আমার আজকের পোস্ট || বাস্তবতাই আসল সত্য, আসল শিক্ষাঃ

in hive-129948 •  last year  (edited)
আসসালামু আলাইকুম
বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম।


হ্যালো বন্ধুরা, আবার ফিরে আসলাম নতুন একটা পোস্ট নিয়ে।

বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন আলহামদুলিল্লাহ। আমি ও ভালো আছি। বন্ধুরা চলে আবার নতুন একটি পোস্ট নিয়ে। বন্ধুরা আমার আজকের পোস্টটি অনেকটাই ভিন্ন রকমের, ভিন্ন বিষয়ের উপর লেখা। বন্ধুরা আমাদের মতো স্বল্প উন্নত দেশে আমাদের মতো সাধারণ মানুষের জীবিকা নির্বাহ করা যে কতটা কষ্টের সেটা আমরা একটু আশে পাশে তাকালেই বুঝতে পারি।
IMG_20230507_082052_308.jpg

চিত্রঃ ১


আসুন এমনই একজন জীবন সংগ্রামী যুবককে নিয়ে আমি আমার আজকের পোষ্টটি সাজিয়েছি। বন্ধুরা আমি বর্তমানে বরিশালে চাকরি করি। শুক্রবার এবং শনিবার ছুটি থাকায় বলতে গেলে আমি প্রতি সপ্তাহেই বাড়িতে যাই। তো এবার বাড়ি থেকে বরিশালে যাওয়ার পথে আমি মোস্তফাপুর বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে উঠলাম।

বাসে উঠে বাস ছাড়ার জন্য অপেক্ষা করতেছিলাম। বাসে তখন যাত্রী ফুল। সিট ফিল আপ করে আরও অনেক যাত্রী দাঁড়িয়ে আছে। এমন অবস্থা এর মধ্যে কেউ খালি হাতে দাঁড়িয়ে যেতেও কষ্ট হবে। এরই মধ্যে দেখি একটি ২০-২৫ বছর বয়সের একটি ছেলে বড় একটা পেয়ারার গামলা নিয়ে বাসে উঠলো। পেয়ারার গামলাটি দেখে মনে হলো আনুমানিক ১০-১৫ কেজির বেশিই ওজন হবে। পেয়ারার গামলাটি ছেলেটা একহাতে ধরে আছে এবং অন্য হাত গাড়ির স্টান্ড ধরে দাঁড়ালো।

IMG_20230507_082109_629.jpg

চিত্রঃ ২


এর মাঝেই লোক উঠছে নামছে। সে একবার এপাশ দিয়ে সাইড দিচ্ছে আর একবার অন্য পাশ দিয়ে সাইড দিচ্ছে। এ-র ই মধ্যে এক মুরব্বি ছেলেটিকে জিজ্ঞেস করলো তুমি এভাবে এক হাতে এত ভারি একটা গামলা দাঁড়িয়ে আছো তোমার কষ্ট হচ্ছে না। এভাবে কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবে। ছেলেটি একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বললো চাচা আমার অভ্যাস আছে সমস্যা নাই। তারপর ছেলেটি বললো চাচা আমি এই ভাবে দাঁড়িয়ে রহমতপুর পর্যন্ত যাবো।

ছেলেটির কথা শুনে আমি ছেলেটির মুখের দিকে তাকালাম আর ভাবলাম জীবিকার তাগিদে মানুষ কত কিছু করতে পারে। ছেলেটি যখন কথা বলছিলো তখন কিন্তু তার মুখে হাসি ছিলো। কষ্টের লেস মাত্র তার মধ্যে দেখা যায়নি। মোস্তফাপুর থেকে রহমতপুরের দূরত্ব মিনিমাম ৯০ কিলোমিটার। এতটা দূরত্ব ছেলেটি হাতে মিনিমাম ১৫-২০ কেজি ওজনের একটি পেয়ারার গামলা হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। আমরা অনেকই আছি যারা গাড়িতে উঠে ৫ মিনিট দাঁড়িয়ে থাকতে কষ্ট হয়ে যায়।

IMG_20230507_082208_673.jpg

চিত্রঃ ৩


আমার এই পোস্টটি আজকে লেখার মানে হচ্ছে যে মানুষ বাধ্য হয়ে জীবিকা নির্বাহের জন্য অনেক কিছু মেনে নিতে বাধ্য হয়। তা না হলে এই ছেলেটির যে বয়স তাতে করে তার থাকার কথা বন্ধুদের সাথে খেলার মাঠে, স্কুল বা কলেজের কোন ক্লাস রুমে, অথবা কোন বন্ধুদের সাথে আড্ডার স্থানে, কিন্তু বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে ছেলেটি আজ পরিবারের দায়ভার বহন করে তার, পরিবারের মানুষের মুখে একটু হাসি ফুটানোর জন্য দিনের পর দিন পরিশ্রম করে যাচ্ছে। স্যালুট জানাই এদেরকে যারা দিনের পর দিন কষ্ট করে নিজেদের শরীরের ঘাম পায়ে ফেলে পরিবারের মানুষদের ভালো রাখার দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছে।

IMG_20230507_082049_367.jpg

চিত্রঃ ৪


বন্ধুরা এই ছিল আমার আজকের পোস্টট, আশা করি সবার ভালো লাগবে। আপনাদের অনেক মূল্যবান সময় নষ্ট করে আমার পোস্টে ভিজিট করার জন্য সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা। সবাই ভালো থাকবেন ধন্যবাদ সবাইকে।

পোস্টের সাথে সম্পর্কিত যা যাঃ
ডিভাইসTecho provoir 4
ক্যামেরা13MQUAD
ক্যামেরায়@azizulmiah
লোকেশনমাদারীপুর।


আমি আজিজুল মিয়াঁ, আমার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর। আমি জগ্ননাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলায় অনার্স-মাস্টার্স শেষ করে বর্তমানে একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে ম্যানেজার পদে কর্মরত আছি। লিখতে আমার অনেক বেশি ভালো লাগে। আমি ছোট বেলা থেকেই কম-বেশি লেখা-লেখি করতাম। লেখা-লেখির পাশা-পাশি আমি ঘুরতে এবং খেলা-ধুলা করতে অনেক পছন্দ করি। সময় পেলেই পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঘুরতে বের হই। অতিরিক্ত কথা বলা এবং মিথ্যা কথা বলা আমি সবচেয়ে বেশি অপছন্দ করি।

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFaFa6PCA5PqBjf3814AomaBNh1sjAhGurcrbXNutXLYaLc5W7C7iWHwYRZUdeG...WGm8395pPJ5ZzZK8THWPqVK9d2S1GubN3KFmMuzpzgMZ43oggvLaDWozrYcR8sK1sVEbDaVoizynf8Km678okenWWShswb5rkccJutNk4ECBVp4KiCGXwedruC.png

hPb2XtKwBGiwRzkrzveR1sSPznD4Wv2miQhHXdT4AQFLAM3QQ7FR6kib75sNWjeyY2KuEUDi8sz6bqHr6btS4ZpMjd6ZzLZfSH89YMHKJv...3fzs3sFLFAqLELDokXmVgfJ6YVr36Qp4638DGsHpuyWTc5MpwFu6c7wPYBdkH2rWxh2Ga7BCLPL77Z7xxfhZoshrNvtpGsWzLs2U3qCa94pcxDkP5iJQ32gXxJ.png

45GhBmKYa8LQ7FKvbgfn8zqd6W2YEX34pMmaoxBszxVcFaE82pVbSeSRDwGwmwS6ZeUQP9pFNrFLbT4VzSCda2gnv1GJ9WwWns32xTfSaY...BpX9Edn8Wydi9cHhsMusgC8fAWDsSPmRZSTNKodnki6hi9yMKwtdjNwgrTWtL371U7U4FvMXuaDxGP5inAsXCk7QrSn6tpBhdCUivAPXTHx53b6Ln3LSyqimA6.png

3YjRMKgsieLsXiWgm2BURfogkWe5CerTXVyUc6H4gicdRPxLUy5tRWHZwoPkvkw4cLv9wovLuMmF7ZGAf4DAwsJfZ4uGNX7qG1KHTDN8Q1...bfFoudbaKZ5Vzsde5eATfH2qnmXwui7kQzogqp1a2ZKtDZmWpxMNYWMHX3NCBZ9mC9NHDzBd7K4gJTgV42NDT6Wu5KwX8mB5gYrCgUbVjh2urpH5Xg7YyNLnza.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

এইরকম ঘটনা কোথাও যেতে লোকাল বাস গুলোতে চলাচল করলেই দেখতে পাওয়া যায়। আসলে মানুষের জীবন জীবিকার তাগিদে অনেক পরিস্থিতি অনেক সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পার হতে হয় যেমনটা এই ছেলের ক্ষেত্রে হয়েছে। কখন কার কোন দিকে যেতে হবে সেটা কেউ জানে না এটাই বাস্তবতা এটাই সত্য।

এরকম মানুষ রাস্তাঘাটে চলার পথে অনেক দেখা যায়। লোকাল বাস গুলোতে এরকম মানুষদেরকে দেখা যায় যারা বাসের মধ্যে উঠে বিভিন্ন রকমের খাবার বিক্রি করে। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় গিয়ে থাকে তারা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একহাতে এরকম ওজন খাবার গুলো নিয়ে। আপনি যে ছেলেটির কথা উল্লেখ করে আজকের পোস্টটি লিখেছেন সেই ছেলেটির মতো অনেক মানুষ রয়েছে যারা নিজেদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে আছে বাস্তবতাকে মেনে নিয়ে এরকম কাজগুলো করছে। যাইহোক ভালোই লিখেছেন।

আসলে বাস্তবতাই এরকম। অনেক মানুষ বাস্তবতার সাথে লড়াই করে সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেছে। বাস্তবতা বড়ই কঠিন যার সাথে যুদ্ধ করতে অনেক সময় লাগে। আর আপনি যে ছেলেটার কথা বলেছেন এরকম অনেক মানুষ রয়েছে যারা বাস স্টেশনে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। দিনরাত পরিশ্রম করে নিজের পরিবারের মুখে একটু হাসি ফোটানোর জন্য। তারা বাস্তবতার সাথে লড়াই করে নিজের পরিবারের পাশে দাঁড়ায়। ভালোই লিখেছেন সম্পূর্ণটা।

রাস্তাঘাটে চলার সময় এইরকম বিভিন্ন মানুষগুলোর জীবিকা নির্বাহের চিত্রগুলো একদম কাছ থেকে দেখা যায়। তাদের পরিশ্রম হিসেবে তাদের উপার্জন খুবই সীমিত। পরিবারের মানুষগুলোর মুখে হাসি ফুটানোর জন্য তারা কতই না পরিশ্রম করে যাচ্ছে। এই মানুষগুলোকে দেখলে মাঝে মাঝে তাদের জন্য খুব মায়া হয়। তবে বাস্তবতা আমাদের সবাইকে মেনে নিতে হবে।

আসলে বাইরে বেরোলে এরকম অনেক মানুষই দেখা যায়,যারা জীবিকার তাগিদে অনেক পরিশ্রম করে থাকে। আসলে আপনার পোস্টটি পড়ে যা বুঝতে পারলাম ছেলেটি তার এই জীবন মেনে নিয়েছে। তবে অবাক হলাম যে প্রায় ৯০ কিলোমিটার রাস্তা সে বলছে নাকি এভাবে হাতের উপর গামলা ধরে যাবে। আসলে জীবিকা তাগিদে মানুষকে কত কিছুই সহ্য করতে হয়। যাই হোক ধন্যবাদ ভাই আপনাকে এই সুন্দর পোস্টি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।