হ্যালো বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে ভালোই আছি। আজ আমি আরেকটি ব্লগ নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হলাম। আশা করি আপনাদের ভালো লাগবে। রমজান মাস শেষের দিকে আর মাত্র দুইটি রোজা পরে রমজান মাস শেষ হয়ে যাবে। আজ আমি আপনাদের মাঝে নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এসএসসি ব্যাচ ২০২০ এর ইফতার মাহফিল বর্ণনা করতে যাচ্ছি।আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে। তো চলুন বেশি দেরি না করে শুরু করা যাক।
প্রতিবছরই নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এর এসএসসি ব্যাচ ২০২০ এর ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। প্রতিবছরের মতো এবারও নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি ব্যাচ ২০২০ এর ইফতার মাহফিলের আয়োজন করা হয়। আমি নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০২০ সালে এসএসসি পাশ করেছি। এই ইফতার মাহফিলের আয়োজন রমজানের শেষে করা হয় কারণ আমরা যারা ঢাকার বাইরে থাকি তাদের রমজানের ছুটিতে বাসায় আসতে আসতে অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই এই ইফতার মাহফিলে আয়োজন রমজান মাসের শেষের দিকে করা হয়। গতকাল ২৮ শে রমজান এসএসসি ২০২০ ব্যাচের প্রায় ১২০ জন ছাত্র এই ইফতার মাহফিলে অংশগ্রহণ করে।
গতকাল নাড়ির টানে প্রায় ১২০+ ছাত্র একত্রিত হয়েছিলাম আমাদের সেই চেনা আঙিনায়।পুরনো বন্ধুগুলোকে জড়িয়ে ধরে মিশিয়ে নিচ্ছিলাম যেন বুকের ভেতর।বহু দিন পর দেখা কিনা।তারপর স্কুল মাঠের সবুজ ঘাসের শিশিরে পা ভিজিয়েছি,বাতাসের গন্ধটাও বড় আপন তাই বুক ভরে শ্বাস নিয়েছি,দালানগুলোর দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম ওইতো জানালার কার্নিশে মুখ বাড়িয়ে তাকাচ্ছি আমি নিজেই।ক্লাসরুমগুলো,বেঞ্চগুলো আমায় ডাকছিল এমন করে যেন আমাদের পরিচয় বহুদিনের। ক্যাম্পাস ছাড়তে হয়েছে সেই ২০২০ সালে।ক্লাসরুমের দুষ্টুমি, স্যারের শাসন, খেলার মাঠে ফুটবল নিয়ে দাপিয়ে বেড়ানো সেই ছেলেটা যেন অনেক বড় হয়ে গেছি,অনেক পর হয়ে গেছি।আজও যখন স্কুলের সামনে দিয়ে যাই বুকের বাঁ দিকটা একটু কেঁপে ওঠে।ইফতার মাহফিল শেষে ফেরার সময় মনে হলো যেন শরীরটাকেই শুধু বয়ে নিয়ে যাচ্ছি ;মন পড়ে আছে সেই ঠিকানায় যেখানে সোনার বাক্সে বন্দী করে রেখে এসেছি জীবনের সেরা সুখস্মৃতিগুলো।আমার সেই ঠিকানা নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় আর আমি এসএসসি '২০ পরিবারের এক গর্বিত সদস্য।
স্কুলের সকল বন্ধুদের সাথে চাইলেও আর একসাথে দেখা করা হয়ে ওঠেনা কিন্তু যখন ব্যাচের এরকম একটা আয়োজন করা হয় তখন স্কুলের পুরনো বন্ধুদের যেনো আবার ফিরে পাই। খুব চির চেনা মুখগুলো আবার চোখের সামনে চলে আসে। ছাত্র জীবনের সবথেকে সুন্দর সময় সম্ভবত এই স্কুল জীবন। এই স্কুল ক্যাম্পাসে কতই না খেলেছি, বন্ধুদের সাথে একসাথে আড্ডা দিয়েছি এখন সবই জানো একটি স্মৃতি। গতকাল স্কুলে সকল বন্ধুদের আবার একসাথে পেয়ে খুবই ভালো লাগছিল মনে হচ্ছিল যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছি।
নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এ দুটি শাখা রয়েছে প্রথমটি হল প্রভাতী এবং দ্বিতীয়টি হল দিবা। আমি প্রভাতী শাখার একজন ছাত্র। গতকাল প্রভাতী ও দিবা শাখার সবাই মিলে প্রায় ১২০ জনের মত ছাত্র ইফতার মাহফিলে উপস্থিত ছিল। আমরা সবাই একে অপরের সাথে কুশল বিনিময় করছিলাম। আমরা সবাই ইফতারের অনেক আগেই স্কুল ক্যাম্পাসে চলে গিয়েছিলাম। এরপর আসে আমাদের ফটো সেশন এর পালা প্রথমে প্রভাতী শাখার ছাত্ররা মিলে একসাথে গ্রুপ ছবি তুলি, এরপর দিবা শাখার ছাত্ররা মিলে একসাথে গ্রুপ ছবি তুলে এবং সবশেষে প্রভাতী ও দিবা শাখা মিলে ব্যাচ ২০২০ গ্রুপ ছবি তোলা হয়।
এরপর আমরা সবাই আসন গ্রহণ করি। আমাদের ব্যাচের মত আরও দুইটি ব্যাচ যথা এসএসসি ১৮ ব্যাচ ও এসএসসি ১৯ ব্যাচরাও এই দিন বিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছিল। আমরা সবাই নিজেদের আসল গ্রহণ করি এরপর আযান দেওয়ার প্রায় কিছু মিনিট আগে দোয়া অনুষ্ঠিত হয়। দোয়া শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরে আজান দেয় এবং আমরা সবাই একসাথে নিজেদের রোজা সম্পন্ন করি এবং মুখে পানি দেই। নীলফামারী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় ২০২০ ব্যাচের সকল বন্ধুদের সাথে একসাথে ইফতার করার মজাটাই আলাদা। মনের মাঝে যেন এক আলাদা এই অনুভূতি কাজ করছিল। ইফতারি শেষে আমরা ব্যাচের সবাই মিলে মাগরিবের নামাজ পড়ি এরপর নীলফামারী বড় মাঠে সবাই মিলে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে বাসায় ফিরে আসি।
আজকের মতো এখানেই। এতক্ষণ ধরে মনোযোগ দিয়ে আমার পোস্টটি পড়ার জন্য আপনাদের সবাইকে অসংখ্য ধন্যবাদ। দেখা হবে অন্য একটি ব্লগে ততক্ষণে ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আল্লাহ হাফেজ।
আমি আল হিদায়াতুল শিপু। বর্তমানে ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এর কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট এর একজন ছাত্র। আমি ফটোগ্রাফি করতে পছন্দ করি। আমি ভ্রমণ করতে অনেক পছন্দ করি। আমি মাঝে মাঝে কবিতা ও লিখি। আমার লেখা কবিতা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটা পত্র পত্রিকা এবং মেগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে। কাব্যকলি বইতেও আমার লেখা কবিতা রয়েছে।
Upvoted! Thank you for supporting witness @jswit.
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
সত্যি ভাই আপনার পোস্ট দেখে অবাক হলাম। আপনারা দুই হাজার কুড়ির ব্যাচ এবং আপনাদের যে বন্ধুত্ব আজও অনেক গভীরভাবে রয়েছে তা দেখে সত্যিই অবাক হলো। আসলে ভাইয়া বন্ধুত্বের মিলন হচ্ছে এমনই নারীর টানে সবাই একসাথে দেখেছেন এবং ইফতারি মাহফিল এবং করেছেন দেখে বেশ ভালো লাগলো। আপনারা ১২০+ এক ফ্রেমে দেখতে পেয়ে বেশ ভালো লাগলো। আপনাদের এই বন্ধুত্ব আরো ভালো হয় এবং বন্ধুত্বের এই ভালোবাসা বেঁচে থাকুক সারা জীবন এই প্রত্যাশা করি। মাশাআল্লাহ। ধন্যবাদ ভাইয়া শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ আমার পোস্টটি পড়ে এতো সুন্দর একটি মন্তব্য করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit