গল্প :- প্রিয়জন // পর্ব - ০৬

in hive-129948 •  last year 



হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।



আজ শুক্রবার। ২৩ ই জুন, ২০২৩ ইং।


আসসালামু আলাইকুম।

সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আপনারা সবাই আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা গ্রহণ করবেন। আমি আশা করি আপনারা সবাই মহান আল্লাহ তায়ালার অশেষ রহমতে অনেক ভাল আছেন, সুস্থ আছেন এবং নিরাপদে আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় এবং মহান আল্লাহপাকের দয়ায় অনেক ভাল আছি। সুপ্রিয় বন্ধুগণ, আজকে আরো একটি নতুন পোস্ট নিয়ে আপনাদের নিকট হাজির হয়েছি।

siblings-gc11837ab2_1280.jpg

Source



এদিকে রাত শেষ হয়ে যাচ্ছে তারপরও ঝর্নার চোখে ঘুম আসছিল না। সাগরকে না পাওয়ার বেদনায় ঝর্না এতটাই দুঃখ পেয়েছে যে, সে আর কোনদিন বিয়ে করবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল। আসলে মানুষের মন তো একটাই। আর সে মনটা যখন অন্য কাউকে দিয়ে দেওয়া হয় তখন সেই মন ঘুরিয়ে অন্যকে দেওয়া খুবই কষ্টকর। কে জানতো সাগরকে ভালোবেসে ঝর্না এতটা কষ্ট পাবে। আসলে ভালোবাসা পাওয়া আর না পাওয়া সম্পূর্ণ ভাগ্যের বিষয়। ঝর্নার মতো মেয়েরা সত্যিকারের ভালোবাসার সম্পর্ক করতে গিয়েও ব্যর্থ হয়। আবার অনেকেই আছে ভালোবাসা না চাইতে ভালবাসার প্রিয় মানুষ তার পিছে পিছে ঘুর ঘুর করে, ঠিক যেমন মেঘ না হতেই বৃষ্টি হওয়ার মতো। যাহোক, তবুও মানুষ ভালবাসার প্রিয় মানুষের কাছ থেকে ভালোবাসা পাওয়ার জন্য ধৈর্য ধরে, ভালোবাসার মানুষের জন্য অপেক্ষা করে। আবার অনেকেই আছে ভালোবাসার মানুষের দেওয়া কষ্ট সহ্য না করতে পেরে অকালে দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করে ওপারে চলে যায়। ঝর্না বিছানায় শুয়ে ভাবলো যে, কল্পনায় সাগরকে নিয়ে এবং সাগরের ভালোবাসা অনুভব করে সারা জীবন কাটিয়ে দিবে। আর দূর থেকে সাগরকে এক পলক দেখে মনের প্রশান্তি জোগাবে। আর এসব কথা ভাবতে ভাবতে রাত্রের শেষ প্রান্তে এসে ঝর্না ঘুমিয়ে গেল।

সকালবেলা হয়ে গেল। পাখিদের কিচিরমিচির ডাকে সকলের ঘুম ভেঙ্গে গেল। সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে সকলে নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত। কিন্তু রিমা খাতুন সকালবেলায় ঘুম থেকে উঠে অন্যমনস্ক হয়ে বসে আছে। রিমা খাতুনের এরকম অবস্থা দেখে সাগর ভাবলো যে, হয়তো মায়ের শরীরের অবস্থা খারাপ। তারপর সাগর তার মায়ের কাছে এসে রাত্রেবেলায় তার মায়ের স্বপ্নের কথা জানতে পারলো। স্বপ্নের কথা জেনে সাগরের মনটাও বেশ খারাপ হয়ে গেল। সাগর ভাবতে লাগলো জীবনে একবার যদি বাবার আদর স্নেহ পেতাম তাহলে আমার জীবন আরো বেশি সুখময় এবং ধন্য হয়ে যেত। তারপর সাগর কান্না সুরে ভারী কন্ঠে তার মাকে জিজ্ঞেস করলো, মা আমার বাবা কি কোনদিন ফিরে আসবে না? উত্তরে রিমা খাতুন বললো, আমার মন থেকে বলে তোমার বাবা ফিরে আসবে। সাগর অত্যন্ত দুঃখের সাথে বলতে লাগলো, ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি অনেকের বাবা তার সন্তানকে কত আদর করে, বাজার থেকে হোক আর যেখান থেকেও এসে প্রথমে তার সন্তানকে কোলে তুলে নেয়, সন্তানের দুই গালে চুমু দেয়, মিষ্টি নিয়ে এসে সন্তানের হাতে দেয়, আরো কত আদর। আমার বাবা সেই ছোটবেলায় আমাকে রেখে বিদেশে গিয়ে আমাদের সকলকেই ভুলে গেল। এ কথা বলতে সাগর কেমন যেন বাচ্চা ছেলেদের মতো জোরে কান্না করে উঠলো। সাগরের কান্না দেখে সাগরের মা রিমা খাতুন কান্না করতে লাগলো।

এত সকাল বেলায় সাগরদের বাড়িতে কান্নার শব্দ শুনে আশপাশের প্রতিবেশীরা সাগরের বাড়িতে চলে এলো। তারপর তারা সকলেই সাগরের মায়ের কাছ থেকে জানতে পারলো স্বপ্নের কথা। সাগরের মায়ের দেখা স্বপ্নের কথা জেনে অনেকে বললো, সাগরে বাবা প্রবাসে মারা গেছে, তাই আল্লাহ তোমাকে এরকম স্বপ্ন দেখিয়েছে। আবার অনেকেই বলতে লাগলো হয়তো সাগরের বাবা অল্প দিনের মধ্যেই প্রবাস থেকে ফিরে আসবে। প্রতিবেশীরা এক এক জন এক এক রকম মন্তব্য করায় ব্যস্ত হয়ে পড়লো। তারপর সকলেই নিজ নিজ বাড়িতে চলে গেলে এবং নিজ নিজ কাজে ব্যস্ত হয়ে গেল। পরের দিন সকালের নির্ধারিত সময়ে ঝর্ণা এবং সাগর কোচিং করতে চলে গেল। তারপর সাগরের কথামতো ঝর্না সাগরকে সাহায্য করার জন্য প্রস্তুত হলো। সেদিন সীমা কোচিং এ আসতে বেশ দেরি করছিল। অনেকটা দেরি করেই সীমা সেদিন কোচিংয়ে আসলো। নীল রঙের পোশাক পরে সীমা কোচিংয়ে ঢুকতেই তার উজ্জ্বল চেহারা এবং সুন্দর পোশাক দেখে সাগর খুবই মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিল। সেদিন সাগরও খুব সেজেগুজে কোচিংয়ে এসেছিল। ঝর্নার দেওয়া নতুন পোশাক পরিধান করে পুরো হিরোর মতো সেজে এসেছিল সাগর।

সাগর হিরোর মতো সেজেগুজে আসলে কি হবে, সীমা একবারও সাগরের দিকে তাকালো না। বরং সাগর তোমার দিকে বারবার শতবার তাকাতে লাগলো। তারপর ঝর্না সীমাকে একটি নিরিবিলি জায়গায় নিয়ে আসলো। সেখানে সাগর আগে থেকেই উপস্থিত ছিল। এরপর ঝর্নার সহযোগিতায় সাগর তার মনের কথাগুলো সীমাকে খুলে বললো। সীমার সাথে সাগরের কথা বলার সময় ঝর্না অনেকটা দূরে অবস্থান করছিল।


গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির সপ্তম পর্ব আগামী সপ্তাহে শেয়ার করা হবে।


গল্পের পঞ্চম পর্বটি পড়ার লিংক



১০% বেনিফিসারী প্রিয় লাজুক খ্যাকের জন্য বরাদ্দ।



Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

Thank you, friend!
I'm @steem.history, who is steem witness.
Thank you for witnessvoting for me.
image.png
please click it!
image.png
(Go to https://steemit.com/~witnesses and type fbslo at the bottom of the page)

The weight is reduced because of the lack of Voting Power. If you vote for me as a witness, you can get my little vote.

image.png

আপনি বেশ সুন্দর একটি গল্প কিছুদিন ধরে আমাদের মাঝে শেয়ার করে আছেন। আপনার এই গল্পটা আমার অনেক ভালো লাগে, তাই আমি আপনার এই গল্পটা পড়ার অপেক্ষায় থেকে থাকি। খুবই ভালো লাগলো‌ আশা করি পরবর্তীতে আবারো বাকি অংশটুকু আমাদের মাঝে শেয়ার করবেন।