হ্যালো বন্ধুগণ,
আমি @bidyut01. একজন বাঙালি ব্লগার।সবাইকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়ে আজকের ব্লগটি শুরু করছি।
আজ শুক্রবার। ২৬ ই মে, ২০২৩ ইং।
আসসালামু আলাইকুম।
লেখাপড়া করা অবস্থায় সাগর এবং ঝর্ণার মধ্যে মাঝেমধ্যেই ঝগড়া হতো, দু'জনের মধ্যে খুনসুটি হতো। আবার একটু পরেই তাদের দু'জনের মধ্যে মিলও হয়ে যেত।। কিন্তু দুইজনের মধ্যে লেখাপড়ার কোন প্রতিযোগিতা হতো না। তবে ঝর্না বেশ অভিমানী ছিল। সাগরের সাথে একটু ঝগড়া হলে সে সহজে সাগরের সাথে কথা বলতো না। বিশেষ করে সাগরের প্রতি ঝর্নার অভিমানটা তুলনামূলক সবচেয়ে বেশি ছিল। ঝর্ণার এই অভিমান আস্তে আস্তে সাগরের প্রতি ভালোবাসায় পরিণত হয়। সাগর ও ঝর্ণা যখন দশম শ্রেণীতে পড়তো, ঠিক ওই সময় ঝর্ণা সাগরের প্রেমে পড়ে যায়। কিন্তু সাগর লেখাপড়া করা ছাড়া অন্যদিকে তার কোন খেয়াল ছিল না। ঝর্না মাঝেমধ্যেই সাগরকে তার ভালোবাসার বিষয়টা বোঝাতে চায় কিন্তু কোন কাজ হয় না। কিন্তু ঝর্ণা তার ভালোবাসার কথাটা মনেই চেপে রাখে মুখে বলতে পারে না। মনে মনে ঝর্না সাগরকে প্রচন্ড ভালোবেসে ফেলে।
এভাবে সাগর ও ঝর্না এসএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কলেজে ভর্তি হয়। অনেক ভালো ভালো ছেলের সাথে ঝর্ণার বিয়ের প্রস্তাব আসা শুরু হল। কিন্তু ঝর্না কোন ছেলের সাথে বিয়ে করতে রাজি হয় না। ঝর্না লেখাপড়ার অজুহাত দেখিয়ে বিয়ে করতে অনিচ্ছা প্রকাশ করে। ঝর্নার এরকম আচরণে তার মা খুবই রাগান্বিত হয়। কিন্তু ঝর্নার বাবা চায় তার মেয়ে লেখাপড়া শেষ করে যেন নিজের পায়ে দাঁড়ায় অর্থাৎ যোগ্যতা অনুসারে চাকরি লাভ করে। কিন্তু ঝর্নার বিষয়ে সত্য ঘটনাটি কেউই উপলব্ধি করতে পারে না। ঝর্না যে মনে মনে সাগরে প্রেমে হাবুডুবু খাচ্ছে, এই কথাটি একমাত্র ঝর্ণায় জানে, আর কেউ না।
সামনে এইচএসসি পরীক্ষা। সাগর লেখাপড়ায় আরো বেশি জোর দিয়েছে। দিনরাত সব সময় সাগরের মাথায় লেখাপড়ার চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। কেননা একমাস পরেই তার এইচএসসি পরীক্ষা। ঝর্নাও এইচএসসি পরীক্ষা দিবে কিন্তু তার মনে প্রেমের ঝড় উঠে গেছে। সাগরের চিন্তা, সাগরের কথা ঝর্নার মাথা থেকে কোনভাবেই যাচ্ছে না। বই খুললেই বইয়ের পাতায় পাতায় সাগরের মিষ্টি চেহারা ভেসে উঠছে। শুধু তাই নয়, ঝর্না যেদিকে তাকাচ্ছে সেদিকেই শুধুমাত্র সাগরকেই দেখতে পাচ্ছে। সাগরের বুকের বিশাল ঢেউ এর মতো ঝর্নার মনেও ভালোবাসার ঢেউ তরঙ্গ সৃষ্টি হয়েছে। সাগরের প্রতি তীব্র আকর্ষণ, সাগরের প্রতি ভালবাসার প্রবল বেগ ঝর্ণাকে উন্মাদনা করে দিচ্ছে। এমন অবস্থায় নিজেকে সামলিয়ে রাখা, নিজেকে সংযত রাখা ঝর্ণার পক্ষে খুবই কষ্টকর।
বুকভরা ভালবাসা নিয়ে ঝর্না ছুটে যায় সাগরের কাছে। ঝর্না আকার ইঙ্গিতে এমন কি চোখের ইশারায় সাগরকে বোঝাতে চায় তার ভালোবাসার কথা, তার মনের কথা। কিন্তু সাগর কোনভাবেই ঝর্ণাকে পাত্তা দেয় না। সাগর তার লেখাপড়াকেই প্রাধান্য দিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে বেশি পছন্দ করে। আর সাগর কেনই বা একনিষ্ঠভাবে লেখাপড়ার প্রতি আসক্ত হবে না? সাগর এখন বড় হয়েছে, সে সবকিছু বুঝতে শিখেছে। সাগর যখন তার পরিশ্রমী মায়ের মুখের দিকে তাকায়, তখন মায়ের মলিন মুখটি দেখে সাগরের মন হু হু করে কেঁদে ওঠে। সাগর ভাবতে থাকে, লেখাপড়া শেষ করে ভালো একটি চাকরি নিয়ে তার মায়ের কষ্ট দূর করবে, মায়ের মুখে হাসি ফোটাবে, সকল ধরনের পরিশ্রম থেকে মাকে মুক্ত করবে। আসলে সন্তান হিসেবে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ ও কৃতজ্ঞতাবোধের কোন অভাব ছিল না সাগরের মধ্যে। তাই সে মায়ের আদেশ অনুসারে এবং মায়ের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য একনিষ্ঠভাবে লেখাপড়া করে যাচ্ছে।
পরিবারের জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করতে করতে কখন যে মাসের পর মাস, বছরের পর বছর চলে যাচ্ছে রিমা খাতুন তা একেবারেই বুঝতে পারেনা। কঠোর পরিশ্রমের পর সেদিন দুপুরবেলায় রিমা খাতুন কৃষ্ণচূড়া গাছের ছায়ায় এসে দাঁড়ালো। তারপর যখন সে কৃষ্ণচূড়া গাছের দিকে তাকালো, তখন সে দেখলো যে গাছটিতে অসংখ্য পরিমাণে ফুল ফুটে রয়েছে। লাল রঙ্গের কৃষ্ণচূড়া ফুল গুলো দেখে রিমা খাতুনের মনের মধ্যে মোচড় দিয়ে উঠলো। তার সামনের পথের দিকে তাকাতেই রিমা খাতুনের শরীরে দক্ষিণা বাতাস এসে লাগলো।
গল্পটি চলমান থাকবে। গল্পটির দ্বিতীয় পর্ব আগামী সপ্তাহের আজকের দিনে অর্থাৎ শুক্রবারে শেয়ার করা হবে।
গল্পের প্রথম পর্বটি পড়ার লিংক
Downvoting a post can decrease pending rewards and make it less visible. Common reasons:
Submit