আজকের পোস্ট || একজন শায়লা ও তার অকৃতজ্ঞ বান্ধবী(শেষ খন্ড):

in hive-129948 •  2 years ago 

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

আসসালামু আলাইকুম।

আমার বাংলা ব্লগের বন্ধুরা কেমন আছেন সবাই আশা করি ভাল আছেন আমিও ভাল আছি আলহামদুলিল্লাহ। বন্ধুরা আজ আমি একজন শায়লা এবং তার অকৃতজ্ঞ বান্ধবী এর দ্বিতীয় বা শেষখণ্ড নিয়ে আপনাদের মাঝে উপস্থিত হয়েছি। চলুন তাহলে শুরু করা যাক-
বন্ধুরা আমাদের সমাজে এমন অনেক লোক আছে যারা খুব কাছে থেকেও এবং অনেক আপন মানুষ হয়ে আমাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে। আমার গল্পের নুরি তেমনই একজন মেয়ে যে তার বান্ধবি শায়লার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে শায়লাকে ঠকিয়েছে। গল্পটা পুরোপুরি পড়লেই আপনারা বুঝতে পারবেন।



image.png

Copyright free image source:pixels

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNpz9rrJ7XyVNTSa1iNMV1HLEdGN9BVzpqr9qD8n9c6Cnsw4ig5kmwCUdZ2cXfBkqCk6bnMVXsU.png

পোস্টের ক্যাটাগরিঃ ধারাবাহিক গল্প।

পোস্টের নামঃ একজন শায়লা ও তার অকৃতজ্ঞ বান্ধবী।

পোস্টের তারিখঃ ২৬ শে অগ্রহায়ণ ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দ(বাংলা)



প্রথম খন্ডের লিংক

-----এভাবে সজিব প্রায় প্রতিদিনই শায়লাদের জন্য পথে দাঁড়িয়ে থাকে এবং শায়লাকে তার ভালোবাসায় পটানোর চেষ্টা করেই যাচ্ছে কিন্তু শায়লা কিছুতেই সজিবের প্রস্তাবে রাজি হচ্ছে না। শায়লার শুধু একটাই কথা আমার দ্বারা এসব প্রেম- ভালোবাসা একদম সম্ভব না। বাবা আমাকে অনেক কষ্ট করে লেখা পড়া করাচ্ছে। দিন রাত পরিশ্রম করে আমার লেখা পড়ার টাকা যোগাড় করছে। আমাকে নিয়ে বাবার অনেক আশা, স্কুলের শিক্ষকেরা ও আমাকে অনেক ভালো জানে, আমাকে নিয়ে অনেক আশাবাদি। আমার পক্ষে কোন দিনই এমন একটা কাজ করা সম্ভব না।

তবে সজিব কিন্তু নাছোড়বান্দা শায়লার সাথে তার সম্পর্ক করতেই হবে যে কোন উপায় ই হোক। তাই সে কিছুতেই শায়লার পিছু ছাড়ছে না। সে এখন প্রায় প্রতিদিন ই শায়লার সাথে সরাসরি কথা বলে যাচ্ছে। কিন্তু কোনোভাবেই সে শায়লাকে তার ভালোবাসার বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারছে না। শত চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত সজীব শায়লার বান্ধবী নুরির সাথে হাত করার চেষ্টা করল। কিন্তু নুরি তো জানে শায়লা কেমন মেয়ে। নুরি ও সরাসরি সজীবকে নিষেধ করে দিল যে তার ব্যাপারে শায়লার সাথে সে কোন কথা বলতে পারবে না। কিন্তু সজিবের একটাই কথা যে কোন উপায়ে শায়লাকে তার ভালোবাসতেই হবে।

এবার সজীব একটু ভিন্ন উপায় অবলম্বন করতে চাইলো, সেটা হল শায়লাকে হাত করার জন্য সজীব
নুরিকে বিভিন্ন লোভ দেখাতে লাগলো। কিন্তু এতে ও নুরি কিছুতেই রাজি হচ্ছিল না কারণ নুরি জানে শায়লা কেমন মেয়ে। কিন্তু সজিব ও যেন নাছুট বান্দা কিছুতেই সে শায়লা কে তার থেকে দূরে যেতে দেবে না।

এরপর অনেক কষ্ট করে অনেক লোভ দেখিয়ে নুরিকে সে রাজি করাতে পারলো। এতদিন নুরি শায়লা কে কিছু না বললে ও সজিবের কাছ থেকে বিভিন্ন লোভনীয় অফার পেয়ে শায়লাকে সে সজিবের সাথে সম্পর্ক করতে অনুরোধ করে। কিন্তু শায়লা কিছুতেই নুরির কথা শুনছে না। কিন্তু নুরি এখন লোভে পড়ে গেছে, বান্ধবীর থেকে সজীবের দেওয়া অফারগুলোই তার কাছে অনেক বড় মনে হচ্ছে, তাই সে শায়লাকে অনুরোধ করেই যাচ্ছে যেন সজিবের সাথে সম্পর্কটা গড়ে তোলে, নুরি সজীবের বিভিন্ন গুণের কথা এবং ভালো দিকগুলো শায়লার কাছে তুলে ধরতে লাগলো।

এভাবে বান্ধবী নূরির কাছ থেকে সজীবের ভালো দিক গুলোর কথা শুনে এবং নুরির অনুরোধে শায়লা শেষ পর্যন্ত সজীবের প্রস্তাবে সাড়া দেয়। এভাবে শায়লা সজীবের সাথে ভালোবাসা সম্পর্কে জড়িয়ে যায়। কয়েক দিন ভালোই চলছিল। দুজনের মধ্যে সম্পর্কটা মোটামুটি ঠিকই ছিল। শায়লা আসলেই সজীবকে সত্যিকারে ভালবেসেছে। সজিব ও হয়তো প্রথম দিকে শায়লা কে সত্যিই ভালবাসছে, কিন্তু শায়লা যে সজীবকে এতদিন ঘুরিয়েছে এবং শায়লাকে পাওয়ার জন্য নূরির পিছনে যত কিছু ব্যয় করেছে এই কথা চিন্তা করে সজীবের মনে একটা প্রতিহিংসার জন্ম হয়। তাই সে শায়লাকে নিয়ে মনের মধ্যে খারাপ চিন্তা করতে থাকে। আর এ কাজে সাহায্য করার জন্য সজিব নুরিকেই ব্যবহার করে। প্রথমে নুরি রাজি না হলেও সজিবের কাছ থেকে আর ও বড় লোভনীয় অফার পেয়ে শেষ পর্যন্ত রাজি হয়ে যায়।

এরপর নুরি এবং সজীব পরামর্শ করে শায়লাকে কোন একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়ার কথা বলে। শায়লা বান্ধবী নুরিকে অনেক বিশ্বাস করে এবং সজীবকে অনেক ভালোবাসে সুতরাং ভালো-মন্দ কোন কিছু চিন্তা না করে শায়লা নুরির কথায় রাজি হয়ে যায় এবং নূরী কে সাথে নিয়ে শায়লা সজিবের সাথে দেখা করতে যায়।

শায়লা এবং নুরি সজিবের কাছে গেলে সজিব নুরিকে রেখে শায়লাকে নিয়ে একটু একাকিত্ব সময় কাটানোর কথা বলে কিছুটা দূরে চলে যায়। শায়লা এখনো সজিব এবং নুরির চালাকি বুঝতে পারে নি। বোঝার কথা ও না কারণ শায়লা সজিবকে এখন সত্যিই অনেক ভালোবাসে, আর নুরিতো তার ছোট বেলার বান্ধবি। সুতরাং তাদের নিয়ে খারাপ কোন কিছু মনে না আসাটাই স্বাভাবিক।

কিন্তু শায়লার সেই বিশ্বাস ভেংগে দিয়ে সবজি তার বদ ইচ্ছাটাকে পূরণ করে নেয়। এখানে চাইলে ও শায়লার কিছুই করার ছিল না। কারণ শায়লা তখন ছিল সম্পূর্ণ সজিবের কব্জায়।

শায়লার জীবনে এমন একটা ঘটনা ঘটতেছে ভুলেও কখনো কল্পনা করেনি এবং তার বান্ধবী যে নুরি সজিবকে কাজে সাহায্য করবে এ কথাও শায়লা কোনদিন ভাবতে পারেনি।
শুধু এমন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পর শায়লা শুধু নুরির চোখের দিকে তাকিয়ে অবুঝ শিশু মতো বলল তুই আমার এত বড় সর্বনাশটা করতে পারলি নুরি। ভালো থাকিস তুই, তোর মত বিশ্বাসঘাতক এবং অকৃতজ্ঞ বান্ধবী যেন এই দুনিয়াতে আর কারো না হয়।

বন্ধুরা অল্প থেকে আমরা এইটা শিক্ষা নিতে পারি যে, আমরা কখনো কাউকেই অন্ধের মত বিশ্বাস করব না। কারণ প্রতিটা বিশ্বাস থেকেই অবিশ্বাসের সৃষ্টি হয়। প্রতিটা ভালোর পিছনেই মন্দের সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের চলার অনুবন্ধক নির্বাচনে আমাদেরকে আরও সতর্ক হতে হবে। বন্ধুরা অনেক কষ্ট করে এবং সময় নিয়ে আমার এই পোস্টটি পড়ার জন্য সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন এবং শুভেচ্ছা।

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iQXhYEttnX1KKh1bDpnfJQ9XE52hBiZnn6J1QrQxWt34Vv6BDtNXArCZWNiRA18nt5eQYaA3Kmg.png

3W72119s5BjVs3Hye1oHX44R9EcpQD5C9xXzj68nJaq3CeSsa63mzHQexuvWRDgxAQmHZjMKhFaYGe2ubQmiC33SnsVy3TGA7BbZJiqfXWxLCKhiShcGVU.png

C3TZR1g81UNaPs7vzNXHueW5ZM76DSHWEY7onmfLxcK2iNz8uuU7jNdUdZcqn6h7peG3CH7HW4Dj4EnjdfKn9T6S1nX92sULZRaFUhpFmzY87Rh7WVkoNuC.png

5zGozCj1raAPxR2gxtAcC4PqrgwoJ7g4fhsaZBQiGiZqD8hpYQsVChctAgy2kS9mV6SZsMEvTo3JtHG1SaGTiVSZZvj1Cg7LApcJj7E7w6...xqohobR55AqvLPXjzPqinZxCCFYysfbwamCx1yYp3py1hevyBzxkMvXqSeLmVUJLnzYpDruY5pBwnAN3sJb5ntBM7ndcPvAMjSex58XEWXtasSNpzGQAySX6HL.png

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

সত্যি আমরা যাদের উপর বিশ্বাস করি তারাই আমাদের বিশ্বাস ভেঙ্গে দেয়। এরকম বন্ধু থাকার চেয়ে না থাকাই তো ভালো। যে নিজের বন্ধুর বিশ্বাস নিয়ে খেলা করে সে কখনো প্রকৃত বন্ধু হতে পারে না। সত্যি ছোটবেলার বন্ধুর বিশ্বাস কিভাবে এভাবে খেলা করতে পারে। যাইহোক খুবই সুন্দর ভাবে এটি শেয়ার করেছেন আমাদের মাঝে লিখে। খুবই ভালো লাগলো আপনার এরকম একটি পোস্ট দেখে।

আপনার গল্পটি বেশ সুন্দর ছিল ভাইয়া। আপনার গল্পটি পড়ে বুঝতে পারলাম যে পৃথিবীর কাউকে বিশ্বাস করা যাবে না।