রসগোল্লা।।১৬ অক্টোবর ২০২৪

in hive-129948 •  4 months ago 

হ্যালো বন্ধুরা,

কেমন আছেন?আশা করি ভালো আছেন এবং সুস্থ আছেন।সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে আমি পোস্ট লেখা শুরু করছি।আজকে আমি রসগোল্লা নিয়ে আলোচনা করবো।

17290335497714992133067604076246.jpg

Image designed by AI


রসগোল্লার আবিষ্কার এবং এর ইতিহাস নিয়ে বাংলার মানুষ এবং ওড়িশার মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিতর্ক রয়েছে।এই মিষ্টি ভারতের দুই রাজ্যের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে পরিচিত। রসগোল্লার উৎপত্তির গল্প বিভিন্নভাবে শোনা যায়,তবে প্রধান দুটি তত্ত্ব হলো—একটি পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবং অন্যটি ওড়িশা থেকে।

১. পশ্চিমবঙ্গের তত্ত্ব: নবীনচন্দ্র দাস ও রসগোল্লা:

বাংলার মিষ্টি শিল্পে রসগোল্লার ইতিহাসের ক্ষেত্রে নবীনচন্দ্র দাসের নাম খুবই গুরুত্বপূর্ণ।১৮৬৮ সালে কলকাতার কাছে বাগবাজারে অবস্থিত তার মিষ্টির দোকানে তিনি প্রথম রসগোল্লা তৈরি করেন বলে কথিত আছে।নবীনচন্দ্র দাসকে "রসগোল্লার জনক" বলা হয়।তার রসগোল্লা তৈরির প্রক্রিয়া অত্যন্ত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যা পরবর্তীতে তার পুত্র কন্দললাল দাসের প্রচেষ্টায় সারা দেশে এবং দেশের বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।

নবীনচন্দ্র দাস নরম ও সাদা ছানার বল তৈরি করে তা চিনির সিরায় ডুবিয়ে রাখার প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেন।এই আবিষ্কার শুধু মিষ্টির জগতে একটি নতুন মাত্রা এনে দেয়নি,এটি বাংলার মিষ্টি শিল্পকে সমৃদ্ধ করেছে।তিনি বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে সঠিক পরিমাণ এবং তাপমাত্রা নির্ধারণ করেন যাতে রসগোল্লা মিষ্টি এবং নরম থাকে।

২. ওড়িশার তত্ত্ব: রসগোল্লার পুদি সম্পর্ক:

ওড়িশা দাবি করে যে রসগোল্লার উৎপত্তি তাদের রাজ্যের পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের প্রাচীন রীতি থেকে।ওড়িশার মতে, রসগোল্লার একটি প্রাচীন সংস্করণ জগন্নাথ মন্দিরের রীতিনীতির অংশ ছিল এবং এটি দেবতা জগন্নাথকে নিবেদন করা হতো।এই সংস্কৃতিতে রসগোল্লা "খিরমোহনা" নামে পরিচিত ছিল যা পরবর্তীতে বিভিন্ন রূপান্তরের মাধ্যমে রসগোল্লা নামে পরিচিত হয়।

ওড়িশার জনগণের মতে, মন্দিরের পুরোহিতরা চিজ বা ছানা থেকে তৈরি এই মিষ্টি দেবতার কাছে নিবেদন করতেন।এই রীতির কথা উল্লেখ করে তারা দাবি করে যে রসগোল্লার ইতিহাস ৮০০ বছরের বেশি পুরনো এবং এটি মন্দিরের পবিত্র প্রসাদের অংশ ছিল।

৩. আইনি ও সাংস্কৃতিক বিতর্ক:

রসগোল্লার উৎপত্তি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মধ্যে বহু বছর ধরে বিতর্ক চলছিল।২০১৫ সালে ওড়িশা সরকার রসগোল্লাকে তাদের নিজস্ব জিআই (Geographical Indication) ট্যাগ হিসেবে দাবি করার চেষ্টা করে।২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার এই দাবির বিপরীতে অবস্থান নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের রসগোল্লাকে ভৌগোলিক নিদর্শন হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালায়।অবশেষে, ২০১৭ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার "বেঙ্গলি রসগোল্লা" হিসেবে জিআই ট্যাগ অর্জন করে যা এটিকে তাদের নিজস্ব ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।

৪. রসগোল্লার জনপ্রিয়তা:

রসগোল্লা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশার মধ্যেই নয় সারা ভারত এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে।এর নরম, রসালো এবং মিষ্টি স্বাদ সকলের পছন্দের হয়ে দাঁড়ায়।মিষ্টির দোকানগুলোতে রসগোল্লার বিভিন্ন ধরণ এবং রেসিপি পাওয়া যায়। যেমন—"গুড়ের রসগোল্লা", "নলেন গুড়ের রসগোল্লা", ইত্যাদি।

রসগোল্লার আবিষ্কারের ইতিহাস কিছুটা বিতর্কিত হলেও এটি এখন শুধু একটি মিষ্টি নয় বরং বাংলার এবং ওড়িশার ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতির প্রতীক।


VOTE @bangla.witness as witness


witness_vote.png

OR

SET @rme as your proxy

witness_proxy_vote.png


Support @heroism Initiative by Delegating your Steem Power

250 SP500 SP1000 SP2000 SP5000 SP

Heroism_3rd.png


ধন্যবাদ।সবাই ভালো থাকবেন।

BoC- linet.png
-cover copy.png

|| Community Page | Discord Group ||


image.png

png_20211106_204814_0000.png

Beauty of Creativity. Beauty in your mind.
Take it out and let it go.
Creativity and Hard working. Discord

1000158425.png

PUSS COIN:BUY/SELL

Authors get paid when people like you upvote their post.
If you enjoyed what you read here, create your account today and start earning FREE STEEM!
Sort Order:  

This post has been upvoted by @italygame witness curation trail


If you like our work and want to support us, please consider to approve our witness




CLICK HERE 👇

Come and visit Italy Community



Hi @blacks,
my name is @ilnegro and I voted your post using steem-fanbase.com.

Come and visit Italy Community

নবীন দাস রসোগোল্লার পেটেন্ট করে রাখলে এই সমস্যাটা হতই না বলে আমার ধারণা।

কারণ শুধু রসোগোল্লা নয় সেই সময় নবীনময়রার হাতে আরও অনেক ধরণের মিষ্টি তৈরি হয়েছিল৷ আজও নবীনময়রার দোকানের ফলকটি রয়েছে৷ যেখানে ব্যাংক গড়ে উঠেছে৷ একদিন ওই জায়গায় দাঁড়িয়ে চেষ্টা করছিলাম বহুকাল আগে ফিরে যেতে৷

যাইহোক আপনার পোস্টটি বেশ হয়েছে৷

নবীনচন্দ্র দাসকে রসগোল্লার জনক বলা হয়,এটা সত্যিই জানা ছিলো না দাদা। রসগোল্লা আসলেই বিভিন্ন দেশে খুবই বিখ্যাত। আমার তো রসগোল্লা খেতে খুবই ভালো লাগে। পোস্টটি পড়ে বেশ ভালো লাগলো দাদা। শেয়ার করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।

রসগোল্লা মুভিতে এটার ইতিহাস তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে নবীনচন্দ্র দাস এর জীবনি এবং রসগোল্লার আবিষ্কার সম্পর্কে অনেক তথ‍্য উঠে এসেছে। তবে উড়িষ্যার ব‍্যাপার টা আপনার পোস্ট থেকে জানলাম। রসগোল্লা যে বাঙালিদের ঘরের মিষ্টি এটা নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। আমার ধারণা এটা কলকাতার বাগবাজারে তৈরি।

রসগোল্লা নিয়ে যে পুরনো তথ্যগুলো দিয়েছেন দাদা , তা সত্যিই আমার অজানা ছিল। বেশ ভালো লাগলো পুরো লেখাটি পড়ে।