হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ বৃহস্পতিবার। ২৩ ই নভেম্বর, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। আজকে আমি আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে হাজির হয়েছি।
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, পোস্টের শুরুতে আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির প্রতিষ্ঠাতার প্রতি। একই সাথে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটির সকল এডমিন এবং মডারেটরদের প্রতি। সুপ্রিয় বন্ধুগণ,আমার বাংলা ব্লগ কমিউনিটি কর্তৃক আয়োজিত শীতকালীন ফটোগ্রাফি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি সত্যিই অনেক আনন্দিত। উক্ত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য আমি আমার গ্রামের শীতকালীন দৃশ্যের ফটোগ্রাফি করেছি। কারণ শীতের আগমনের সাথে সাথে আমাদের গ্রামের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। আর বর্তমানে আমাদের বিদ্যালয়ে বার্ষিক পরীক্ষা চলতেছে এবং একই সাথে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নিয়মিত কোচিং করানো হচ্ছে। পাশাপাশি প্রত্যেকদিন যেতে হয় ছাত্র-ছাত্রী কালেকশনে। যার কারণে শুক্রবার বাদে প্রত্যেকদিন খুবই ব্যস্ততার মধ্যে কাটানোর কারণে বাইরে ফটোগ্রাফি করতে দেওয়ার সুযোগ পাই না। যাহোক অনেক ব্যস্ততার পরেও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি অনেক খুশি। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, চলুন দেখে আসি আমার তোলা শীতকালীন ফটোগ্রাফি গুলো। আমি আশা করি আমার ক্যামেরাবন্দি করা শীতকালীর ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আপনাদের অনেক অনেক ভালো লাগবে।
⬇️ শীতকালীন সকালের রাস্তার ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সকালে আমাদের গ্রামীণ রাস্তা একেবারেই নির্জন অবস্থায় থাকে। শীতের সকালে গ্রামের মানুষেরা ঘুম থেকে দেরিতে ওঠে। এমনকি কৃষকেরাও ঘুম থেকে দেরিতে জাগ্রত হয়। যার কারনে শীতের সকালে গ্রামের রাস্তা একেবারেই ফাঁকা থাকে। আর রাস্তার আশপাশের সমস্ত প্রাকৃতিক পরিবেশ থাকে কুয়াশায় ঢাকা। অতিরিক্ত কুয়াশার কারণে খুব একটা দূরের দৃশ্য একেবারেই দেখা যায় না।
⬇️ সূর্যমামা জাগ্রত হওয়ার পূর্ব মুহূর্তে আকাশের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সকালে সূর্যি মামা জাগ্রত হওয়ার আগে পূর্ব আকাশ লালচে বর্ণ ধারণ করে। সূর্যমামা যে স্থানে উঠবে ঠিক তার আশেপাশের আকাশটুকুই এরকম লালচে বর্ণ দেখায়।
⬇️ সকালের শিশির ভেজা ধান ক্ষেতের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সকালে সূর্য ওঠার আগে ধানক্ষেতের প্রতিটি ধানের পাতায়, প্রতিটি ধানের গাছে, প্রতিটি ধানের সাথে লেগে থাকে শিশির কণা। সকালবেলায় ধান ক্ষেত দেখলে মনে হয় যেন শীতের শিশির কণা এসে ধান ক্ষেতগুলোকে গোসল করে দিয়েছে।
⬇️ শীতের সকালে খেজুরের রস সংগ্রাহকের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সকাল বেলাতেই খেজুরের রস সংগ্রহ করতে বেরিয়ে পড়ে খেজুরের রস সংগ্রাহক। খেজুরের রস সংগ্রহ করার পরে খেজুরের রস গুলো অন্য গ্রামে বিক্রয় করতে নিয়ে যায়। অনেকেই খেজুরের রস খাওয়ার জন্য ক্রয় করে, আবার অনেকেই খেজুরের রস দিয়ে পিঠা তৈরি করার জন্য খেজুরের রস ক্রয় করে। আবার কিছু খেজুরের রস আগুনের জ্বালানি দিয়ে তৈরি করে সুস্বাদু খেজুরের গুড়।
⬇️ সূর্যের উদয়।⬇️
শীতের সকালে সূর্য মামা উদয় হওয়ার আগে চারিদিক কুয়াশায় ঢাকা থাকে। মনে হয় যেন শীতের সকাল কুয়াশার চাদরে মোড়ানো। কিন্তু সূর্যমামার উদয় হওয়ার পরে আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশ থেকে আস্তে আস্তে কুয়াশা মুছে যেতে লাগে।
⬇️ শীতকালীন শাকসবজির ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতকাল বিভিন্ন প্রকারের শাক-সবজির জন্য একটি সেরা সময়। শীতকালে আমরা খুবই মজার মজার সবজি পেয়ে থাকি। শীতকালীন শাকসবজির মধ্যে অন্যতম হলো মুলা, পালনশাক, ফুলকপি, গাজর, পুঁইশাকের ফল, শিম, লাউ, দেশীয় উচ্ছে, বরবটি সহ আরো অনেক ধরনের শাকসবজি। উপরের ছবিতে আপনারা যে সমস্ত শাকসবজি গুলোর ফটোগ্রাফি দেখছেন সেগুলো সবই আমার পুকুর পাড়ে চাষাবাদ করা হয়েছে। শীতকালে মাটিতে রস কম থাকে তাই শাকসবজি গুলোর জমিতে নিয়মিত পানি সেচ দেওয়ার প্রয়োজন হয়।
⬇️ শীতকালীন বন্যফুলের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সময় আমাদের প্রকৃতিতে অনেক প্রজাতির নাম অজানা বন্য ফুলের সমারহ ঘটে। একটু মনোযোগ দিয়ে দেখলে বোঝা যায় যে বন্যফুল গুলোর মধ্যে এক অপরূপ সৌন্দর্য নিহিত। বিশেষ করে সাদা রঙ্গের কলমি ফুল এবং হলুদ রঙ্গের ফুল গুলো দেখতে অসাধারণ সুন্দর লাগে।
⬇️ খেজুর গাছের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতকালে অন্যতম আকর্ষণীয় গাছ হল খেজুর গাছ। খেজুর গাছের মাধ্যমে আমরা পেয়ে থাকি সুমিষ্ট খেজুরের রস। শীতের সকালে ঘুম থেকে উঠে খেজুরের মিষ্টি রস পান করার মজাই আলাদা।
⬇️ শীতকালীন আকাশের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সময় দিনের বেলায় আকাশ সম্পূর্ণ পরিষ্কার থাকে। দিনের বেলায় নীল আকাশে ভেসে বেড়ানো সাদা মেঘ দেখতে খুবই ভালো লাগে।। বিশেষ করে নীল আকাশের যখন সাদা মেঘ একত্রিত হয়ে পাহাড়ের আকার ধারণ করে তখন আকাশ দেখতে খুবই আকর্ষণীয় এবং অসাধারণ সুন্দর লাগে।
⬇️ শীতকালে লিচু গাছের নতুন পাতার ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সময় বেশিরভাগ লিচু গাছে নতুন কচি পাতা গজায়। কিন্তু অন্যান্য গাছে নতুন কচি পাতা গজায় ফাল্গুন মাসে। শীতের সময় এরকম নতুন কচি ও নরম সবুজ কচি পাতাগুলো দেখতে অসাধারণ সুন্দর লাগে।
⬇️ শীতকালীন অতিথি পাখির ফটোগ্রাফি।⬇️
শীত আগমনের সাথে সাথে আমাদের এলাকার বড় বড় পুকুর পাড়ে অনেক ধরনের অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে। অতিথি পাখির মধ্যে সাদা রংয়ের বড় বক পাখি অন্যতম। এ ধরনের বড় বক পাখি একমাত্র শীতের সময় বেশি দেখা যায়। এছাড়াও উত্তর দিক থেকে ঝাকে ঝাকে উড়ে আসে হাঁস জাতীয় শীতের অতিথি পাখি। অতিথি পাখিগুলো পুকুরের পাড়ে, খালে-বিলে, নদ-নদীতে কিংবা ফসলের মাঠে অবস্থান করে।
⬇️ শীতকালীন প্রাকৃতিক দৃশ্যের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতকালের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতে খুবই সুন্দর লাগে। ঠান্ডা প্রকৃতির মাঝে সোনালী রঙের পাকা ধানের সুগন্ধ আমাদের সবাইকে আকুল করে। একই সাথে আকাশের দিকে খাড়াভাবে দাঁড়িয়ে থাকা নারিকেল গাছ গুলো দেখতেও অপূর্ব সুন্দর লাগে। সব মিলিয়ে শীতকালে প্রাকৃতিক দৃশ্য এক অপরূপ সাজে সজ্জিত হয়।
⬇️ শীতকালীন আখের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতকালে আখের রস খেতে খুবই ভালো লাগে। শীত আসার সাথে সাথে আখের জমি থেকে আখ কেটে ইতিমধ্যেই রস তৈরি করা এবং রস থেকে গুড় তৈরি করার কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। মিষ্টি আখের রস এক গ্লাস পান করলেই প্রাণটা জুড়িয়ে যায়।
⬇️ শীতকালীন মাষকলাই এর ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতকালের অন্যতম প্রধান ডাল জাতীয় ফসল হলো মাষকলাই। নতুন মাষকলাইয়ের ডাল রান্না করলে চমৎকার একটি সুগন্ধ বের হয়। এছাড়াও এই মাষকলায় দিয়ে চাল কুমড়ার বড়া তৈরি করা হয়।
⬇️ শীতকালীন বড়ই,আতা ও কলা ফলের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতকালের অন্যতম প্রধান ফল হল বড়ই, আতা ও তেঁতুল ফল। ইতিমধ্যে প্রতিটি বড়ই গাছে ছোট ছোট বড়ই আসতে শুরু করেছে। একই সাথে আতা ফলগুলো মোটা হতে শুরু করেছে। এ সমস্ত ফলগুলো একমাত্র শীতের সময় পাওয়া যায়। তবে শীতের মৌসুমে পাকা জাতের কলা গুলোর বৃদ্ধি ব্যাহত হয়।
⬇️ শীতকালীন পড়ন্ত বিকেলের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সময় পড়ন্ত বিকেল খুবই উপভোগ্য একটি সময়। পড়ন্ত বিকেলে ঠান্ডা আবহাওয়ায় ঘুরে বেড়ালে মনটা এমনিতেই সজীব হয়ে ওঠে। এছাড়া পড়ন্ত বিকেলে প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখতেও খুবই সুন্দর লাগে। বিশেষ করে পড়ন্ত বিকেলের আকর্ষণীয় দৃশ্য হলো ধানক্ষেতের দৃশ্য। পড়ন্ত বিকালে সোনালী রঙের পাকা ধানের ক্ষেত দেখলে মনটা এমনিতেই প্রফুল্ল হয়ে ওঠে।
⬇️ শীতকালীন সন্ধ্যায় ও রাতে চাঁদের ফটোগ্রাফি।⬇️
শীতের সন্ধ্যায় চাঁদের আলো এবং চাঁদের সৌন্দর্য কিছুটা উপভোগ করা যায়। কিন্তু রাত বাড়ার সাথে সাথে চাঁদের আলো কুয়াশায় ঢেকে ফেলে। তখন চাঁদের আলো খুবই ক্ষীণ দেখায়। তারপরও শীতের রাত্রে চাঁদের আলো দ্বারা প্রকৃতির সৌন্দর্য অনেকখানি বৃদ্ধি পায়।
Camera 📸 Smartphone.
সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আমি আশা করি, শীতকালীন ফটোগ্রাফি গুলো দেখে আপনাদের ভালো লেগেছ। শীতকালের ফটোগ্রাফি গুলো করেছিলাম আমার নিজ গ্রাম থেকে। তাই সকল ফটোগ্রাফির লোকেশন দেখতে👉এখানে ক্লিক করুন
পোস্ট বিবরণ
শ্রেণী | শীতকালীন ফটোগ্রাফি |
---|---|
ক্যামেরা | স্মার্টফোন |
পোস্ট তৈরি | #bidyut01 |
কান্ট্রি | বাংলাদেশ |
অসাধারণ কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন ভাই। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের এত চমৎকার কিছু ফটোগ্রাফি দেখে মুগ্ধ হয়ে গেলাম। বিশেষ করে শীতকালে কাঁচা খেজুরের রস খাওয়ার অনুভূতি বেশ দারুন। বিভিন্ন রকম শাকসবজির ফটোগ্রাফি উপস্থাপন করছেন দেখিছি। এত চমৎকার বৈচিত্র্যময় ফটোগ্রাফি দেখে খুব ভালো লাগলো। ধন্যবাদ আপনাকে পোস্টটি আমাদের মাঝে শেয়ার করার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
একদমই মনোমুগ্ধকর কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আপনি৷ সবগুলো ফটোগ্রাফি দেখতে একদম অসাধারণ দেখা যাচ্ছে৷ আর এতগুলো শীতকালীন ফটোগ্রাফি একসাথে আপনার কাছ থেকে দেখতে পেরে খুবই ভালো লাগলো৷ খুবই সুন্দরভাবে আপনি সবগুলো ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন। আর শীতকালের সকাল থেকে শুরু করে অনেক সময় পর্যন্তই আপনি ফটোগ্রাফি করেছেন৷ যা আপনার এই ফটোগ্রাফি পোস্টের মধ্যেই দেখা যাচ্ছে৷ সবগুলো ফটোগ্রাফির দিকে যেন তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছা করছে৷
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit
ইস্ কেন যে গ্রামের বাসিন্দা হতে পারলাম না। আপনিতো দেখছি দারুন কিছু ফটোগ্রাফি শেয়ার করেছেন আমাদের সাথে। সত্যি গ্রামের এত সুন্দর সুন্দর ফটোগ্রাফি গুলো শুধু পেপার পত্রিকায় দেখেছিলাম। কিন্তু বাস্তবে কখনও দেখা হয়নি। আপনার ফটোগ্রাফি দেখে তো মুগ্ধ হয়ে গেলাম। শুভ কামনা রইল আ্পনার জন্য।
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit