চিড়িয়াখানা এবং বোটানিক্যাল গার্ডেনের প্রবেশ মুখ সামনা-সামনি। নিহান আসলে চিড়িয়াখানা কি সেটা খুব ভালো মতো বুঝতো না, কিন্তু আমাদের মুখে যখন চিড়িয়াখানার নাম শুনতো, তখন সে বলতো, বাবা আমাকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে চলো। এছাড়া আমরা মাঝে মাঝে ইউটিউবে ওকে চিড়িয়াখানার অনেক জীব-জন্তু দেখাতাম। তখন চিড়িয়াখানা দেখার আগ্রহটা ওর আর ও বেড়ে যেত। যা-ই হোক ছেলে চাইলেই তো আর যাওয়া সম্ভব না। তবে আমি ওকে বললাম যে, যেদিন ছুটি পাবো সেদিন ওকে চিড়িয়াখানায় নিয়ে যাব।
একদিন আমি ছুটি নিলাম চিড়িয়াখানা যাওয়ার নিয়ত করে। সেদিন ছিলো রবিবার। আমরা সকাল নয়টায় বাসা থেকে বের হলাম। আমার বাসা ছিল মিরপুর ১২ কালসি মোড়ে। কালসি থেকে চিড়িয়াখানার দূরত্ব ছিলো আনুমানিক ৫ কিলোমিটার। আমি আমার বাসার সামনে থেকে নুরে মক্কা গাড়িতে উঠলাম। তারপর ১৫-২০ মিনিট পরে আমরা গাড়ি থেকে চিড়িয়াখানার সামনেই নামলাম। কিন্তু নামার পর যেটা হলো সেটার জন্য আমরা মোটেই প্রস্তুত ছিলাম না। গেটের কাছে গিয়ে দেখি নোটিশ বোর্ডে লেখা আছে, আজ চিড়িয়াখানা বন্ধ। আসলে আমার জানা ছিলো না যে রবিবার চিড়িয়াখানা বন্ধ থাকে।
যাই হোক, কি আর করার আমাদের তিনজনেরই মন খারাপ হয়ে গেল। বিশেষ করে ছেলেকে সামাল দেওয়া খুব কষ্টসাধ্য হয়ে যাচ্ছিল, কারন ও খুব এক্সসাইটেট ছিল চিড়িয়াখানায় গিয়ে হাতি, বাঘ, বানর, ঘোড়া, ভাল্লুক ইত্যাদি দেখবে এই ভেবে। আমরা চিন্তা করতে লাগলাম কি করা যায়, যেহেতু ছুটি নিয়েছি ছুটিটা তো কাজে লাগাতে হবে। অনেকক্ষন চিন্তা-ভাবনা করে শেষে বোটানিক্যাল গার্ডেনেই যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম। এ যেন দুধের স্বাদ ঘোলে মিটানোর মতো আর কি!
আমরা তিনটি টিকেট কেটে বাগানের ভিতরে প্রবেশ করলাম। তখন টিকিটের মুলয় ছিলো ২০ টাকা করে। প্রবেশ করার আগে কিছু হালকা খাবার এবং একটা পানির বোতল নিয়ে নিলাম। আমরা ভিতরে প্রবেশ করে আস্তে আস্তে পুরো বাগনটি ঘুরে দেখছি। এই বাগানের বেশির ভাগ জায়গা জুড়েই রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ। যে গাছগুলো বর্তমানে খুব একটা দেখাই যায়না। বোটানিক্যাল গার্ডেন ঢাকার মিরপুরে অবস্থিত। ১৯৬১ সালা এই উদ্যানটি ২০৮ একর জায়গা নিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটি মূলত নার্সারি ভিক্তিক একটি উদ্যান।
বাগানের ভিতরে অনেক সুন্দর সুন্দর ফুল এবং গাছের নার্সারি রয়েছে, যেটি বাগাটিকে অনেক বেশি আকর্ষিত করেছে। এখানে ঘুরতে যাওয়া মানুষের বসার জন্য ছোট ছোট বেঞ্চ করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বসে আমরা রেস্ট নিয়েছিলাম। এখানে বাচ্চাদের খেলার জন্য কিছু পেঙ্গুইন বানিয়ে রাখা হয়েছে, যেটার সামনে দাঁড়িয়ে আমার ছেলে নিহান একটি ছবি তুলেছিল।
পার্কে ছোট ছেলে মেয়েদের খেলার জন্য দোলনা এবং পিচ্ছিল খাওয়ার জন্য কিছু খেলনা তৈরি করা হয়েছে। এখানে কিছু স্পট আছে যেটা মাটি থেকে ৮/১০ ফিট উঁচু করে তৈরি করা হয়েছে। আমার ছেলের বায়নাতে আমি তাকে নিয়ে ঐ স্পটের উপর উঠতে বাধ্য হয়েছিলাম।
অনেক ঘোরাঘুরি করে আমরা দুপুরের আগেই বাসায় ফিরলাম। আমার মনে হয় বোটানিক্যাল গার্ডেনে এখন আর দেখার মতো তেমন কিছুই নাই। তবে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মন্ডিত একটি দর্শনীয় স্থান হচ্ছে বোটানিক্যাল গার্ডেন। যে কেউ মিরপুর -১ নম্বর নেমে রিকশা অথবা যে কোন পরিবহনে করেই ৫-১০ মিনিটের মধ্যেই বোটানিক্যাল গার্ডেন অথবা চিডিয়াখানায় পৌঁছে যেতে পারবেন।
Sprout🌱, sprout🌱, sprout🌱!
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বোটানিক্যাল গার্ডেনে খুব সুন্দর মুহূর্ত কাটিয়েছেন। আসলে মাঝে মাঝে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার মুহূর্ত গুলো বেশ অসাধারণ মনে হয়। এত সুন্দর পোস্ট শেয়ার করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ধন্যবাদ ভাইয়া, আসলেই মাঝে মাঝে আমাদের উচিৎ পরিবার নিয়ে কোন ভালো জায়গায় গিয়ে সময় কাটানো, এতে করে পরিবারের সদস্যদের মনের একটু পরিবর্তন আসে, বিশেষ করে ছোট শিশুদের কথা চিন্তা করে হলেও এই কাজটা করা উচিৎ।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনার ছেলেকে নিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনে অনেক চমৎকার একটি মুহূর্ত অতিবাহিত করেছেন দেখেই বোঝা যাচ্ছে আসলে ছোট ছোট বাচ্চারা সবসময়ই বাঘ হাতি বানর এসব গুলো খুব কাছ থেকে দেখতে চায় এগুলো দেখতে তাদের খুবই ভালো লাগে। আপনার ছেলেও তার ব্যতিক্রম নয় দেখছি বাবা ছেলেরা এরকম সুন্দর মুহূর্ত দেখে খুবই ভালো লাগলো।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আমাদের সকলেরই উচিৎ পরিবারের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে ঘুরতে নিয়ে যাওয়া। ধন্যবাদ ভাই, সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ফ্যামিলি নিয়ে বোটানিক্যাল গার্ডেনের ভালো সময় কাটিয়েছেন। এসব জায়গায় সময় কাটাতে ভালো লাগে কেননা চারাদিকে গাছ রয়েছে। অনেক আগে গিয়েছিলাম কিন্তু অনেকদিন হয় যাওয়া হয়নি। আপনি ভালো সময় কাটিয়েছেন দারুন কিছু ফটোগ্রাফি করেছেন অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit