারবেন। আশা করি সবাই সবগুলো অংশই পড়বেন। চলুন তাহলে শুরু করা যাক - |
---|
Copyright free image source:pixabay
জাহিদ আমাকে বললো ভাই আপনার ব্যাংকে আমাকে একটা একাউন্ট খুলে দেওয়া যাবে।
আমি বললাম কি একাউন্ট খুলবি?
জাহিদ আমাকে বললো টাকা রাখবো আবার উঠাব এই রকম একটা একাউন্ট খুলে দিলেই হবে।
আমি বললাম দেশে এসে খুলবি নাকি ইতালিতে বসেই খুলবি? জাহিদ বললো ইতালিতে বসেই খুলতে চাই।
আমি জাহিদকে বললাম তাহলে তোর স্বাক্ষর কিভাবে দিবি। জাহিদ আমাকে বললো আপনি একটা ব্যবস্থা করে দেন না।
আমি জাহিদকে বললাম ঠিক আছে তুই একটা কাজ কর সেটা হলো তুই সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ওয়েব সাইট থেকে একটা সঞ্চয় হিসাবের একাউন্ট খোলার ফর্ম ডাউনলোড করে প্রিন্ট করে যেখানে যেখানে স্বাক্ষর লাগে স্বাক্ষর করে দুই কপি ছবি এবং ভোটার আইডি সহ আমাকে পাঠিয়ে দে আমি একাউন্ট খুলে একাউন্ট নাম্বারটা তোকে দিয়ে দিব।
জাহিদ আমাকে বললো ঠিক আছে ভাই।
আমি এতটা আগ্রহ নিয়ে একাউন্ট খুলে দিচ্ছি কারন, ব্যাংকে প্রত্যেক অফিসারের একটা টার্গেট থাকে, সেটাও পুরণ হলো এবং জাহিদ যদি ভালো একটা এমাউন্ট একাউন্টে রাখে তাহলে আমার জন্য ভালোই একটা কাজ হবে।
এরপর জাহিদের সাথে অনেকদিন কথা হয়নি। একদিন মা আমাকে ফোন দিয়ে বলে আসাদুজ্জামান আসছিলো ও নাকি ইতালিতে চলে যাবে সেজন্য বলতে এসেছিলো। আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম কে নিচ্ছে ভাইকে? এত টাকা কোথায় পেল?
উত্তরে মা বললো মাফুজ্জামান(মানে জাহিদ) নিতেছে। বেশির ভাগ টাকাই নাকি মাফুজ্জামান(মানে জাহিদ) দিচ্ছে। বলে রাখা ভালো যে আসাদুজ্জামান ভাই হচ্ছে জাহিদের চার নম্বর ভাই।
আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম জাহিদ এত টাকা কোথায় পেল?
উত্তরে মা আমাকে বলে মাহফুজ (জাহিদ) এখন অনেক টাকা ইনকাম করে।
মায়ের সাথে আমার কথা বলার কয়েক দিন পরে জাহিদ আমাকে একদিন ফোন দেয়। আমি ফোন রিসিভ করে প্রথমে জাহিদের সমাচার জিজ্ঞেস করলাম। তারপর জাহিদকে জিজ্ঞেস করলাম তুই নাকি গাজীপুর বাড়ি কিনেছিস?
জাহিদ উত্তর দেয় কেন আপনি জানেন না? জায়গাতো কিনেছি প্রায় চার মাস হয়ে গেল। তিন রুম সহ দুই কাঠা কিনেছি চল্লিশ লক্ষ্য টাকা দিয়ে। আমি জাহিদকে জিজ্ঞেস করলাম দলিল করিস নাই। জাহিদ উত্তর দেয় কেন আমি দেশে গিয়েছিলাম। দুই মাস আগে দেশে গিয়েই তো দলিল করে আসলাম। আমি বললাম তুই দেশে আসলি আর আমি জানলাম না। জাহিদ বললো ভাই ছুটি ছিল মাত্র এক মাসের এই জন্য কাউকে বলা হয়নি। এই জন্যই তো একাউন্ট খোলা হলো না। তাছাড়া কিছু টাকা মিয়া ভাই মানে বড় ভাই ও এদিক সেদিক করে দিয়েছে। এছাড়া দেশে ও কিছু জমি কিনেছি।
আমি জাহিদকে জিজ্ঞেস করলাম ইতালিতে তাহলে ভালোই ইনকাম করছিস? উত্তরে সে বললো ভাই আমি তো এখন ইতালি নাই। আমি তো লিবিয়াতে আছি।
আমি জিজ্ঞেস করলাম তুই লিবিয়াতে কি করিস? ইতালি থেকে চলে আসছিস নাকি?
জাহিদ উত্তর দেয় না ভাই, এইতো কয়দিন লিবিয়া থাকি আবার ইতালি যাই।
লিবিয়া কি করিস?
জাহিদ বলে ভাই ইতালিতে যে বেতন পাই তা দিয়ে কি এত কিছু করা যায়। আমি তো কিছুদিন যাবত ইতালিতে লোক পাঠাচ্ছি। আপনি আসবেন নাকি ইতালিতে? আপনি আসলে আমি ব্যবস্থা নিতে পারি। আমি বললাম না এখন যাচ্ছি না, কখনো যদি ইচ্ছে হয় তাহলে তোকে বলবো। এই কথা বলে তারপর দুষ্টুমি করে আমি ওকে বললাম শেষ পর্যন্ত তাহলে দালালি শুরু করে দিলি..
মূলত গল্পটি যতটা সামনে যাবে এর ট্রাজেডি ততই বেশি। আসলে আমাদের সমাজে কিংবা আমাদের আশেপাশে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যেগুলো হয়তো বা আমরা জানিনা বা জানার চেষ্টা ও করি না। আমাদের উচিৎ প্রত্যেকটি ঘটনাকে মানুষের সামনে তুলে ধরা। ধন্যবাদ সবাইকে।(চলবে----)
গল্পটা পড়ি বেশ আকর্ষণ লাগছিল তবে হঠাৎ শেষ করে দিলেন। আশা করি সামনের দিকে আরো ভালো কিছু অপেক্ষা করছে। তবে হ্যাঁ আমাদের সবাইকে সবকিছু প্রকাশ্যে আনা উচিত। দালাল চক্র মানুষকে জিম্মি করে হাতিয়ে নেয় লক্ষ লক্ষ টাকা। যাইহোক জানিনা আপনার সাথে আপনার ভাইয়ের সাথে কি হয়েছে, জানার অপেক্ষায় রইলাম। শুভকামনা রইল আপনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit