পোস্ট ক্যাটাগরিঃ বাস্তব ঘটনা অবলম্বন গল্প। |
---|
পোস্টের নামঃ দালাল। |
---|
তারিখঃ ২৯ শে আশ্বিন ১৪২৯ খ্রিস্টাব্দ(বাংলা)। |
---|
Copyright free image source:pixels
আমি আবার জাহিদকে জিজ্ঞেস করলাম তাহলে টাকা পয়সা কিভাবে লেনদেন করবি, কাস্টমারদের থেকে টাকা কিভাবে নিবি বা কার মাধ্যমে নিবি। জাহিদ আমাকে বললো আপাতত মিয়া ভাই এবং রেজাউল ভাইকে দায়িত্ব দিয়েছি, তারা কাস্টমারদের থেকে টাকা রিসিভ করে আমার একাউন্টে দিবে।
আমি জাহিদকে বললাম বিষয়টা কতটা সিকিউর হবে? এতো পরিমাণ টাকা তাদের মাধ্যমে লেন-দেন করা কি ঠিক হবে? এর আগে ও নাকি মনিরুজ্জামান ভাই তোর বিদেশ থেকে পাঠানো টাকা নিয়ে নয়-ছয় করেছে। তাছাড়া এখন তো টাকার পরিমাণ অনেক বেশি। আমি যতটুকু জানি একটা মানুষ বাংলাদেশ থেকে ইতালি যেতে মিনিমাম ৭,০০,০০০/- টাকা লাগে এবং টাকাগুলো কয়েকটি ধাপে ধাপে পরিশোধ করতে হয়। প্রথম ধাপে মিনিমাম ১,৫০,০০০/- থেকে ২,০০,০০০/- পরিশোধ করতে হয়।
জাহিদ আমাকে বললো না ভাই সমস্যা নাই, আগে যে সমস্যাগুলো ভাইয়ের সাথে ছিলো সেটা এখন আর হবে না। আমি বললাম দেখিস সমস্যা না হলে তো ভালোই। টাকা-পয়সার বিষয় একটু চিন্তা-ভাবনা করে করাই ভালো। কিন্তু আমার কেন যেন একটু সন্দেহ হয়েছিল যে, জাহিদ মনে হয় অনেক বড় একটা ভুল করতে যাচ্ছে। কিন্তু কি আর করার আমি ওকে আর বেশি কিছু বললাম না, কারণ জাহিদ তার বড় ভাই অথবা এবং খালাতো ভাইকে দায়িত্ব দিয়েছে সেটা তার বিষয়। এজন্য আমি আর কিছু বলিনি। জাহিদ আগে অনেক লোক ইতালি পাঠিয়েছে কিন্তু সেখানে কোন সমস্যা হয়নি। এইবার যারা ইতালি যাচ্ছে সেখানে জাহিদের অনেক দূর সম্পর্কের আত্নীয় ও ছিল, আমার কয়েকজন আত্নীয় ও ছিল।
সেদিনের মতো আমি জাহিদের সাথে কথা শেষ করলাম। এরপর এই বছরের জানুয়ারি মাসে জাহিদকে একবার ফোন দেই। কারণ আমার ছোট চাচার বড় ছেলে ইতালি যাচ্ছে, সে বিষয়ে আমি জাহিদকে অবগতি করতে চেয়েছিলাম।
আমি ফোন দিলে জাহিদ আমার ফোন রিসিভ করে, ফোন রিসিভ করলে জাহিদকে আমি বলি যে, আমার চাচাতো ভাই শাহরিয়া ইতালি যাচ্ছে, আগামীকালকে ওর ফ্লাইট, লিবিয়াতে গিয়ে তোর সাথে যোগাযোগ করবে, তুই যতটুকু পারিস ওকে হেল্প করবি। এই বলে আমি আমার চাচাতো ভাই শাহরিয়ার ফেইসবুক লিংক জাহিদকে দিয়ে দেই। কিন্তু জাহিদ আমাকে বললো ভাই, আপনার চাচাতো ভাই কার মাধ্যমে ইতালি আসতেছে?
Copyright free image source:pixels
আমি বললাম,, আমি তো জানিনা ভাই। তখন জাহিদ আমাকে বললো ভাই, আমাকে বললে আমিই তো ব্যবস্থা করতে পারতাম। আমি বললাম ভাই, আমি তো আগে জানি না, আজকেই জানলাম যে শাহরিয়া ইতালি যাচ্ছে। তখন জাহিদ আমাকে বললো, সমস্যা নাই ভাই, আমি যেহেতু আছি চেষ্টা করব আপনার চাচাতো ভাইকে যতটুকু পারি সাহায্য করতে। তবে ভাই এরপর আপনার পরিচিত কেউ ইতালি আসলে অবশ্যই আমাকে জানাবেন। আমি বললাম ঠিক আছে। এই বলে আমার সাথে ঔই দিনের মতো কথা শেষ করলো।
এরপর জাহিদের সাথে আমার কথা হয় মে মাসের ১৮ তারিখে। এ সময় জাহিদের সাথে আমার কথা হয় আমার ভাগিনী জামাই সুমনের বিদেশে যাওয়ার ব্যাপারে। সেদিন আমি সুমনের কথা জাহিদকে বলে সুমনের মোবাইল নম্বরটা জাহিদকে দিয়ে দেই, জাহিদ সুমনের সাথে কথা বলে আমাকে মে মাসের ২১ তারিখে ফোন দিয়ে বলে যে সে সুমনকে আগে থেকেই চিনে। সুমনের ভাতিজাকে নাকি জাহিদ ইতালিতে পাঠাইছে। এটাই ছিল জাহিদের সাথে আমার শেষ কথা। চলবে......
দালাল গল্পের পুরো ঘটনাটা বাস্তবিক। গল্পের শেষের দিকে রয়েছে হৃদয় বিদারক ঘটনা, যে ঘটনা আমাদের সমাজে অহরহ ঘটে না। গল্পের শেষে জানতে পারবো কিভাবে একটা পরিবার হঠাৎ করেই একটা কালবৈশাখী ঝড়ে শেষ হয়ে যায়।