Creative Commons License Under Fair Usage Policy : Source - Wikimedia
ভয়াল কুকুরটিকে সঙ্গী করে আবার শুরু হলো মোমোতারোর যাত্রা । এভাবে আরো দুই দিন কেটে গেলো । মোমোতারো এখন তাদের দ্বীপের মাঝামাঝি চলে এসেছে । আর বড়জোর ৫-৬ দিন । তারপরেই দ্বীপের শেষ প্রান্তে সেই পুরোনো জেটিতে পৌঁছে যাবে সে । আর তারপরেই একটা নৌকো ভাড়া করে চলে যাবে সে ওনিদের দ্বীপে। ওনিদের দ্বীপে সহজে কোনো মাঝি যেতে চাইবে না এটা ঠিক, কিন্তু মোমোতারোর কাছে অনেক টাকা-কড়ি আছে । তিন-চার গুন ভাড়া দিলে অবশ্যই কেউ না কেউ তাকে নিয়ে যাবে ওনিদের দ্বীপে । একবার দ্বীপে পৌঁছোক শুধু মোমোতারো, গিয়ে এমন উচিত শিক্ষা দেবে দস্যুদের যে তাদের বাপের নাম ভুলিয়ে ছাড়বে সে ।
এই ভাবে পথ চলতে চলতে একদিন মোমোতারো ও তার সঙ্গী কুকুর একটা ঘন অরণ্যের মাঝে এসে পড়লো । চারিদিকে উঁচু উঁচু সব গাছের সারি । এত ঘন গাছগাছালি যে সূর্যের আলো খুব বেশি ঢুকতে পায় না বনের ভেতরে । সমগ্র বন ঠান্ডা আর নিঃস্তব্দ থাকে সব সময় । এই বনে একটা ঝর্ণা দেখে মোমোতারো যেই জল খাওয়ার জন্য সেদিকে ঘুরেছে এমন সময় হুউপ করে একটা শব্দ উঠলো, আর বিশাল চেহারার গোদা একটা বাঁদর এসে মোমোতারোর কাঁধের পিঠার থলি ধরে দিলো এক মোক্ষম হ্যাঁচকা টান ।
"আরে ! আরে ! কী ব্যাপার ?", বলতে বলতে হ্যাঁচকা টানটা সামলে নিয়ে থলিটি শক্ত করে ধরে মোমোতারো পেছন ফিরে তাকিয়ে দেখলো । বাপরে ! কী বিশাল গোদা একটা হনুমান এসে পিঠের থলি ধরে টানাটানি করছে । হনুমানের চেহারা অনেক বড়, প্রায় একজন মানুষের সমান লম্বা-চওড়া, কালো প্রকান্ড মুখ, চ্যাটালো পাথরের মতো চওড়া বুক, গায়ে বড় বড় বাদামি লোম, মুখের মধ্যে দু'পাটি ঝকঝকে ধারালো দাঁতের সারি, হাতে পায়ে ছুরির ফলার মতো বড় বড় নখ ।
এক পলক দেখেই বোঝা যাচ্ছে এ কোনো সাধারণ হনুমান নয় । অমিত শক্তির অধিকারী এ । কিন্তু, মোমোতারোর শক্তিও তো কিছু কম নয়, তাই বিস্তর টানা হ্যাঁচড়া করেও পিঠের থলিটি কেড়ে নিতে পারলো না হনুমানটি । তখন তার সে কি মেজাজ ! কিচ কিচ করে দাঁত মুখ খিচিয়ে বিকট ভেংচি কাটতে লাগলো সে সমানে ।
মোমোতারো হনুমানের ভাষা বুঝতে পারলো । সে তখন হনুমানটিকে বললো, " তুমি পিঠে খেতে চাও ? বেশ তো আমার সঙ্গী হবে ? তাহলে অনেক পিঠে দেব খেতে । আমি চলেছি ওনি দস্যুদের বিরুদ্ধে লড়াই করতে । তুমি যাবে আমার সাথে ? তবে সাবধান ! ওনি দস্যুরা কিন্তু খুব বিপদজনক ।"
হনুমানটি তখন দাঁত মুখ খিঁচিয়ে জবাব দিলো, 'ওনিদের আমি থোড়াই কেয়ার করি । কুচ পরোয়া নেই, আমাকে পিঠে খেতে দিলে খুশি মনে তোমার অভিযানের সঙ্গী হবো আর পিটিয়ে ওনিদের পরোটা বানিয়ে দেব ।"
মোমোতারো হনুমানটির মনোভাব জানতে পেরে খুশিমনে তাকে একটি পিঠা খেতে দিলো । সুস্বাদু জোয়ারের মিষ্টি পিঠা খেয়ে হনুমানটা খুশিতে লাফাতে লাফাতে মোমোতারোর সঙ্গে সঙ্গে চললো ।
[ক্রমশঃ]
মোমোতারোর দল তো দেখছি ভারী হচ্ছে। এভাবে যেতে যেতে হয়তোবা আরও কিছু জীবজন্তু মোমোতারোর সঙ্গী হয়ে যাবে। তারপর সবাই মিলে ওনি দস্যুদেরকে উচিত শিক্ষা দিতে পারবে। যাইহোক পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় রইলাম।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
বাহ্ এবারও তাহলে মোমোতারো নতুন সঙ্গী পেয়ে গেল, ব্যাপারটা জেনে বেশ ভালো লাগলো। অপেক্ষায় থাকলাম ভাই পরের পর্বের জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit